১২ নভেম্বর ২০২৪, ৭:৫৮ পিএম
ক্লাব ফুটবলের আপাতত বিরতি, কিন্তু বিরতি নেই ফুটবলারদের। ক্লাবের জার্সি ছেড়ে জাতীয় দলের জার্সি স্যুটকেসে ভরে যে যার মতো যোগ দিয়েছেন জাতীয় দলগুলোর ক্যাম্পে। আর আন্তর্জাতিক বিরতি মানেই ব্রাজিল এবং আর্জেন্টিনার ম্যাচ, এবং সে ম্যাচগুলো ঘিরে বিশেষ উদ্দীপনা বাংলাদেশে। নভেম্বরের আন্তর্জাতিক বিরতিতে লাতিন অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে এবারও দুটি করে ম্যাচ খেলবে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা।
আর্জেন্টিনার প্রস্তুতি
প্যারাগুয়ের বিপক্ষে বাছাই পর্বের ম্যাচকে কেন্দ্র করে আগেই জাতীয় দলের ক্যাম্পে যোগ দিয়েছেন লিওনেল স্কালোনির অধীনে ডাক পাওয়া ফুটবলাররা। প্রাথমিক অনুশীলন সেশনে প্রস্তুতিতে অংশ নিয়েছেন ২০ জন ফুটবলার। লাউতারো মার্তিনেজ, আলেহান্দ্রো গারনাচোরা, নিকোলাস তালিয়াফিকো ও তাতি কাস্তেয়ানোসরা দলের সঙ্গে যোগ দিবেন মঙ্গলবার থেকে।
আরও পড়ুন
কেমন হলো আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ বাছাইয়ের স্কোয়াড? |
![]() |
কারা আছেন এবারের আর্জেন্টিনা স্কোয়াডে?
ছয় দিন আগে আর্জেন্টিনা দল ঘোষণা করলেও চোটেরর কারণে দল থেকে ছিটকে গেছেন ডিফেন্ডার হেরমান পেৎ্সেল্লা। এছাড়া চোটের কারণে দল থেকে সরিয়ে নিয়েছেন নিকো গনজালেসও।
গোলরক্ষক: এমিলিয়ানো মার্তিনেজ (অ্যাস্টন ভিলা), ওয়াল্টার বেনিতেজ (পিএসভি), হেরোনিমো রুই (অলিম্পিক মার্সেই)
ডিফেন্ডার: নাহুয়েল মলিনা (আতলেতিকো মাদ্রিদ), গনজালো মনতিয়েল (সেভিয়া), ক্রিশ্চিয়ান রোমেরো (টটেনহাম), লিওনার্দো বালেরদি (অলিম্পিক মার্সেই), নিকোলাস ওতামেন্দি (বেনফিকা), লিসান্দ্রো মার্তিনেজ (ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড), নিকোলাস তাগলিয়াফিকো (লিঁও)
মিডফিল্ডার: এনজো ফেরনান্দেজ (চেলসি), লিয়ান্দ্রো পারেদেস (এএস রোমা), ইজিকিয়েল পালাসিওস (বায়ার লেভারকুসেন), রদ্রিগো দি পল (আতলেতিকো মাদ্রিদ), আলেক্সিস ম্যাকঅ্যালাস্টার (লিভারপুল), গিওভান্নি লো সেলসো (রিয়াল বেতিস), এনজো বারেনেচেয়া (ভালেন্সিয়া), থিয়াগো আলমাদা (বোতাফোগো), ফাকুন্দো বুয়োনানতে (লেস্টার সিটি), নিকোলাস পাজ (কোমো ১৯০৭)
ফরোয়ার্ড: লিওনেল মেসি (ইন্টার মায়ামি), আলেহান্দ্রো গারনাচো (ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড), নিকোলাস গঞ্জালেস (ইয়্যুভেন্তস), হুলিয়ান আলভারেজ (আতলেতিকো মাদ্রিদ), লাউতারো মার্তিনেজ (ইন্তারনাৎ্সিওনাল), ভালেন্তিন কাসতেয়ানোস (লাৎ্সিও)
আরও পড়ুন
যে কারণে নেইমারকে ব্রাজিল দলে রাখেননি দরিভাল |
![]() |
আর্জেন্টিনার ম্যাচ সূচি
লাতিন অঞ্চলে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের টেবিলে শীর্ষস্থান ধরে রাখার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সময় আগামী শুক্রবার, ভোর ৫:৩০ এ প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ খেলতে নামবে লিওনেল মেসির দল। প্যারাগুয়ের আসুনসিওনের উয়েনো দেফেনসোরেস দেল চাকো স্টেডিয়ামে হবে ম্যাচটি।
এরপর আগামী ২০ নভেম্বর বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টায় আর্জেন্টিনার ম্যাচ পেরুর বিপক্ষে। বছরের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচটা আর্জেন্টিনা খেলবে আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস আইরেসের বিখ্যাত লা বম্বোনেরা স্টেডিয়ামে।
ব্রাজিলের প্রস্তুতি
অক্টোবরের আন্তর্জাতিক বিরতিতে ব্রাজিলের জাতীয় দলকে ঘিরে বয়ে গেছে অস্বস্তির বাতাস। দরিভাল জুনিয়র দলের রেকর্ড তখন বলছে, আটটা বাছাই পর্বের ম্যাচের মধ্যে চারটাতেই হার, একটা ড্র আর তিনটা জয়। তবে চিলি আর পেরুর সঙ্গে দুটো জয়ে দরিভাল জুনিয়র এবং ব্রাজিল দলকে নিয়ে বিশ্বকাপ বাছাই পর্ব পার হতে না পারার শঙ্কা অনেকটাই দূর হয়েছে। ব্রাজিলের জাতীয় দলের ক্যাম্পে যোগ দিয়েছেন ফুটবলাররা, আর্জেন্টিনার চাইতে অবশ্য ব্রাজিলের জন্য এবারের বাছাই পর্বের ম্যাচগুলো তুলনামূলক কঠিনই বটে।
কারা আছেন এবারের ব্রাজিলের স্কোয়াডে?
