শেষ চারের টিকিট দুই দলেরই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল আগেই। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লড়াইয়ে ভারতকে শুরুতেই বল হাতে চেপে ধরল নিউজিল্যান্ড। সেখান থেকে দুর্দান্ত এক ফিফটিতে ঘুরে দাঁড়ালেন শ্রেয়াস আইয়ার। হার্দিক পান্ডিয়ার ক্যামিও এনে দিল চ্যালেঞ্জিং স্কোর, যা স্পিন সহায়ক উইকেটে নিউজিল্যান্ডকে দিল না জয়ের কোনো সুযোগ। ভারুণ চক্রবর্তীর পাঁচ উইকেটের সামনে বিফলে গেল কেন উইলিয়ামসিনের নিঃসঙ্গ লড়াই। অপরাজিত থেকেই সেমিতে পা রাখল রোহিত শর্মার দল।
দুবাইয়ে ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচে ভারত ৪৪ রানে জিতেছে। দলটির করা ৯ উইকেটে ২৪৯ রনের জবাবে ৪৫.৩ ওভারে নিউজিল্যান্ড গুটিয়ে গেছে ২০৫ রানে।
সেমিফাইনালে ভারত খেলবে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। আর নিউজিল্যান্ডের প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা।
টুর্নামেন্টে ভারতের প্রথম দুই ম্যাচে শুরুটা ভালো পেলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি রোহিত শর্মা। এদিনও তার ব্যত্যয় হয়নি। হেনরির প্রথম ওভারে চার মারার পর একই বোলারকে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এসে হাঁকান ছক্কা। তবে অতি আগ্রাসনই ডেকে আনে বিপদ। কাইলি জেমিসনের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে করতে পারেন মাত্র ১৫।
এর আগেই ভারত হারায় আরেক ওপেনার শুবমান ফর্মে। রানের মধ্যে থাকা ডানহাতি এই ব্যাটারকে প্রথম শিকার বানান ওপেনিং স্পেলে দারুণ বোলিং করা হেনরি। ৩০০তম ওয়ানডে ম্যাচ খেলা বিরাট কোহলি ক্রিজে যান স্টেডিয়ামে তুমুল করতালির মধ্য দিয়ে। মঞ্চটা রাঙানোর আভাস দেন দুই চারে।
এরপরই আসে যে মুহূর্ত, যা স্তব্ধ করে দেয় কোহলি তো বটেই, পুরো স্টেডিয়ামকেই। হেনরির অফস্ট্যাম্পের বাইরে পিচ করা ডেলিভারিতে টাইমিংটা সেরা হয়নি তার। বল ভেসে যায় ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে, যেখানে ছিলেন সময়ের সেরা ফিল্ডার গ্লেন ফিলিপস। ডান দিকে ঝাঁপিয়ে, ডান হাতে শুন্যে ভেসে ঠিক যেন বাজপাখির মত ছোবল দিয়ে বল জমিয়ে ফেলেন হাতে।
কোহলির শট থেকে শুরু করে অমন একটা ক্যাচ নিতে ফিলিপস নেন মাত্র ০.৬২ সেকেন্ড। এই সময়ের মধ্যে তাকে শটের পর বলটা দেখতে হয়েছে, সঠিক সময়ে ঝাপ দিতে হয়েছে এবং ক্যাঁচটা ধরতে হয়েছে। ক্রিকবাজের কমেন্ট্রিতে এটিকে বলা হয়েছে, ‘আনরিয়েল ক্যাচ’।
নিউজিল্যান্ডের বোলিং ও ফিল্ডিংয়ের জোর ধাক্কায় পঞ্চাশের আগে তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় ভারত। তবে টুর্নামেন্টে ছন্দে থাকা শ্রেয়াস ধরে রাখেন ফর্ম। অলরাউন্ডার আকসার প্যাটেলকে নিয়ে গড়েন ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ এক জুটি, যা ভারতকে প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর ভিত গড়ে দেয়।
দুজনেই শুরুতে ধীরলয়ে ব্যাট করছিলেন, যার মধ্যে আকসার ছিলেন বেশি মন্থর। প্রথম ২৪ বলে করতে পারেন মাত্র ৫ রান। ১৬ ওভারে ভারতের দলীয় স্কোর ছিল মাত্র ৫৭। এরপর উইলিয়াম ও’রউর্কের এক ওভারে তিন চার মেরে কিছুটা চাপ সরান শ্রেয়াস।
৭৫ বলে ফিফটিতে পা রাখেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। আকসারও ধীরে ধীরে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে ব্যাট করা শুরু করেন সেট হয়ে। তবে ফিফটি থেকে ৯ রান দূরে থাকতে তাকে আটকা রাচিন রবীন্দ্র। অন্যপ্রান্তে বড় শট খেলে দলকে ভালো একটা স্কোরের পথেই রাখেন শ্রেয়াস।
