বেশ কয়েক বছর আগের কথা। বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং কোচ তখন সাবেক দক্ষিণ আফ্রিকা ব্যাটার নিল ম্যাকেঞ্জি। সেই সময়েও বাংলাদেশের ব্যাটারদের জন্য টি-টোয়েন্টি এমন এক গোলকধাঁধার নাম। তখন এই ফরম্যাটে ব্যাটারদের ভালো করতে একটা পথ বাতলে দিয়েছিলেন তিনি। সেটা অনেকটা এরকমই ছিল যে, চাইলেও যেহেতু আন্দ্রে রাসেল, কাইরন পোলার্ডদের মতো বড় বড় ছক্কা হাঁকানোর সামর্থ্য নেই, বাউন্ডারি এবং সিঙ্গেলস-ডাবলস নিয়ে সেই ঘাটতি পূরণ করা উচিত। চারটি ছক্কা মারলেও ২৪ রান, ছয়টি চার মারলেও ২৪ রানই যোগ হবে। ম্যাকেঞ্জি অমনটা বলেছিলেন, কারণ খুব কাছ থেকে দেখার অভিজ্ঞতায় তার খুব ভালো জানা হয়ে গিয়েছিল, বাংলাদেশের খুব বেশি ব্যাটারের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বড় বড় ছক্কা মারার সেই স্কিল সেট নেই। তার সেই কথাগুলো এই ২০২৪ সালেও এসেও ভীষণ বাস্তব বাংলাদেশের ক্রিকেটে।
সেটার খুব বড় একটা উদাহারণ হতে পারে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচের শেষ ওভারটি। বাঁহাতি স্পিনার কেশভ মহারাজের নাটকীয় সেই ওভারে একটি করে ফুল টস পান জাকের আলি, মাহমুদউল্লাহ এবং শেষে তাসকিন আহমেদ। এই তিন ডেলিভারিতে বাংলাদেশ করতে পেরেছে স্রেফ তিন রান, উইকেট গেছে একটি। এর মধ্যে স্পেশালিষ্ট বোলার হওয়ায় তাসকিনকে হয়ত আপনি ছাড় দিতে চাইবেন। তবে বোলার হলেও অন্তত একটা ফুল টস বল সীমানা পার করার দক্ষতা দেখানো খুব বিশেষ কিছু নয়। তারচেয়েও বড় কথা, তিন জনই যে ফুল টসগুলো পেয়েছেন, এমন সব ফুল টসে তো তারা অহরহই করেন ‘রেঞ্জ হিটিং’।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে আপনি যা দেখেছেন এবং যা দেখেননি…
এই রেঞ্জ হিটিংয়ের মূল ব্যাপারটাই হল বড় শট মারার দক্ষতা বাড়ানো এবং কে কতদূর বল পাঠাতে পারেন, সেটার অনুশীলন। একজন থ্রোয়ার একের পর এক ফুল টস ছুড়বেন স্লটে, ব্যাটাররা তা সজোরে মারবেন। ছক্কা হলো কিনা, সেটা ছাপিয়ে দেখার বিষয় হয়ে দাঁড়ায় বলটা কোথায় গেল। মহারাজের করা তিন ফুল টসের মধ্যে তাসকিনেরটা অবশ্য একটু উঁচুতে ছিল, তবে উচ্চতার কারণে তিনি ভালো পজিশনেই ছিলেন ছক্কা মারার। কিন্তু পারেননি। তবে প্রশ্ন আসতেই পারে, তাসকিন পর্যন্ত ম্যাচটা কেন গেল?
