২১ জুলাই ২০২৫, ৩:১৩ পিএম

এক বছরেরও বেশি সময় পর মিরপুরে টি-টোয়েন্টিতে প্রত্যাবর্তনের ম্যাচ বাংলাদেশ দল জয় দিয়ে রাঙালেও আলোচনায় এসেছে উইকেটের আচরণ। শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের চিরচেনা ধীরগতির উইকেট অবশ্য পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে দেখা যায়নি। এরপরও মাত্র ১১০ রানে গুটিয়ে বড় ব্যবধানে হেরে যাওয়া পাকিস্তান কোচ মাইক হেসন সরাসরি কাঠগড়ায় তুলেছেন উইকেটকে, যা তার কাছে মনে হয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য অগ্রহণযোগ্য। আসলেই কি তাই?
মিরপুরের উইকেট নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা নতুন কিছু নয়। বিশেষ করে ২০ ওভারের ক্রিকেটে যেখানে আবেদন থাকে স্পোর্টিং উইকেটের, সেখানে অধিকাংশ সময়ই এখানে দেখা মেলে বেশ স্লো, টার্নিং ও নিচু বাউন্সের। ফলে ব্যাটাররা পারেন না সহজাত আগ্রাসী ব্যাটিং করতে, আর বোলাররা দেখান দাপট। ফলাফল যা হওয়ার তাই হয়, বোর্ডে রান হয় কম আর ম্যাচ হয় লো-স্কোরিং।
মোটা দাগে রাখলে রোববার বাংলাদেশ-পাকিস্তানের প্রথম ম্যাচটিকে সেই কাতারে আপনি রাখতেই পারেন। কারণ, আগে ব্যাট করা দল মাত্র ১১০ রানে অলআউট হয়ে যাওয়ার পর সেটা তাড়া করতে প্রতিপক্ষকে খেলতে হয়েছে ১৬তম ওভার পর্যন্ত। ম্যাচটি যদি ২০২১-২২ সালের দিকেও হত, হেসনের দাবিকে আপনি যৌক্তিক মনে করতেই পারতেন। তবে এটা তো ২০২৫ সালের ম্যাচ এবং বাংলাদেশ দল তাদের ব্যাটিংয়ের সময় দেখিয়ে দিয়েছে, মিরপুরের উইকেট অন্তত এদিন লো-স্কোরিং ছিল না।
অবশ্য বাংলাদেশের আগে আনা যেতে পারে পাকিস্তানের ইনিংসের কথাও। বাংলাদেশকে চাপে ফেলে প্রথম তিন ওভারেই দলটি তুলে ফেলেছিল ৩২ রান। তবে অতি আগ্রাসী হতে গিয়ে ভেঙে পড়ে তাদের ব্যাটিং অর্ডার। উইকেটের আচরণের সাথে তাল না মিলিয়ে বারবার বড় শট খেলতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন পাকিস্তান ব্যাটাররা। ৪৬ রানেই তাতে হারাতে হয় ৫ উইকেট।
এর মাঝেও ফখর জামান খেলেন ৩৪ বলে ৬ চার ও এক ছক্কায় ৪৪ রানের ইনিংস, যেখানে আবার তিনি জীবন পান দুই বার। এরপর আউট হন বিব্রতকর এক রান আউটে। পাকিস্তানের ইনিংসে এটি ছাড়াও ছিল আরও দুটি রান আউটের ঘটনা। একটি দলের তিন ব্যাটার যখন রান আউটের শিকার হন, ব্যাটিং বিপর্যয় তখন প্রায় অবধারিতই।
এর সাথে যোগ হয় মুস্তাফিজুর রহমানকে একেবারেই না বুঝতে পারা। এটা বলার তো অপেক্ষা রাখে না যে, মিরপুরের উইকেটে মুস্তাফিজুর বিশ্বের অন্যতম ভয়ংকর পেসার। তার স্লোয়ার, কাঁটার এখানে ভীষণ কার্যকর হয়। প্রথম ম্যাচে তিনি আবার ছিলেন নিজের সেরা ছন্দে। চার ওভারে ১৮টি ডট দিয়ে মাত্র ৬ রানে নেন ২ উইকেট।