তবে তাকেও ফেরান ও’রউর্কে। শর্ট ডেলিভারিতে পরাস্ত হয়ে ক্যাচ তুলে দেওয়ার আগে শ্রেয়াসের ব্যাট থেকে আসে ৭৯ রান। ৯৮ বলের ইনিংস সাজান ৪টি চার ২ ছক্কায়। সেট হয়ে বিশের ঘরে আউট হয়ে ভারতের চাপ বাড়ান লোকেশ রাহুল।
রবীন্দ্র জাদেজা এরপর অল্পে ফিরলেও ভারতকে একটা লড়াই করার মত স্কোর এনে দেওয়া লড়াই চালিয়ে যান হার্দিক পান্ডিয়া। জেমিসেনের করা ৪৯তম ওভারে দুই চার ও এক ছক্কা হাঁকান এই তারকা অলরাউন্ডার। শেষ ওভারে আউট হওয়ার আগে হার্দিক খেলেন ১০০ স্ট্রাইক রেটে ৪৫ রানের ইনিংস।
তার এই ইনিংসের কারণেই দুই দফায় ভারতের ব্যাটিং অর্ডারে ধস নামিয়েও প্রতিপক্ষকে অল্পে আটকাতে পারেনি হেনরির দারুণ বোলিং। ৪২ রানে ৫ উইকেট নেন অভিজ্ঞ এই পেসার।
দুবাইয়ের এই উইকেটে ২২০ রানের বেশি তাড়া করাটাই চ্যালেঞ্জিং হয়ে যাচ্ছে উইকেট স্লো হয়ে যাওয়ার কারণে। নিউজিল্যান্ড তাই শুরুটা করে দেখেশুনে। তবে ব্যাট হাতে দারুণ করা হার্দিক বল হাতেও চমকে দেন রাচিনকে। তার বাউন্সারে আপার কাট করতে চেয়েছিলেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। তবে টাইমিং না হওয়ায় বল যায় থার্ড ম্যানে। অনেকটা দৌড়ে দারুণ এক ক্যাচ নেন আকসার।
এরপর কয়েকটা ওভার উইল ইয়ং ও কেন উইলিয়ামসন কাটিয়ে দেন রয়েসয়ে খেলে। তবে আসরে নিজের প্রথম ম্যাচ খেলা ভারুন চক্রবর্তী আক্রমণে আসতেই বদলে যেতে থাকে চিত্র। ডানহাতি এই রহস্য স্পিনারের বলে রান বের করাটা কঠিন হয়ে যায় ব্যাটারদের জন্য।
শেষ পর্যন্ত তার প্রথম শিকার হন ইয়ং, তার আগে করেন ৩ বাউন্ডারিতে ২২ রান। উইলিয়ামসন কিছুটা সাবলীল ছন্দে থাকলেও তার সঙ্গী ড্যারিল মিচেল শুরু থেকেই ভুগছিলেন রানের জন্য। স্পিনারদের বিপক্ষে চার-পাঁচবার রিভার্স সুইপের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। সে চাপে শেষ পর্যন্ত কুলদ্বীপ ইয়াদাভের বলে পড়েন লেগ বিফোরের ফাঁদে।
এরপর থেকে ইনিংসের বাকিটা জুড়ে নিউজিল্যান্ড ব্যাটারদের সাথে লড়াই চলে ভারতের চার স্পিনারের, যেখানে নেতৃত্ব দেন ভারুণ। ফিফটি করেন উইলিয়ামসন, তবে বল ও রানের ব্যবধান বাড়ায় চাপে আসে তার ওপরও। শেষ পর্যন্ত হার মানতে হয় তাকেও। সপ্তম ব্যাটার হিসেবে যখন আউট হন লড়িয়ে ৮১ রানে, তখন দলীয় স্কোর মাত্র ১৬৯।
কঠিন সমীকরণে মিচেল স্যান্টনার কিছুটা ফাইট দেন এরপর। তবে ভারুণের ফাইফারে দ্রুতই ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় নিউজিল্যান্ড। ৪২ রানে ৫ উইকেন নে ভারুণ।
৫ মার্চ ২০২৫, ৯:০৮ পিএম
৫ মার্চ ২০২৫, ৬:৫৬ পিএম
উইকেটে ব্যাটারদের জন্য যথেষ্ট সাহায্য থাকায় বড় স্কোরের বিকল্প ছিল না। শুরুটা ধীরে হলেও সেট হয়ে দলকে সেদিকেই নিয়ে গেলেন রাচিন রবীন্দ্র ও কেন উইলিয়ামসন। দুজনেই করলেন সেঞ্চুরি। নিউজিল্যান্ড বোর্ডে দাঁড় করাল রেকর্ড রান। সেই রান পাড়ি দিতে যেমন আগ্রাসী ব্যাটিং দরকার, শুরু থেকেই তা করতে পারল না দক্ষিণ আফ্রিকা। টেম্বা বাভুমা ও রাসি ভ্যান ডার ডুসেন ফিফটি করলেন বটে, তবে বিশাল রান তাড়া তাদের প্রচেষ্টা বিফলেই গেল। শেষের দিকে ডেভিড মিলার করলেন ঝড়ো সেঞ্চুরি, তবে বোলারদের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে ফাইনালে পা রাখল মিচেল স্যান্টনারের দলই।
লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৫০ রানে হারিয়েছে নিউজিল্যান্ড। দলটির করা ৬ উইকেটে ৩৬২ রানের জবাবে ৫০ ওভারে বাভুমার দল থেমেছে ৯ উইকেটে ৩১২ রানে।
আগামী ৯ মার্চ দুবাইতে ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের প্রতিপক্ষ ভারত, যারা প্রথম সেমিতে ৪ উইকেটে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়াকে। গ্রুপ পর্বের ম্যাচে দুবাইতেই ভারতের কাছে ৪৪ রানে হেরেছিল নিউজিল্যান্ড।
এবারের আসরেই ৩৫১ রান তাড়া করে জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। সেদিন প্রথম ৩০ ওভারে খুব মেরেকেটে না খেলেও জয় পেয়েছিল তারা। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার রান তাড়াটা ছিল এরচেয়েও সাবধানী। রায়ান রিকেল্টন অল্পে বিদায় নেওয়ার পর ইনিংসের সেরা জুটিটি গড়েন বাভুমা ও ডুসেন মিলে।
তবে দুজনের কেউই বোলারদের সেভাবে চাপে ফেলতে পারেননি। প্রথম ১০ রান করতে প্রায় ৬০ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করা বাভুমা পরে তা কাটিয়ে ওঠেন অনেকটাই। তবে টার্গেট যখন ৩৬৩, তখন প্রতি ওভারেই যোগ হয় বাড়তি চাপ। ডুসেন সেই কাজটা ভালো সামাল দিলেও বাভুমার ধীরগতির ব্যাটিং চাপে ফেলে তাকেও।
আর সেই সুযোগটাই কাজে লাগান স্যান্টনার। তার বলে বড় শট খেলতে গিয়ে ৭১ বলে ৫৬ রানে বিদায় নেন বাভুমা। এর কিছুক্ষণ পর ছন্দে থাকা ডুসেনকেও শিকার বানিয়ে ম্যাচ থেকে প্রতিপক্ষকে ছিটকে দেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক।
তাদের ১০৫ রানের ওই জুটির পরও ভালোভাবেই আশা ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা শিবিরে। তবে এরপরই তাদের সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা দেন দারুণ এক স্পেল উপহার দেওয়া স্যান্টনার। উড়িয়ে মারতে গিয়ে মাত্র ৩ রানে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন স্বপ্নের ফর্মে থাকা হেনরিখ ক্লাসেন। বলা যায় সেখানেই ম্যাচের সমাপ্তি হয়ে যায়।
এরপর একাই লড়াই চালিয়ে যান ডেভিড মিলার। তবে বল ও রানের ব্যবধানের সাথে পাল্লা দিয়ে পারেননি ‘কিলার মিলার’ খ্যাত এই ব্যাটারও। ব্যাট হাতে দলকে হতাশ করেন দুই অলরাউন্ডার উইয়ান মুল্ডার ও মার্কো ইয়ানসেনও।
অসম্ভব সমীকরণ মেলানোর মিশনে শেষের কয়েকটি ওভারে বড় কয়েকটি শট আসে মিলারের ব্যাট থেকে, হয়ে যায় ফিফটিও। তবে শেষ পর্যন্ত তার ইনিংস দলের হারের ব্যবধানই কমাতে পারে কেবল। দর্শকদের বিনোদনের খোরাক জুগিয়ে মিলার ৫০তম ওভারে ২ চার ও ১ ছক্কায় ১৮ রান নিয়ে ১০০ রানে অপরাজিত থাকেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। বল খেলেন মাত্র ৬৭টি।
১০ ওভারে ৪৩ রানে ৩ উইকেট নিয়ে দলের সেরা বলের নিউজিল্যান্ড কাপ্তান স্যান্টনারই।
লাহোরের ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে ক্রিজে সেট হলেই ব্যাটাররা পান সহজেই রানের দেখা। সেই চিন্তা থেকেই কিনা, প্রথম দশ ওভারে অতি আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের দিকে না গিয়ে স্রেফ বাজে বল পেলেই মারার দিকে ঝুঁকেন দুই ওপেনার রাচিন ও উইল ইয়ং। তিন বাউন্ডারিতে শুরুটা ভালো পেলেও ইনিংস বড় করতে ব্যর্থ হন ইয়ং। দলীয় ৪৫ রানে ডানহাতি এই ব্যাটারকে এইডেন মার্করামের ক্যাচ বানিয়ে ফেরান লুঙ্গি এনগিডি।
