২১ এপ্রিল ২০২৫, ৪:৫৮ পিএম
বিসিবির সবশেষ পরিচালনা পরিষদের নির্বাচনে ক্যাটাগরি-১ থেকে নির্বাচন করে হেরে গিয়েছিলেন বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলট। যে নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পেছনে প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপ ছিল বিসিবির তৎকালীন সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের - টি-স্পোর্টসের শামীম চৌধুরীকে দেয়া সাক্ষাতকারে নির্বাচনে হেরে যাওয়ার সেই তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন খালেদ মাসুদ পাইলট।
টি-স্পোর্টস : সাবেক ক্রিকেটারদের জন্য ক্যাটাগরি-থ্রি থাকতে বিসিবির সর্বশেষ নির্বাচনে ক্যাটাগরি-১ থেকে আপনি নির্বাচন করেছেন?
পাইলট : ইচ্ছা ছিল, ক্রিকেট যখন খেলেছি, রিটায়ার করার পর ক্রিকেটিং নলেজ কাজে লাগাবো। তাই রাজশাহী বিভাগ থেকে নির্বাচন করতে চেয়েছি। রাজশাহী বিভাগকে আমি পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে নিতে চেয়েছি। রাজশাহী বিভাগের ক্রিকেটকে একটা দৃষ্টান্ত হিসেবে উপস্থাপন করার প্লান ছিল। যেনো রাজশাহী বিভাগের ক্রিকেট কর্মকান্ড দেখে অন্য বিভাগগুলো দৌড়ায়, তাদের কাজ বেড়ে যায়।
টি-স্পোর্টস : বিসিবির নির্বাচনে দাঁড়িয়ে তো আপনি একটা শিক্ষা পেয়েছেন নিশ্চয়ই?
পাইলট : রাজশাহী বিভাগ থেকে আমাকে বিসিবির কাউন্সিলরশিপ দেওয়া হয়। এই বিভাগে বিসিবির একটি পরিচালক কোটার বিপরীতে ভোট ৯টি। ১টি বিভাগ থেকে, অন্য ৮টি জেলা থেকে। আমি ২টি ভোট পেয়েছি। আমার প্রতিদ্বন্দ্বী স্বপন ভাই পেয়েছেন ৭টি ভোট। কিন্তু নির্বাচনে দেখলাম আমার প্রতিপক্ষ প্রার্থী টাকা পয়সা বিনিয়োগ করেছেন। নির্বাচনে টাকা-পয়সা যখন বিনিয়োগ করবো, তখন তো বোর্ডে যেয়ে টাকা ইনকাম করতে হবে। বিসিবির গঠণতন্ত্র এতোটাই দুর্বল যে এমনভাবে করা হয়েছে যে কেউ টাকা খরচ করে নির্বাচন করে এখানে জিতে যাবে। ক্রিকেটিং নলেজের দরকার নেই এখানে।
টি-স্পোর্টস : শোনা গেছে, জেলা-বিভাগের কাউন্সিলররা একজোট হয়ে আপনাকে হারিয়ে দিয়েছে। নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পেছনে আরও কি কারণ আছে?