তার মানে, বাকি ১৫.৩ ওভারে পাকিস্তান করেছে মোটে ১০৪ রান! এই ফরম্যাটে প্রতিপক্ষের একজন বোলার যদি চার ওভারে দেন মাত্র ৬ রান, তাহলে নিশ্চিতভাবে ব্যাটিং করা দলকে অন্য বোলারদের ওপর ভীষণ চড়াও হতেই হবে। পাকিস্তান দল সেটাও পারেনি। অধিকাংশ ব্যাটাররা বাজে শট খেলে উইকেট বিলিয়ে দিয়েছেন। ফলে ফখরের ইনিংস ও শেষের দিকে আব্বাস আফ্রিফির ক্যামিও বাদে রানের জন্য বেশ সংগ্রাম করতে হয়েছে সালমান আঘার দলকে।
ম্যাচ শেষে হেসন অবশ্য ব্যাটারদের ব্যর্থতা আড়াল করে অনেকটাই দায় চাপান উইকেটের ওপর। “এই উইকেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য গ্রহণযোগ্য নয়। এটা কোনো দলের জন্যই আদর্শ নয়। আমরা যে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সেটার দায় আমাদেরই। তবে এই ধরনের উইকেট আন্তর্জাতিক ম্যাচে ব্যবহার করা ঠিক নয়। হ্যাঁ, ফখর শুরুতে কিছু শট খেলেছিল। আর সেজন্যই আমাদের মনে হয়েছিল উইকেট হয়ত সহজ। কিন্তু আসলে তা ছিল না। বল মুভ করছিল বেশ, হঠাৎ হঠাৎ লাফ দিচ্ছিল। আর তখনই আমাদের ব্যাটাররা ভুল শট বেছে নিয়েছে। সাথে তিনটি রান আউটও আমাদের কাজটা আরও কঠিন করেছে।”
হেসনের মন্ত্যবের প্রেক্ষিতে আসা যাক বাংলাদেশের ইনিংস। তানজিদ হাসান তামিম ও লিটন দাস যখন আউট হন, তখন ২.২ ওভারে বোর্ডে রান মাত্র ৭। সেখান থেকে বাংলাদেশ ম্যাচ শেষ করেছে ২৭ বল হাতে রেখে। অর্থাৎ, পাকিস্তানের মত চাপের মুখে ছিল বাংলাদেশও, তবে এই উইকেটে সেটা কীভাবে কাউন্টার করতে হয়, সেই ব্যাপারে পারভেজ হোসেন ইমন ও তাওহীদ হৃদয় রেখেছিলেন স্বচ্ছ ধারণা। জুটিতে তাই একজন বলের মেধা বুঝে আক্রমণে গেছেন, অন্যজন আবার অনেকটা ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাট করেছেন।
টার্গেট ছোট হওয়ায় এটাই ছিল ব্যাট করার সেরা উপায়। শেষ পর্যন্ত তাওহীদ ৩৭ বলে ৩৬ করে আউট হলেও ইমন ম্যাচ জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন। খেলেন মাত্র ৩৯ বলে ৫৬ রানের ইনিংস, যা তিনি সাজান ৫ ছক্কা ও ৩ বাউন্ডারিতে। সাথে শেষের দিকে ১৫ রানের ক্যামিও খেলেন জাকের আলি অনিক।
এই তিনজনের ব্যাটিংই বলে দেয়, দ্বিতীয় ইনিংসেও মিরপুরের উইকেট মোটেও ব্যাটিং বিরুদ্ধ ছিল না। টার্গেট নাগালের মধ্যে থাকায় রয়েসয়ে ব্যাট করেছে বাংলাদেশ। নাহলে অনায়াসেই তারা এই রান ১২-১৩ ওভারের মধ্যেও তাড়া করতে পারতেন। সব মিলিয়ে তাই বলা যায়, পাকিস্তান তাদের ব্যাটিং পরিকল্পনা যদি বাস্তবায়ন করতে পারত, তাহলে ১৫০-১৬০ রান খুব সম্ভব ছিল তাদের জন্য। বাংলাদেশের ইনিংস তারই প্রমাণ।
অথচ হেসন কিনা অতীতের মিরপুরের উইকেটের সাথে এই ম্যাচের উইকেটের মিল টেনে দিয়েছেন সতর্ক বার্তা। “ভালো ক্রিকেটার তৈরি করতে হলে ভালো মানের উইকেট দরকার। বিপিএলে কিছু ভালো উইকেট দেখা গেছে ঠিকই, কিন্তু আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে এই উইকেটের কোনো মিল নেই। বাংলাদেশ দল যখন বিদেশে খেলে, তখন এমন উইকেট কিন্তু তাদের কোনো সাহায্য করে না। আপনি জানেন না এখানে ১০০, ১৩০ বা ১৫০ – কোনটা ভালো স্কোর। এটা কোনো দলের জন্যই ইতিবাচক নয়।”