বল হাতে প্রোটিয়াসদের আনন্দের উপলক্ষ্য ছিল ওটুকুই। এরপর বোলারদের ওপর চড়াও হন রাচিন ও উইলিয়ামসন জুটি। ৪৭ বলে চার মেরে ফিফটি পূর্ণ করেন রাচিন। শুরুটা কিছুটা ধীরগতিতে হলেও ক্রমেই রানের গতি বাড়ান উইলিইয়ামনও।
তবে বেশি আগ্রাসী থাকা রাচিন আশির ঘরে পা রাখেন কেশভ মহারাজের এক ওভারে চার ও ছক্কা মেরে। ৬১ বলে পঞ্চাশে পা রাখেন উইলিইয়ামন। জমে ওঠা এই জুটি রান করতে তাকে বলের সাথে পাল্লা দিয়ে। তাতে হয়ে যায় জুটির শতকও।
ইনিংসের ৩২তম ওভারে সেঞ্চুরির দেখা পান রাচিন। চলতি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে তিন ইনিংসে এটি বাঁহাতি ব্যাটারের দ্বিতীয় শতক। সব মিলিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের পঞ্চম, এজন্য তিনি খেলেছেন মাত্র ২৮ ইনিংস। যা নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসে দ্বিতীয় দ্রুততম। আর আইসিসি ইভেন্টে কিউইদের হয়ে এখন সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির মালিক রাচিনই।
যদিও এরপর বেশিদূর যেতে পারেননি। ১০৮ রানে তাকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানান কাগিসো রাবাদা। তাতে শেষ হয় তার ও উইলিয়ামসনের ১৬৪ রানের জুটি, যা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে এখন নিউজিল্যান্ডের সর্বোচ্চ জুটি।
এর খানিক বাদে সেঞ্চুরি পূর্ণ হয়ে যায় উইলিয়ামসনেরও। তিনিও তিন অঙ্কের ঘরে পা রাখেন বাউন্ডারি মেরে। তবে একই ওভারে উইয়ান মুল্ডারকে স্কুপ করতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। তবে তার আগে খেলেন ৯৪ বলে ১০২ ক্লাসিক ইনিংস।
তার বিদায়ের পর শেষের দিকে ড্যারিল মিচেল ও গ্লেন ফিলিপসের ব্যাট থেকে আসে দুটি কার্যকর ক্যামিও। মিচেল ৪৯ করে আউট হন। আর ইনিংসের শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে একই স্কোর ছিল ফিলিপসেরও। তাতে ভর করে সব আসর মিলিয়ে সবোর্চ্চ দলীয় স্কোর গড়ে ফেলে নিউজিল্যান্ড। তাদের ৩৬২ রান আইসিসি ইভেন্টে তৃতীয় সবোর্চ্চ দলীয় স্কোর। ৭২ রানে ৩ উইকেট নেন এনগিডি।
অস্ট্রেলিয়ার জার্সিতে ওয়ানডেতে তার চেয়ে বেশি শতক আছেই কেবল পাঁচজনের। টেস্ট ক্রিকেটে নিজেকে অন্যন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার কারণেই হয়ত স্টিভেন স্মিথের ৫০ ওভারের পরিসংখ্যান অনেকটাই আড়ালে চলে গেছে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে অস্ট্রেলিয়ার বিদায়ের পর তার এই ফরম্যাট থেকে আকস্মিক অবসরের ঘোষণা তাই খুব একটা আলোড়ন ফেলতে পারছে না। অথচ সব পরিস্থিতিতে, সব কন্ডিশনে অজিদের হয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটে স্মিথ যেভাবে রাঙিয়েছেন নিজেকে, তাতে দেশটির ইতিহাসের অন্যতম সেরাদের কাতারে থাকার দাবিদার তিনি।
২০১০ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অভিষেক ম্যাচে পাঁচ উইকেট পতনের পরও ব্যাটিংয়ের সুযোগ মেলেনি স্মিথের। দলে যে ছিলেন লেগ স্পিনিং অলরাউন্ডার। সেই একই খেলোয়াড় নিজের শেষ ওয়ানডেতে ভারতের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ব্যাট করেছেন তিন নম্বরে। চাপের মুখে খেলেছেন ৭৩ রানের এক ইনিংস। লেগ স্পিনার থেকে সময়ের অন্যতম সেরা ব্যাটারদের একজন হয়ে ওঠার ১৫ বছরের পথচলায় ৩৫ বছর বয়সী এই ব্যাটারের ক্যারিয়ারের পরিসংখ্যান দাঁড়িয়েছে ১৭০ ম্যাচে ১৫৪ ইনিংসে ৫ হাজার ৮০০ রান। সেঞ্চুরি ১২টি, ফিফটি ৩৫টি, গড় ৪৩.২৮ গড় আর স্ট্রাইক রেটটাও দারুণ, ৮৭!
