২ এপ্রিল ২০২৪, ৯:১৭ এম
ওপেনিং জুটি বদলে গেলেও ইনিংসের প্রথম ভাগে ব্যাট হাতে দাপট দেখালো অস্ট্রেলিয়ার। এরপরই ম্যাচে ফিরল বাংলাদেশ। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে এরপর প্রতিপক্ষকে চেপে ধরল বোলাররা। শেষে ওভারে হ্যাটট্রিক করে ফারিহা তৃষ্ণার, এরপরও অবশ্য চ্যালেঞ্জিং টার্গেট ছুড়ে দিল অ্যালিসা হিলির দল।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে আগে ব্যাটিং করে অস্ট্রেলিয়া করেছে ৮ উইকেটে ১৬১ রান।
আগের ম্যাচে বাংলাদেশের ১২৬ রান অস্ট্রেলিয়ার তাড়া করে ফেলেছিল ১৩ ওভারে, বিনা উইকেটে। অপরাজিত ফিফটি করেন অ্যালিসা হিলি ও বেথ মুনি। তবে এই ম্যাচে অন্যদের সুযোগ দিতে ব্যাটিং অর্ডারে নিচের দিকে নেমে যান দুজন। ওপেন করেন ফোবি লিচফিল্ড ও গ্রেস হ্যারিস।
মারুফা আক্তারের করা ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে তিন বাউন্ডারিতে ভালো শুরুর আভাস দেন হ্যারিস। অন্যপ্রান্তে খুব একটা সাবলীল না থাকা লিচফিল্ডকে ২ রানে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য এনে দেন ফারিহা তৃষ্ণা। ওই ওভারটি মেইডেন নেন তিনি।
আরও পড়ুন: হ্যাটট্রিক করেও দল হারায় হতাশ ফারিহা, বিশ্বাস ছিল রান তাড়ায় জেতার
ক্রিজে গিয়ে আক্রমণ শানান জর্জিয়া ওয়ারহাম। ফারিহার এক ওভারে দুই চার সহ নেন ১০ রান। বাংলাদেশের বোলারদের কাউন্টার-এটাকিং ব্যাটিংয়ে চাপে ফেলে ঝড় বয়ে যায় স্বর্না আক্রারের ওপর দিয়ে। নিজের প্রথম ওভারে এক ছক্কা ও তিন বাউন্ডারিতে হজম করেন ২০ রান।
মাত্র ২৬ বলে পঞ্চাশে পা রাখেন ওয়ারহাম। এরপরই লড়াইয়ে ফেরে বাংলাদেশ। শুরুটা করেন নাহিদা আক্তার। গত নভেম্বর মাসের আইসিসির মাস সেরা এই স্পিনারের বলে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় ওয়ারহামের ৩০ বলে ৫৭ রানের ইনিংস।
অস্ট্রেলিয়ার চাপ বাড়িয়ে ১৩তম ওভারে জোড়া আঘাত হানেন ফাহিমা খাতুন৷ প্রথম বলে চার মারার পরের বলে ফাহিমাকে রিটার্ন ক্যাচ দেন অ্যাশলে গার্ডনার। তিন বল পর বাংলাদেশকে বড় উইকেটটা এনে দিয়ে হ্যারিসকেও সাজঘরের পথ দেখান ফাহিমা। এর আগে ৩৪ বলে ৪৭ রান আসে হ্যারিসের ব্যাট থেকে।
এরপরের কয়েকটি ওভারে কয়েকটি বড় শটের দেখা পেলেও সেভাবে রান বাড়াতে পারেনি অজিরা। সফরকারীদের ১৬০ প্লাস স্কোর গড়ায় অবদান শেষের দিকে এলিসা পেরির ছোট ক্যামিও। অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডার ২২ বলে করেন ২৯।
দুর্দান্ত ২০তম ওভারে শেষ তিন বলে পেরি, সোফি মলিনেক্স ও বেথ মুনিকে ফিরিয়ে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ নারী জাতীয় ক্রিকেট দলের হয়ে দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক করেন ফারিহা।
পুরো ক্যারিয়ার জুড়েই বাংলাদেশের মিডল অর্ডার সামলে আসছেন মুশফিকুর রহিম। সাম্প্রতিক সময়ে অবশ্য ছয় নাম্বারেই ব্যাটিং করছেন এই অভিজ্ঞ ব্যাটার। অথচ আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে মুশফিক নামলেন সাত নাম্বারে। পরে জানা যায়, মূলত আঙুলের চোটের কারণেই দেরিতে ব্যাট করতে নেমেছিলেন মুশফিক।
আরও পড়ুন
মুশফিকের ৬ হাজার টেস্ট রানের ছায়ায় জিরিয়ে নিচ্ছে বাংলাদেশ |
প্রথম ম্যাচে উইকেট কিপিং করার সময়ই এই চোট পেয়েছিলেন মুশফিক। আঙুলে চিড় ধরায় পরের ওয়ানডেতে খেলা নিয়েও তৈরি হয়েছে শঙ্কা। জানা গেছে, এই মুহূর্তে তার আঙুলের যে অবস্থা তাতে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মুশফিকের না খেলার সম্ভাবনাই বেশি।