পাইলট : নির্বাচনের তিন-চারদিন আগে টের পেলাম, আমি পাস করতে পারবো না। বেশ ক'জন কাউন্সিলর আমাকে বলেছেন, আপনি উপর মহলের সঙ্গে কথা বলেন। ডিসিরাও বলেছেন, আমাদের খুব ইচ্ছা আপনি যেনো জয়ী হন। কিন্তু জানতে পারলাম বিসিবি সভাপতি পাপন ভাই ডিসিদের বলেছেন, আমার প্রতিপক্ষ প্রার্থী যেনো পাস করেন। ডিসিদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম, তৎকালীন জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন মেহেরপুরের ছেলে, উনি ডিসিদেরকে ফোন দিয়ে এমন নির্দেশ দিয়েছেন। ইমরুল কায়েসের বাড়ি মেহেরপুরে। ওর সঙ্গে কথা বলে জনপ্রশাসন মন্ত্রীর পিএস-কে ফোন দিয়ে মন্ত্রীর সাথে সাক্ষাতের ব্যবস্থা করলাম। উনি আমাকে খুব সম্মান করেছেন। উনি আমার কথা শুনে বললেন-' আমার দুর্ভাগ্য যে আপনার জন্য কিছুই করতে পারছি না। আমার সিনিয়র রাজণীতিবিদের কথা শুনতে পালন করতে হচ্ছে।' পাপন সাহেবের বাবা সাবেক প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমান ওনার উকিল বাবা, সেই দায়িত্ববোধ থেকে উনি পাপন সাহেবের নির্দেশ পালন করেছেন, তা বুঝতে পারলাম। উনি পরিষ্কার করে বললেন-' পাপন সাহেব যদি বলেন, তাহলে ডিসিদের সেই নির্দেশ না দিয়ে কী উপায় আছে ? আপনি বরং পাপন ভাইকে ঠিক করেন। বাকিটা আমি ঠিক করে দিব।'
টি-স্পোর্টস : বিসিবি সভাপতি নিজেই তাহলে নির্বাচনে হার-জিত নির্ধারণ করে দিয়েছেন?
পাইলট : মন্ত্রানালয় থেকে বেরিয়ে এসে পাপন ভাই-কে ফোন দিলাম। উনি বললেন-' আমি বেক্সিমকোতে আছি, তুমি চলে এসো। ওনার সঙ্গে প্রায় দেড়-দুই ঘন্টা কথা হলো। উনি বললেন-' বিসিবির পরিচালক হতে চাও, এ কথা যদি তুমি আগে বলতে তাহলে তোমাকে ক্লাব থেকে ব্যবস্থা করে দিতাম।' আমি বললাম আমি কেনো আপনাকে তিন মাস আগে বলবো। আমি সিম্পল ওয়েতে নির্বাচনে যাবো। আমার কথা শুনে উনি বললেন-' স্বপন সাহেব আমাকে দিয়ে সব ম্যানেজ করেছেন। তখন বুঝলাম আগে থেকে সব কিছু ম্যানেজ হয়েছে। তারপরও আমি বললাম, আপনি যদি ডিসিদের নিরপেক্ষ থাকতে বলেন, তাহলে খুশি হবো।
টি-স্পোর্টস : যখন জানতে পারলেন, নির্বাচনে আপনি জিততে পারবেন না, তখন কেনো প্রার্থীতা প্রত্যাহার করলেন না ?
পাইলট : অনেকের সঙ্গে এসব বিষয় শেয়ার করলে তারা আমাকে বলেছেন-' আপনি জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার, অধিনায়ক। তাই মান-সম্মানের ব্যাপার। আপনি বরং নির্বাচনে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেন। আমি তাদেরকে বলেছি-একজন ব্যবসায়ীর কাছে এভাবে হার মেনে নেয়া যায় না। যার জন্য নির্বাচন করেছি। মাথা উঁচু করে হাসতে হাসতে হেরেছি। নির্বাচনে আমি হেরে যাওয়ার পর মানুষজন বলেছেন-যার ক্রিকেট নলেজ নেই, তার কাছে একজন সাবেক অধিনায়ক হেরে গেলো। ভোটারদেরও বিবেক বলে কিছু নেই।
টি-স্পোর্টস : বিসিবি সভাপতির ফেভার নিয়ে যিনি পরিচালক পদে নির্বাচিত হলেন, রাজশাহী বিভাগের ক্রিকেটে ওনার ভুমিকা কেমন ?
পাইলট : রাজশাহী বিভাগের কথা বাদ দেন, যে জায়গা থেকে উনি কাউন্সিলরশিপ পেয়ে নির্বাচনে জিতেছেন, সেই পাবনা জেলায় গত ১০ বছর ধরে ক্রিকেট লিগ হয় না। তাও আবার উনি বিসিবির পরিচালক থাকা অবস্থায়।
টি-স্পোর্টস : টাকা-পয়সা এবং প্রশাসনের কাছে আপনি হেরেছেন ? তামিমও তো বিসিবিতে আসতে চাইছেন। তাকেও কী এমন প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে হবে না?
