৪ জুন ২০২৪, ৬:৩২ পিএম
দুই ফরম্যাট মিলিয়ে শেষ বিশ্বকাপ ছিল ওয়ানডেতে। সেখানে মনে রাখার মতো কিছুই করতে পারেনি বাংলাদেশ। চিত্রটা একই ছিল সবশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও, বিদায় নিতে হতে হয়েছিল গ্রুপ পর্ব থেকেই। চলমান ২০ ওভারের বিশ্বকাপে কঠিন গ্রুপে থাকা নাজমুল হোসেন শান্তর দলের পরের রাউন্ডে যাওয়াটা বেশ কঠিনই দেখা হচ্ছে। পেসার শরীফুল ইসলাম অবশ্য আশাবাদী, আগের চেয়ে এবার ভালো করবেন তারা।
গত ওয়ানডে বিশ্বকাপে দশ দলের মধ্যে অষ্টম হয়েছিল বাংলাদেশ। আর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তো নিয়মিতভাবেই গ্রুপ পর্বেই শেষ হয় পথচলা। সাম্প্রতিক যে ফর্ম, তাতে এবারও বড় স্বপ্ন দেখার জায়গায় নেই দল। সেটা ফুটে উঠেছে কোচ ও অধিনায়কের কন্ঠেও। প্রত্যাশায় লাগাম দিতে বলেছেন বারবার। দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা, নেদারল্যান্ডস ও নেপালকে নিয়ে গড়া ‘ডি’ গ্রুপে বাংলাদেশের জন্য অপেক্ষা করছে কঠিন চ্যালেঞ্জ, যা উতরে যাওয়ার জন্য প্রয়োজন নিজেদের সামর্থ্যে বিশ্বাস।
আরও পড়ুন: বিশ্বকাপকে সবচেয়ে স্মরণীয় করতে চান সৌম্য
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ‘দ্য গ্রিন রেড স্ট্রোরি’-তে শরীফুল শুনিয়েছেন সেই আশার কথাই। “সব বিশ্বকাপে সবারই লক্ষ্য থাকে যে শেষ বিশ্বকাপের চেয়ে ভালো করা। সেক্ষেত্রে আমার ইচ্ছা আছে, দলেরও ইচ্ছা আছে আমরা ম্যাচ বাই ম্যাচ জেতার চেষ্টা করব।”
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ঘরের মাটিতে শ্রীলঙ্কার কাছে সিরিজ হারের পর জিম্বাবুয়েকে হারালেও বিস্ময়ের জন্ম দয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সিরিজ হেরে যায় বাংলাদেশ। একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচেও উড়ে গেছে ভারতের কাছে। স্বাভাবিকভাবেই বিশ্বকাপে বাংলাদেশ কেমন করবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে বেশ।
তবে শরীফুলের বিশ্বাস, বিশ্বকাপে ভিন্ন কিছুই দেখা যাবে তাদের কাছ থেকে। “সব খেলোয়াড়েরই স্বপ্ন থাকে বিশ্বকাপ খেলা, সেটা ক্রিকেট হোক আর ফুটবল বা যেকোনো খেলাই হোক না কেন। তো সেখানে আমি যদি অংশ নেই, তাহলে সেটা অনেক বড় পাওয়া। যারাই ক্রিকেটের অংশ, বিশ্বের সবাই বিশ্বকাপটা দেখে। সেক্ষেত্রে সবার একটা ফোকাস থাকে। আমার মনে হয় ওই কারণে তাই বিশ্বকাপে খেলতে যাওয়া নিয়ে অন্যান্য সিরিজের থেকে অতিরিক্ত একটা রোমাঞ্চ কাজ করে।”
