বোলাররা সবাই মিলে রাখলেন সমান অবদান। তামিম ইকবালের শুরুর ঝড় গতিতে আটকালেন নাহিদ রানা। এরপর পথ হারানো ফরচুন বরিশাল টেনেটুনে পেল একটা লড়াই করার মত স্কোর। দ্রুত দুই উইকেট হারালেও অ্যালেক্স হেলস ও সাইফ হাসানের শতরানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে রংপুর রাইডার্স পেল আরও একটি সহজ জয়। আসরে এটি নুরুল হাসান সোহানের দলের টানা তৃতীয় জয়।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ষষ্ঠ ম্যাচে রংপুর জিতেছে ৮ উইকেটে। বরিশাল গুটিয়ে গিয়েছিল ১২৪ রানে। ৩০ বল হাতে রেখে অনায়াসেই জয় তুলে নিয়েছে একবারের বিপিএল চ্যাম্পিয়ন রংপুর।
রান তাড়ায় প্রথম ওভারে শাহিন শাহ আফ্রিদিকে চার মেরে সূচনা করেন প্রথম দুই ম্যাচে ব্যর্থ হওয়া হেলস। ওপেনিং জুটিতে এই ম্যাচে বদল এনেও অবশ্য কাজের কাজ হয়নি রংপুরের। বিপিএলে নিজের অভিষেক ম্যাচে রানের খাতা খোলার আগে বিদায় নেন এই ম্যাচ দিয়ে একাদশে আসা আজিজুল হাকিম। দুই বল বাদে তাকে অনুসরণ করেন তৌফিক খানও।
তবে দুই উইকেটের ওভারের শেষটা ভালো হয়নি ইকবাল হোসেন ইমনের। দুই চার সহ বাকি তিন বলে ১০ রান নেন সাইফ হাসান। হেলস ও সাইফ মিলে পাওয়ার প্লের বাকিটা কাটিয়ে দেন ভালোভাবেই, বোর্ডে জমা হয় ৪৮ রান৷ এরপর ইমনের ওপর ফের চড়াও হন সাইফ।
সপ্তম ওভারে এক ছক্কা মারার পর ঝড় বইয়ে দেন নবম ওভারে। তিনটি চারের পাশাপাশি একটি ছক্কায় ওই ওভারে আসে ২০ রান, যা জয়ের পথে অনেকটাই এগিয়ে দেয় রংপুরকে।
এরপর হাত খোলেন হেলস। মাত্র ৩৮ বলে এই বিপিএলে নিজের প্রথম ফিফটি তুলে নেন সাইফ। এরপর শাহিনের এক ওভারে তিনি ও হেলস মিলে দুটি ছক্কা মেরে জয়ের আনুষ্ঠানিকতা এগিয়ে ফেলেন অনেকটাই।
দুজন মাঠ ছাড়েন দলকে জিতিয়ে ১১৩ রানের জুটিতে। সাইফ ৪৬ বলে করেন ৬২ রান। আর হেলসের নামের পাশে ৪৯ রান, ৪১ বলে।
এর আগে টস হেরে আগে ব্যাটিং করা বরিশালের শুরুটা ছিল উড়ন্ত। প্রথম ওভারের চার-ছক্কা মারেন তামিম ইকবাল। অন্যপ্রান্তে ছন্দহীন নাজমুল হোসেন শান্ত টানা দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যর্থ হলেও বরিশাল অধিনায়ক বজায় রাখেন আক্রমণ। শেখ মাহেদিকে মারেন টানা তিন বাউন্ডারি।
আক্রমণে এসেই তাওহীদ হৃদয়কে ফিরিয়ে দেন এই ম্যাচ দিয়ে দলে আসা পেসার আকিফ জাভেদ। টানা তিন বলে তামিমকে রান না করতে দিয়ে চাপে ফেলে দেন নাহিদ। অভিজ্ঞ এই ওপেনার ক্রিজ ছেড়ে বেড়িয়ে খেলতে এসে এরপর ক্লিন বোল্ড হন তরুণ এই পেসারের বলে।
মুশফিকুর রহিম ও কাইল মায়ার্স চেষ্টা করেন ইনিংস মেরামতের। তবে দুই ওভারের মধ্যে দুজনকেই হারিয়ে চাপে পড়ে যায় বরিশাল। বড় ধাক্কাটা দিয়ে একই ওভারে মায়ার্সের পর আগের ম্যাচে ফিফটি করা ফাহিম আশরাফকেও ফিরিয়ে দেন কামরুল ইসলাম রাব্বি।
