২৪ অক্টোবর ২০২৪, ৩:০৩ পিএম
পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জয়ে বাংলাদেশের টপ অর্ডার ব্যাটাররা তাও কিছুটা অবদান রেখেছিলেন। তবে এরপর ভারতের বিপক্ষে দুই টেস্টের পর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম টেস্টেও ভরাডুবি হয়েছে ওপরের দিকের ব্যাটারদের। তাতে মিরপুর টেস্টে হারতে হয়েছে বড় ব্যবধানেই। চলতি বছর টেস্টে দলের সর্বোচ্চ রান করা মেহেদি হাসান মিরাজ মনে করছেন, ধারাবাহিকভাবে জিততে হলে টপ অর্ডার থেকে বড় রানের বিকল্প নেই।
মিরপুর টেস্টের প্রথম দিন সকালে দক্ষিণ আফ্রিকার পেসারদের সামনে দিশেহারা হয়ে যান বাংলাদেশের ব্যাটাররা। মাত্র ৪৫ রানেই চলে যায় ৫ উইকেট। ১০৬ রান অলআউট হয় স্বাগতিকরা। দ্বিতীয় ইনিংসে ঘুরে দাঁড়িয়ে ৩০৭ রানের পেছনে মূল অবদান সাত ও আটে নামা মিরাজ (৯৭) ও জাকের আলি অনিকের (৫৮)। ভালো শুরু পেলেও দুই ইনিংসেই শুরুর দিকের ব্যাটাররা সেটা লম্বা করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে এসে মিরাজ তাই বললেন, শুরুর দিকের ব্যাটিং বিপর্যয় এড়ানোর উপায় বের করতে হবে তাদের।
“আমার কাছে যেটা মনে হয়, আমাদের ওপরের দিকে একটা জুটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। টপ অর্ডার থেকে যদি একটা ভালো শুরু পাওয়া যেত, তাহলে আমাদের পরের ব্যাটসম্যানদের জন্য সেটা সহজ হত। পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে যদি দেখেন, তিন-চার থেকে শুরু করে সবাই খুব ভালো একটা শুরু এনে দিয়েছিল। ওপেনাররাও ভালো করেছে। এবং এতে পরে যারা আছে, তাদের জন্য কাজটা সহজ হয়ে যায়। দেখেন, নতুন বলে যদি ৫-৬ নম্বর ব্যাটারকে খেলতে হয়, তাহলে তার জন্য এটা একটু কঠিন। অবশ্যই আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি, যাতে টপ অর্ডাররা ভালো করতে পারে।”
ম্যাচে টসে জিতে ব্যাটিং নিয়েছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে তার সেই সিদ্ধান্ত মোটেও কাজে লাগাতে পারেননি ব্যাটাররা। দুই সেশনের আগেই যেভাবে গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশ, সেটা ছিল ব্যাটারদের নিদারুণ ব্যর্থতার আরেকটি চিত্র। মাত্র ১০৬ রান করার পর ২০২ রানে পিছিয়ে পড়ার পর এই ম্যাচে বাংলাদেশের ফেরার কার্যত আর সুযোগই ছিল না। তাতে হারতে হয়েছে শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে।
মিরাজও মানছেন, ক্ষতিটা হয়ে গেছে প্রথম দিনেই।
“উইকেট আমরা যেভাবে চেয়েছিলাম, সবকিছু আমাদের দিকেই ছিল। টসে জিতে আমরা চেয়েছিলাম ব্যাটিং করতে। মিরপুরের উইকেট চতুর্থ দিনে কিন্তু রান করা অনেক কঠিন। তাই আমরা সেভাবেই পরিকল্পনা সাজিয়েছিলাম। তবে দূর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা রান করতে পারিনি। হয়ত দ্বিতীয় ইনিংসে যে রানটা হল, প্রথম ইনিংসে এমন হত, তাহলে ম্যাচটা ভিন্ন হতেও পারত। তবে প্রথম ইনিংসেই আমরা ব্যাকফুটে চলে গিয়েছি।”
৮ নভেম্বর ২০২৪, ৭:০৩ পিএম
৮ নভেম্বর ২০২৪, ৪:৩৬ পিএম
উইকেট যেমনই হোক, একটি দল যখন মাত্র ২৩ রানে শেষ ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলে - তখন এর পক্ষে কিছু বলাটা কঠিনই। আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে রান তাড়ায় এমনই এক নাটকীয় ব্যাটিং ধসের শিকার হয়ে বিশাল ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। সহ-অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ এজন্য দুষলেন তাদের ব্যাটিংয়ের সময় আচমকাই উইকেটের বদলে যাওয়া আচরণকে!
