১২ জুন ২০২৪, ১২:৫১ এম
লো-স্কোরিং একটি ম্যাচ, যেখানে প্রতিটি রানই মহামূল্যবান, সেখানে একটি দল যদি একটা বাউন্ডারি সমান রান হারায় আম্পায়ারেক এক ভুলে, সেটা যথেষ্ট হতাশার কারণ হওয়াটাই স্বাভাবিক৷ আর দিন শেষে পরাজয়ের ব্যবধানও যদি হয় চার রানই, সেই ক্ষতে প্রলেপ দেওয়াটা ভীষণ কঠিনই ঠেকার কথা। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টানটান উত্তেজনার ম্যাচে বাংলাদেশের সাথে ঠিক এমনটাই হয়েছে। যা নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে তাওহীদ হৃদয়েরও৷ তবে এটাও বলেছেন, তারাও নিজেদের কাজটা ঠিকঠাক করতে পারেননি।
১১৪ রান তাড়ায় তাওহীদ ও মাহমুদউল্লাহর জুটিতে ভালো অবস্থানে বাংলাদেশ৷ ১৭তম ওভারে ওটনিল বার্টম্যানের একটি ডেলিভারি মাহমুদউল্লাহর পায়ে লেগে চলে যায় বাউন্ডারিতে। তবে দক্ষিণ আফ্রিকা আবেদন করার সাথে সাথেই এলবিডব্লিউর আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। রিভিউতে দেখা যায়, বল ছিল লেগ স্ট্যাম্পের বেশ বাইরে। তাতে আউট না হলেও চারটি রান থেকে বঞ্চিত হয় বাংলাদেশ, যা শেষ পর্যন্ত দুই দলের মাঝে ব্যবধান হয়ে দাঁড়ায়।
ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে তাওহীদ তাই বেশি আক্ষেপ করেন ওই সিদ্ধান্তটি নিয়েই। “সত্যি বলতে ওটা ভালো সিদ্ধান্ত ছিল না। ওই সময় চারটা রান আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমি মনে করি আম্পায়ার কল দিয়েছেন, আম্পায়াররা কল দিতেই পারেন। তারাও মানুষ, ভুল তো হতেই পারে। কিন্তু আরও দুই একটি ওয়াইড কল ছিল, যেগুলো ওয়াইড দেওয়া হয়নি। এখানে এরকম ভেন্যুতে খেল হচ্ছে, যেখানে রান হচ্ছে না, লো-স্কোরিং ম্যাচ হচ্ছে। সেই জায়গায় এক-দুটি রানও অনেক বড় ব্যাপার।”
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে আপনি যা দেখেছেন এবং যা দেখেননি…
মাহমুদউল্লাহকে আউটের ভুল সিদ্ধান্ত দেওয়ার পর কাগিসো রাবাদার বলে তাওহীদকেও এলবিডব্লিউ দেন আম্পায়ার। রিভিউতে দেখা যায়, লেগ স্ট্যাম্পের বেইলসে কোনোমতে হিট করত বলটি। তবে আম্পায়ার্স কল হওয়ায় এযাত্রায়ও সিদ্ধান্ত নিজেদের পক্ষে পায় দক্ষিণ আফ্রিকার। ৩৭ রান করা তাওহীদের আউটই শেষ পর্যন্ত হয়ে দাঁড়ায় ম্যাচের অন্যতম টার্নিং পয়েন্ট।
এগুলো ছাড়াও পুরো ম্যাচেই আম্পায়ারিংয়ের নান নিয়ে একেবারেই সন্তুষ্ট নন তাওহীদ। “আমি মনে করি সেই চারটা রান বা দুটি ওয়াইডও খুব ক্লোজ কল ছিল। এমনকি আমার আউটটাও আম্পায়ার্স কলেই ছিল। তাই আমার কাছে মনে হয়, এই জায়গাগুলিতে আরও উন্নতির সুযোগ রয়েছে। তবে আমার মনে হয়, যা হওয়ার তা হয়ে গেছে।”