পাইলট : বিসিবির বর্তমান গঠনতন্ত্রটা সেভাবে করা হয়নি। যে কেউ টাকা খরচ করে নির্বাচিত হয়ে আসতে পারবে। তামিমের মতো ক্রিকেটারও যদি চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে বিসিবি কোটায় পরিচালক পদে নির্বাচিত হয়ে আসতে চায়, তা পারবে না। টাকা-পয়সা খরচ করা ছাড়া সম্ভব নয়। অথচ ভাবুন তো। তামিম যদি ভারত কিংবা নিউ জিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে কথা বলে, তাহলে ব্যাপারটা বিসিবির জন্য কতোটা ভাল হবে। সাকিব যদি খুলনা বিভাগ থেকে নির্বাচিত হয়ে আসতে চায়, তার বেলায়ও এমনটাই হবে। সাকিব-তামিম তো চুরি করার জন্য আসবে না। আমার প্রশ্ন, কেনো এমন হবে?
২৪ জুন ২০২৫, ৮:১৭ পিএম
২৩ জুন ২০২৫, ৫:২২ পিএম
এক সময়ে সিংহলীজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠ বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের কাছে পরিচিত ছিল বেশ। ২০০১ থেকে ২০০৭, এই সময়ে ৩টি টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ কলম্বোর অভিজাত এই টেস্ট ভেন্যুতে। বেশ লম্বা বিরতি দিয়ে এই ভেন্যুতে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে ২৫ জুন ফিরবে বাংলাদেশ। ১৮ বছর পর সিংহলীজ স্পোর্টস ক্লাব (এসএসসি) মাঠে ফিরছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের টেস্ট মর্যাদা প্রাপ্তির রজত জয়ন্তীর ঠিক আগের দিন বাংলাদেশ দল প্রত্যাবর্তন করছে এসএসসিতে দুঃস্মৃতি নিয়ে। যে ভেন্যুতে অতীতে ৩ টি টেস্টের সব কটিতে বিপর্যস্ত হওয়ার দুঃসহ স্মৃতি আছে জমা।
২০০১ সালে এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচে ইনিংস ও ১৩৭ রানে হার দিয়ে যাত্রা শুরু বাংলাদেশের এই ভেন্যুতে। পরের বছর দ্বি-পাক্ষিক টেস্ট সিরিজের ম্যাচে ২৮৮ রানে এবং ২০০৭ সালে ইনিংসও ২৩৪ রানে হার তৈরি করে দিয়েছে স্বাগতিকদের সঙ্গে বড় ব্যবধান। ওই তিনটি ম্যাচেই বাংলাদেশ দলের সামনে আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছেন সর্বকালের সেরা স্পিনার মুরালীধরন। এসএসসি ভেন্যুটাই যে তার লাকি গ্রাউন্ড। টেস্টে ৮০০ উইকেটের মধ্যে ১৬৬টি শিকার তার এই ভেন্যুতে।
২৪ টেস্টে ২০.৬৯ গড়ে উইকেট শিকার মুরালীকে প্রতিপক্ষদের সামনে উপস্থাপন করিয়েছে মহা আতঙ্ক হিসেবে। এসএসসি লাকি গ্রাউন্ড মাহেলা জয়বর্ধনেরও। লারার বিশ্বরেকর্ড ৪০০'র পেছনে ছুটতে ছুটতে ৩৭৪ পর্যন্ত ইনিংস টেনে নেয়ার বীরত্ব দেখিয়েছেন মাহেলা এই ভেন্যুতে। এই ভেন্যুতে টেস্টে ৩ হাজার রানের খুব কাছাকাছি চলে গিয়েছিলেন মাহেলা। ৭৯ রানের আক্ষেপ নিয়ে থামতে হয়েছে শ্রীলঙ্কার এই লিজেন্ডারির।
আরও পড়ুন
২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে টিকিট পেল কানাডা |
![]() |
