চতুর্থ দিন শেষে এমনকি পঞ্চম দিনের শুরুতেও যা ছিল অভাবনীয়, রাওয়ালপিন্ডিতে সেটাই করে দেখিয়েছে বাংলাদেশ। ব্যাট হাতে প্রথম ইনিংসে প্রায় সবাই যথাসাধ্য অবদান রেখেছেন, আবার বল হাতে প্রথম ইনিংসে মলিন থাকলেও দ্বিতীয় ইনিংসে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়ে জয়ের মঞ্চটা তৈরি করে দেন মূলত বোলাররাই। পাকিস্তানকে টেস্টে প্রথমবার হারিয়ে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত তাই কাউকে একক কৃতিত্ব দিতে চাইলেন না।
প্রথম চারদিন ম্যাচ যেভাবে এগিয়ে গেছে, তাতে পঞ্চম দিনে নাটকীয় কিছুর সম্ভাবনা কমই ধরা হচ্ছিল। ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে পাকিস্তানের ৪৪৮ রানের জবাবে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ করেছিল ৫৬৫ রান। ফলে শেষ দিনে ড্রকেই ধরা হচ্ছিল সম্ভাব্য ফলাফল। তবে বাংলাদেশ বোলাররা প্রতিপক্ষকে মাত্র ১৪৬ রানে গুটিয়ে দেন। ৩০ রানের টার্গেট তাড়া করে ইতিহাস গড়ে সফরকারীরা। সব ফরম্যাট মিলিয়ে এই প্রথম পাকিস্তানের মাটিতে জয়ের দেখা পেয়েছে বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানকে উড়িয়ে রাওয়ালপিন্ডিতে বাংলাদেশের ইতিহাস গড়া জয়
মধুর এই জয়ের পর শান্ত বলেছেন, এই ইতিহাস গড়ার পেছনে সবার অবদানই সমান ও গুরুত্বপূর্ণ ছিল। “এটা খুব বিশেষ কিছু। অনেক বিশাল অর্জন, আমরা এখানে কখনই জিততে পারিনি, কিন্তু সিরিজ শুরুর আগে আমরা বিশ্বাসটা রেখেছিলাম করেছিলাম এবং আমরা এখানে সত্যিই ভালো করেছি। বিশেষ করে গত ১০-১৫ দিনে আমরা আসলেই কঠোর পরিশ্রম করেছি। সব বোলারকেই কৃতিত্ব দিতে হয় যায়, নাহিদ সত্যিই ভালো বোলিং করেছে, সাকিবও ভালো ছিল। অনেকদিন পর খেলাটা একজন ওপেনারের জন্য কঠিন, কিন্তু সে (শাদমান) আর জাকির যেভাবে ব্যাটিং করেছে, তা সত্যিই আমাদের দলকে সাহায্য করেছে। আশা করছি তারা তাদের ফর্ম ধরে রাখবে। গত ১৫-১৭ বছর ধরে মুশফিক সত্যিই ভালো করে আসছেন এবং তার কোনো ক্লান্তি নেই। তিনি একই নিবেদন নিয়ে খেলছেন। এই গরম কন্ডিশনে তিনি অনেক ভালো খেলেছেন। তবে আমি শুধু তাকেই কৃতিত্ব দিচ্ছি না, আমাদের স্কোয়াডের পনেরো সদস্যকেও কৃতিত্ব দিতে চাই।”
পাকিস্তান প্রথম ইনিংসে যে রান করেছিল, ম্যাচে টিকে থাকতে বাংলাদেশকে ভালো একটা স্কোর গড়তেই হত। ওপেনিং জুটিটা খুব বড় না হলেও শাদমান ইসলাম ও জাকির হাসান শুরুর দিকে ভালোই সামাল দেন পাকিস্তান পেসারদের। জাকির অল্পে আউট হলেও শাদমান খেলেন ৯৩ রানের দারুণ লড়িয়ে এক ইনিংস। এছাড়া ফিফটি করেন মুমিনুল, লিটন দাস ও মেহেদি হাসান মিরাজ।
তবে সবাইকে ছাপিয়ে যান মুশফিকুর রহিন। অসীম ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে লড়ে যান শেষ পর্যন্ত। মিরাজকে নিয়ে ১৯৬ রানের মহাগুরুত্বপূর্ণ এক জুটি গড়েন সপ্তম উইকেটে। মাত্র ৯ রানের জন্য মিস করেন ডাবল সেঞ্চুরি। তবে তার ব্যাটে চড়েই বাংলাদেশ পায় ১১৭ রানের লিড।