এই প্রশ্নের উত্তর আপনি দিতে পারেন অনেকগুলো দিক থেকেই। আম্পায়ারের কিছু ওয়াইডের কল না দেওয়া, ভুল এলবিডব্লিউয়ের সিদ্ধান্ত যা বাংলাদেশকে বঞ্চিত করে চারটি লেগ বাইয়ের রান থেকে বা দুর্দান্ত খেলতে থাকা তাওহীদ হৃদয়ের আম্পায়ার্স কলে আউট হওয়ার মত অনেক কিছুই টানা যেতে পারে ৪ রানে হারের ‘অজুহাত’ হিসেবে। তবে মাঠের খেলায় ভাগ্যকে দুষে বা যদি, কিন্তু দেখিয়ে পাশ কাটিয়ে নিজেদের ঘাটতির জায়গা অস্বীকার করাটা খুব বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
শুরুটা করা যাক নাজমুল হাসান শান্তকে দিয়েই। তার ব্যাটিংয়ের যে ধরন, সেটা আধুনিক ২০ ওভারের ক্রিকেটে বেশ বেমানান। টার্গেট ১২০ হোক বা ১৮০, বাংলাদেশ অধিনায়ক ব্যাট করেন একশর আশেপাশে স্ট্রাইক রেটে। হ্যাঁ, গতকাল ওর্টনিল বার্টম্যানকে তিনি একটা ছক্কা হাঁকিয়েছেন বটে। তবে আনরিখ নরকিয়া, যিনি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ইতিহাসেরই অন্যতম সেরা একজন পেসার, এমন স্লো উইকেটে আপনি কোন হিসেবে তাকে আক্রমণ করতে যাবেন? আসরে আগুন ঝরানো বোলিং করা দীর্ঘদেহী এই পেসারের ১৫০ কি.মি বেশি গতির সেই ডেলিভারিতে কোনোভাবেই ছক্কা মারা শান্তর পক্ষে সম্ভব নয়, এটা তারও নিশ্চয় জানা। তবুও, বৃথা চেষ্টায় বিসর্জন দেন উইকেট।
তার আগে ঠিক একই ভুলটা করেন এই দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার সাকিব, যিনি সবচেয়ে বেশি ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট খেলেছেন। ব্যাটে নেই সেই ধার, নেই মোটেও ফর্মে, এই অবস্থায় সাকিব কিনা নরকিয়াকে পুল করে সীমানা পার করতে চাইলেন! কোনো টাইমিং না হয়ে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনিও। বাংলাদেশকে নিয়ে বরাবরই নেতিবাচক কথা বলা সাবেক ভারত ব্যাটার বীরেন্দর শেবাগ ক্রিকবাজে বলেছেন, সাকিবের মনে রাখা উচিত ছিল যে তিনি এডাম গিলক্রিস্ট বা ম্যাথু হেইডেন নন। তিনি বাংলাদেশের ব্যাটার, সেভাবেই তার নরকিয়াকে খেলা উচিত ছিল৷
বাংলাদেশের একজন ক্রিকেট ভক্ত হিসেবে কথাটা ভীষণ তেতো লাগারই কথা। তবে নিজের স্কিলের সীমাবদ্ধতা ভুলে এলোপাতাড়ি পুল করতে চাওয়াটা অন্তত সাকিবের মত স্মার্ট ক্রিকেটারের কাছ থেকে ভীষণ হতাশাজনকই৷ জাকের আলি অনিক জাতীয় দলে এসেছেনই ‘ফিনিশার’ তকমা নিয়ে। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে দ্রুত রান তোলার কাজটা তিনি ভালোই করেন ঘরোয়া ক্রিকেটে। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মহারাজের ওই ফুল টস সহ মোট ৯ বলে তিনি করেছেন ৮ রান। পেস, স্পিন দুটির বিরুদ্ধেই অনেক চেষ্টা করেও পারেননি ছক্কা মারতে। মানুন আর নাই মানুন, এমন পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক বোলারদের বিপক্ষে ছক্কা মারার জন্য বিশেষ স্কিলের প্রয়োজন হয়, যা জাকের অন্তত এখনও রপ্ত করতে পারেননি। হয়ত সামনে পারবেন।