এবার একটু ভাবুন, প্রায় ৪৪ গড় আর প্রতি ১০০ বলে ৮৭ রান করা একজন ব্যাটারকে ওয়ানডে গ্রেট হিসেবে কিনা বিবেচনা করা হয় না। ‘ফ্যাভ ফোর’-এর মধ্যে তাকে রাখা হয়েছে সবসময়, তবে সেটা তার টেস্টের প্রায় অতিমানবীয় ব্যাটিংয়ের কারণেই। অথচ লম্বা এক ক্যারিয়ারে বারবার স্মিথ প্রমাণ দিয়েছেন, ওয়ানডে ক্রিকেটটাও তিনি বেশ ভালো খেলেন।
অস্ট্রেলিয়ার জার্সিতে ওয়ানডেতে স্মিথের চেয়ে বেশি গড় কেবল ডেভিড ওয়ার্নারের। এই ফরম্যাটে দেশটির ইতিহাসে তার চেয়ে বেশি রান মাত্র ১১ জনের। দুইবার হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার বর্ষসেরা ওয়ানডে ক্রিকেটার। বড় মঞ্চে রয়েছে দারুণ সব ম্যাচ জেতানো ইনিংস। এরপরও অস্ট্রেলিয়ার ওয়ানডের সর্বকালের সেরা দল করতে গেলে অধিকাংশই রাখবেন না স্মিথকে।
২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপের সময় স্মিথ ছিলেন ফর্মের তুঙ্গে। গ্রুপ পর্বে দুটি ফিফটির পর শেষ আটে পাকিস্তানের বিপক্ষে করেন আরেকটি ফিফটি। এরপর ভারতের বিপক্ষে সেমিফাইনালে খেলেন মাত্র ৯৩ বলে ১০৫ রানের ইনিংস। আর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ফাইনালে জয়সূচক বাউন্ডারি মারার পথে করেন আরেকটি ফিফটি।
সেই তুলনায় অস্ট্রেলিয়ার ২০২৩ বিশ্বকাপ জয়ে খুব বড় অবদান রাখতে পারেননি। তবে কয়েকটি ভালো ইনিংস খেলার পাশাপাশি প্যাট কামিন্সকে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে সাহায্য করেন লিডারশিপ গ্রুপে থেকে। স্মিথের নেতৃত্ব গুণ সবসময়ই প্রশংসিত হয়েছে এই কারণেই, কারণ স্রেফ তার মাঠে থাকাটাও দলকে এনে দেয় বাড়তি কিছু।
অধিনায়ক হিসেবে ক্ষুরধার স্মিথ ২০১৫ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে মোট ৬৪ বার ওয়ানডেতে অধিনায়কত্ব করেছেন। শুধুমাত্র রিকি পন্টিং, অ্যালান বর্ডার, স্টিভ ওয়া, মার্ক টেলর এবং মাইকেল ক্লার্কই এই ফরম্যাটে তার চেয়ে বেশি ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার নেতৃত্ব দিয়েছেন। তবে তারা সবাই বিশ্বকাপে নেতৃত্ব দিলেও স্মিথই সেটা পারেননি।
তবে খেলোয়াড় হিসেবে দুটি বিশ্বকাপ জেতাও তো কম নয়। বিশ্বের অনেক ক্রিকেটারই যে ক্যারিয়ার শেষ করেন একটি বিশ্বকাপ না জিতেই। নির্লিপ্ত স্মিথ তার অবসরের ঘোষণাতেও তাই আক্ষেপ লুকিয়ে জানিয়েছেন, ২০২৭ বিশ্বকাপে তরুণদের সুযোগ করে দিতেই তার সরে যাওয়া।
পুরো ক্যারিয়ার যেমন, স্মিথের অবসরের ঘোষণাও এসেছে ঠিক সেভাবেই। ইনস্টাগ্রামে পোস্ট দিয়ে জানিয়েছেন ৫০ ওভারের ক্রিকেটকে বিদায়। নিয়তিই যেন চায়নি, অধিনায়ক হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতে তিনি অবসর নেন। ফলে ‘আন্ডাররেটেড’ স্মিথের শেষটাও হয়েছে ঠিক সেভাবেই, যেভাবে এই ফরম্যাটে তার ব্যাটসম্যানশিপ থেকে গেছে আড়ালেই।
তবে ক্রিকেট ভক্তরা অস্ট্রেলিয়ার হলুদ জার্সিতে ৫০ ওভারের ক্রিকেটে স্মিথের লড়িয়ে সব ইনিংস যে মিস করবেন, তা না বললেও চলে। এটাও তো কম অর্জন নয় বৈকি!