মুরালী-মাহেলার এই লাকি গ্রাউন্ডে সব কৃতি ছাপিয়ে গেছেন বাংলাদেশের একজন। তিনি মোহাম্মদ আশরাফুল। টেস্ট অভিষেকে মাত্র ১৭ বছর ৪২ দিন বয়সে মুরালীর ফনা তোলা ছোবল সামাল দিয়ে দুই যুগ আগে করেছেন সর্বকনিষ্ঠ টেস্ট সেঞ্চুরির রেকর্ড। যে রেকর্ডটি আজও অটুট। আশরাফুলের সেই স্মৃতিময় ভেন্যু স্বাগত জানাচ্ছে নাজমুল হোসেন শান্তদের।
গল টেস্টে উভয় ইনিংসে শান্ত'র সেঞ্চুরি, প্রথম ইনিংসে মুশফিকুর রহিমের সেঞ্চুরি, এই জুটির ২৬৪ও ১৪৯ রানে বীরত্বপূর্ণ ড্র থেকে টনিক নিয়ে এবার এসএসসিতে অবতীর্ন হবে বাংলাদেশ। গল টেস্টের চেয়েও ভাল কিছু করার প্রত্যয় বাংলাদেশ কোচ ফিল সিমন্সের-‘আমরা গল-এ যেভাবে প্রথম টেস্টে খেলেছি, এখানে সেই মান ধরে রাখা কিংবা আরও ভালো কিছু করা দরকার। এখানে আমরা জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নামব। কীভাবে জেতা যায়, সেই উপায় খুঁজে বের করতে হবে।’
ইনজুরির কারণে সিরিজের প্রথম টেস্ট মিস করেছেন অফ স্পিন অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। এসএসসিতে সিরিজ নির্ধারণী টেস্টে ফিরছেন তিনি, তা নিশ্চিত করেছে টিম ম্যানেজমেন্ট। মিরাজের জায়গায় গল টেস্টে সুযোগ পেয়ে সেই সুযোগের সদ্বব্যহার করেছেন অফ স্পিনার নাঈম হাসান। বিদেশের মাটিতে প্রথম টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়ে প্রথম ইনিংসে পেয়েছেন ৫ উইকেট। কলম্বো টেস্টে একাদশ চূড়ান্ত করার আগে নাঈমকে নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে টিম ম্যানেজমেন্ট।
এসএসসির টেস্ট ইতিহাস কথা বলবে স্পিনারদের পক্ষে। মুরালীর ১৬৬ উইকেটের পাশে হেরাথের ৮৮ উইকেট-সে স্বাক্ষ্যই দিবে। সে কারণে তিন স্পিনার, না তিন পেসার-কম্বিনেশন সাজানোটাই এখন ভাবনায় ফেলেছে টিম ম্যানেজমেন্টকে। গল টেস্টে উইকেটহীন নাহিদ রানার জায়গায় আসতে পারে পরিবর্তন। ফিরতে পারেন খালেদ।
আরও পড়ুন
অফ স্পিনার নাঈমে লিড, ড্র-র পথে গল টেস্ট |
![]() |
গল টেস্টে অভিষিক্ত স্পিনার থারিন্দু রত্নায়েকের বোলিং শ্রীলঙ্কা টিম ম্যানেজমেন্টকে আকৃষ্ট করেছে। দু'হাতে স্পিন করতে পারেন, এবং করে দেখিয়েছেন সেই ম্যাচে এই স্পিনার। এবার একই বৈশিষ্ট্যের আর এক স্পিনার দিনুশার অভিষেকের সম্ভাবনা প্রবল। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুউজের অবসর পরবর্তী টেস্টে দিনুশার সাম্প্রতিক অলরাউন্ড পারফরমেন্স তৈরি করেছে সুযোগের ক্ষেত্র। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৪৮ ম্যাচে বাঁহাতি স্পিনে ৯৯ উইকেট ও ৭ সেঞ্চুরিতে ৪০.৬২ গড়ে ২৪৭৮ রান করা দিনুশাকে এসএসসি টেস্টে ১২ জনের দলে রেখে সে আভাসই দিয়েছে শ্রীলঙ্কা টিম ম্যানেজমেন্ট।