৮০ রানে ৬ উইকেট হারালেও বরিশালের ভরসা ছিল দুই অভিজ্ঞ সেনানি মাহমুদউল্লাহ ও মোহাম্মদ নবির ওপর। আগের ম্যাচে দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলা মাহমুদউল্লাহ এদিন অবশ্য থামেন অল্পেই। ৯৮ রানে ৮ উইকেটে হারিয়ে ফেলা দলটির ১২০ রান পার করার পেছনে এরপর অবদান নবির।
নাহিদের এক ওভারে দুই চার ও এক ছক্কা মেরে শেষ পর্যন্ত রান আউট হওয়ার আগে আফগান অলরাউন্ডার করেন ১৯ বলে ২১।
১৮ রানে ৩ উইকেট নেন খুশদিল শাহ। সমান দুটি করে উইকেট নাহিদ আকিফের।
৬ জানুয়ারি ২০২৫, ৮:৪৪ পিএম
৬ জানুয়ারি ২০২৫, ৩:২৫ পিএম
দুর্বার রাজশাহীর শুরুটা হল দারুণ। তবে ভালো শুরু এনে দিলেও ছন্দে থাকা এনামুল হক বিজয় খেললেন ধীরগতির ইনিংস। অন্য ব্যাটাররাও শেষের ঝড় না তুলতে পারায় বোর্ডে জমা পড়ল কিছু রান কমই। রান তাড়ায় চলতি বিপিএলে প্রথমবারের মত চেনা ছন্দে হাজির হলেন তামিল ইকবাল। অধিনায়কের ম্যাচ জেতানো দুর্দান্ত ফিফটিতে ফরচুন বরিশাল পেল সহজ জয়।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) সিলেট পর্বের দ্বিতীয় ম্যাচে বরিশালের জয় ৭ উইকেটের। রাজশাহীর ৪ উইকেটে ১৬৮ রানের জবাবে তামিমের দল জিতেছে ১৫ বল হাতে রেখেই।
বরিশালের শুরুটা অবশ্য ছিল ধীর। তৃতীয় ওভারে তাসকিন আহমেদকে ছক্কা মেরে আগ্রাসন দেখান তামিম। ওপেনার প্রিতম কুমার অল্পে ফিরলেও চাপ বাড়তে দেননি কাইল মায়ার্স। ১১ বলে ২৪ রানে আউট হওয়ার আগে দলের জন্য কাজের কাজটা করে দেন এই ক্যারিবিয়ান ব্যাটার।
আরও পড়ুন
সেঞ্চুরি মিসের আক্ষেপ নেই সাইফের, আরও ভালো করার প্রত্যয় |
মোহর শেখের দুই বলে মারেন চার ও ছক্কা। রাজশাহীর চাপ বাড়িয়ে শফিউল ইসলামের এক ওভারে চারটি বাউন্ডারি মেরে পাওয়ার প্লেতে বরিশালের অবস্থান আরও শক্তিশালী করেন তামিম। তিনি একপ্রান্ত আগলে রানের চাকা সচল রাখলেও তাল মেলাতে পারেননি তাওহীদ হৃদয়। ১৪ বলে করতে পারেন মোটে ১৯।
মাত্র ৩০ বলে পঞ্চাশে পা রাখেন বরিশাল অধিনায়ক। সেখান থেকে দলকে জেতানোর পথে মূল কাজটা এগিয়ে নেন তামিমই। মুশফিকুর রহিম একপ্রান্ত আগলে জুটি গড়ে দেন যোগ্য সঙ্গ। শেষের দিকে তিনি খেলেন বড় শট। আর সেঞ্চুরির আশা জাগালেও দলের জয় নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় সেটা আর হয়ে ওঠেনি তামিমের।
তবে লং-অনের ওপর দিয়ে হাসান মুরাদকে ছক্কা মেরে ম্যাচের শেষ শটটি আসে তার ব্যাট থেকেই। ১১ চার ও ৩ ছক্কায় মাত্র ৪৮ বলে ৮৬ রানের মারমুখী ইনিংস খেলেন তামিম। ২৪ বলে ৩৪ রানে অপরাজিত থাকেন মুশফিকুর।
তামিমের তোপের সামনে রাজশাহীর বোলাররা প্রতিরোধ না গড়তে পারলেও কিছুটা দায় ব্যাটারদের দিতেই পারেন তাসকিন-শফিউলরা। দুর্দান্ত একটা শুরুর পর যে আশা ছিল ১৮০ প্লাস স্কোরের।
আরও পড়ুন
চেনা আঙিনায় জাকেরের জ্বলে ওঠার অপেক্ষায়… |