আর সেটা কাজে লাগিয়ে মিরাজের ৪, সাকিব আল হাসানের ৩ উইকেটের সাথে তিন পেসার শরিফুল ইসলাম, নাহিদ রানা ও হাসান মাহমুদের অবদানে প্রতিপক্ষকে অল্পে বেঁধে ফেলে বাংলাদেশ। আর সেটাই যথেষ্ট হয় জয়ের জন্য।
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪:৫৪ এম
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪:০০ এম
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩:০৭ এম
প্রথম সেশনের পর দ্বিতীয় সেশনেও ভারতকে চাপে রেখে ম্যাচের লাগাম নিজেদের হাতেই রেখেছিল বাংলাদেশ। তবে রবীচন্দ্রন অশ্বিন ও রবীন্দ্র জাদেজার অনবদ্য এক জুটিতে দিন শেষে স্বাগতিকরাই আছে শীর্ষে। এরই মধ্যে বোর্ডে জমা হয়েছে শক্তিশালী স্কোর। এমন পরিস্থিতি থেকে ম্যাচে ফেরার জন্য প্রথম দিনের ‘হিরো’ হাসান মাহমুদ মনে করেন, প্রতিপক্ষকে যেভাবেই হোক চারশ'র আগেই আটকাতে হবে তাদের।
প্রথম সেশনে তিন উইকেট হারানো ভারত দ্বিতীয় সেশনেও তিন উইকেট হারিয়ে এক পর্যায়ে চাপের মুখে ছিল ১৪৪ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে। তবে আটে নামা অশ্বিনের সেঞ্চুরি ও জাদেজার ফিফটিতে ভারত দিন শেষ করেছে ৩৩৯ রানে, উইকেট সেই ছয়টিই। দুজনই যেভাবে সেট হয়েছেন আর রান করছেন আগ্রাসী মেজাজে, তাতে কাল সকালে তাদের দ্রুত ফেরানোর কোনো বিকল্প নেই নাজমুল হোসেন শান্তর দলের।
সংবাদ সম্মেলনে হাসান জানিয়েছেন, প্রতিপক্ষকে যত কমে সম্ভব গুটিয়ে দেওয়াই এখন তাদের লক্ষ্য। “কালকে আমরা যদি চেষ্টা করি, যদি আর্লি উইকেট নিতে পারি তাহলে ম্যাচে ফিরে আসব। আমার মনে হয়, চারশর আগে অলআউট করতে পারলে খুব ভালো হবে আমাদের জন্য। তবে এখন উইকেট খুবই সহজ হয়ে গেছে। আমরা চেষ্টা করছি কীভাবে চাপ তৈরি করা যায়। কালকে ইনশাআল্লাহ্ এটাই করব।”
টেস্ট ক্রিকেটে মোমেন্টাম খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। একটি ছোট ইনিংস, একটি স্পেল, এমনকি একটি রান-আউটেও ঘুরে যায় ম্যাচের চিত্র। আর সেই কারনেই এক সময় প্রবল চাপের মুখে থাকা ভারত এখন চলে গেছে ‘ড্রাইভিং সিটে’। এর পেছনে শেষ সেশনে বোলারদের বেশি বেশি লুজ ডেলিভারি দেওয়া রেখেছে একটা বড় অবদান। বিশেষ করে শেষ দশ ওভারে অশ্বিন-জাদেজা তো রান করেছেন ওয়ানডে মেজাজে।
প্রথম দিনে চার উইকেট হাসান অবশ্য আশাবাদী, ম্যাচে ফেরার ভালো সুযোগ এখনও আছে তাদের সামনে। “আমার মনে হয়, বোলিংটা একটু ইকোনমিক্যাল হতে পারত, গুছানো হতে পারত। চেষ্টা করছি, সবাই মিলে একটু ভালো জায়গায় বল করে ব্যাটসম্যানকে চাপে রাখতে। এখন মোমেন্টাম ওদের দিকে আছে। কালকে দ্রুত অলআউট করতে পারলে মোমেন্টাম আমাদের দিকে আসবে। চারশর আগে অলআউট করতে পারলে ভালো হবে।”