ম্যাচ হেরে আম্পায়ারিং নিয়ে বাংলাদেশের প্রশ্ন তোলার অবকাশ অবশ্যই রয়েছে। তবে এটাও ঠিক, ৬ উইকেট হাতে রেখে ১৮ বলে ২০ রান করতে পারাটা ব্যাটিং ইউনিটেরও বড় ব্যর্থতা। দলের সের ব্যাটার তাওহীদ এদিনও বাংলাদেশকে লড়াইয়ে রেখেছিলেন ৩৪ বলে ৩৭ রানের দারুণ এক ইনিংসে। তবে তার আউটের পর একটি বাউন্ডারিও মারতে ব্যর্থ হন অন্য ব্যাটাররা। শেষ ওভারে ফুল টসে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ। ব্যর্থ হন জাকের আলি, রিশাদ হোসেনরাও।
তবে সতীর্থদের আগলে দোষটা নিজের বলেই দাবি তাওহীদের। “আসলে ওরকম একটা পরিস্থিতি থেকে আমারই ম্যাচটা শেষ করে আসা উচিত ছিল। এই ধরনের কন্ডিশনে নতুন ব্যাটসম্যানের জন্য ক্রিজে গিয়েই মানিয়ে নেওয়াটা কঠিন। তাই আমার ম্যাচটা শেষ করা উচিত ছিল। আমার কাছে কখনই মনে হয়নি যে আমরা ম্যাচটা হারতে পারি। আমি যদি ম্যাচটা শেষ করতাম, তাহলে গল্পটা ভিন্ন কিছুই হতো।”
এতো ভালো ব্যাটিং পরও তাওহীদের ম্যাচ শেষ না করে আসতে পারার আক্ষের তার বড় ক্রিকেটার হওয়ার মানসিকতার পরিচয়ই দেয়। তবে এটাই অস্বীকার করার উপায় নেই, টপ অর্ডার ব্যাটাররা, বিশেষ করে নাজমুল হোসেন শান্ত ও সাকিব আল হাসান যেভাবে প্রতিপক্ষের সেরা বোলার আনরিখ নরকিয়াকে উইকেট উপহার দিয়ে এসেছেন, সেটা দলকে বাড়তি চাপে ফেলে দিয়েছিল শুরুতেই।
এখানেও তাওহীদ ঢাল হয়ে অন্য ব্যাটারদের রক্ষা করে দায়টা নিতে চেয়েছেন নিজের ওপরই। “আমরা ম্যাচ হেরে গেছি আসলে আমি আউট হওয়ায়। আমি যদি ওখানে ম্যাচটা শেষ করতে পারতাম, তাহলে আমরা ম্যাচটা হারতাম না। তারা তো অনেক আগেই আউট হয়ে গেছেন। কিন্তু আমি তো শেষ পর্যন্ত টিকে ছিলাম। আমার মনে হয়েছে, আজকের খেলাটা আমিই জিতিয়ে দিতে পারতাম। আমি আউট হয়ে গিয়েছি, পারিনি।”
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯:০৪ পিএম
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬:৪৭ পিএম
চা বিরতির ঠিক আগে আক্রমণে ফিরলেন জাসপ্রিত বুমরাহ। মুখোমুখি দ্বিতীয় বলেই আউট হলেন পেসার হাসান মাহমুদ, আর তখনই চা বিরতি দিয়ে দিলেন আম্পায়াররা। আর সেটা বাংলাদেশকে দাঁড় করিয়েছে আরও বিপদের মুখে। একে একে যে এই সেশনেই সাজঘরে ফিরেছেন পাঁচ ব্যাটার। তাতে এখন উঁকি দিচ্ছে ফলো-অনের শঙ্কা।
দিনের শুরুতে ভারতকে দ্রুতই ৩৭৬ রানে অলআউট করে ভালো কিছু আশা জাগাচ্ছিল বাংলাদেশ। তবে ব্যাটিংয়ে নামতেই উবে যায় সব। ভারতের পেসারদের সামনে রীতিমত অসহায় আত্মসমর্পণ করেন টপ অর্ডারের তিন ব্যাটার। তাতে ২৬ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।
