ম্যাচটা বাংলাদেশ জন্য ছিল অ্যাওয়ে। তবে কুয়েতের জাবের আল আহমেদ স্টেডিয়ামের চিত্র দেখে কোনোভাবেই তা বোঝার উপায় ছিল না। পতাকা ও নানা ধরণের প্ল্যাকার্ড নিয়ে পুরো মাঠ মাতিয়ে রেখেছিলেন বাংলাদেশের সমর্থকেরা। তবে সমর্থকদের এমন সমর্থন কাজে লাগাতে পারেননি জামাল ভূঁইয়ারা। ম্যাচ শেষে যে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মন খারাপ করেই ছাড়তে হয়েছে মাঠ।
বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপের বাছাইয়ের তৃতীয় ম্যাচে ফিলিস্তিনের কাছে বাংলাদেশ দল হেরেছে ৫-০ গোলের বড় ব্যবধানে। এই হারে বাংলাদেশ দলের বিশ্বকাপ বাছাইয়ের পরের পর্বে যাওয়ার স্বপ্ন অনেকটাই নিভে গেছে। তবে বিপরীত চিত্র ফিলিস্তিনের। বড় জয়ে ‘আই’ গ্রুপে ৪ পয়েন্ট নিয়ে তারা উঠে এসেছে পয়েন্ট টেবিলের দুইয়ে।
অথচ প্রায় হাজার বিশেক প্রবাসী বাংলাদেশিদের সমর্থনে বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছিল দারুণ। গল্পটা অন্যরকম হলেও হতে পারত। ৬ মিনিটের মাথায় বাংলাদেশের সামনে আসে দারুণ এক সুযোগও। রাকিব হোসেন নিজের গতি দিয়ে ফিলিস্তিন ডিফেন্ডারকে পেছনে ফেলে ঢুকে পড়েন ডি- বক্সে। সুন্দরভাবে বলটাও বাড়ান, ডি-বক্সের ভেতর বলটা অল্পের জন্য নাগালে পাননি ফয়সাল আহমেদ ফাহিম।
তবে বল পজেশন ধরে রেখে ফিলিস্তিন বারবারই চেষ্টা করেছে আক্রমণে ওঠার। বাংলাদেশ ফিলিস্তিনের আক্রমণ ঠেকাতে চেষ্টা চালিয়েছে তাদের অফসাইডের ফাঁদে আটকাতে। যে কাজে সফলতার চেয়ে বাংলাদেশের ডিফেন্ডাররা ব্যর্থই বেশি ছিলেন বলা যায়। সেই আফসাইডের কাটায় আটকাতে গিয়ে
৯ মিনিটের মাথায় বিশ্বনাথের ভুলে সুবর্ণ সুযোগ আসে ফিলিস্তিনের সামনে। তবে সহজ সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি দাবাঘ। কোলকিপারকে একা পেয়েও বল মারেন পোস্টের ওপর দিয়ে।
বল পজেশনে বাংলাদেশ পিছিয়ে থাকলেও পাল্টা আক্রমণই ছিল বাংলাদেশের জন্য মূলমন্ত্র। সেটাকে কাজে লাগিয়ে ১৪ মিনিটে রাকিব আরও একবার তৈরি করে সুযোগ। বসুন্ধরার এই ফরোয়ার্ড দেখান নিজের পায়ের জাদু। ফাহিমের থ্রু পাস থেকে ডান প্রান্ত দিয়ে ঢুকেও পড়েন। কিছুটা অ্যাংগেল তৈরি করে নিয়েছেন শটও। তবে জটলার মধ্যে নেওয়া শট লক্ষে রাখতে পারেননি এই ফরোয়ার্ড।
১৯ মিনিটে আবারও বাংলাদেশি ডিফেন্ডারদের ভুল বোঝাবুঝিতে গোলের সুযোগ মেলে ফিলিস্তিনের সামনে। এবার সুযোগটা আসে বার্তানের সামনে। তবে এই মিডফিল্ডারের নেওয়া শট আবারও যায় পোস্টের ওপর দিয়ে। অনেকটা দাবাঘের ভুলের রিপ্লেটাই যেন তখন দেখিয়েছেন বার্তান।