ভারতের মাটিতে সফরকারী দলের জন্য অধিকাংশ পেসারদের জন্য অপেক্ষা করে কঠিন পরীক্ষা। তবে চলমান চেন্নাই টেস্টের প্রথম দিনে হাসান মাহমুদ দেখিয়েছেন, এখানেও বল হাতে ব্যাটারদের চ্যালেঞ্জ জানানোর স্কিল তার আছে। প্রথম সেশনে দুই দিকে সুইং করিয়ে খাবি খাইয়েছেন রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলির মত ব্যাটারদেরও। তরুণ এই পেসার মনে করেন, নিজের শক্তির জায়গা কাজে লাগিয়েই সফলতা পেয়েছেন তিনি।
পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের সিরিজ জয়ের পথে দ্বিতীয় টেস্টর দ্বিতীয় ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেন হাসান। সেই ফর্ম ধরে রেখে এই টেস্টের প্রথম স্পেলে ব্যাটারদের কাঁপন ধরিয়ে দেন এই ডানহাতি পেসার। একে একে ফেরান রোহিত, শুবমান গিল ও কোহলিকে। ফিরতি স্পেলে এসে পরে শিকার বানান রিশাভ পান্তকেও। প্রথম দিনে চার উইকেট নিয়ে হাসানই বাংলাদেশের সেরা বোলার।
দিনের খেলে শেষে সংবাদ সম্মেলনে হাসান বলেছেন, স্রেফ পরিকল্পনা অনুযায়ী বল করার চেষ্টা করেছেন তিনি। “আমার প্ল্যান খুব সিম্পল ছিল। নতুন বলে আমি নিজের শক্তি অনুযায়ী বোলিংয়ের চেষ্টা করেছি। যেটা আমি ভালো পারি, সেটাই পুরো সময় করতে চেয়েছি। এরই ফল পেয়েছি। সবাই নিজেদের সেরাটা দিয়েছে। আমি নিজের জোনে ছিলাম। যেকোনো ব্যাটসম্যানের উইকেট নেওয়া আনন্দের বিষয়। তো খুব ভালো লাগছে। যেটা বললাম, আমার প্ল্যান খুব সিম্পল ছিল। শেপ ঠিক রেখে সিম আপ করার চেষ্টা করেছি, শেপ এওয়ে করার চেষ্টা করেছি।”
ভারতের মাটিতে ২০০০ সালের পর সফরকারী একটি দলের মাত্র দ্বিতীয় পেসার হিসেবে টেস্টের প্রথম দিনে চার বা বেশি উইকেট নিয়েছেন হাসান। এর আগে এই কীর্তি ছিল কেবল সাবেক দক্ষিণ আফ্রিকান পেসার ডেল স্টেইনের। তিনি নিয়েছিলেন পাঁচ উইকেট। কাল পাঁচ উইকেট শিকারের সম্ভাবনা থাকবে হাসানের সামনেও।
টানা দুই টেস্টে পাকিস্তানের পর ভারতের মাটিতেও পাঁচ উইকেট নিতে পারলে সেটা হাসানের জন্য অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে। তবে বরাবরই নিরাবেগ এই উদীয়মান পেসার এই ক্ষেত্রেও দেখালেন না বাড়তি আবেগ। “টেস্ট ম্যাচে উইকেট পাওয়াই আনন্দদায়ক আমার কাছে। পাকিস্তানে ৫ উইকেট পেয়েছি, ওটার ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চেষ্টা করছি, যতটুকু দলের জন্য করতে পারি নিজের সেরাটা দিয়ে।”
লাল মাটির উইকেটের পাশাপাশি দুই দলের স্কোয়াডে স্পিনারদের আধিক্যের কারণে মনে হচ্ছিল, চেন্নাই টেস্টে হয়ত স্পিনাররা ভালো করবেন। তবে প্রথম দিনে সেটা আর হয়নি। দাপট দেখিয়েছেন বাংলাদেশের পেসাররা। তবে সেটা সামলে দারুণ এক সেঞ্চুরিতে ভারতকে শক্ত অবস্থানে নিয়ে গেছেন রবীচন্দ্রন অশ্বিন। ঘরের মাঠ বলেই এখানকার উইকেটের আচরণ তার খুব চেনা। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই ভারত স্পিনার জানিয়েছেন, সময় যত গড়াবে স্পিনাররা ততই সফলতা পাবেন।