ওপেনার জিসান আলম জ্বলে ওঠেন আসরে প্রথমবারের মত। সাথে মোহাম্মদ হারিসও রান তুলেন ভালো গতিতে। প্রথম দশ ওভারে ওভার প্রতি প্রায় ১০ রান করে নিয়ে ভালো ভিত ছিল রাজশাহীর। তবে দুই ওপেনারের বিদায়ের পর বিজয়ের ইনিংস গতি কমিয়ে দেয় রানের। অন্যপ্রান্তে ইয়াসির আলির প্রায় ১৬১ স্ট্রাইক রেটে করা ৩৭ রানের ইনিংসও তাই পারেননি চাপ সরাতে।
১৯তম ওভারে আউট হওয়ার আগে ৩৫ বলে মাত্র ৩৯ রান আসে বিজয়ের ব্যাট থেকে। আকবর আলির ১৫ রানের ক্যামিও টেনেটুনে পার করে ১৬০ রান। তবে দিন শেষে রানটা বড্ড কম বলেই প্রতীয়মান হয়েছে।
বড় শট যে খেলতে পারেন, বয়সভিত্তিক দল থেকেই সেটা সাইফ হাসান দেখিয়ে আসছেন। তবে গ্লোবাল সুপার লিগের পর চলতি বিপিএলে নিজেকে নতুন করে চেনাচ্ছেন রংপুর রাইডার্স ব্যাটার। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে করেছেন ফিফটি। সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে আশা জেগেছিল সেঞ্চুরিরও। সেটা না হওয়ায় অবশ্য হতাশা নেই সাইফের। বরং তার চাওয়া আরও ভালো করার।
গ্লোবাল সুপার লিগে কয়েকটি ভালো ইনিংস খেলা সাইফ বিপিএলে ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে দেখা পান আসরে নিজের প্রথম ফিফটির। তবে সিলেটের বিপক্ষে ছাড়িয়ে যান সাম্প্রতিক সব ইনিংসকেই। চার-ছয়ের মিশেলে উপহার দেন ৮০ রানের ঝকঝকে এক ইনিংস, যা রংপুরকে ২০৫ রান তাড়ায় ৮ উইকেটে জয় পেতে রাখে গুরুত্বপূর্ণ অবদান।
আরও পড়ুন
হেলস ১১৩, সাইফ ৮০, রংপুরের চারে চার |
ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে এসে সাইফ বলেছেন, প্রক্রিয়া মেনেই পাচ্ছেন সাফল্য। “আমার মনে হয় ফ্লোতেই খেলেছি। যে বলটা পেয়েছি, সেটার মেরিট অনুযায়ী খেলার চেষ্টা করেছি আমরা। তাই যখন যেমন বল ছিল, সেই অনুযায়ী খেলার চেষ্টাটা ছিল। তেমন বিশেষ কিছু ছিল না যেমন এখন আমি মারব, পরে তুমি মারবা। তবে, বলের মেধা অনুযায়ী খেলার চেষ্টা করেছি।”
সাইফ যখন আউট হন, তখন তিনি ও অ্যালেক্স হেলস দুজনই ছিলেন সেঞ্চুরির পথে। ইংলিশ ব্যাটার শতক তুলতে পারলেও ২০ রান দূরেই থামতে হয় সাইফকে। অমন দারুণ ব্যাটিংয়ের পর একটা সেঞ্চুরির আক্ষেপ হওয়াটাই স্বাভাবিক।
তবে সাইফ এগিয়ে রাখছেন দলের জন্য তার অবদানকেই। “সেঞ্চুরি মিসে কোনো আক্ষেপ নেই৷ দল জিতেছে, এটাই বড় কথা। এমনই খেলার চেষ্টা করব।”
আরও পড়ুন
সিলেটেও জয়ের ধারায় রংপুর? তাসকিন-বিজয়দের ছন্দ ধরে রাখার লড়াই |
এই বিপিএলে সাইফকে দেখা যাচ্ছে ভিন্ন ছন্দে। শটের পরিধি যেমন বেড়েছে, তেমনই আগের চেয়ে তার মধ্যে পরিস্থিতি বুঝে ব্যাটিং করার পরিণতবোধও চোখে পড়ার মত। হেলসের সাথে ১৮৬ রানের জুটিতে আক্রমণ করেছেন নিজে কখনও, আবার মাঝে মাঝে অভিজ্ঞ ব্যাটারকে দিয়েছেন সেই সুযোগ।
এই উন্নতিতে জাতীয় দলের সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাহউদ্দিনের অবদান দেখছেন সাইফ। “অবশ্যই প্ল্যান ছিল, আমি সালাহউদ্দিন স্যারের সাথে অনেকদিন কাজ করেছি৷ স্যার আমাকে অনেক সমর্থন দিয়েছেন। সাথে টিম ম্যানেজমেন্টও। আমার মনে হয় ভালো হচ্ছে, তবে আরও ভালো করতে হবে।”