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক বেশ আগেই। তবে রাচিন রবীন্দ্র বিশ্ব ক্রিকেটে হইচই ফেলে দেন মূলত ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে। ভাগ্যক্রমে পাওয়া সুযোগ কাজে লাগিয়ে হয়ে যান নিউজিল্যান্ড তো বটেই, পাশাপাশি আসরের অন্যতম সেরা ক্রিকেটারও। সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে আরেকটি আইসিসি ইভেন্ট, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও জ্বলে উঠছেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চলমান দ্বিতীয় সেমিফাইনালে তুলে নিয়েছেন তিন ম্যাচে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি।
সব মিলিয়ে রাচিনের ওয়ানডে সেঞ্চুরি এখন পাঁচটি। মজার ব্যাপার হল, এর আগে-পরে অন্যান্য সিরিজ খেললেও তরুণ এই ব্যাটার আর কোথাও তিন অঙ্কের ঘরে যেতে পারেননি। তবে টানা দ্বিতীয় ৫০ ওভারের আইসিসি ইভেন্টে নিজের সেরা ফর্মেই হাজির হয়েছেন রাচিন।
নিউজিল্যান্ডের গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচ মিস করা রাচিন একাদশে ফেরেন বাংলাদেশের বিপক্ষে। রান তাড়ায় চারে নেমে ১০৫ বলে তার ব্যাট থেকে আসে ১১২ রান। এরপর ভারতের বিপক্ষে ওপেন করতে নেমে অবশ্য সুবিধা করতে পারেননি। তবে রানের ফিরেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে।
ইনিংসের ৩৪তম ওভারে যখন আউট হয়েছেন, তখন নামের পাশে রয়েছে ১০৮ রান। ১০১ বলের ইনিংস সাজান ১৩ চার ও ১ ছক্কায়।
সব মিলিয়ে ৩২ ওয়ানডের ক্যারিয়ারে রাচিনের রান ৪৪ গড়ে ১ হাজার ১৯৬। সেঞ্চুরির চেয়ে ফিফটি কম, মোটে চারটি। সর্বোচ্চ ১২৮ রানের ইনিংসটি এসেছিল ২০২৩ বিশ্বকাপে।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির হাইব্রিড সূচি নিয়ে টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই চলছে তুমুল বিতর্ক। স্বাগতিক পাকিস্তান সহ বাকি দলগুলোকে যেখানে ঘুরতে হচ্ছে এক ভেন্যু থেকে আরেক ভেন্যুতে, সেখানে ভারত ফাইনাল সহ পুরো টুর্নামেন্টই খেলছে দুবাইতে। স্বাভাবিকভাবে কন্ডিশন খুব ভালো রপ্ত হয়ে গেছে দলটির, যা অন্যাদের তুলনায় তাদের দিচ্ছে বাড়তি সুবিধা। তবে এই আলোচনায় বিরক্ত দলটির প্রধান কোচ গৌতম গম্ভীর। সাবেক এই ওপেনারের বরং দাবি, তাদের অবস্থাও বাকি দলগুলোর মতোই।
রাজনৈতিক বৈরিতার কারণে এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে পাকিস্তান যেতেও অস্বীকৃতি জানায় ভারত। ফলে তাদের সব ম্যাচ রাখা হয়েছে দুবাইতে। রোহিত-কোহলির সুবিধা করে দিতে গড়ে প্রায় সব দলগুলোকে স্রেফ এক ম্যাচ খেলার জন্য যেতে হচ্ছে দুবাই। এর আগে-পরে আবার খেলতে হচ্ছে পাকিস্তানের ভিন্ন ভিন্ন কন্ডিশনে। দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটার হেনরিখ ক্লাসেন তো প্রকাশ্যেই ব্যাপারটি নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন।
তবে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেমিফাইনাল জয়ের পর সংবাদ সম্মেলনে প্রসঙ্গটি উঠতেই যেন তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠেন গম্ভীর। “আমাদের অযাচিত সুযোগ-সুবিধা নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে। কী অযৌক্তিক সুবিধা পাচ্ছি আমরা? আমরা তো এখানে একদিনের জন্যও অনুশীলন করিনি। আমরা আইসিসি একাডেমিতে অনুশীলন করছি। সেখানকার এবং এখানকার কন্ডিশন ১৮০ ডিগ্রি আলাদা। কিছু লোক কেবল সব কিছুতেও দোষ খুঁজে বেড়ায়। তাদের মন বড় করতে হবে। আমার কাছে মনে হয় না আমাদের তেমন কোনো বাড়তি সুবিধা ছিল।”