অবশ্য বিশ্বকাপে নিজের প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা জাকেরের কাছে খুব বেশি প্রত্যাশা করাটাই হয়ত অনুচিত। কেন? ফিরে যান ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। ভারতের বিপক্ষে ব্যাঙ্গালোরে সেদিন ক্রিজে মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিক থাকার পরও ৩ বলে মাত্র ২ রানের হিসেব মেলাতে পারেনি বাংলাদেশ। হার্দিক পান্ডিয়ার নিরীহ এক হাফ ভলিতে ছক্কা মারতে গিয়ে ক্যাচ দেন প্রথম মুশফিকুর। সেই হতাশা দ্বিগুণ করে স্লটে পাওয়া ফুল টসে মাহমুদউল্লাহও ক্যাচ তুলে দেন। সেদিন বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম স্মরণীয় সেই পরাজের মূল কারণ ছিল, অমন মূহুর্তে নিজেদের শক্তির জায়গা ভুলে রাসেল-পোলার্ডদের মতো ছক্কা মেরে নায়ক হওয়ার তাড়না। আর ঠিক বিষয়টিই ম্যাকেঞ্জি দেখতে চাইতেন না।
আরও পড়ুন: আম্পায়ারিং নিয়ে ক্ষোভ থাকলেও পরাজয়ে নিজেদের ব্যর্থতাই দেখছেন তাওহীদ
স্কিল এমন এক ব্যাপার, বছরের পর বছর সাধনা করেও সেটা আয়ত্বে নিয়ে আসা মোটেও সহজ কাজ নয়। সাবেক দক্ষিণ আফ্রিকা অলরাউন্ডার ল্যান্স ক্লুজনারের কথা নিশ্চয় মনে আছে। সেই নব্বই দশকের সেকেলে ওয়ানডে ক্রিকেটে তিনি দেখিয়েছিলেন টি-টোয়েন্টি ব্যাটিং। ক্রিজে গিয়েই ধুন্ধুমার ব্যাটিং শুরু করে দিতেন। দেখলে মনে হত, পাওয়ার হিটিং কতোই না সোজা। তবে ক্লুজনার নিজেই এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, নেটে হাজার হাজার বল তিনি স্রেফ এসবের অনুশীলনেই ব্যয় করতেন। নিজ তাগিদে আলাদা অনুশীলন করতেন কেবল এই ১০-১৫ বলের ইনিংসে ঝড় তোলার জন্য। শারীরিক গঠনে ক্যারিবিয়ানদের মত শক্তিশালী না হলেও তাই বড় শট নিয়মিতই খেলতে পারতেন তিনি।
দল থেকে বাদ পড়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করে ভিন্ন রুপে হাজির হওয়া মাহমুদউল্লাহর এখন ছক্কা মারার দক্ষতা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। তবে স্কিলের যে একটা সীমাবদ্ধতা থাকে, সেই কারণে সেদিন ব্যাঙ্গালোরে তিনি হার্দিকের ফুল টসকে ছক্কায় ওড়াতে পারেননি। আর একই কারণে মহারাজের করা আরও সহজ এক ফুল টসে গায়ের সব শক্তি দিয়ে মেরেও লং অনের বাউন্ডারি পার করতে পারেননি তিনি। ভাগ্যের কথা যে বলি আমরা, সেটা ছাপিয়ে মূখ্য এটাই যে মাহমুদউল্লাহ কয়েক মিটারের জন্য ছক্কা মারার জন্য সেরা ডেলিভারিটা কাজে লাগাতে পারেননি।