বাংলাদেশ দলের বিশ্বকাপে ভালো করার সম্ভাবনায় এগিয়ে রাখা হচ্ছে পেস ইউনিটকে। শরীফুলের সাথে তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমানদের নিয়ে গড়া পেস আক্রমণ দলের বড় শক্তির জায়গা। এই তিনজনের মধ্যে সবার শেষে দলে আসা শরীফুল যখন বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে ব্যস্ত, ততদিনে তাসকিন ও মুস্তাফিজুর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে চেনা মুখ।
এই দুজনের সাথে একই দলে খেলার অভিজ্ঞতা তাই ভিন্নই লাগে শরীফুলের কাছে। “বিপিএল, ডিপিএলে তাসকিন ভাইয়ের সাথে খেলেছি, জাতীয় দলেও খেলছি। মুস্তাফিজ ভাইয়ের সাথেও খেলা হচ্ছে। যখন অনেক ছোট ছিলাম, তখন ভাবতাম কবে উনাদের সাথে খেলব। তাদের সাথে এখন খেলছি, এরচেয়ে বড় পাওয়া আর কী হতে পারে। এটা আমার অনেক স্বপ্নের মধ্যে অন্যতম একটা ছিল।”
আরও পড়ুন: লো-স্কোরিং ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু দ. আফ্রিকার
তাসকিন, মুস্তাফিজুরদের চেয়েও এই দলে শরীফুল বেশি সিনিয়র সতীর্থ হিসেবে পেয়েছেন মুশফিকুর রহমান, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল ও মাহমুদউল্লাহদের। এর মধ্যে সাকিব ও মাহমুদউল্লাহ আছেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে। পুরো দলেই তাদের প্রভাব তাই ইতিবাচকভাবেই অনেক বেশি।
শরীফুলের কাছে সিনিয়র ক্রিকেটারদের থাকাটা দলের জন্য বড় এক পাওয়া। “খেলার সময় তো বড় ভাইরা অবশ্যই সাহায্য করে। আমি যখন নিউজিল্যান্ডে খেলছিলাম, তখন মুশফিক ভাই তখন একটা ভালো কথা বলছিলেন, যেটা এখনও আমার কানে বাজে। কথাটা গোপনই থাক। সত্যি কথা বলতে দলে আমরা খুব কমই সিনিয়র-জুনিয়র দেখি। আমরা একটা পরিবারের মত। যেমন রিয়াদ ভাই কিন্তু দলের সবার সাথে সবচেয়ে ভালো মিশে যায়। উনি কিন্তু আমাদের চেয়ে সবচেয়ে বড়। উনি এমনভাবে মিশেন, মনে হয় না যে উনার সাথে আমাদের বয়সের অনেক পার্থক্য আছে। উনি একবারে পুরো দলকে চাঙ্গা করে রাখে। মনে হয় যেন অনেক ছোট থেকে আমরা যেন এভাবেই খেলছি।”
১৯ জুলাই ২০২৫, ৯:৩৮ এম
১৭ জুলাই ২০২৫, ২:৪৯ পিএম
১৭ জুলাই ২০২৫, ১২:০৯ এম
গ্লোবাল সুপার লিগ ফাইনালের মঞ্চ। প্রস্তুত স্বাগতিক গায়ানা অ্যামাজন ওয়ারিয়র্স। প্রস্তুত ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন রংপুর রাইডার্স। প্রস্তুত প্রভিডেন্সের দর্শক। টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত গায়ানার। যেই পরিকল্পনা নিয়ে নেমেছিল তারা তা এক্কেবারে ঠিকঠাক এক্সিকিউট করেছে দল।
জনসন চার্লস ও এভিন লুইসে শুরু। ম্যাচের ৪র্থ ওভারে দলের রান যখন ২১ খালেদের বলে বাউন্ডারি লাইনে সাইফ হাসানের দুর্দান্ত এক ক্যাচ। মাত্র ৫ রানে ফিরে যান লুইস। প্রথম ইনিংসে রংপুরের গল্প এটুকুই। এরপর পুরোটা আলো কেড়েছে চার্লস ও গুরবাজ জুটি। ৭০ বলে ১২১ রানের এই পার্টনারশিপ এবারের আসরে জিএসএলের সর্বোচ্চ।