তবে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আজ বেশি কিছু পরীক্ষা করা হবে মুশফিকের আঙুলে। তখনই পরিষ্কার জানা যাবে কবে নাগাদ আবার ফিরতে পারবেন এই উইকেট কিপার ব্যাটার। সবকিছু ঠিক থাকলে হয়তো সিরিজের শেষ ম্যাচে আবার মাঠে নামতে পারবেন তিনি।
আরও পড়ুন
রেকর্ড গড়তে আর ৮১ রান দরকার মুশফিকের |
অন্য দিকে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাজে ভাবে হারতে হয়েছে বাংলাদেশ দলকে। মাত্র ১১ রানে শেষ ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলেছে বাংলাদেশ দল। ম্যাচ হারতে হয়েছে ৯২ রানে।
ফিল্ড সাজানো নিয়ে অধিনায়ক সাই হোপের সঙ্গে ঝামেলা বাধে পেসার আলজেরি জোসেফের। সেটা তর্কাতর্কি পর্যন্ত গড়িয়েছে। তাতে রেগেমেগে মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে গেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের বোলার আলজারি জোসেফ। ঐ ওভারটির প্রায় পুরোটাই দশজন নিয়ে ফিল্ডিং করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, যদিও জোসেফ পরে মাঠে ফিরে আসেন। এমনই বিরল ঘটনা ঘটেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ়-ইংল্যান্ড তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচে। আর এই কাজের পরিণতি হিসেবে কোচ ড্যারেন স্যামির সমালোচনার শিকার হচ্ছেন জোসেফ।
ঘটনাটা্ ইংল্যান্ডের ইনিংসের চতুর্থ ওভারে, ঐ সময় বল করতে এসেছিলেন জোসেফ। অধিনায়ক শাই হোপকে ফিল্ডিং সাজানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন পেসার নিজেই। তিনি আসলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট অঞ্চলে একজন ফিল্ডার চেয়েছিলেন। কিন্তু অঞ্চল দিয়ে ইংরেজ ব্যাটার জর্ডান কক্স শট মারার পর অধিনায়কের উপরে রেগে যান জোসেফ। এরপর সেই ওভারেই কক্সকে আউট করেন তিনি। কক্সের গ্লাভসে বল লেগে জমা পড়ে উইকেটকিপার হোপের হাতেই। এসময় অধিনায়কের ওপর ক্ষিপ্ত জোসেফকে কিছু বলতেও দেখা যায়।
আরও পড়ুন
নিউজিল্যান্ড সফরে ইংল্যান্ড দলে ডাক পেলেন তরুণ অলরাউন্ডার |
কিন্তু মূল ঘটনা ঘটে এরপরই। ওভার শেষ হতে অধিনায়কের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যান তিনি। হোপ এবং বাকি ক্যারিবীয় ক্রিকেটারেরা বুঝতেই পারছিলেন না কী করবেন। বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত ফিল্ডার হিসাবে হেডেন ওয়ালশ জুনিয়রকে দ্রুত নামানোর চেষ্টা করা হয়। যদিও হেডেন মাঠে নামার আগে জোসেফ মাঠে ফিরে আসেন। ক্রিকেটের সাথে যায় না এমন আচরণ দেখে ক্ষুব্ধ ধারাভাষ্যকার মার্ক বাউচার বলেন, “মাঝেমাঝে মাঠে থাকাকালীন অধিনায়ক বা খেলোয়াড় হিসাবে আপনার রাগ হতেই পারে। তবে এ সব কাজ বন্ধ দরজার পিছনে করা উচিত। অধিনায়কের পরিকল্পনায় আস্থা রাখা উচিত।”
খেলা শেষে শাই হোপ অবশ্য আর মনে রাখেননি ম্যাচের মধ্যের সেই ঘটনা, ‘মন্তব্য করতে চাই না। খেলায় এমনটা হতেই পারে।’ তা সে হোপ বিষয়টাকে যতটা হালকা করেই দেখুন না কেন, গুরুত্ব আছে কোচ ড্যারেন স্যামির কাছে। এই অলরাউন্ডার বলেন, ‘ক্রিকেট মাঠে এমন আচরণ অগ্রহণযোগ্য। আমরা সবাই বন্ধু হয়ে থাকব। আমি যে সংস্কৃতি তৈরির চেষ্টা করছি, সেখানে এটা মেনে নেওয়া যায় না’।
আরও পড়ুন
‘বাংলাদেশকে বলতে দিন, ইংল্যান্ডও অনেক কিছুই বলেছিল’, বললেন রোহিত |
ব্রেন্ডন কিং ও কেসি কার্টির জোড়া সেঞ্চুরিতে সহজ জয়ে ২-১ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে সেই আনন্দ খানিকটা মলিন হয়ে গেছে আলজেরি জোসেফ মেজাজ হারানোয়!
১ দিন আগে
২ দিন আগে
৩ দিন আগে
৩ দিন আগে
১৪ দিন আগে
২৫ দিন আগে