শারজাহতে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে রান করাটা যে খুব কঠিন ছিল তাও নয়। ৩৫ রানে চার উইকেট হারানোর পরও তাই ২৩৫ রান করে ফেলে আফগানিস্তান। যেখানে বড় অবদান রাখেন মোহাম্মদ নবি প্রায় ১০০-এর বেশি স্ট্রাইক রেটে ৮৪ রানের ইনিংসে। রান তাড়ায় এক পর্যায়ে বাংলাদেশের রান ছিল ২ উইকেটে ১২০, ক্রিজে দুই সেট ব্যাটার মিরাজ ও নাজমুল হোসেন শান্ত। বিস্ময়ের জন্ম দিয়ে সেখান থেকে স্রেফ ১৪৩ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন
ম্যাচ জিততে টপ অর্ডারের কাছে আরও বেশি রানের আকুতি মিরাজের |
দ্বিতীয় ম্যাচের আগেরদিন মিরাজের সংবাদ সম্মেলনে তাই ঘুরেফিরেই আসল প্রসঙ্গটি। অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডার তাতে তাদের ব্যর্থতা আড়াল করার চেষ্টাই যেন করলেন-
“একটা জিনিস দেখেন, যখন আমি আর শান্ত ব্যাটিং করছিলাম, তখন কিন্তু আমাদের দুজনের কাছেই উইকেট সহজই মনে হচ্ছিল। কিন্তু বিশ ওভারের পর বল যখন পুরনো ও নরম হয়ে গেল, তখন থেকে হঠাৎ করেই টার্ন শুরু বেশি হতে শুরু করল। সেট হওয়ার পরও তাই আমাকে আর শান্তকে মাঝখানে খুব সংগ্রাম করতে হচ্ছিল।”
তৃতীয় উইকেটে মিরাজ ও শান্ত যেভাবে ব্যাট করছিলেন, তখন বল ব্যাটে আসছিল খুব ভালোভাবেই৷ শান্ত একটু আগ্রাসন দেখালেও মিরাজ ছিলেন ধীরস্থির। তবে দুজনই অহেতুক চাপ নিতে গিয়ে আউট হয়ে প্রতিপক্ষকে ম্যাচে ফেরার সুযোগ করে দেন। আল্লাহ গাজানফারের ৬ উইকেটের দুর্দান্ত এক স্পেল বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরারই সুযোগ দেয়নি আর।
আরও পড়ুন
সাকিব নন, নিজের অর্জনেই পরিচিত হতে চান মিরাজ |
সেট হয়েও ম্যাচ শেষ না করতে পারার হতাশা ফুটে উঠল মিরাজের কন্ঠেও-
“উইকেট আশানুরূপ আচরণ করেনি। হ্যাঁ, ওই সময় আমরা দুজন যেভাবে সেট ছিলাম, আমাদের দুজনের মধ্যে একজনের ম্যাচ শেষ করা উচিত ছিল। কারণ আমি শান্তকে বারবার বলছিলাম, এই উইকেটে আমাদের দুজনের যেহেতু খেলতে সমস্যা হচ্ছে, পরের ব্যাটারদের জন্য কাজটা আরও কঠিন হবে।”
সাম্প্রতিক সময়ে ঘরের মাটিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জয়ের ম্যাচে কানপুরে ভারত জয় তুলে নিয়েছিল আড়াই দিনেরও কম সময়ে। তবে ওই ম্যাচে প্রশ্নবিদ্ধ ছিল কানপুর স্টেডিয়ামের আউটফিল্ড। শেষ পর্যন্ত ভেন্যুটির আউটফিল্ডকে ‘অসন্তোষজনক’ রেটিং দিয়েছে আইসিসি। এই রেটিংয়ের ফলে ভেন্যুটি পেয়েছে একটি ডিমেরিট পয়েন্ট।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে ১ অক্টোবর পর্যন্ত হওয়া ম্যাচটির প্রথম দিনে খেলা সম্ভব হয়েছিল মাত্র ৩৫ ওভার। এরপর একটি বলও মাঠে গড়ায়নি পরের দুই দিনেও। যদিও তৃতীয় দিন ম্যাচের জন্য নির্ধারিত সময়ে বৃষ্টি ছিল না। শুধু তাই নয়, টেস্ট শুরুর আগে কানপুর রাজ্যের পাবলিক ওয়ার্কস ডিপার্টমেন্ট গ্রিন পার্কের একটি স্ট্যান্ডকে অনিরাপদ বলেছিল এবং স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষকে নিরাপত্তার স্বার্থে নির্দেশ দিয়েছিল যে, দর্শকদের জন্য যেন গ্যালারির ওপরের দিকের স্তরে সীমিত সংখ্যক আসন রাখা হয়।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশ দলকে ক্লান্ত দেখাচ্ছে, দুর্বল পরিকল্পনা স্পষ্ট: বুলবুল |
উত্তরপ্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন (ইউপিসিএ) কানপুরের গ্রীন পার্ক স্টেডিয়ামটি ইউপি সরকারের সাথে স্বাক্ষরিত একটি এমওইউ চুক্তির ভিত্তিতে ব্যবহার করে। স্টেডিয়ামের জমির মালিক সরকার, তবে সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী স্টেডিয়াম এবং এর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ইউপিসিএরই।
কানপুর টেস্টে আড়াই দিনেরও বেশি সময় নষ্ট হওয়ার পরও অবিশ্বাস্য দক্ষতা দেখিয়ে পঞ্চম দিন শেষ সেশনের আগেই জয় তুলে নেয় ভারত। নিজেদের প্রথম ইনিংসে ওভারপ্রতি ৭.৩৬ ওভারে রান তুলে ৫২ ওভারে করে ৩৮৩ রান। বাংলাদেশকে দুই ইনিংস মিলিয়ে ১২১.২ ওভারের মধ্যে অলআউট করে মাঠ ছাড়ে বিজয়ীর বেশে।
আরও পড়ুন
দ্বিতীয় ওয়ানডেতে অনিশ্চিত মুশফিক |
আউটফিল্ড ‘অসন্তোষজনক’ রেটিং পেলেও কানপুরের উইকেটকে আইসিসির কাছ থেকে ‘সন্তোষজনক’ রেটিং পেয়েছে।