চার্লস কিছুটা দেখেশুনে খেললেও রহমানুল্লাহ গুরবাজ কারো ধার ধারেননি। বেদম পিটিয়েছেন রংপুরের বোলারদের। ১৬ তম ওভার পর্যন্ত ক্রিজে থেকে ১৭০ এর ওপর স্ট্রাইকরেটে করেন ৬৬ রান। তাঁর ইনিংসে ছিল ৬ টি চার ও ৪ টি ছক্কা। তাবরাইজ শামসির বলে গুরবাজ আউট হবার আগে অবশ্য ১১ চার ও ১ ছক্কায় ৪৮ বলে ৬৭ করে রিটায়ার্ড আউট হন জনসন চার্লস।
আরও পড়ুন
জিম্বাবুয়ে সফর থেকে ছিটকে গেলেন ফিলিপস |
![]() |
এই জুটি ফিরলেও গায়ানার ততক্ষণে যা করার করা হয়ে গেছে। শেষদিকে শেরফানে রাদারফোর্ড ও রোমারিও শেফার্ডের ক্যামিও দুই ইনিংসে জিএসএল ইতিহাসের সবোর্চ্চ রান বোর্ডে তোলে ইমরান তাহিরের দল। ১ টি করে উইকেট নেন খালেদ, ইফতিখার ও শামসি। রংপুরের সামনে ১৯৭ এর পাহাড়সম টার্গেট তখন।
রংপুর খেই হারিয়েছে প্রথম ইনিংসেই। ইনিংসের ২য় বলেই জাদরানকে ফেরানোর আবেদন। তবে বেঁচে যান তিনি। কিন্তু প্রায় দুশোর লক্ষ্য চাপে ফেলেছিল দলকে মানসিকভাবেই। তিন টপঅর্ডার ফিরে যান সেই চাপেই। ৫ ওভারে ৩০ রানের আগেই আউট হন ইব্রাহিম জাদরান, সৌম্য সরকার ও কাইল মায়ার্স। প্রথম ১০ ওভারে দলের রান তখন ৬৫। রিকোয়ার্ড রানরেট উঠে যায় ১৩’র ওপর।
রক্ষণাত্মকভাবে খেলছিলেন মিডল অর্ডারের সাইফ হাসান ও ইফতিখার আহমেদও। রংপুরের যখন সব হারানো শেষ মনে হচ্ছিল তখনই হঠাৎ জ্বলে ওঠে সাইফের ব্যাট। তাঁর ৩ চার ও ৩ ছক্কা আশা জাগিয়েছিল। পরে সেই উৎসবে যোগ দেন ইফতিখারও।
তবে ১৩ তম ওভারে জমে ওঠে নাটক। বাউন্ডারিতে ইফতিখারের ক্যাচ ধরা নিয়ে তেঁতে ওঠেন ইমরান তাহিররা। তবে বার বার রিপ্লে দেখে বহাল থাকে নট আউটের ডিসিশন। কিন্তু পরের বলেই কপাল পোড়ে রংপুরের। ইফতিখারের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রানআউটের শিকার হন দারুণ খেলতে থাকা সাইফ। ভাঙে দুজনের ৪৪ বলে ৭৩ রানের জুটি।
আরও পড়ুন
ওপেনার হিসেবেই ফেরার লড়াইয়ে নাঈম |
![]() |
ব্যাকফুটে থাকা রংপুর ম্যাচে ফিরল। গড়ল দারুন এক জুটি। কিন্তু ওই ভুল বোঝাবুঝির রানআউটেই এক নিমিষে সব শেষ। ভুলের মাসুল অবশ্য দিতে পারননি ইফতিখার। তিন তিন বার বেঁচে যাওয়া এই ব্যাটার শেষমেশ কাটা পড়েন প্রিটোরিয়াসের ফাঁদে। ফেরেন ২৯ বলে ৪৬ করে।
শেষদিকে মাহিদুল অঙ্কনের ১৭ বলে ৩০ এর ক্যামিও কিছুটা আশা জাগালেও কমিয়েছিল কেবল হারের ব্যবধান। অবশেষে ৩২ রানে ম্যাচ জিতে ২য় আসরে নিজেদের প্রথম শিরোপা জিতল হোস্ট গায়ানা অ্যামাজন ওয়ারিয়র্স। টানা ২য় বারের শিরোপাটা জেতা হলো না। দুর্দান্ত সিজন কাটানো রংপুর শেষ করল রানার্সআপ হয়েই।
যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ ক্রিকেট (এমএলসি) ফাইনালে পাওয়া চোটে মাঠের বাইরে ছিটকে গেছেন নিউজিল্যান্ড অলরাউন্ডার গ্লেন ফিলিপস। ফলে মিস করবেন জিম্বাবুয়েতে চলমান ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজ এবং এরপর টেস্ট সিরিজও।
গত ১৩ জুলাই ওয়াশিংটন ফ্রিডমের হয়ে ফাইনাল খেলার সময় কুঁচকির চোট পান ফিলিপস। এরপরও রাখা হয়েছিল ত্রিদেশীয় সিরিজের দলে। জিম্বাবুয়েতে দলের সঙ্গে যোগ দেওয়ার পর তাঁর অবস্থা মূল্যায়ন করে নিউ জিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড। এরপর এক বিবৃতিতে তারা জানায়, সম্পূর্ণ সুস্থ হতে ফিলিপসের অন্তত কয়েক সপ্তাহ সময় লাগবে। আর তাই দেশে ফিরে যাচ্ছেন তিনি।
আরও পড়ুন
রংপুরকে হারিয়ে জিএসএলের ২য় আসরে চ্যাম্পিয়ন গায়ানা ওয়ারিয়র্স |
![]() |
টি-টোয়েন্টি স্কোয়াডে ফিলিপসের পরিবর্তে নিউজিল্যান্ড স্কোয়াডে যুক্ত হওয়া টিম রবিনসন দলের সঙ্গেই থাকবেন ত্রিদেশীয় সিরিজের বাকি অংশে। আর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের দলে ফিলিপসের বিকল্প কে হবেন, তা পরে জানানো হবে বলে জানানো হয়েছে।
ফিলিপস ছাড়াও বেন সিয়ার্স (সাইড ইনজুরি) ও ফিন অ্যালেন (পায়ের চোট) এই দুই সিরিজে থাকছেন দলের বাইরে। তবে কিউইদের জন্য স্বস্তির খবর হলো, দীর্ঘদিনের হাঁটুর চোট কাটিয়ে টেস্ট দলে ফিরেছেন বাঁহাতি স্পিনার আজাজ প্যাটেল। তিনি সম্প্রতি গায়ানায় চলমান গ্লোবাল সুপার লিগে সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্টসের প্রতিনিধিত্ব করেন।
উল্লেখ্য, ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম ম্যাচে নিউ জিল্যান্ড ২১ রানে হারিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকাকে।
স্পেশালিষ্ট হিসেবেই তার মূল পরিচিতি। তবে শ্রীলঙ্কা সফরে লম্বা সময় পর জাতীয় দলে ফিরে নাঈম শেখকে ব্যাট করতে হয় চার নম্বরে, যেখানে ব্যাটিং করার অভিজ্ঞতা তার নাই বললেই চলে। একেবারে খারাপ না করলেও খুব যে স্বাচ্ছন্দ্যে ছিলেন, সেটা বলা যায় না। ফলে বাদ পড়েন দল থেকেই। সেই অভিজ্ঞতা পেছনে ফেলে পাকিস্তান সিরিজকে সামনে রেখে অনুশীলনে নেমেছেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। জানালেন, দলে ফেরার ছক কষছেন ওপেনার হিসেবে ফেরার লক্ষ্যে নিয়েই।
প্রায় তিন বছর পর সদ্য শেষ হওয়া শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশ দলে ফেরেন নাঈম। ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত রান করে ডাক পান ওয়ানডে দলেও, তবে মেলেনি সুযোগ। ২০ ওভারের সিরিজের প্রথম ম্যাচে একাদশে জায়গা হলেও খেলতে হয় চারে নেমে। ইনিংসের শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং করেও পারেননি আহামরি কিছু করতে। পুরো ইনিংসেই খেলেন মোটে একশ স্ট্রাইক রেটে।