এসএসসিতে হয়ে যাওয়া ৪৫ টেস্টে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা পেয়েছে ২১টি-তে জয়। প্রতিপক্ষদের জয়ের সমষ্টি সেখানে ১০টি। এই ভেন্যুতে সর্বশেষ ৫টি টেস্টের ৩টিতে হেরেছে স্বাগতিকরা। ভারত, পাকিস্তান, ইংল্যান্ডের কাছে হারের সেই ক্ষতটাও আছে স্বাগতিকদের।
গল-এ মাহেলার ট্রিপল সেঞ্চুরির (৩৭৪) ম্যাচে শ্রীলঙ্কার রান পাহাড়ের (৭৫৬/৬ডি.) অতীত আছে। উইকেট প্রতি ৩৪.৭৮ রানের অতীতও আছে। ব্যাটারদের তাই চাঙ্গা থাকারই কথা। তবে শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ টেস্ট ম্যাচের ভেন্যুতে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা টেস্টের গতিপথ বদলে দিতে পারে বৃষ্টি। আবহওয়ার পূর্বাভাস সে শঙ্কাও দেখাচ্ছে
চোট সমস্যার কারণে সাম্প্রতিক সময়ে অধিকাংশ সময় কাটাতে হয়েছে মাঠের বাইরে থেকেই। তাতে জোড়াল হয়েছিল অস্ট্রেলিয়ার নারী দলের অধিনায়ক অ্যালিসা হিলি অবসরের গুঞ্জন। তবে অজি অধিনায়ক নিশ্চিত করেছেন, চলতি বছরের ওয়ানডে বিশ্বকাপ তার বিদায়ী মঞ্চ হচ্ছে না। বরং চোট জর্জরিত সময়টাই তার অবসর ভাবনাকে পিছিয়ে দিতে অনুপ্রাণিত করেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
হিলির ক্রিকেটে ফেরার দিনক্ষণ ঠিক হয়ে গেছে। সব ঠিক থাকলে আগামী আগস্টে কোয়েন্সল্যান্ডে ভারত ‘এ’ দলের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়া ‘এ’ দলের স্কোয়াডে রাখা হবে তাকে। এটি হতে যাচ্ছে বছরের শুরুতে অ্যাশেজ সিরিজের পর তার প্রথম উপস্থিতি। সবশেষ পাওয়া স্ট্রেস ফ্র্যাকচারের কারণে তিনি একটি ম্যাচ মিস করেন এবং কিছু ম্যাচে কিপিংও করতে পারেননি।
আরও পড়ুন
আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে পান্তের শাস্তি |
![]() |
তবে এএপি-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হিলি বলেছেন, অবসরের চিন্তা নেই তার।
“আমার পরিকল্পনাটা কিছুটা বদলে গেছে। আমার কাছে মনে হচ্ছে, আগে যা ভেবেছিলাম, আমার তার চেয়েও বেশি দেওয়ার বাকি আছে। তবে একইসঙ্গে জীবনে এমন কিছু বিষয়ও আছে, যা সবুজ-সোনালি জার্সি পরার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই বিষয়টা এখন সব দিক মূল্যায়নের। তবে আপাতত আমি অবশ্যই আগামী হোম সামারে খেলতে চাই। বিশ্বকাপ শিরোপা ঘরে তুলতে চাই, আর আগামী বছর ভারতের বিপক্ষে সিরিজও খেলতে চাই।”
২০২৩ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল এবং বিগ ব্যাশ লিগের শেষাংশেও চোটের কারণে খেলতে পারেননি হিলি। এই সময়ে পায়ের স্ট্রেস ফ্র্যাকচারের পাশাপাশি হাঁটুর চোটও ভোগায় তাকে। তবে চোটের এই ধাক্কাগুলোর মধ্যেও ৩৪ বছর বয়সী এই কিপার-ব্যাটার ক্রিকেটকে বিদায় বলার প্রস্তুত নন।