হেসন আধুনিক ক্রিকেটের অন্যতম সেরা কোচদের একজন। ক্রিকেট বিশ্লেষক হিসেবেও তার জুড়ি মেলা ভার। ক্রিকেটে ডাটার ব্যবহার তিনি বেশ করেন। অথচ পাকিস্তান কোচ কিনা তার দলের ব্যাটারদের ব্যর্থতা আড়াল করলেন উইকেটের ওপর দোষ চাপিয়ে, যা বেশ হতাশাজনকই। তিনি যদি ঠিক হতেন, তাহলে একই উইকেটে বাংলাদেশ দলকেও করতে হত অনেক সংগ্রাম। ১১১ রান করতেই দেখা যেত উইকেটে চলে গেছে ৭-৮টি, আর ম্যাচ গড়িয়েছে ১৯-২০ ওভারে। এর কোনোটিই যেহেতু হয়নি, তাই হেসনের অভিযোগ আর ধোপে টেকে না, অন্তত এই ম্যাচের প্রেক্ষাপটে।
No posts available.
৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ৪:১৩ পিএম
৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৩৯ পিএম

আজাদ জম্মু ও কাশ্মীরের মুজাফফরাবাদ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) ম্যাচ আয়োজনের পরিকল্পনা করেছে পিসিবি। ২০২৬ পিএসএলের কয়েকটি ম্যাচ ভেন্যুটিতে। লন্ডনের লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে আয়োজিত পিএসএলের রোডশোতে এ ঘোষণা দিয়েছেন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি।
নাকভি জানান, মুজাফফরাবাদ স্টেডিয়ামে পিএসএল আয়োজনের প্রস্তুতি শুরু করেছে পিসিবি। আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিত করতে ভেন্যুটি উন্নয়নের উদ্যোগও নিয়েছে বোর্ড। তাঁর ভাষায়, ‘মুজাফফরাবাদ ক্রিকেট স্টেডিয়ামকে আমরা সর্বোচ্চ মানে উন্নত করব।’
পিসিবি চেয়ারম্যান নাকভি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের জন্য প্রয়োজনীয় সব সুযোগ–সুবিধাই মুজাফফরাবাদে রয়েছে। সেখানে পাঁচতারকা মানের হোটেলসহ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আয়োজনের মতো পরিবেশ তৈরি আছে।’
নাকভি জানান, শুধু পিএসএল নয়, ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক ম্যাচও আয়োজন করা হবে আজাদ জম্মু ও কাশ্মীরে। তবে মুজাফফরাবাদে কয়টি পিএসএল ম্যাচ হবে, তা এখনো চূড়ান্ত করেনি পিসিবি।
২০১৬ সালে পাঁচ দল নিয়ে যাত্রা শুরু করা পিএসএলে আগামী সংস্করণ থেকে যুক্ত হতে যাচ্ছে আরও দুটি নতুন দল। ১১তম আসর থেকেই আট দলের লিগে রূপ নেবে টুর্নামেন্টটি। আগামী বছরের এপ্রিল-মে মাসে হওয়ার কথা ২০২৬ পিএসএল।

টি-টোয়েন্টির মারকাটারি যুগে এখন হরহামেশাই দেখা যায় ব্যক্তিগত সেঞ্চুরি। তবে একই ইনিংসে দুই ব্যাটারের সেঞ্চুরির ঘটনা খুব বেশি নেই। বিশ্ব ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে খেলা হয়েছে ৩২ হাজারের বেশি দলীয় ইনিংস।
এর মধ্যে এক ইনিংসে দুই ব্যাটারের সেঞ্চুরি দেখা গেছে মাত্র ১০ বার। এর দুটিতে জড়িয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) নাম। যার সবশেষটি আবার বিপিএলের গত আসরেই।
রংপুর রাইডার্সের দুই ব্যাটার রাইলি রুশো ও অ্যালেক্স হেলস ২০১৯ সালের বিপিএলে এবং ২০২৫ সালে বিপিএলের সবশেষ আসরে ঢাকা ক্যাপিটালসের দুই ব্যাটার লিটন কুমার দাস ও তানজিদ হাসান পান সেঞ্চুরির দেখা।