এই টেস্টে দুই দলই নেমেছে একাদশে তিন পেসার ও দুই স্পিনার নিয়ে। টসে জিতে আগে বোলিং নেওয়া বাংলাদেশকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন হাসান মাহমুদ। তিনি সহ অন্য দুই পেসার তাসকিন আহমেদ ও হাসান মাহমুদ গতি, সুইং, মুভমেন্ট দিয়ে ভালোই ভুগিয়েছেন ব্যাটারদের। তাতে এক পর্যায়ে ১৪৪ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে প্রবল চাপের মুখে পড়েছিল ভারত। সেখান থেকে অপরাজিত সেঞ্চুরিতে ভারতের ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন অশ্বিন।
দিনের খেলা শেষে চেন্নাইয়ের ঘরের ছেলে অশ্বিন বলেছেন, দ্বিতীয় দিনেও পেসাররা উইকেট বেশ কিছুটা সাহায্য পাবেন। “এটা একটা সাধারণ, চিরচেনা চেন্নাই উইকেট, যেখানে ওভারস্পিন করলে কিছুটা বাউন্স থাকবে। ম্যাচের অনেক পরের দিকে উইকেট তার খেলা দেখাতে শুরু করবে। স্পিনাররা পরের দিকে সুবিধা পাবে। আমরা যদি সিম সুন্দর রাখতে পারি, তাহলে গতিময়, ভালো ক্যারি, ভালো বাউন্সের জন্য যথেষ্ট উপাদান থাকবে। নতুন বল কিছুটা কাজ করে দেবে, বোলারদের জন্যও কিছু সাহায্য থাকবে। আগামীকাল আমাদের নতুন করে শুরু করতে হবে।”
অশ্বিন যখন নেমেছিলেন, ১৪৪ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ভারত রীতিমত কাঁপছিল। স্পেশালিষ্ট স্পিনার হিসেবে খেললেও অশ্বিন ব্যাটার হিসেবে অনেকবার দেখিয়েছেন তার উইলোর জাদু। আর সেটাই আরও একবার হাজির হয় প্রচণ্ড চাপের মুখেই। রবীন্দ্র জাদেজাকে নিয়ে গড়েন দুর্দান্ত ১৯৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি, যা ভারতকে দিন শেষে এনে দিয়েছে ৬ উইকেটে ৩৩৯ রানের স্কোর।
এই পথচলায় অশ্বিন তুলে নিয়েছেন টেস্ট ক্যারিয়ারের পঞ্চম শতক। ৫০০ উইকেট নেওয়া বোলারদের মধ্যে সেঞ্চুরি করার দিক থেকে কেউ নেই তার ধারেকাছেও। এমন ব্যাটিংয়ের রহস্য কী? অশ্বিন শোনালেন নিজেকে শাণিত করার গল্প। “অবশ্যই, আমি সবসময় আমার ব্যাট অফ স্টাম্পের বাইরে চালিয়ে এসেছি। মাত্রই একটা টুর্নামেন্ট খেলে এসেছি যা আমাকে সাহায্য করেছে। কিছু জিনিস নিয়ে কাজ করেছি। এই ধরণের উইকেটে যেখানে একটু স্পাইস আছে, সেখানে আপনি যদি শট খেলতে চান, তাহলে রিশাভের (পান্তের) মতই খেলতে হবে।”
১ দিন আগে
১ দিন আগে
১ দিন আগে
২ দিন আগে
৩ দিন আগে
৩ দিন আগে
৩ দিন আগে
৪ দিন আগে
৪ দিন আগে
৫ দিন আগে
৫ দিন আগে
৭ দিন আগে
৮ দিন আগে
৮ দিন আগে
৮ দিন আগে
১ দিন আগে
১ দিন আগে
১ দিন আগে
২ দিন আগে
৩ দিন আগে
৩ দিন আগে
৩ দিন আগে
৪ দিন আগে
৪ দিন আগে
৫ দিন আগে
৫ দিন আগে
৭ দিন আগে
৮ দিন আগে
৮ দিন আগে
৮ দিন আগে
১ দিন আগে
১ দিন আগে
১ দিন আগে
২ দিন আগে
৩ দিন আগে
৩ দিন আগে
৩ দিন আগে
৪ দিন আগে
৪ দিন আগে
৫ দিন আগে
৫ দিন আগে
৭ দিন আগে
৮ দিন আগে
৮ দিন আগে
৮ দিন আগে
১ দিন আগে
১ দিন আগে
১ দিন আগে
২ দিন আগে
৩ দিন আগে
৩ দিন আগে
৩ দিন আগে
৪ দিন আগে
৪ দিন আগে
৫ দিন আগে
৫ দিন আগে
৭ দিন আগে
৮ দিন আগে
৮ দিন আগে
৮ দিন আগে