ভারত ও ইংল্যান্ডের চলমান টেস্ট ম্যাচে আইসিসি আচরণবিধির লেভেল ১ লঙ্ঘনের দায়ে শাস্তি পেলেন রিশাভ পান্ত। ভারতের এই তারকা কিপার-ব্যাটারকে আনুষ্ঠানিকভাবে ভর্ৎসনা করা হয়েছে আইসিসির পক্ষ থেকে। একই সঙ্গে তার শৃঙ্খলাজনিত রেকর্ডে একটি ডিমেরিট পয়েন্ট যোগ হয়েছে। গত ২৪ মাসের মধ্যে এটি পান্তের প্রথম এমন শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
মঙ্গলবার আইসিসির দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পান্ত প্লেয়ার্স ও প্লেয়ার সাপোর্ট পার্সোনেলের আচরণবিধির ২.৮ অনুচ্ছেদ ভেঙেছেন, যা একটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ চলাকালে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশের শামিল।
আরও পড়ুন
১ বছর পর বিশ্বকাপের বকেয়া প্রাইজমানি পাচ্ছেন ওমানের ক্রিকেটাররা |
![]() |
ঘটনাটি ঘটে টেস্টের তৃতীয় দিন ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসের ৬১তম ওভারে, তখন ক্রিজে ছিলেন বেন স্টোকস ও হ্যারি ব্রুক। পান্ত তখন বলের অবস্থা নিয়ে আম্পায়ারদের সাথে বল বদল নিয়ে আলোচনা করছিলেন। তবে আম্পায়াররা তার বল পরিবর্তনের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেন। এতে মেজাজ হারিয়ে আম্পায়ারদের সামনেই তিনি বল মাটিতে ছুঁড়ে মারেন।
দিনের খেলা শেষে এই ঘটনার অভিযোগটি আনেন অন-ফিল্ড আম্পায়ার ক্রিস গাফানি ও পল রেইফেল। পান্ত তার অপরাধ স্বীকার করে ম্যাচ রেফারি রিচি রিচার্ডসনের দেওয়া শাস্তি মেনে নিয়েছেন। ফলে শুনানির প্রয়োজন হয়নি আর।
একটি ডিমেরিট পয়েন্ট পেলেও এই ম্যাচটি এরই মধ্যে নিজের জন্য স্মরণীয় করে ফেলেছেন পান্ত। প্রথম ইনিংসের পর দ্বিতীয় ইনিংসেও করেছেন সেঞ্চুরি। এর মধ্য দিয়ে টেস্ট ক্রিকেটের ১৪৮ বছরের ইতিহাসে মাত্র দ্বিতীয় কিপার-ব্যাটার হিসেবে এক ম্যাচের দুই ইনিংসেই শতক করেছেন।
আরও পড়ুন
২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে টিকিট পেল কানাডা |
![]() |
পান্তের সাথে দ্বিতীয় ইনিংসে লোকেশ রাহুলের সেঞ্চুরিতে ইংল্যান্ডকে ৩৭১ রানের টার্গেট দেয় ভারত। রান তাড়ায় এই প্রতিবেদন লিখা পর্যন্ত ইংল্যান্ডের স্কোর বিনা উইকেটে ৩১।
কয়েক দফায় ক্রিকেটারদের সরাসরি দাবির পর অবশেষে ২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া স্কোয়াডক প্রাইজমানি দিত সম্মত হয়েছে ওমান ক্রিকেট (ওসি)। দলের খেলোয়াড় ও সাপোর্ট স্টাফদের জন্য আইসিসি থেকে বরাদ্দকৃত ২ লাখ ২৫ হাজার মার্কিন ডলার প্রাইজমানি আগামী জুলাইয়ের মধ্যে পরিশোধ করা হবে বলে জানিয়েছে দেশটির বোর্ড।
ওসি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, দীর্ঘ বিলম্বের কারণ ছিল প্রক্রিয়াগত। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) নিশ্চিত করেছে যে, তারা যথাসময়েই ওমান ক্রিকেট বোর্ডকে প্রাইজমানির অর্থ পরিশোধ করেছে। আর আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, তাদের আয়োজিত কোনো ইভেন্ট শেষ হওয়ার ২১ দিনের মধ্যে প্রাইজমানি খেলোয়াড়দের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।