আরও পড়ুন
রংপুরকে হারিয়ে জিএসএলের ২য় আসরে চ্যাম্পিয়ন গায়ানা ওয়ারিয়র্স |
![]() |
পাকিস্তান সিরিজকে সামনে রেখে শুক্রবার মিরপুরে একাই অনুশীলন করেন নাঈম। এরপর সাংবাদিকদের সাথে আলাপচারিতায় জানান ভিন্ন পজিশনে খেলার বিভ্রাটের কথা।
“হুট করেই চার নম্বরে নামলে কীভাবে খেলতে হয় বা মিডল অর্ডার ব্যাটাররা কোন চ্যালেঞ্জ বেশি মোকাবিলা করে, ওই জিনিসটা স্বাভাবিকভাবেই আমার জানা নেই। বাইরে থেকে অনেক সময় সহজ মনে হয়। এখন খেলে নতুন একটা অভিজ্ঞতা হলো। পুরোপুরি ভিন্ন একটা পজিশন।”
আর এই ভিন্ন পজিশনে ব্যাটিং যে একেবারেই উপভোগ করতে পারেননি, সেটা নাঈমের ইনিংসেই প্রমাণ মিলেছে। নেমেছিলেন চারে, ইনিংসের শুরুতেই। আর ব্যাট করেন শেষ পর্যন্ত। ২৯ বল খেলে অপরাজিত থাকেন মাত্র ৩২ রানে! বড় শট খেলার সহজাত দক্ষতা থাকলেও সেদিন বেশ আড়ষ্টতা ছিল তার ব্যাটিংয়ে। ওই ম্যাচে হেরে যাওয়া বাংলাদেশ পরের দুই ম্যাচে জয় পায় নাঈমকে বাইরে রেখেই।
আরও পড়ুন
দেশে ফিরেছে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ী বাংলাদেশ ক্রিকেট দল |
![]() |
শুক্রবারের অনুশীলনে তিন থ্রোয়ার নিয়ে অনুশীলন করা নাঈম অনুশীলন করেছেন ওপেনার ব্যাটার হিসেবেই। কারণটাও জানালেন পরে।
“এখন পর্যন্ত যত দিন খেলেছি, ওপেনার হিসেবেই ব্যাটিং করেছি। তো ওই মানসিকতা নিয়েই (অনুশীলন) করলাম। কিন্তু মাথায় এটাও থাকে যে, এমন তো না যে, সেট হওয়ার পর মাঝের ওভারে খেলিনি।”
প্রথমবারের মত শ্রীলঙ্কার মাটিতে সিরিজ জেতা টাইগাররা ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই দেশের মাটি স্পর্শ করেছে। আজ(বৃহস্পতিবার) সকাল ১১টায় ঢাকায় পৌঁছে লিটন দাসের দল।
তিন ফরম্যাটে এই সফরে ৮টি ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ। টেস্ট সিরিজ ১-০, ওয়ানডে ২-১ ব্যবধানে হেরে যায় টাইগাররা। তবে টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচ হেরেও টানা দুই জয়ে সিরিজ পকেটে পোরে কোচ ফিল সিমন্স শিষ্যরা। সবমিলে এই সিরিজে শ্রীলঙ্কা জিতেছে চারটি ম্যাচ, আর বাংলাদেশ জেতে তিন ম্যাচ, গল টেস্ট ড্র হয়েছিল। আর তাই সাফল্যের নিরিখে এটা একটা মিশ্র সিরিজই টাইগারদের জন্য। টি-টোয়েন্টি সিরিজের মাধ্যমে ব্যাডপ্যাচ কাটিয়েছেন লিটন দাস। অফ-ফর্মের কারণে দীর্ঘ সময় ট্রলের শিকার হচ্ছিলেন, সেই চাপ উপেক্ষা করে পারফর্ম করাটা মোটেও সহজ ছিল না, সেটা মনে করিয়ে দিয়েছেন দলের ম্যানেজার নাফীস ইকবাল খান, “কাজটা সহজ ছিল না লিটনের জন্য, কারণ ব্যাড প্যাচটা ছিল দীর্ঘ! আমরা জানি খারাপ খেললে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রল হয়, আমরা খুব আবেগী জাতি! ওর ফিরে আসাটা দারুণ হয়েছে, অধিনায়কত্বও করেছে খুব ভাল”।