২০১৯ সালের বিপিএলে চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে শুরুতেই ফিরে যান ক্রিস গেইল। এরপর তাণ্ডব শুরুর করেন রুশো ও হেলস। দুজন মিলে দ্বিতীয় উইকেটে গড়ে তোলেন ১৭৪ রানের জুটি। ১১ চারের সঙ্গে ৫ ছক্কায় ৪৮ বলে ঠিক ১০০ রান করে ফেরেন হেলস।
আরও পড়ুন
| ৭ ইনিংসে ৩২ ছক্কা, এবার ব্যাট হাতে বিধ্বংসী রনি |
|
শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে রুশো খেলেন ৮ চার ও ৬ ছক্কায় ৫১ বলে ১০০ রানের ইনিংস। স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে এক ইনিংসে দুই সেঞ্চুরির মাত্র তৃতীয় ঘটনা ছিল এটি।
এর ছয় বছর পর বিপিএলের গত আসরে দুর্বার রাজশাহীর বিপক্ষে ঝড় তোলেন লিটন ও তামিম। দুই ওপেনার মিলে উদ্বোধনী জুটিতে যোগ করেন ২৪১ রান। ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের ইতিহাসে যে কোনো উইকেটে এটিই সর্বোচ্চ রানের জুটি।
সেদিন ইনিংসের শেষ ওভারে আউট হন ৬ চার ও ৮ ছক্কায় ৬৪ বলে ১০৮ রান করা তামিম। আর শেষ পর্যন্ত খেলে ১০ চার ও ৯ ছক্কায় মাত্র ৫৫ বলে ১২৫ রান করেন লিটন। দুজন তাণ্ডবে ১ উইকেটে ২৫৪ রান করে ঢাকা। যা বিপিএলে সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর।
সব মিলিয়ে স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে এক ইনিংসে জোড়া সেঞ্চুরির ঘটনা ১০টি। এর সর্বোচ্চ ৩টি হয়েছে ভারতের ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট আইপিএলে।
আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এক ইনিংসে জোড়া সেঞ্চুরি হয়েছে তিনটি। ২০২২ সালে চেক প্রজাতন্ত্র ও গত বছর জাপান এবং ভারতের দুই ব্যাটার একই ইনিংস করেছেন সেঞ্চুরি।

ইংলিশ গতি তারকার ছিটকে যাওয়া অনেকটা অনুমিতই ছিল। শেষ পর্যন্ত তাই হলো। পার্থ টেস্টে চোট পাওয়া মার্ক উডের অ্যাশেজের বাকি অংশ খেলা হচ্ছে না। সিরিজের প্রথম টেস্টে তাঁর বাঁ হাঁটুর চোট আবার ফিরে আসে। উডের পরিবর্তে ইংল্যান্ড দলে যোগ দিবেন ম্যাথু ফিশার।
অন্তত মেলবোর্ন ও সিডনিতে শেষ দু’টি টেস্টে খেলার আশায় ছিলেন উড। তবে ৩৬ বছর বয়সী এই পেসারের ওপর যে বয়সের প্রভাবও পড়ছে সেটাও স্বীকার করেন।ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) জানিয়েছে, ‘উড এই সপ্তাহের শেষের দিকে দেশে ফিরে আসবেন এবং দলের মেডিক্যাল টিমের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করবে তার পুনর্বাসন ও সুস্থতার জন্য।’
গত ফেব্রুয়ারিতে ইংল্যান্ডের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি অভিযান থেকে হাঁটুর চোটের জন্য অস্ত্রোপচার করিয়েছিলেন উড। পার্থে সিরিজের প্রথম টেস্ট ছিল তার ১৫ মাস পর প্রথম টেস্ট। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আট উইকেটে হেরে যাওয়া ম্যাচে ১১ ওভার বোলিং করলেও কোনো উইকেট পাননি তিনি। ব্রিসবেনে দ্বিতীয় টেস্টে ছিলেন না উড, ওই টেস্টেও ৮ উইকেটে হেরে তাঁর দল অ্যাশেজে ০-২ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে।