যেখানে শেষ, সেখান থেকেই যেন শুরু দ্বিতীয় সেশনের। বুমরাহকে এক ওভারে দুটি চার মেরে অবশ্য ইতিবাচক ক্রিকেটের আভাস ছিল মুশফিকুর রহিম ও নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাটে। তবে তাদের লড়াই বেশিদূর যেতে পারেনি। ৩ চারে ২০ রান করে মোমাম্মদ সিরাজের শিকার হন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
পরের ওভারে মুশফিকুরকেও ফিরিয়ে মাত্র ৩৯ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে প্রবল চাপের মুখে পড়ে বাংলাদেশ। দাঁতে দাঁত চেপে এরপর কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও লিটন দাস।
এই দুজনের ৫২ রানের জুটি ভাঙে রবীন্দ্র জাদেজার বলে লিটন দাস সুইপ করতে গিয়ে ক্যাচ আউটে। সেই ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগে জাদেজাকেই রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে সাজঘরে ফেরেন সাকিবও। তার আগে খেলেন ৩২ রানের ইনিংস।
এরপর হাসানের ওই উইকেট। আর তাতে ৩৬.৫ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর দাঁড়িয়েছে ৮ উইকেটে ১১২। পিছিয়ে এখনও ২৬৪ রানে।
পাকিস্তানের বিপক্ষে সবশেষ টেস্টের দুর্দান্ত ফর্ম নিয়েই নেমেছিলেন ভারতের বিপক্ষে। আর সেই উপলক্ষ্যটা কী দারুণভাবেই না রাঙিয়েছেন হাসান মাহদুদ। চেন্নাই টেস্টের দ্বিতীয় দিনে পূর্ণ করেছেন পাঁচ উইকেট। ফলে টানা দুই ইনিংসে ফাইফার নেওয়ার অসাধারণ কীর্তি গড়েছেন বাংলাদেশ পেসার। তাতে রেকর্ডের পাতায়ও এনেছেন কিছু পরিবর্তন।
এই টেস্টের প্রথম ইনিংস হাসান শেষ করেছেন ৮৩ রানে ৫ উইকেট নিয়ে। ভারতের মাটিতে বাংলাদেশের পেসারদের এটিই এখন সেরা বোলিং ফিগার। আগেরটি ছিল আবু জায়েদ রাহির (৪/১০৮)।
চার ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে এই নিয়ে দুইবার ইনিংসে পাঁচ শিকার করেছেন হাসান। আর এটা তাকে বাংলাদেশের পেসারদের মধ্যে ইনিংসে পাঁচ বা তার বেশি উইকেট নেওয়ার তালিকায় তুলে এনেছে যৌথভাবে রবিউল ইসলামের (৯ ম্যাচ) পাশে। চারবার ফাইফার নিয়ে শীর্ষে আছে শাহাদাস হোসেন (৩৮ ম্যাচ)।
সব মিলিয়ে বাংলাদেশের পঞ্চম বোলার হিসেবে ভারতের বিপক্ষে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন হাসান। অন্য চারজন হলেন নাঈমুল রহমান দুর্জয়, সাকিব আল হাসান, মেহেদি হাসান মিরাজ ও শাহাদাত হোসেন।
বাংলাদেশের মাত্র দ্বিতীয় পেসার হিসেবে টানা দুই ইনিংসে পাঁচ বা তার বেশি উইকেট নিয়েছেন হাসান। এর আগে এই রবিউল এই কীর্তি গড়েন ২০১৩ সালে হারারেতে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে।
