নাঈম ইসলামের এই ইনিংস তার পুরো ক্যারিয়ারেরই প্রতিকী। একার লড়ে যাওয়া। হোম অব ক্রিকেটেও নাঈম একাই লড়লেন। প্রথম ইনিংসে ৮৯ করে তো একাই লড়লেন দলের জন্য, দল সেন্ট্রাল জোন তুলল বোর্ডে ২৪৮।
এই ডিসেম্বরেই তুষার ইমরানের ৩২ সেঞ্চুরিতে দুই নম্বরে ঠেলে বাংলাদেশিদের মধ্যে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে সর্বোচ্চ শতক নিজের করে নেন নাঈম ইসলাম। লাল বলের ক্রিকেটে এখনো দেশের সেরাদের একজন এই ব্যাটারই।
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে আগেই সাড়ে দশ হাজার রান, ৩৩ শতক, ৪৪ অর্ধশতক করেও একই নাঈম। দলের বিপদে একাই লড়ে যাওয়ার অভ্যাসটা একই। ৪৩ গড়ের নাঈম যে বয়সে ৩৭ হাতছানি দেওয়ার সময়েও পারেন, প্রমাণ করলেন আরেকবার।
আরও পড়ুনঃ বরাবরের মতই অল-রাউন্ডারদের চাহিদা আইপিএল নিলামে আকাশচুম্বী
সাউথ জোন প্রথম ইনিংসে থেমেছিল ২১৪ রানে। নাঈমের কল্যাণে সাউথ জোনের রান ৩৪ বেশি। দলটা নিয়মিতই হারিয়েছে উইকেট। নবম উইকেট ২০১ রানে হারালেও আরো যোগ হয় ৪৭ রান, নাঈমের কৃতিত্বেই।
পুরো ইনিংসে নাঈমের আক্ষেপ কেবল একটাই। দারুণ খেলেও শতক না পাওয়া। ১১ রান আগে থামা চারে নামা এই ব্যাটারের।
১৩ চার আর এক ছক্কার ইনিংসে ২৪৫ মিনিট ছিলেন উইকেটে। ১৮১ বলে ৪৯ স্ট্রাইক রেটের ইনিংস বলে নাঈম লড়েছেন। হোম অব ক্রিকেটে রান করা কতটা কঠিন সবার জানা। নাঈমের ইনিংস প্রমাণ করল সেটাও।
আরও পড়ুনঃ দল পেলেন না নামী দামী সব স্পিনারদের কেউই
মিরপুরে ১১ তম বিসিএলের মঙ্গলবারে দিনের গল্পের অনেকটাই নাঈমের ৮৯ রান হলেও মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনও খেলেছেন ৬৬ রানের ইনিংস।
হোম অব ক্রিকেটে ১৪২ ডট বলের ইনিংসে নাঈম ২১টা সিঙ্গেল, পাঁচটা ডাবলস আর ১৩ চার, এক ছক্কায় ছিল নাঈমের ৮৯ রানের ইনিংস। যে ইনিংসে মিলেছে দলের বাহবাও।
দ্বিতীয় দিন শেষে সাউথ-সেন্ট্রার জোনের ম্যাচে ১৩ রানের লিডে সাউথ জোন। সিলেটে অন্য ম্যাচে ইস্ট জোন থেকে নর্থ জোন পিছিয়ে ১৭৭ রানে।
১০ নভেম্বর ২০২৪, ২:৫৮ পিএম
সিরিজের প্রথম ম্যাচে ছোট রান তাড়ায় অস্ট্রেলিয়া জিতলেও ভালোই কাঁপুনি ধরিয়ে দিয়েছিলেন পাকিস্তান পেসাররা। দ্বিতীয় ম্যাচে তাদের হাত ধরে বড় জয় পাওয়া সফরকারীরা আরও একবার গুঁড়িয়ে দিলেন অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং অর্ডার। শাহিম শাহ আফ্রিদি, নাসিম শাহ ও হারিস রউফের পেসের সামনে খেই হারালেন অজি ব্যাটাররা। মামুলি রান তাড়ায় মোহাম্মদ রিজওয়ানের দল তুলে নিল দাপুটে জয়।