উডের বদলি হিসেবে দলে সুযোগ পাওয়া ফিশার এখন পর্যন্ত ইংল্যান্ডের হয়ে মাত্র একটি টেস্টই খেলেছেন। ছয় ফিট দুই ইঞ্চি উচ্চতার এই পেসারের একমাত্র টেস্ট ম্যাচটি ছিল ২০২২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। ২৮ বছর বয়সী ডানহাতি পেসার ইতিমধ্যেই অস্ট্রেলিয়ায় ইংল্যান্ড লায়ন্স দলের হয়ে খেলছেন, এই সপ্তাহে সিনিয়র দলে যোগ দেবেন। অ্যাডিলেডে তৃতীয় টেস্ট শুরু হবে ১৭ ডিসেম্বর।
এর আগে দিনের শুরুতে জশ হ্যাজেলউডের পুরো অ্যাশেজ থেকে ছিটকে পড়ার খবর জানায় অস্ট্রেলিয়া। তবে ইতিমধ্যেই ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে থাকা স্বাগতিকদের স্কোয়াড আরও শক্তিশালী হচ্ছে প্যাট কামিন্সের ফেরায়। পিঠের সমস্যার কারণে দ্বিতীয় টেস্টে মাঠের বাইরে থাকা উসমান খাজাও ফিরতে পারেন অজি দলে।

মূল পরিচয় বাঁহাতি পেসার হলেও, এবারের জাতীয় লিগে ব্যাট হাতে রীতিমতো তাণ্ডব চালিয়েছেন আবু হায়দার রনি। বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে পেস বোলিং অলরাউন্ডার তকমাটা বেশ ভালোভাবেই নিজের নামের সঙ্গে এঁটে নিয়েছেন ৩০ ছুঁইছুঁই ক্রিকেটার।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জাতীয় লিগের সপ্তম ও শেষ ম্যাচে সবচেয়ে বড় ঝড় তুলেছেন রনি। রাজশাহীর বিপক্ষে ১০ চারের সঙ্গে ১৩টি ছক্কা মেরে ১২৭ বলে ১৪১ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছেন ময়মনসিংহ বিভাগের তারকা অলরাউন্ডার।
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বাংলাদেশের ব্যাটারদের মধ্যে এক ইনিংসে এর চেয়ে বেশি ছক্কা আছে শুধু দুজনের। ২০১৪ সালের জাতীয় লিগে ১৬৮ রানের ইনিংসে ১৬টি ছক্কা মেরেছিলেন মুক্তার আলি। এর আগে ২০১২ সালের বিসিএলে ১৫২ করার পথে ১৫টি ছক্কা মারেন জিয়াউর রহমান।
রনির সমান ইনিংসে ১৩টি ছক্কা আছে জিয়াউর ও আব্দুল্লাহ আল মামুনের। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ছক্কার বিশ্ব রেকর্ড তন্ময় আগারওয়ালের- গত বছর রঞ্জি ট্রফিতে ৩৩৬ রানের ইনিংসে ২৬টি ছক্কা মারেন ভারতীয় ব্যাটার
বাংলাদেশ 'এ' দলের হয়ে হংকং সিক্সেস ও এশিয়া কাপ রাইজিং স্টারস টুর্নামেন্ট খেলতে চলে যাওয়ায় এবার জাতীয় লিগের সব ম্যাচ খেলতে পারেননি রনি। তবে ৪ ম্যাচের ৭ ইনিংস ব্যাটিং করেই ছক্কার এমন উচ্চতায় উঠেছেন, যার অর্ধেকেও নেই কেউ।
এবারই প্রথম জাতীয় লিগে অংশ নিয়েছে ময়মনসিংহ। দলটির হয়ে ৪ ম্যাচের ৭ ইনিংসে ৩২টি ছক্কা মেরেছেন রনি। আর চার মেরেছেন ৩১টি। অর্থাৎ চারের চেয়ে তার ছক্কার সংখ্যাই বেশি।
সব মিলিয়ে এই ৭ ইনিংসে ১০৫.২৫ গড়, ১১৬.৯৪ স্ট্রাইক রেটে ৪২১ রান করেছেন রনি। শুধু বাউন্ডারি থেকে তিনি করেছেন ৩১৬ রান। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে যা অবিশ্বাস্য বললেও হয়তো কম হবে!