আরও পড়ুন
রংপুরকে হারিয়ে জিএসএলের ২য় আসরে চ্যাম্পিয়ন গায়ানা ওয়ারিয়র্স |
![]() |
এয়ারপোর্টে সিরিজ জয়ের ম্যাচে দুর্দান্ত পারফর্ম করা তানজিদ তামিম ও শেখ মেহেদী সহ বাকি সব খেলোয়াড়কে দেখা গেছে প্রাণবন্ত। দেশে ফিরলেও বিশ্রামের সুযোগ পাচ্ছেন না ক্রিকেটাররা, কাল থেকেই নেমে পড়তে হবে অনুশীলনে। দেশের মাটিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু হবে ২০ জুলাই থেকে, সবগুলো ম্যাচই হবে মিরপুর শেরে-বাংলা স্টেডিয়ামে।
ইতিমধ্যে সালমান আলী আগা’র নেতৃত্বে পাকিস্তান দল ঢাকায় এসে পৌঁছেছে। সদ্য শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে মাঠে নামবে টাইগাররা। গত মে মাসে পাকিস্তান সফরে টি-টোয়েন্টি সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে হেরেছিল টাইগাররা, এবার দেশের মাটিতে বদলা নেয়ার লক্ষ্য লিটন দাসের দলের।
শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে বড় ভেন্যু প্রেমাদাসায় সংক্ষিপ্ত সংস্করণের ক্রিকেটে অতীত রেকর্ডটা বাংলাদেশের দারুণ। কলম্বোর এই ভেন্যুতে এবারের টি-টোয়েন্টি সিরিজ নির্ধারনী ম্যাচে অবতীর্ন হওয়ার আগে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৪ ম্যাচের ৩টিতে জয়ের সুখস্মৃতি আছে বাংলাদেশের। ৭ বছর আগে এই মাঠে নিদাহাস কাপে দুই লড়াইয়ের দুটিতে জিতে নাগিন নৃত্য উৎসব করেছে বাংলাদেশ। সেই অতীত থেকে টনিক নিয়ে প্রেমাদাসায় নতুন ইতিহাস রচনা করেছে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের এতোদিন ছিল না কোনো দ্বি-পাক্ষিক টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের অতীত। ২০১৭ সালে ১-১ এ সিরিজ ড্র-ই ছিল বাংলাদেশের সান্ত্বনা।
শেখ মেহেদীর ভয়ংকর ছোবল (৪/১১) এবং তানজিদ হাসান তামিমের ব্যাটিং ঝড়ে ( ৪৭ বলে ৭৩*) ২১ বল হাতে রেখে ৮ উইকেটে জিতে প্রথমবারের মতো শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে, শ্রীলঙ্কার মাটিতে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের উৎসব করেছে বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন
জিম্বাবুয়ে সফর থেকে ছিটকে গেলেন ফিলিপস |
![]() |
সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে উইকেটহীন কাটিয়েছেন ঠিকই,তবে অস্ট্রেলিয়া-ভারতের বিপক্ষে অফ স্পিনার শেখ মেহেদীর বোলিং ছিল মিতব্যয়ী। এন্টিগায় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৪-০-২২-০, ভারতের বিপক্ষে ৪-০-২৮-০, এমন মিতব্যয়ী বোলিংয়ে হাততালি পাওয়ারই কথা এই অফ স্পিনারের। স্লো উইকেটে এই অফ স্পিনার কতোটা কার্যকর, তা জানিয়ে দিয়েছেন প্রেমাদাসায়। সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে করেছেন টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে সেরা বোলিং (৪-১-১১-৪)। তার স্পিন বিষে নীল শ্রীলঙ্কা ধুঁকেছে রানে। স্কোর টেনে নিতে পেরেছে ১৩২/৭ পর্যন্ত।
গত বছরের ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে টি-টোয়েন্টি সিরিজে এই অফ স্পিনার নিজেকে একটু বেশিই চিনিয়েছিলেন। তিন ম্যাচের ওই সিরিজে ৮ উইকেটে উড়েছেন হাওয়ায়। জ্যামাইকায় ওই সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৪-০-১৩-৪ ছিল তাঁর এতোদিন সেরা বোলিং। সেই বোলিং ছাপিয়ে এদিন প্রেমাদাসায় বিস্ময়কর বোলিং করেছেন। ২৪টি ডেলিভারির মধ্যে ১৭টি দিয়েছেন ডট! একটিও বাউন্ডারি মারতে পারেনি তাকে কেউ। ১ ওভারের শেষ স্পেলটি আবার মেডেন উইকেট (১-০-০-১)। নিজের প্রথম ওভারে কুশল পেরেরাকে (০) স্লিপে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেছেন। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে উইকেটের হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করার দিনে শ্রীলঙ্কার কোমর ভেঙ্গে দিয়েছেন শেখ মেহেদী আউটসাইড অফ ডেলিভারিতে চান্দিমালকে (৪) পয়েন্টে ক্যাচের পাতা ফাঁদে ফেলে। শেখ মেহেদীর বলে আসালাঙ্কা (৩) ব্যাক ফুটে ডিফেন্স করতে যেয়ে হয়েছেন বোল্ড। শ্রীলঙ্কার ইনফর্ম ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কাকে (৩৯ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ৪৬) হাফ সেঞ্চুরির আগে ফিরিয়ে দিয়ে ক্যারিয়ারসেরা বোলিং শেষ করেছেন শেখ মেহেদী।
আরও পড়ুন
রংপুরকে হারিয়ে জিএসএলের ২য় আসরে চ্যাম্পিয়ন গায়ানা ওয়ারিয়র্স |
![]() |
অকেশনাল স্পিনার শামীম পাটোয়ারি বল হাতে নিয়ে নির্ভরতা দিয়ে চলেছেন। এদিনও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তাঁর দ্বিতীয় ওভারে কামিন্দু মেন্ডিজ রিভার্স সুইপ করতে যেয়ে পয়েন্টে দিয়েছেন ক্যাচ (১৫ বলে ১ চার, ১ ছক্কায় ২১)। এদিন বাঁ হাতি পেসার মোস্তাফিজ করেছেন মিতব্যয়ী বোলিং (৪-০-১৭-১)। ২৪টি ডেলিভারির মধ্যে ১১টি ডট দিয়েছেন তিনি। ডেথ ওভারে দারুণ বোলিং করেছেন। তাঁর শেষ স্পেলটি (২-০-৬-১) এক কথায় অসাধারণ। ইনিংসের ৫ম বলে কুশল মেন্ডিজকে (৪ বলে ৬) স্কোয়ার লেগে ক্যাচ দিতে বাধ্য করে প্রথম ব্রেক থ্রু দিয়েছিলেন বাঁ হাতি পেসার শরিফুল। তবে খরুচে বোলিংয়ের (৪-০-৫০-১) অপবাদ গায়ে মাখাতে হয়েছে তাকে। তাঁর শেষ স্পেলটি ছিল খরুচে। ২০তম ওভারে খরচ তাঁর ২২ রান। শানাকার হাতে ওই ওভারে খেয়েছেন ২ ছক্কা,২ বাউন্ডারি।