হাসান মাহমুদ প্রথম বাংলাদেশি বোলার যিনি ভারতে টেস্ট ম্যাচে পাঁচ উইকেট শিকার করলেন। এরআগের সফরগুলোতে সাকিব-তাইজুল-মিরাজদের মত কোন স্পিনারও এই সাফল্য দেখাতে পারেননি। একজন পেসার হিসেবে চেন্নাইয়ের উইকেটে হাসানের সাফল্যে ভারতকে ৩৭৬ রানে অলআউট করে টাইগাররা।
২০১৯ সালে ইন্দোর টেস্টে পেসার আবু জাহেদ রাহি ১০৮ রানে চার উইকেট নিয়েছিলেন- এটাই ছিল বাংলাদেশি কোন বোলারের সেরা সাফল্য। এবার হাসান মাহমুদ ৮৩ রান খরচায় নিলেন পাঁচ উইকেট। জাসপ্রীত বুমরাহকে জাকির হাসানের ক্যাচ বানিয়ে পাঁচ উইকেটের মাইলফলকে পৌঁছেন হাসান। বুমরাহ ছাড়া তার বাকি চার শিকারের সবাই প্রতিষ্ঠিত ও নামকরা ব্যাটসম্যান। রোহিত শর্মা, শুভমান গিল, ভিরাট কোহলি ও রিশাভ পান্ত- প্রত্যেকেই টেস্টের প্রথমদিন তাঁর দুর্দান্ত সুইং বোলিংয়ের শিকার হন। এরমধ্যে প্রথম তিন জন আউট হন সিঙ্গেল ফিগারে, একমাত্র পান্ত খেলেছেন ৩৯ রানের ইনিংস।
রাওয়ালপিণ্ডি টেস্টের শেষ ইনিংসে ৪৩ রান খরচায় পাঁচ উইকেট নিয়েছিলেন হাসান, যেটি ঐ টেস্ট জিততে সহায়তা করেছিল টাইগারদের। অর্থাৎ টানা দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট পেলেন হাসান। মাত্র চতুর্থ টেস্ট খেলছেন তিনি, সবমিলে ১৯ উইকেট তাঁর ঝুলিতে ২২.৭৮ গড়ে। তাঁর এই দুর্দান্ত শুরু নতুন দিনের ইঙ্গিত দিচ্ছে বাংলাদেশের পেস অ্যাটাকে। এখনও ২৫ বছর না ছোঁয়া হাসান টানা দুই ইনিংসে ফাইফার পেয়ে ধারাবাহিকতার নজিরও রাখলেন।
লক্ষীপুরের লক্ষ্মী ছেলে হাসান এখন পর্যন্ত ২০টি ফার্স্ট ক্লাস ম্যাচ খেলেছেন, কিন্তু পাঁচ উইকেটের দেখা পেয়েছেন কেবল ঐ টেস্ট ম্যাচে। দু’বারই ঘটনা ঘটেছে বিদেশের মাটিতে।
এরআগে বাংলাদেশি পেসারদের মধ্যে ইনিংসে সর্বাধিক চারবার পাঁচ উইকেট নেন শাহাদাত হোসেন। দু’বার করে নেন রবিউল ইসলাম ও হাসান মাহমুদ। এছাড়া একবার করে নিয়েছেন মঞ্জুরুল ইসলাম, রুবেল হোসেন, এবাদত হোসেন ও খালেদ আহমেদ। সবমিলে ইনিংসে পাঁচ উইকেট শিকারের ক্লাবে আছে ৭ বাংলাদেশি পেসারের নাম।
১ দিন আগে
২ দিন আগে
২ দিন আগে
২ দিন আগে
৪ দিন আগে
৪ দিন আগে
৪ দিন আগে
৫ দিন আগে
৫ দিন আগে
৫ দিন আগে
৬ দিন আগে
৮ দিন আগে
৮ দিন আগে
৯ দিন আগে
৯ দিন আগে
১ দিন আগে
২ দিন আগে
২ দিন আগে
২ দিন আগে
৪ দিন আগে
৪ দিন আগে
৪ দিন আগে
৫ দিন আগে
৫ দিন আগে
৫ দিন আগে
৬ দিন আগে
৮ দিন আগে
৮ দিন আগে
৯ দিন আগে
৯ দিন আগে
১ দিন আগে
২ দিন আগে
২ দিন আগে
২ দিন আগে
৪ দিন আগে
৪ দিন আগে
৪ দিন আগে
৫ দিন আগে
৫ দিন আগে
৫ দিন আগে
৬ দিন আগে
৮ দিন আগে
৮ দিন আগে
৯ দিন আগে
৯ দিন আগে
১ দিন আগে
২ দিন আগে
২ দিন আগে
২ দিন আগে
৪ দিন আগে
৪ দিন আগে
৪ দিন আগে
৫ দিন আগে
৫ দিন আগে
৫ দিন আগে
৬ দিন আগে
৮ দিন আগে
৮ দিন আগে
৯ দিন আগে
৯ দিন আগে