এবারের জাতীয় লিগে আর কোনো ব্যাটার ১৫টি ছক্কাও মারতে পারেননি। দশ বা এর বেশি ছক্কা মারতে পেরেছেন শুধু চার জন- জিয়াউর রহমান (১৩), সোহাগ গাজী (১২), সৌম্য সরকার (১২) ও মোহাম্মদ নাঈম শেখ (১০)।
লিগে আড়াইশ রান করা ব্যাটারদের মধ্যে আর কারও ৮০ স্ট্রাইক রেট বা ৬৫ গড়ও নেই।
আরও পড়ুন
| আইপিএল নিলামে নেই সাকিব, আছেন বাংলাদেশের ৭ জন |
|
সিলেটের বিপক্ষে টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচেই ব্যাট হাতে জাদু দেখান রনি। আট নম্বরে নেমে ১০ চার ও ৬ ছক্কায় প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি করে ১০৭ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি।
দ্বিতীয় রাউন্ডে রংপুরের বিপক্ষে ২ চার ও ৫ ছক্কায় তার ব্যাট থেকে আসে ৩৪ বলে ৬০ রানের অপরাজিত ইনিংস।
এরপর 'এ' দলের ডাকে চলে যাওয়ায় টানা তিন রাউন্ড খেলা হয়নি রনির। ষষ্ঠ রাউন্ডে ফিরে আবার ঝড় তোলেন তিনি। এবার ৮ চারের সঙ্গে ৭ ছক্কায় ৭৬ বলে তিনি খেলেন ৯৭ রানের ইনিংস। অল্পের জন্য সেঞ্চুরি মিসের হতাশায় পোড়েন তিনি।
আর শেষ রাউন্ডে রনি ফিরিয়ে আনেন প্রথম রাউন্ডের স্মৃতি। এবার ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসে রাজশাহীর বোলারদের কচুকাটা করে ১০ চারের সঙ্গে মারেন ১৩টি, খেলেন ক্যারিয়ার সেরা ১৪১ রানের অপরাজিত ইনিংস।
রনির বিধ্বংসী সেঞ্চুরির পরও অবশ্য জিততে পারেনি ময়মনসিংহ। ৪২৮ রানের বিশাল লক্ষ্য দিয়ে ১৪৬ রানে জিতেছে রাজশাহী। রনি ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেললেও ২৮১ রানের বেশি করতে পারেনি ময়মনসিংহ।
দুই ইনিংসেই ৫টি করে উইকেট নিয়ে রাজশাহীর জয়ের নায়ক অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনার সানজামুল ইসলাম

২০২৬ আইপিএল (ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ) নিলামের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। শুরুতে বিসিসিআই বিশ্বের ১৪টি দেশের ১,৩৫৫ জনের একটি বড় তালিকা পাঠিয়েছিল। সেখান থেকে কোন খেলোয়াড়দের নিলামে দেখতে চায় তা জানতে চেয়েছিল ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর কাছে। শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত তালিকায় জায়গা পেয়েছেন মোট ৩৫০ জন।
আগামী ১৬ ডিসেম্বর আবুধাবির ইতিহাদ অ্যারেনায় অনুষ্ঠেয় নিলামে আছেন বাংলাদেশের সাত ক্রিকেটার। জায়গা হয়নি সাকিব আল হাসানের। প্রাথমিক তালিকায় ১ কোটি রুপি ভিত্তিমূল্যে নাম ছিলেন বাংলাদেশের এই অলরাউন্ডার।