পার্থের গতিময় উইকেটে পুরো ইনিংস জুড়েই রানের জন্য সংগ্রাম করা অস্ট্রেলিয়া ৩১.৫ ওভারে গুটিয়ে যায় মাত্র ১৪০ রানে। ২৬.৫ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে সেই রান তাড়া করেছে পাকিস্তান। তিন ম্যাচের সিরিজে রিজওয়ানের দল জিতেছে ২-১ ব্যবধানে।
সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া আগে ব্যাটিং করে অলআউট হয়েছিল মাত্র ১৬৩ রানে। পাঁচ উইকেট নিয়েছিলেন রউফ, যিনি প্রথম ম্যাচে শিকার করেছিলেন তিন উইকেট। তৃতীয় ম্যাচে আরও একবার প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের কঠিন পরীক্ষা নিয়েছেন এই ডানহাতি পেসার।
আরও পড়ুন
রউফের ফাইফারে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়াকে উড়িয়ে দিল পাকিস্তান |
তবে এই ম্যাচে তার সাথে পাল্লা দিয়ে বোলিং করেছেন অন্য পেসাররা। জ্যাক ফ্রেজার-ম্যাকগার্ককে শুরুতেই ফিরিয়ে দেন নাসিম শাহ। তার ও শাহিনের দারুণ বোলিংয়ে মাত্র ৫৬ রানে ৩ উইকেটে হারিয়ে চাপে পড়ে যায় অস্ট্রেলিয়ার। একপ্রান্ত আগলে ব্যাট করা ওপেনার ম্যাথু শর্টকে ২২ রানে ফিরিয়ে দেন রউফ। এই ধাক্কাই আর কাটিয়ে উঠতে পারেনি দলটি।
আরও পড়ুন
অস্ট্রেলিয়ার জন্য ব্রেট লি’র ‘বাইসন বল’ থিওরি |
আটে নামা সিন অ্যাবোটই কেবল যাওয়া-আসার মিছিলে কিছুটা লড়াই করেন। খেলেন দলীয় সর্বোচ্চ ৩২ রানের ইনিংস। তবে পুরো দলই যেখানে ব্যর্থ, সেখানে এই রানও পারেনি দলকে দুইশ রানের ধারেকাছেও নিতে।
তিনটি করে উইকেট নেন শাহিন ও নাসুম। রউফ নেন দুটি, আর একটি উইকেট যায় আরেক পেসার মোহাম্মদ হাসনাইনের ঝুলিতে।
আগের ম্যাচে ১৬৩ রান ডিফেন্ড করতে গিয়ে অস্ট্রেলিয়া হেরেছিল ৯ উইকেটে। তার চেয়েও কম রান নিয়ে তাই বোলারদের জন্য করার ছিল না বলতে গেলে কিছুই। হয়েছেও তাই শেষ পর্যন্ত। বলা যায়, ম্যাচের প্রথম দশ ওভারেই সামান্যতম লড়াইয়ের সব সম্ভাবনা শেষ করে দেন পাকিস্তান ওপেনাররা।
আবদুল্লাহ শফিক কিছুটা রয়েসয়ে খেললেও সাইম আইয়ুব ছিলেন চেনা আগ্রাসী ছন্দে। অস্ট্রেলিয়ার অনভিজ্ঞ বোলিং লাইনআপকে এলোমেলো করে দেন শুরু থেকেই। যেভাবে ছুটছিলেন তিনি ও শফিক, তাতে দুজনের ফিফটি নিশ্চিত বলেই মনে হচ্ছিল। তবে ৮৪ রানের জুটি গড়ার পর একই ওভারে বিদায় নেন উভয় ব্যাটার।
প্রথমে ৩৭ রান করা শফিককে নিজের বলে নিজেই ক্যাচ নিয়ে বিদায় করেন ল্যান্স মরিস। এরপর বোল্ড করেন ৫২ বলে ৪২ করা সাইমকে। তবে তাতে পরাজয়ের ব্যবধানই কমেছে কেবল।
আনুষ্ঠানিকতা সারার বাকি কাজটা নির্বিঘ্নে করেন বাবর আজম ও রিজওয়ান। দুজন অপরাজিত থাকেন যথাক্রমে ২৮ ও ৩০ রানে।