দুবাইয়ে শুরু থেকেই খেলা হচ্ছে তুলনামূলক স্লো উইকেটে। ফলে সেখানে বাড়তি সুবিধা পাচ্ছেন স্পিনাররা। সেই বিবেচনায় স্কোয়াডে বেশ কজন স্পিনার রেখেছে ভারত। শেষ দুটি ম্যাচে তো একাদশ সাজিয়েছে চারজন স্পিনার দিয়ে, যারা সবাই বিশ্বমাপের। অন্য দলগুলোকে পাকিস্তানেও খেলতে হওয়ার কারণে তারা আবার স্রেফ এক ম্যাচের জন্য বেশি স্পিনার রাখতে পারেনি স্কোয়াডে।
তবে এই বিষয়েও ভিন্ন মত রয়েছে ভারত কোচের।
“আমাদের পরিকল্পনাটি ছিল যে, ১৫ সদস্যের দলে যদি দুজন ফ্রন্টলাইন স্পিনার রাখা হয়, তাহলে আমরা পাকিস্তান বা যে কোনও জায়গায় খেললেও, আমরা দুজন স্পেশালিষ্ট স্পিনার নিতে পারতাম। কারণ এটা উপমহাদেশের একটি প্রতিযোগিতা। আপনি যদি দেখেন, প্রথম দুটি ম্যাচে আমরা শুধুমাত্র একজন স্পেশালিষ্ট স্পিনার (কুলদীপ ইয়াদাভ) নিয়ে খেলেছি। আমরা শুধু এই ম্যাচে এবং আগের ম্যাচে দুজন ফ্রন্টলাইন স্পিনার (কুলদীপ ইয়াদাভ ও ভারুণ চক্রবর্তী) নিয়ে খেলেছি।"
ওয়ানডে রান তাড়ায় বিরাট কোহলি জ্বলে উঠবেন না, এটা যেন কোনোভাবেই হওয়ার নয়। দুবাইয়ের স্লো উইকেটে ভারতের এই ব্যাটিং তারকা আরও একবার জানান দিলেন, কেন তাকে ‘চেজ মাস্টার’ বলা হয়। স্টিভেন স্মিথ ও অ্যালেক্স কেরির ফিফটিতে অবশ্য লড়াকু পুঁজিই পেয়ে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। শুরুতে দুই ওপেনার হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়া ভারতের ইনিংস একাই টানলেন সেই কোহলিই। সেঞ্চুরি মিস করলেও তার ইনিংস ভর করে টানা তৃতীয়বার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে জায়গা করে নিল ভারত।
দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে ভারত। অজিরা গুটিয়ে গিয়েছিল ২৬৪ রানে, শেষের দিকে কিছুটা লড়াই ছাপিয়ে রোহিত শর্মার দল সেই টার্গেট পাড়ি দিয়েছে ১১ বল হাতে রেখে।
আইসিসি ইভেন্টের নকআউট পর্বে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এটি এখন সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড। আগেরটিও ছিল ভারতেরই।
আরও পড়ুন
সেমিফাইনালে মার্করামের খেলা নিয়ে সংশয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা |
![]() |
রান তাড়ায় বেন ডুয়ারসুইসের করা ইনিংসে দ্বিতীয় বলেই চার হাঁকান রোহিত। এরপর ন্যাথান এলিসকে মারেন ছক্কা। তবে ওই ওভারেই ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে তার দেওয়া সহজ ক্যাচ ফেলে দেন কুপার কনোলি। এরপর ডুয়ারসুইসের বলে আরও একবার উড়িয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ দিয়েছিলেন ভারত অধিনায়ক, তবে এবার ক্যাচ ফেলে দেন মার্নাস লাবুশেন।
অন্যপ্রান্তে অস্বস্তিতে থাকা শুবমান গিল ইনসাইড-এজ হয়ে বোল্ড হয়ে যান ডুয়ারসুইসের বলে। দারুণ ছন্দে ব্যাট করা রোহিতকে এরপর আক্রমণে এসেই ফিরিয়ে দেন কনোলি। তার বাঁহাতি স্পিনে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ার আগে আউট হন ২৮ রানে।