বাংলাদেশের সাত জনের মধ্যে আছেন মোস্তাফিজুর রহমান, রিশাদ হোসেন, তাসকিন আহমেদ, নাহিদ রানা, তানজিম হাসান সাকিব, রাকিবুল হাসান ও শরীফুল ইসলাম। প্রথমবারের মতো আইপিএলের নিলামের তালিকায় উঠল বাঁহাতি স্পিনার রাকিবুলের নাম।
প্রাথমিক তালিকায় সর্বোচ্চ ২ কোটি তার ভিত্তিমূল্য ধরা রাখা হয় বাঁহাতি পেসার মোস্তাফিজকে। আইপিএলে নিয়মিত মুখ ‘কাটার মাস্টার’ এ পর্যন্ত সাত মৌসুমে পাঁচটি ভিন্ন ভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে খেলেছেন। সবশেষ ২০২৫ আসরে তাকে দেখা গেছে দিল্লি ক্যাপিটালসের জার্সিতে।
আরও পড়ুন
| অস্ট্রেলিয়ার একটি সুসংবাদ ও একটি দুঃসংবাদ |
|
নিলামে তাসকিন, তানজিম সাকিব, শরীফুল ও নাহিদ রানার ভিত্তিমূল্য ধরা হয়েছে ৭৫ লাখ রূপি। আর রাকিবুলের ৩০ লাখ।
আইপিএলের চূড়ান্ত তালিকায় যুক্ত হয়েছে অতিরিক্ত ৩৫টি নতুন নাম। বিসিসিআইয়ের নিয়ম অনুযায়ী, নিলাম শুরু হবে ক্যাপড খেলোয়াড়দের দিয়ে—ব্যাটার, অলরাউন্ডার, উইকেটকিপার-ব্যাটার, ফাস্ট বোলার ও স্পিনার। এরপর উঠবেন আনক্যাপড খেলোয়াড়রা।
এবারের নিলাম থেকে ৭৭ জন ক্রিকেটার দল পেতে পারেন। এর মধ্যে বিদেশি ক্রিকেটার হতে পারেন ৩১ জন। সর্বোচ্চ ৬৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা বাকি আছে কলকাতা নাইট রাইডার্সের। তাদের স্কোয়াডে জায়গা বাকি ১৩ জনের।
নতুন অন্তর্ভুক্ত বিদেশি খেলোয়াড় :
আরাব গুল (আফগানিস্তান), মাইলস হ্যামন্ড (ইংল্যান্ড), ড্যান লেটেগান (ইংল্যান্ড), কুইন্টন ডি কক (দক্ষিণ আফ্রিকা), কনর এজারহুজেন (দক্ষিণ আফ্রিকা), জর্জ লিন্ডে (দক্ষিণ আফ্রিকা), বায়ান্ডা মাজোলা (দক্ষিণ আফ্রিকা), ত্রাভিন মথিউ (শ্রীলঙ্কা), বিনুরা ফার্নান্দো (শ্রীলঙ্কা), কুসল পেরেরা (শ্রীলঙ্কা), দুনিথ ওয়েলালাগে (শ্রীলঙ্কা), আকিম অগাস্ট (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)।
নতুন অন্তর্ভুক্ত ভারতীয় খেলোয়াড় :
সাদেক হুসেইন, বিষ্ণু সোলাঙ্কি, সাবির খান, ব্রিজেশ শর্মা, কণিষ্ক চৌহান, অ্যারন জর্জ, জিক্কু ব্রাইট, শ্রীহরি নায়ার, মাধব বাজাজ, শ্রীবৎস আচার্য, যশরাজ পুঞ্জা, সাহিল পরাখ, রোশন ওয়াঘসারে, যশ দিচলকার, আয়াজ খান, ধূরমিল মাটকার, নমান পুশপক, পারিকশিত ভালসঙ্গকর, পুরভ আগরওয়াল, রিশভ চৌহান, সাগর সোলাঙ্কি, ইযাজ সাওয়ারিয়া এবং আমান শেকাওয়াট।