আরও পড়ুন
২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে টিকিট পেল কানাডা |
![]() |
২০২৪ সালের জুনে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এক বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরও অর্থ না পাওয়ায় ওমানের খেলোয়াড়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কয়েকবারই। বিশেষ করে বিষয়টি তীব্র হয়ে ওঠে ২০২৪ সালের অক্টোবরে এমার্জিং এশিয়া কাপ চলাকালীন সময়ে, যখন খেলোয়াড়রা একযোগে মাঠে না নামার সিদ্ধান্ত নেন।
ওই ঘটনার জেরে ওমান ক্রিকেট বোর্ড কড়া প্রতিক্রিয়া জানায়। ওই টুর্নামেন্টের ১৫ সদস্যের দলের ১১ জন খেলোয়াড়ের বার্ষিক চুক্তি বাতিল করা হয়। অনেককে আবার দেশ ছেড়ে যেতে বাধ্য করা হয়। ওমানসহ অনেক উপসাগরীয় দেশে নাগরিকত্ব বা দেশটিতে বসবাস করার যোগ্যতা দেশটিতে কাজের সঙ্গে সম্পর্কিত। ফলে চুক্তি বাতিল হওয়ায় তাদের কাজের মেয়াদও শেষ হয়ে যায়।
ওমান ক্রিকেট বোর্ডের দাবি, তাদের ক্রিকেটারদের অর্থ প্রদানে দেরির কারণ ছিল আইসিসির কাছ থেকে পরবর্তীতে কোনো আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা না পাওয়া। তবে আগামী মাসের মধ্যেই সব বকেয়া পরিশোধ করা হবে। অবশ্য চাকরি হারানো বা দেশ ছাড়তে বাধ্য হওয়া ওমান জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের ভবিষ্যৎ এখনও অনিশ্চিয়তার মধ্যেই রয়ে গেছে।
দায়িত্ব নিয়ে দেশজুড়ে ক্রিকেট ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যের কথা শুনিয়েছেন বিসিবির নতুন সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। সেই ধারায় তিনি এবার নজর দিয়েছেন রাজশাহীর দিকে। ঢাকার বাইরে বৃহত্তর রাজশাহী অঞ্চলে প্রিমিয়ার লিগ চালুর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন তিনি। আর সঠিক অবকাঠামো গড়ে উঠলে, ভবিষ্যতে এখানে বিপিএলের ম্যাচও আয়োজন সম্ভব বলে জানিয়েছেন বিসিবির বোর্ড পরিচালক ও মাঠ কমিটির প্রধান মাহবুব আনাম।
বাংলাদেশের টেস্ট মর্যাদা প্রাপ্তির ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে বিসিবির দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আয়োজনের অংশ হিসেবে রোববার রাজশাহী সফরে যান আমিনুল। সেখানে তার সাথে আরও হাজির হন পরিচালক মাহবুব আনাম, সাইফুল আলম স্বপন, জাতীয় দলের সাবেক ওপেনার মেহরাব হোসেন ও নারী জাতীয় দলের ওপেনার শামীমা সুলতানা। সেখানে নানা কার্যক্রমের মধ্যে রাজশাহী স্টেডিয়াম ঘুরে ঘুরে দেখেন বিসিবি প্রধান।
আরও পড়ুন
শান্তময় গল টেস্টে ড্র, সন্তুষ্টির চেয়েও আক্ষেপ ভারী |