সুরটা বেধে দিয়েছিলেন দুই ওপেনার রনি তালুকদার ও জর্জ মুন্সি। বাংলাদেশ ব্যাটারের ফিফটির পর দারুণ এক ইনিংস উপহার দিলেন সিলেট স্ট্রাইকার্সের তরুণ ব্যাটার জাকির হাসানও। সাথে শেষের দিকে অ্যারন জোন্স ও জাকের আলি অনিকের ক্যামিওতে সিলেট পর্বের প্রথম ম্যাচে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে বড় রানই বোর্ডই জমা করল সিলেট।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সোমবারের প্রথম ম্যাচে সিলেটের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ২০৫ রান।
আরও পড়ুন
সাকিবের রেকর্ড ভাঙার কথা জানতেন না রনি |
মুন্সিকে নিয়ে ওপেনিং জুটিতে রনি যোগ করেন ৪৭ রান। স্কটিশ ব্যাটার ১৮ রানে ফিরলেও অভিজ্ঞ রনি একপ্রান্ত আগলে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের পসরা সাজিয়ে চাপে রাখেন রংপুরের বোলারদের৷ নবম ওভারে আউট হওয়ার আগে খেলেন মাত্র ৩২ বলে ৫৪ রানের ইনিংস। চারের মার ছিল ৭টি, আর ছক্কা ৩টি।
চারে নামা পল স্টার্লিং পারেননি চেনা মেজাজে ব্যাটিং করতে। ১৬ বলে সমান ১৬ রানে শেষ হয় তার ইনিংস। তবে বড় সিলেটের স্কোরের আশা জিইয়ে রাখেন জাকির। জাতীয় দলের এই ব্যাটার ইনিংস সাজান স্রেফ ছক্কায়। ফিফটির পরই অবশ্য তাকে থামান মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। চার ছক্কায় তার আগে খেলেন ৩৮ বলে ৫০ রানের বিনোদনকারী এক ইনিংস।
অন্যপ্রান্তে জোন্স শুরু থেকেই চড়াও হন বোলারদের ওপর। আকিফ জাভেদের করা ইনিংসের ২০তম ওভারে চারটি ছক্কা সহ আদায় করেন ২৭ রান, যা তার দলকে পার করায় ২০০ রানের স্কোর। মাত্র ১৯ বলে ৩৮ রানে অপরাজিত থাকেন যুক্তরাষ্ট্রের এই ব্যাটার।
আরও পড়ুন
এবারো নিজেকে চেনানোর লক্ষ্যে রনি তালুকদার |
তার পাশাপাশি সিলেটের বড় স্কোরে অবদান রাখেন ঘরের ছেলে জাকের আলি অনিকও। ৪০০ স্ট্রাইক রেটে ৩ ছক্কায় উপহার দেন ২০ রানের ইনিংস। ৩১ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন সাইফউদ্দিন।
গড়নে তিনি ক্যারিবিয়ান ব্যাটারের মতোই। দূর থেকে মনে হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের কেউ বুঝি এলেন বিপিএল মাতাতে। অথচ কাছে গেলে ঠিকই চেনা যায়, আরে এতো আমাদেরই জাকের আলি অনিক! যে কিনা গেলো ডিসেম্বরই দারুণ সব ঝড়ো ইনিংস, আর দুর্দান্ত সব ছক্কায় হয়ে উঠেছেন আমাদের সবারই খুব কাছের একজন ক্রিকেটার। বাঙালির কাছে ক্রিকেটটা তো এমনই, দারুণ করা যে কেউ হয়ে যায় বাড়ির কাছের। যার কাছে করা যায় ম্যাচ জেতানোর আবদারও।
জাকেরের উত্থান বিপিএল দিয়েই। ঘরোয়া ক্রিকেটে রান করেও সেভাবে আলোচনায় আসতে পারেননি। তবে বিপিএলটা দিয়েই নিজেকে চেনানোর শুরু। তারপর জাতীয় দলে পারফর্ম করে তো এখন উঠতি তারকাদের একজন হয়ে গেছেন। হয়ে উঠেছেন সিলেটের সবচেয়ে বড় স্ট্রাইকার্স!