আম্পায়ারদের ভুল, ভাগ্যকে পাশে না পাওয়ার আক্ষেপে দক্ষিণ আফ্রিকাকে বাগে পেয়েও হারানোর এমন সুযোগ হারানোর আক্ষেপ তাই আপনি করতেই পারেন, পাশাপাশি এটাও মনে রাখতে হবে, খেলোয়াড়রা তাদের স্কিলের শেষ বিন্দু দিয়েই ১১৩ রান তাড়ায় ১০৯ রান করেছেন। মাহমুদউল্লাহর বাউন্ডারি লাইন পার না করতে পারাটাই এই মূহুর্তে সবচেয়ে কঠিন বাস্তবতা। চেষ্টা করেছেন, সাধ্যের সবটা দিয়েই বলটা মেরেছেন, পারেননি। অথবা, পারার কথাই যে ছিলো না…
২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩:০২ এম
২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১:৫২ এম
প্রথম দিনের প্রথম দুই সেশনে ভারতকে চেপে ধরেছিল বাংলাদেশ, তাতে এক পর্যায়ে আশা জেগেছিল দলটিকে ২০০ রানের মধ্যেই আটকে দেওয়ার। তবে শেষের দিকের ব্যাটারদের নৈপুণ্যে সেটা আর সম্ভব হয়নি। ভারত পেয়ে যায় বেশ ভালো একটা স্কোর। দ্বিতীয় দিন শেষে ব্যাকফুটে গিয়ে তাসকিন আহমেদের তাই আক্ষেপ, যদি ভারতকে আরও কমে গুটিয়ে দেওয়া যেত।
হাসান মাহমুদের দুর্দান্ত স্পেলে চা বিরতির আগে ভারতের স্কোর ছিল ৬ উইকেটে ১৪৪। তবে সেই আগ্রাসন আর ধরে রাখতে পারেনি তাসকিন-হাসান-নাহিদরা। আটে নেমে সেঞ্চুরি করে বসেন রবীচন্দ্রন অশ্বিন। রবীন্দ্র জাদেজা নিয়ে গড়েন ১৯৯ রানের জুটি। যা ভারতকে এনে দেয় ৩৭৬ রানের স্কোর, যা এই উইকেটে বেশ শক্তিশালী রান বলেই প্রমাণিত হচ্ছে।
দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে তাসকিন অকপটে স্বীকার করে নেন প্রথম ইনিংসের দ্বিতীয় ভাগে তাদের ব্যর্থতা। “হোম বা অ্যাওয়ে, ভারত কিন্তু সবসময় শক্তিশালী প্রতিপক্ষ। ঘরের মাঠে সবাই এডভান্টেজ নেয়। সামনে আমাদের হোম সিরিজ আছে, আমরাও হয়ত তখন এভাবে আধিপাত্য দেখাব ইনশাআল্লাহ। আমাদের (প্রথম ইনিংসে) আরও আগে ওদের অলআউট করা উচিৎ ছিল। আমরাও আপ টু দ্যা মার্ক বল করতে পারিনি, বিশেষ করে (প্রথম দিন) চা বিরতির পর। সাড়ে তিনশতে (৩৭৬) আটকে দিয়েছি, আড়াইশতে অলআউট করা উচিৎ ছিল। আমরা মেনে নিচ্ছি, সামর্থ্য অনুযায়ী ভালো করতে পারিনি।”
ভারতের বিপক্ষে এই সিরিজের আগে থেকেই বাংলাদেশ দলে আলোচনায় ছিল এসজি বলে খেলার বিষয়টি। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত অবশ্য স্পষ্ট বলে দিয়েছিলেন, তারা এসজি বলে যে প্রস্তুতি নিয়েছেন সেটাই যথেষ্ট এবং তারা প্রস্তুত। তবে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ দল ভারতের বোলারদের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি। ৪০ রানের মধ্যে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ফেলার পর টেনেটুনে করতে পারে মোটে ১৪৯ রান।