![]() |
রাজশাহীতে ক্রিকেট নিয়ে স্থানীয়দের আগ্রহে মুগ্ধ আমিনুল সেখানে জানালেন বড় আশার কথা।
“রাজশাহীতে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট হয় মাঝেমধ্যে। তবে এবার বৃহত্তর রাজশাহী অঞ্চলকে ঘিরে আমরা প্রিমিয়ার লিগ চালু করার পরিকল্পনা করছি। ঢাকার বাইরে ক্রিকেটের বিস্তারে এটি বড় পদক্ষেপ হবে।”
রাজশাহীতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ না হলেও, ক্রিকেটের প্রতি এই অঞ্চলের মানুষের যে আবেগ ও উচ্ছ্বাসে কোনো কমতি নেই, সেটা আরও একবার দেখে গেছে গত মাসে। রাজশাহী বিভাগীয় স্টেডিয়ামে (সাবেক শহীদ কামারুজ্জামান স্টেডিয়াম) হওয়া বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার ইমার্জিং দলের মধ্যকার সিরিজে গ্যালারির একাংশ খুলে দেওয়া হয়েছিল দর্শকদের জন্য। তিন ম্যাচের প্রতিটিতেই ছিল দর্শকদের প্রাণবন্ত উপস্থিতি।
রাজশাহী আগে থেকেই জাতীয় ক্রিকেট লিগ (এনসিএল) ও বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের (বিসিএল) ম্যাচ আয়োজিত হয়ে আসছে। বিসিবি সভাপতি এবার প্রিমিয়ার লিগও ছড়িয়ে দিতে চান এই অঞ্চলে।
“রাজশাহীর মাঠের উইকেট ও আউটফিল্ড অনেক উন্নত। অনেক দেশেই এমন উইকেট নেই। যদি দেশে এমন আরও মাঠ তৈরি করা যায়, তাহলে বহু প্রতিভাবান ক্রিকেটার উঠে আসবে।”
স্রেফ ম্যাচ আয়োজনেই রাজশাহীতে ক্রিকেট কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখতে চান না বিসিবি প্রধান।
“আমরা এখানে ক্রিকেটীয় কার্যক্রম আরও বাড়াবো। ক্রিকেট ট্রেনিং, কোচিং, আম্পায়ারিং প্রোগ্রাম এবং বয়সভিত্তিক দুই দিনের ম্যাচ চালু করবো। আমি রাজশাহীতে ক্রিকেটের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছি।”
আমিনুল আশাবাদী হলেও আপাতত রাজশাহীর স্টেডিয়াম অবকাঠামোগত অবস্থা সুবিধাজনক নয়। ফ্লাডলাইটের অধিকাংশ বাতি ইতোমধ্যেই খুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সিলেট স্টেডিয়ামে। গ্যালারির অবস্থাও খুব একটা ভালো নয় এখন।
আরও পড়ুন
রোমাঞ্চ জাগিয়ে ড্রয়েই নিষ্পত্তি প্রথম টেস্টের |
![]() |
তবে দ্রুত এই চিত্র বদলে যাবে বলেই আশাবাদী বিসিবির মাঠ কমিটির প্রধান মাহবুব আনাম।
“জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সাথে আমাদের আলোচনা হয়েছে। আমাদের মাঠের কিছু অবকাঠামোগত উন্নয়নও করা দরকার। প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে, যদি অনুমোদন মেলে, তাহলে আগামী বছরেই এখানে বিপিএল বা আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজন সম্ভব হবে।”
১৭ ঘণ্টা আগে
১৭ ঘণ্টা আগে
১ দিন আগে
৩ দিন আগে
৩ দিন আগে
১০ দিন আগে
১০ দিন আগে
১৩ দিন আগে
২৩ দিন আগে
২৩ দিন আগে
২৩ দিন আগে
২৪ দিন আগে
২৪ দিন আগে
২৮ দিন আগে