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে প্রস্তুতি ম্যাচে অপরাজির ৪৮ দিয়ে শুরু। এরপরে আর পেছনে তাকাতে হয়নি। গেলো বছরের নভেম্বর আর ডিসেম্বরে যেনো রান বন্যা জাকেরের ব্যাটে। নিজের খেলা সবশেষ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে করেছিলেন ৪১ বলে ৭২ রান। স্ট্রাইক রেট ১৭৫। ৬টা ছক্কায় চিনিয়েছেন নিজের জাত।
আরও পড়ুন
রনি-জাকিরের ফিফটির পর জোন্সের ক্যামিও, সিলেটের ২০৫ |
ঘরোয়া ক্রিকেটে ছক্কার সাথে জাকেরের সুসম্পর্ক আগেই ছিল। জাতীয় দলের সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন দিয়েছিলেন শান। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে বিপিএলে করেছিলেন পারফর্মও। সালাউদ্দিন আক্ষেপ করে বলেছিলেন, ছেলেটার চেহারা একটু কালো বলেই হয়তো বোর্ডও তাকে দেখে না। সেই জাকের বছর ঘুরতেই তিন ফরম্যাটে এমন সব কীর্তি গড়েছেন, এখন সবাই যেন তাকেই খুঁজে বেড়াচ্ছে।
সেই খোঁজই যেনো ফিকে করেছে জাকেরকে। রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে নাহিদ রানার বলে বারবার ভুগেছেন। খেলেছেন একশর কম স্ট্রাইক রেটে নিজের সাথে বেমানান এক ইনিংস। সিলেটে অনুশীলনে যেনো ছিল সেই ক্ষোভ। বারবার খেলেছেন দ্রুতগতির বল। মিরপুরে এবার জাকের একটা ম্যাচই খেলেছেন। ৪৯ মিনিট উইকেটেও থাকলেও ৩৩ বলে রান করেছেন মোটে ২৪। উইন্ডিজের ১৭০ ব্যাটিং স্ট্রাইক রেটের আশপাশের অনিক এবার ৭২ স্ট্রাইক রেটে। ভাবা যায়?
৮৬ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার। ৫ ফিফটি আর ১২১ স্ট্রাইক রেট জাকেরের সামর্থ্য জানান ঠিক কতোটা দেয়? ২৬ গড়ের জাকের তো আরো ভয়ানক নিজের দিনে। ঢাকা পর্বে সেভাবে মেলে ধরতে পারেননি। এবার সিলেটের ঘরের ছেলে ঘরে ফিরেছেন, হয়ত এখানেই দেখা মিলবে চেনা জাকেরের।
প্লেয়ার ড্রাফটের পর সরাসরি চুক্তিতেও দল না পাওয়াটা ছিল চমক জাগানিয়াই। ঘরোয়া ক্রিকেটের পরীক্ষিত মুখ মোসাদ্দেক হোসেন শেষ পর্যন্ত দল পেয়েছেন অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডার। বদলি খেলোয়াড় হিসেবে যোগ দিয়েছেন ঢাকা ক্যাপিটালসে।
সোমবার সংবাদ বিবৃতিতে ঢাকা ক্যাপিটালস নিশ্চিত করেছে মোসাদ্দেকের দলভুক্তির বিষয়টি। আসিফ হাসানের বদলি হিসেবে দলে জায়গা পেয়েছেন তিনি।
বিপিএলের পরিচিত মুখ মোসাদ্দেকের রয়েছে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলার দীর্ঘ সময়ের অভিজ্ঞতা। মিডল অর্ডারে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি অফ স্পিনেও বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারেন তিনি। সেই আলোকে সম্প্রতি খেলেছেন লঙ্কা টি-টেন লিগেও। এবার দেরিতে হলেও পেলেন বিপিএলে নিজেকে প্রমাণের সুযোগ।
এখন পর্যন্ত স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে মোসাদ্দেক ম্যাচ খেলেছেন ১৫৩টি। ১১২ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ২ হাজার ১০৮ রান। আর বল হাতে ওভার প্রতি ৭.২৮ রান দিয়ে শিকার করেছেন ৬৪ উইকেট। গড় ২৮.১৮।
বিপিএলে ঢাকা ক্যাপিটালস মোসাদ্দকের ছয় নম্বর দল। তার নতুন দলের হাল অবশ্য ভালো নয়। তিন ম্যাচের তিনটিতেই হেরেছে ঢাকা। পরবর্তী ম্যাচ আগামী ৭ জানুয়ারি, প্রতিপক্ষ রংপুর রাইডার্স।
১৩ ঘণ্টা আগে
১৪ ঘণ্টা আগে
৬ দিন আগে
৭ দিন আগে
১৬ দিন আগে
১৯ দিন আগে