তাসকিন বলেছেন, এসজি বলে নিয়মিত খেলার বাড়তি একটা সুবিধা পেয়েছে ভারত। “পাকিস্তান সিরিজে কিন্তু আমরা ব্যাটিং-বোলিং সব জায়গাতেই ভালো করেই জিতেছি। আসলে টেস্ট ক্রিকেটটাই এমন, সেশন বাই সেশন ভালো করতে হয়। এখানে একটু চ্যালেঞ্জিং কন্ডিশন, আবার এসজি বলে খেলা। বলের কারণে এখানে ওরা একটু বাড়তি সুবিধা পাচ্ছে। ছোট বেলা থেকে এসজি বলে খেলছে, এই বল নিয়ে তাই ওরা আমাদের চেয়ে ভালো জানে। আমরা প্রথমে সংগ্রাম করেছি, তাও ভালো ব্যাটিং করতে পারতাম। ব্যাটাররাও সেটা মানে। নতুন বলে একটু ভালো খেললে এতগুলো উইকেট যেত না। মিডল অর্ডারের জন্য নতুন বল চ্যালেঞ্জিং এখানে।”
দ্বিতীয় দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে ভারত করেছে ৩ উইকেটে ৮১ রান, আর লিড ৩০৮ রানের।
প্রথন দিন এক পর্যায়ে বেশ চাপে থাকা ভারত দিনের শেষেই বসেছিল চালকের আসনে। বাংলাদেশের ব্যাটিং ব্যর্থতায় দ্বিতীয় দিন শেষেই বড় জয়ের সুবাস পাচ্ছে স্বাগতিকরা। এখনও তিন দিন বাকি থাকায় দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের সামনে রয়েছে লম্বা সময় ব্যাট করার সুযোগ। তবে জাদেজা মনে করেছেন, আরও ১২০ থেকে ১৫০ রান যোগ করতে পারলেই সেটা তাদের জয়ের জন্য যথেষ্ট হবে।
প্রথম দিনে ১৪৪ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলা ভারতকে পথে ফেরান জাদেজা ও রবীচন্দ্রন অশ্বিন জুটি। রেকর্ড গড়ে তারা সপ্তম উইকেটে যোগ করেন ১৯৯ রান। এতে ভর করে ভারত প্রথম ইনিংস পায় ৩৭৬ রানের স্কোর। জবাবে বাংলাদেশ গুটিয়ে যায় মাত্র ১৪৯ রানে। দ্বিতীয় দিন শেষে সাত উইকেট হাতে নিয়ে ৮১ করা ভারতের লিড এখন ৩০৮ রানের। প্রথম দুই দিনেই রাজত্ব করেছেন পেসাররা।
দিনের খেলা শেষে জাদেজা বলেছেন, টেস্টের বাকি অংশেও চিত্রটা একই থাকবে। “এখন আমাদের দ্বিতীয় ইনিংসে বোর্ডে ভালো রান রাখতে হবে। প্রথমে আমাদের খুব ভালো ব্যাট করতে হবে, এখান থেকে আর ১২০ থেকে ১৫০ রান করতে হবে। সেটা হলেই আমরা ভালো অবস্থানে থাকব। এরপর বল করব এবং চেষ্টা করব যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাদের আউট করার। (উইকেট) ব্যাটিংয়ের জন্য বেশ ভালো, কিন্তু ফাস্ট বোলারদের জন্য উইকেটে এখনও অনেক কিছুই আছে। ব্যাটারদের জন্য কাজটা এতোটা সহজ নয়। ফাস্ট বোলাররা যদি তাদের সেরাটা উজাড় করে দেয়, তাহলে তারা উইকেটে থেকে কিছু আদায় করে নিতে পারে।”
জাদেজা এই টেস্ট খেলতে নেমেছিলেন ২৯৪ উইকেট নিয়ে। প্রথম ইনিংসে নিয়েছেন দুই উইকেট। অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডার দ্বিতীয় ইনিংসেই ৩০০ উইকেটে শিকার করার ব্যাপারে বেশ আশাবাদী। “আমি আজ যেভাবে বোলিং করেছি, আমি আমার বোলিং নিয়ে খুব খুশি। এই মাঠে ৩০০তম উইকেট নেওয়ার এটি একটি ভালো সুযোগ।”