ধীরগতির উইকেটে আগের ম্যাচেও রান তাড়ায় খেলেছিলেন দারুণ এক ইনিংস। তবে ম্যাচ শেষ করে আসতে পারেননি। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আরেকটি ফিফটি করা নাজমুল হোসেন শান্ত আশা জাগিয়েছিলেন শতকের। কিন্তু পারেননি। তবে এই দফায় বাংলাদেশ অবশ্য জয়ের দেখা পেয়েছে। এরপরও তাই আক্ষেপ রয়ে গেছে বাংলাদেশ অধিনায়কের। শান্ত মনে করেন, তার আরও লম্বা সময় ব্যাট করা উচিত ছিল।
অবশ্য একই কথা প্রথম ম্যাচের পরও বলেছিলেন শান্ত। সেদিন তার বিদায়ের পরই ভেঙে পড়ে বাংলাদেশের ইনিংস। শারজাহতে নতুন ব্যাটারদের জন্য রান করাটা কঠিন বলেই সেট ব্যাটারদের ওপর দায়িত্ব থাকে বেশি। ৭৭ রান করা শান্ত আউট হওয়ায় তাই এক পর্যায়ে চাপে পড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত অবশ্য ২৫২ রানের স্কোর পেয়ে ম্যাচও জেতে ৬৮ রানে।
দলের জয়ে খুশি হলেও তাই ম্যাচের পর শান্ত নিজের ইনিংসের কমতি তুলে ধরেন। “একটু ভালো লাগছে কিন্তু তবুও কিছুটা আক্ষেপও আছে। আমাদের পরের ম্যাচ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। সত্যি বলতে আমি খুশি নই। স্পিনের বিপক্ষে খেলাটা এই উইকেটে কঠিন ছিল, আর সেই কারণে সম্ভবত আমাকে আরেকতু একটু বেশি সময় ব্যাট করতে হত।”
শান্তর আক্ষেপ আরও দীর্ঘ হতে পারত, যদি না ১৮৪ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর সপ্তম উইকেটে ৪৬ রান করতেন অভিষিক্ত কিপার-ব্যাটার জাকের আলি অনিক ও স্পিনার নাসুম আহমেদ, যিনি এই ম্যাচ দিয়েই এসেছেন একাদশে। বিশেষ করে জাকের দারুণ ফিনিশিং দেন ৩৭ রানের অপরাজিত ইনিংসে। ব্যাটিংয়ের পর বল হাতেও ৩ উইকেট নিয়ে জয়ে অবদান রাখেন নাসুম।
নিজ নিজ ভূমিকায় এই দুজনের অবদান তাই প্রশংসা পেল অধিনায়কের। “মিরাজ ও নাসুম যেভাবে বোলিং করেছে, তা প্রশংসার যোগ্য। আর নতুন বলে আমরা যেভাবে শুরু করেছি, তাসকিং ফিরিয়ে দিল গুরবাজকে। সে একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটার। তারা (জাকের-নাসুম) যেভাবে ফিনিশিং দিয়েছে, সেটা আমাদের মোমেন্টাম এনে দিয়েছে। জাকের এবং লোয়ার মিডল অর্ডারের ব্যাটারদের কাছে থেকে আমি এমনটাই চাই।”
আর আফগানিস্তান অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহিদি বলেছেন, জাকের ও নাসুমের ওই জুটিই তাদের সর্বনাশ করেছে। “শেষ পাঁচ ওভারে তারা ৪০ রান (৫২) করেছে। এটা একটা ব্যবহার করা উইকেট ছিল এবং এখানে পরে ব্যাটিং করা কঠিন। আমাদের প্রথম ১০ ওভার ভালো ছিল না। (বোলিংয়ে) শেষ পাঁচ ওভার আমাদের জন্য খরুচে ছিল। ব্যাটিংয়ে আমরা টানা কিছু উইকেট হারিয়েছি। কিছু জুটি গড়া উচিত ছিল।”
২ দিন আগে
২ দিন আগে
৩ দিন আগে
৩ দিন আগে
৩ দিন আগে
৬ দিন আগে
৭ দিন আগে
৮ দিন আগে
৮ দিন আগে
২০ দিন আগে