২৭ মিনিটে ম্যাচের মোড়টা বাংলাদেশ ঘুরিয়েই দিতে পারত। কিন্তু ফাহিমের অসাধারণ নৈপূণ্য আলোর মুখ দেখেনি ওয়ি দফাতেও। জামাল ভূঁইয়ার বাড়ানো বল থেকে ফিলিস্তিনের দুই ডিফেন্ডারকে তার দারুণ পায়ের কাজে পার করে দারুণ এক বল বাড়ান সোহেল রানার উদ্দ্যেশ্যে। তবে এমন ফাঁকা জায়গায় বল পেয়ে সোহেল সেটি পোস্টের অনেক ওপর দিয়ে মারেন।
ম্যাচের আধঘণ্টা পেরোনোর পরে দেখা মেলে ম্যাচের প্রথম অন-টার্গেট শটের। তবে মিতুল মারমার কল্যাণে সেবার রক্ষা মেলে লাল-সবুজদের।
৪৩ মিনিটে ভাঙে বাংলাদেশের রক্ষণ। আবারও সেই ডিফেন্ডারদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি। ডি বক্সের ভিতর আবু ওয়ার্দার শট রুখে দেন মিতুল। তবে রিবাউন্ডে বল জালে জড়ান দাবাঘ। বেশ কয়েকজন ডিফেন্ডার ডি বক্সের ভেতর থাকলেও দাবাঘকে পাহারায় রাখতে পারেননি কেউই। এতেই ফিলিস্তিনের জার্সিতে ১৩ তম গোলটা করে ফেললেন দাবাঘ।
প্রথম গোল হজম করেই এলোমেলো হয়ে যায় বাংলাদেশের রক্ষণ। মিনিট দুয়েক বাদে আরও একবার বাংলাদেশ হজম করে বসে গোল। এবার ফিলিস্তিনের হয়ে গোলটা করেন কুম্বর। পুরো প্রথমার্ধে ফিলিস্তিনের চোখে চোখ রেখে খেলে গেলেও শেষটা মোটেও সুখকর হয়নি হাভিয়ার কাবরেরার দলের। দুই গোলে পিছিয়ে থেকেই তারা শেষ করে প্রথমার্ধ।
প্রথমার্ধের সেই ভূতুড়ে পাঁচ মিনিটে বাংলাদেশের ফুটবলারদের আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরিয়ে দেয়। বিরিতি থেকে ফেরে আসার পর দেখা মেলে অন্য এক বাংলাদেশেরই। কিছু বোঝে ওঠার আগেই আরও একবার গোলের দেখা মেলে ফিলিস্তিনের। কুম্বর জাল খুঁজে নেন দ্বিতীয়বারের মতো।
ফিলিস্তিনের বিপক্ষে বাংলাদেশ দল এর আগে কখনো দুই গোলের বেশি হজম করেনি। তবে কয়েক দিন আগে এশিয়ান কাপে রেকর্ড গড়া ফিলিস্তিন এবার সেই রেকর্ডটাই ভাঙলো। ৫২ মিনিটে স্কোরলাইন আরও বড় করেন দাবাঘ। কুম্বরের পাস থেকে সুন্দর এক ভলিতে বল জালে জড়ান এই ফরোয়ার্ড। ফিলিস্তিনের দুই ফরোয়ার্ডের জোড়া গোলে ছিন্নভিন্ন হয় বাংলাদেশ দল। ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই বাংলাদেশ দল পিছিয়ে পড়ে ৪-০ গোলে।
হাভিয়ের কাবরেরার অধীনে স্বপ্ন দেখানো বাংলাদেশ এরপর ফিলিস্তিনের সাথে বাকি সময়টা কাটাতে পারলেই বাচার অবস্থা দাঁড়য়। তবে ৭২ মিনিটে আবারও বাংলাদেশকে হতাশায় ভাসান দাবাঘ। তুলে নেন নিজের হ্যাটট্রিক। সেই সাথে স্কোর লাইন দাঁড়ায় ৫-০তে।
যুদ্ধ-বিদ্ধস্ত ফিলিস্তিন দুই হাফে পাঁচ গোল দিয়ে ম্যাচ শেষ করে। বড় স্বপ্ন নিয়ে কুয়েতে পা রাখলেও বাংলাদেশ ফিরেছে হতাশা সঙ্গী করেই।
ফিরতি লেগে দুই দল মুখোমুখি হবে ২৬ তারিখ বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায়
১৩ ঘণ্টা আগে
১৬ ঘণ্টা আগে
১ দিন আগে
১ দিন আগে
১ দিন আগে
৪ দিন আগে
৫ দিন আগে
৬ দিন আগে
৬ দিন আগে
১৮ দিন আগে
২৮ দিন আগে