সেই গত ওয়ানডে বিশ্বকাপ থেকে একটা লম্বা সময় সাকিব আল হাসানকে যেতে হয়েছে চোখের সমস্যা নিয়ে। সেটার প্রভাবে নানা সময়েই তাকে ব্যাটিং করতে দেখা গেছে নানা রকম পজিশনে দাঁড়িয়ে। হেড পজিশন ঠিক রাখতেই মূলত সাকিবকে নিতে হয়েছে নানা পদক্ষেপ। চলমান চেন্নাই টেস্টেও দেখা মিলেছে অভিনব এক ঘটনা। হেলমেটের ভেতর একটি স্ট্র্যাপ কামড়ে ব্যাটিং করেন সাকিব। স্বাভাবিকভাবেই তা জন্ম দিচ্ছে নানা প্রশ্নের।
সাকিবের চোখের সমস্যা অনেক আগেই সেরে গেছে বলে তিনি নিজেই জানিয়েছেন। তবে হেড পজিশন নিয়ে সংগ্রাম যেন কোনোভাবেই শেষ হচ্ছে না। অনেকবারই দেখা গেছে, ব্যাটিংয়ের সময় সাকিবের মাথা থাকছে এক জায়গায়, বলের দিকে তাকাচ্ছেন আড়চোখে আর বল আবার পিচ করছে অন্যদিকে। এসবের প্রভাবে গত এক বছর ধরে ব্যাট হাতে সব ফরম্যাটেই সাবেক এই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারকে যেতে হচ্ছে কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে।
চেন্নাই টেস্টে সেটা কাটানোর চেষ্টায় সাকিব ব্যাট করতে নামেন নতুন উপায় অবলম্বন করে। হেলমেটের ভেতর থাকা একটি স্ট্র্যাপ কামড়ে পুরো ইনিংস জুড়েই ব্যাটিং চালিয়ে যান তিনি৷ বিস্ময়কর এই ব্যাটিং টেকনিক নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভালোই আলোচনা হচ্ছে। এটা নিছকই সাজিবের অভ্যাস নাকি চাপের পরিস্থিতিতে ফোকাসের ধরে রাখার প্রচেষ্টা, তা নিয়েও চলছে চর্চা।
ধারাভাষ্যকারদের মধ্যেও সাকিবের এই স্ট্র্যাপ কামড়ে ব্যাটিং নিয়ে মনে জেগেছে প্রশ্ন। এই সিরিজে ধারাভাষ্যকার হিসেবে কাজ করা তামিম ইকবালের কাছে এই ব্যাপারে তাই জানতে চেয়েছিলেন সাবেক ভারত উইকেটরক্ষক-ব্যাটার দিনেশ কার্তিক। নিজের জায়গা থেকে তামিম ধারণা দিয়েছেন এই ব্যাপারে।
কার্তিকের মতে, তামিম তাকে বলেছেন এই স্ট্র্যাপটি সাকিবের হেড পজিশন ঠিক রাখতে সাহায্য করছে। এটা সাকিবকে নিশ্চিত করতে সাহায্য করে যে, তার হেড পজিশন ও শটের সময় তার মাথা লেগ সাইডের দিকে না চলে যায়। স্ট্র্যাপটির টান, যা তার হেলমেটে বাঁধা, সাকিবকে একটা ধারণা দেয় যে মাথা খুব বেশি কাত হতে যাচ্ছে। আর এটা তাকে ক্রিজে আরও ভালো ভারসাম্য এবং নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে সাহায্য করে।
সাকিবের অভিনব এই কৌশল বেশ কিছুটা কাজে লেগেছিল তার ব্যাটিংয়েও। ৩৬ রানে চার উইকেট হারানোর পর নেমে চাপের মুখে কয়েকটি ভালো শটে খেলেন ৩২ রানের ইনিংস, যা ১৪৯ রানে অলআউট হওয়া বাংলাদেশের ইনিংসের সর্বোচ্চ স্কোর।
২ দিন আগে
২ দিন আগে
৩ দিন আগে
৫ দিন আগে
৬ দিন আগে
৮ দিন আগে
৯ দিন আগে
২ দিন আগে
২ দিন আগে
৩ দিন আগে
৫ দিন আগে
৬ দিন আগে
৮ দিন আগে
৯ দিন আগে
২ দিন আগে
২ দিন আগে
৩ দিন আগে
৫ দিন আগে
৬ দিন আগে
৮ দিন আগে
৯ দিন আগে
২ দিন আগে
২ দিন আগে
৩ দিন আগে
৫ দিন আগে
৬ দিন আগে
৮ দিন আগে
৯ দিন আগে