প্রথম দিন শেষে ১৩৬ রানে অবিচ্ছিন্ন থাকা শান্ত'র কাছে দ্বিতীয় দিন ডাবল সেঞ্চুরির প্রত্যাশা ছিল মুশফিকুর রহিমের। ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি গল-এ করেছেন বলেই ১০ বছর আগের সেই ইনিংসের পুনরাবৃত্তি মুশফিকুরের কাছেও ছিল প্রত্যাশিত। তবে রঙ বদলের খেলা টেস্ট গল-এ দ্বিতীয় দিন বদলেছে রঙ। শান্ত-মুশফিককে ঘিরে দেখা স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে। এক ইনিংসে তিন সেঞ্চুরির সম্ভাবনার পথটাও হয়েছে অমসৃন।
গল টেস্টের প্রথম দিন যেভাবে শেষ করেছে শান্ত-মুশফিক, তাতে ব্যাটিং ফ্রেন্ডলি এই ভেন্যুতে আরও একবার ৬শ প্লাস স্কোরের আবহ ছিল। তবে লাঞ্চ ব্রেকের পর বৃষ্টি বাংলাদেশের সে সম্ভাবনার পথে বাধার দেয়াল তৈরি করেছে। দুপুর ২টা ১০ মিনিটের বৃষ্টিতে পুনরায় খেলা শুরু করতে অপেক্ষা করতে হয়েছে ২ ঘন্টা ৩৫ মিনিট। তাতেই ছন্দপতন হয়েছে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে। বৃষ্টির আগে ৪২৩/৪ স্কোর থেকে দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে বাংলাদেশ ৪৮৪/৯-এ।
যে উইকেটে প্রথম ৪ সেশন পেসারদের নির্বিষ বোলিংয়ে স্বাচ্ছন্দে ব্যাটিং করেছে শান্ত-মুশফিক-লিটন, সেই পিচেই দ্বিতীয় দিনের শেষ সেশনে শ্রীলঙ্কা পেসার মিলান রত্নায়েকের ভয়ংকর এক স্পেলে (৩-১-৮-৩) বাংলাদেশ ৬১ রানে হারিয়েছে ৫ উইকেট।
গল টেস্টের প্রথম দিন শেষে শান্ত-মুশফিকুরের ২৪৭ রানের পার্টনারশিপ অনেক বড় কিছুর স্বপ্ন দেখিয়েছে। প্রথম দিনের অবিচ্ছিন্ন পার্টনারশিপ আর মাত্র ২০ রান যোগ করতে পারলে ৪র্থ উইকেট জুটিতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পার্টনারশিপ দেখতো বিশ্ব। এমন কিছু দেখার প্রতীক্ষায় ছিলেন বাংলাদেশ সমর্থকরা। দ্বিতীয় দিনের শুরুতে সে লক্ষণই ছিল। পর পর দুই ওভারে অফ স্পিনার প্রবথ জয়সুরিয়ার রিটার্ন ক্যাচ থেকে বেঁচে গেছেন মুশফিক,
থারিন্দু রত্নায়েকের বলে ডিপ মিডউইকেটে লিটনের ক্যাচ ফসকে গেছে নিশাঙ্কার হাত থেকে। তবে বেঁচে যাওয়া শান্ত-মুশফিকের পার্টনারশিপ ৪র্থ উইকেট জুটিতে রেকর্ড করতে পারেনি। দিনের ৭ম ওভারে পেসার আসিথা ফার্নান্দোর ফুল ডেলিভারিতে মিড অফে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুউজের ডাইভিং ক্যাচে পরিণত হয়েছেন শান্ত। থেমেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক ১৪৮ রানে। মাত্র ৩ রানের জন্য রেকর্ড পার্টনারশিপ করতে না পারার আক্ষেপ নিয়ে ড্রেসিংরুমে ফিরেছেন শান্ত।
তবে ২৬৪ রানের এই পার্টনারশিপ ৫ম জুটিকে করেছে উদ্বুদ্ধ। মুশফিক-লিটনের পার্টনারশিপ ৫ম উইকেট জুটিতে যোগ করেছে ১৪৯ রান।
টেস্ট ক্যারিয়ারে সপ্তমবারের মতো ১৫০ ছাড়ানো ইনিংস খেলেছেন মুশফিকুর রহিম। ক্যারিয়ারের চতুর্থ এবং গল-এ দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরির পথে থাকা মুশফিক থেমেছেন ১৬৩ রানে। আসিথার আইড অফ ডেলিভারীতে এলবিডাব্লু হয়ে। বলের গতি ইমপ্যাক্ট ইন লাইনে থাকায় রিভিউ আপীলে লাভ হয়নি, আম্পায়ার্স কলে ড্রেসিংরুমে ফিরতে হয়েছে মুশফিকুর রহিমকে।
রাওয়ালপিন্ডিতে গত বছরের আগস্টে ম্যাচ উইনিং সেঞ্চুরির (১৩৮) ১০ ইনিংস পর লিটন দেখা পেয়েছেন ফিফটি। ৫ টেস্ট পর সেঞ্চুরির হাতছানিও ছিল তার। তবে টেস্ট ক্যারিয়ারে তৃতীয়বার নার্ভাস নাইনটিজে থেমেছেন লিটন। পার্টনার মুশফিককে হারিয়ে ছন্দপতন হয়েছে লিটনের ব্যাটিং। মেজাজ হারিয়ে অকারণে থারিন্দুকে রিভার্স সুইপ করতে যেয়ে ডেকে এনেছেন বিপদ। উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে থেমেছেন ৯০ রানে। অকেশনাল পেসার মিলান রত্নায়েকের ১২৬ কিলোমিটার গতির ইনসুইং ডেলিভারিতে ডিফেন্স করতে যেয়ে পরাস্ত জাকের আলী অনিক থেমেছেন মাত্র ৮ রানে। মিলানের পরের ওভারে ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে যেয়ে বোল্ড হয়েছেন তাইজুল (৬)।
২৬৪ এবং ১৪৯ রানের দুটি প্রশংসিত জুটির পর ২৬ রানে উড়ে গেছে বাংলাদেশের ৫ উইকেট। তাতেই ৫শ' স্কোরের সম্ভাবনার পথে তৈরি হয়েছে প্রতিবন্ধকতা।
৯ জুলাই ২০২৫, ৯:১৬ পিএম
৯ জুলাই ২০২৫, ৬:৩৫ পিএম