এই উইকেটে অস্ট্রেলিয়া শিবিরে জাগে জয়ের আশা। তবে শ্রেয়াস আইয়ারকে নিয়ে তৃতীয় উইকেট জুটিতে ক্রমেই ম্যাচে ফিরে আসে ভারত। দুজন মিলে অস্ট্রেলিয়ার স্পিনারদের সামাল দেন দারুণ দক্ষতায়। এরই মধ্যে ফিফটি হয়ে যায় কোহলি। এরপর একটা সুযোগ দিয়েছিলেন তিনি একটা, তবে কনোলির বলে মিড-অফে ডাইভ দিয়েও ক্যাচ নিতে পারেননি গ্লেন ম্যাক্সওয়েল।
ক্রমেই বিপজ্জনক হয়ে ওঠা এই জুটির ইতি টানেন শেষ পর্যন্ত অ্যাডাম জাম্পা। অভিজ্ঞ এই লেগ স্পিনার আইয়ারকে ৪৫ রানে বোল্ড করে ভাঙেন ৯১ রানের জুটি। পাঁচে নামা আকসার প্যাটেল খেলেন কার্যকর এক ক্যামিও ইনিংস। তবে সেট হওয়ার পর তাকে বোল্ড করে ম্যাচে রোমাঞ্চ ফিরিয়ে আনেন এলিস।
শেষ ১২ ওভারে ভারতের দরকার ছিল ৭২ রান। কোহলি ও লোকেশ রাহুল ভালোভাবেই সেট হওয়ায় ম্যাচ ক্রমেই হেলে যাচ্ছিল ভারতের দিকে। আরও একবার আক্রমণে এসে দারুণ এক গুগলিতে কোহলিকে বিভ্রান্ত করে ক্যাচ বানান জাম্পা। তবে এর আগে মাত্র ৫ চারে ৯৮ বলে ৮৪ রানের ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দেওয়া ইনিংস উপহার দেন সময়ের অন্যতম সেরা এই ব্যাটার।
আরও পড়ুন
অধিনায়কত্ব হারিয়ে টি-টোয়েন্টি দল থেকেই বাদ রিজওয়ান, নেই বাবরও |
![]() |
ওই উইকেটের পর ম্যাচে ফের রোমাঞ্চের সম্ভাবনা জাগলেও, রাহুল ও হার্দিক পান্ডিয়া মিলে ভারতকে নিয়ে যান জয়ের বন্দরে। জাম্পার করা শেষ ওভারে টানা দুই ছক্কায় হার্দিক দ্রুত ম্যাচ শেষের কাজ সেরে ফেলেন। শেষ মুহূর্তে ২৮ রানে তিনি আউট হলেও ভারতের জয়ে এর প্রভাব আর পড়েনি। রাহুল অপরাজিত থাকেন ৪২ রানে।
এর আগে দিনের শুরুতে আগে ব্যাট করা অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের বড় হাইলাইট ছিলেন ট্রাভিস হেড। ভারতের বিপক্ষে বারবার সেরা সব ইনিংস খেলা এই মারকুটে ওপেনার এদিনও উড়ন্ত ছন্দেই ব্যাট করছিলেন। চার-ছক্কার মারে আভাস দিচ্ছিলেন বড় কিছুর। তবে এবার তিনি আর পারেননি। আক্রমণে এসেই তাকে ৩৯ রানে ফিরিয়ে দেন ভারুন চক্রবর্তী।
অন্য ওপেনার কনোলি রানের খাতা খোলার আগেই আউট হন। এরপর ভারতের চার স্পিনার দিয়ে সাজানো আক্রমণ সামলে ইনিংস এগিয়ে নেন স্পিনের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার সেরা দুই ব্যাটার স্মিথ ও লাবুশেন। জমে ওঠা এই জুটির ভাঙন ধরান রবীন্দ্র জাদেজা। তার শিকার হন লাবুশেন (২৯)।
স্মিথ একপ্রান্ত আগলে খেলেন দুর্দান্ত এক ইনিংস, যেখানে সম্ভাবনা ছিল তার সেঞ্চুরির। তবে ফিরতি স্পেলে এসে মোহাম্মদ শামি তাকে বোল্ড করে দেন ৭৩ রানে। অভিজ্ঞ এই ব্যাটার ইনিংস সাজান মাত্র ৪টি চার ও এক ছক্কায়।
২০৫ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যাওয়া অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসকে একটা ফাইটিং স্কোরের দিকে একাই টেনে নেন কেরি। অষ্টম ব্যাটার হিসেবে আউট হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৬১ রানের লড়িয়ে এক ইনিংস। ৪৮ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ভারতের সেরা বোলার ছিলেন পেসার শামি।
১ দিন আগে
১ দিন আগে
১ দিন আগে
২ দিন আগে
৩ দিন আগে
৭ দিন আগে
৮ দিন আগে
১১ দিন আগে
১২ দিন আগে
১২ দিন আগে
১৩ দিন আগে
১৩ দিন আগে
১৩ দিন আগে
১৩ দিন আগে
১৪ দিন আগে