ডাম্বুলায় শ্রীলঙ্কাকে ৮৩ রানে হারিয়ে সিরিজে ভালভাবে ফেরাটা ছিল সিরিজের শেষ ম্যাচে আত্মবিশ্বাসের রসদ। বোলারদের অসামান্য বোলিংয়ে শ্রীলঙ্কাকে ১৩২/৭ এ আটকে ফেলে ১৩৩ রানের চ্যালেঞ্জটা সহজ করেছেন দুই টপ অর্ডার তানজিদ হাসান তামিম-লিটন দাস।
ইনিংসের প্রথম বলে তুষারার লো বাউন্সি ডেলিভারি ব্যাক প্যাডে আঘাত হানায় গোল্ডেন ডাক-এ ফিরতে হয় ওপেনার পারভেজ হাসান ইমনকে (১ বলে ০)। তবে স্কোর কার্ডে রান ওঠার আগে ওপেনিং পার্টনারশিপ ভেঙ্গে যাওয়ায় দুর্ভাবনায় পড়তে দেননি তানজিদ হাসান তামিম-লিটন দাস। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে তাদের ৫০ বলে ৭৪ রান বড় জয়ের পথ করেছে প্রশস্ত। বাকি দায়িত্বটা পালন করেছেন অবিচ্ছিন্ন তৃতীয় উইকেট জুটিতে তানজিদ হাসান তামিম-তাওহিদ হৃদয় (৪৮ বলে ৫৯*)। এই দুটি পার্টনারশিপের কল্যানে ২১ বল হাতে রেখে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ ব্যবধানে (৮ উইকেটে ) জিতে প্রথমবারের মতো সিরিজ জয়ের উৎসব করেছে। এটি উইকেটের ব্যবধানে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে যৌথভাবে সর্বোচ্চ। এর আগে গত বছর সিলেটে ১১ বল হাতে রেখে ৮ উইকেটে জয়ের অতীত আছে বাংলাদেশের।
আরও পড়ুন
দেশে ফিরেছে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ী বাংলাদেশ ক্রিকেট দল |
![]() |
ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে লিটনের বিপক্ষে এলবিডাব্লুর সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন লঙ্কান আম্পায়ার। ওই সিদ্ধান্তের বিপক্ষে রিভিউ আপীলে লিটন জিতে ইনিংস টেনে নিয়েছেন ৩২ রান পর্যন্ত। ২৮ বলের যে ইনিংসে ছিল ২ চার ১ ছক্কা। চারের চেয়ে ছক্কার আধিক্যে নিজেকে একটু বেশিই চিনিয়েছেন তানজিদ হাসান তামিম। ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস এতোদিন ছিল তার ৬৩। গত বছর চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করেছেন ওই স্কোর। সেই স্কোরকে ছাপিয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ নির্ধারনী ম্যাচে করেছেন হার না মানা ৭৩ রান। ৪৭ বলের যে ইনিংসে ১ টি চারের পাশে মেরেছেন ৬টি ছক্কা। উইনিং রান নিয়ে ড্রেসিংরুমে ফেরা হৃদয় ছিলেন ২৫ বলে ২৭ রানে অপরাজিত।
৩ দিন আগে
৪ দিন আগে
১৩ দিন আগে
১৩ দিন আগে
১৪ দিন আগে
২৫ দিন আগে
২৫ দিন আগে
২৫ দিন আগে
২৮ দিন আগে
২৮ দিন আগে