স্কোয়াড ঘোষণার পর ব্রাজিল দলের জন্য দুঃসংবাদ হয়ে এসেছে দুই রিয়াল মাদ্রিদ তারকা এদের মিলিতাওর এসিএল এবং রদ্রিগোর পেশির ইনজুরি। এই দুজনের বদলি ফুটবলার অবশ্য ঘোষণা করা হয়েছে। আগে থেকে ইনজুরির কারণে নেই আলিসন।
গোলরক্ষক: বেন্তো (আল নাসর), এদেরসন ম্যানচেস্টার সিটি), ওয়েভেরতন (পালমেইরাস)
ডিফেন্ডার: দানিলো (ইয়্যুভেন্তস), ভান্দেরসন (এএস মোনাকো), আবনের (লিঁও), গিলের্মে আরানা (আতলেতিকো মিনেইরো), লিও অরতিজ (ফ্লামেঙ্গো), গাব্রিয়েল মাঘালেস (আর্সেনাল), মার্কিনিয়োস (পিএসজি), মুরিলো (নটিংহাম ফরেস্ট)
মিডফিল্ডার: আন্দ্রে (উলভস), ব্রুনো গিমারেস (নিউক্যাসল), গারসন (ফ্লামেঙ্গো), লুকাস পাকেতা (ওয়েস্ট হাম), আন্দ্রেস পেরেইরা (ফুলহাম)
ফরোয়ার্ড: এস্তেভাও (পালমেইরাস), গাব্রিয়েল মার্তিনেলি (আর্সেনাল), লুইজ এনরিক (বোতাফোগো), সাভিনিও (ম্যানচেস্টার সিটি), ভিনিসিয়ুস জুনিয়র (রিয়াল মাদ্রিদ), ইগর হেসুস (বোতাফোগো), রাফিনিয়া (বার্সেলোনা)
আরও পড়ুন
২৮ সদস্যের আর্জেন্টিনা দল ঘোষণা, মেসি থাকলেও নেই বড় এক নাম |
![]() |
ব্রাজিলের সূচি
নভেম্বর মাসের প্রথম বাছাই পর্বের ম্যাচ খেলতে ব্রাজিলকে যেতে হবে ভেনেজুয়েলার মাঠে। শুক্রবার ১৫ নভেম্বর, বাংলাদেশ সময় রাত ৩ টায় দরিভাল জুনিয়রের দল মুখোমুখি হবে ফেরনান্দো বাতিস্তার ভেনেজুয়েলা দলের। আর পাঁচদিন পর ব্রাজিলের সালভাদোরে খেলতে আসবে মার্সেলো বিয়েলসার উরুগুয়ে, যারা কোপা আমেরিকার পর বিশ্বকাপ বাছাইয়ে একটা ম্যাচও জিততে পারেনি। ২০ নভেম্বর বুধবার, বাংলাদেশ সময় ভোর ৬:৪৫ এ শুরু হবে ব্রাজিল-উরুগুয়ে ম্যাচটি।
লাতিন অঞ্চলের পয়েন্ট টেবিল :
দল | ম্যাচ | পয়েন্ট |
১. আর্জেন্টিনা | ১০ | ২২ |
২. কলম্বিয়া | ১০ | ১৯ |
৩. উরুগুয়ে | ১০ | ১৬ |
৪. ব্রাজিল | ১০ | ১৬ |
৫. ইকুয়েডর | ১০ | ১৩ |
৬. প্যারাগুয়ে | ১০ | ১৩ |
৭. বলিভিয়া | ১০ | ১২ |
৮. ভেনেজুয়েলা | ১০ | ১১ |
৯. পেরু | ১০ | ৬ |
১০. চিলি | ১০ | ৫ |
৩ দিন আগে
৩ দিন আগে
৩ দিন আগে
৬ দিন আগে
১৭ দিন আগে
২০ দিন আগে
২১ দিন আগে
২১ দিন আগে
২৩ এপ্রিল ২০২৫, ৯:০৭ পিএম
দক্ষিণ আফ্রিকার দ্বিতীয় স্তরের একটি ম্যাচের আগে প্রস্তুতি নেওয়ার সময় দেশটির তরুণ ফুটবলার সিনামান্ডলা জোন্ডি মারা গেছেন, নিশ্চিত করেছে তার ডারবান সিটি।
গত মঙ্গলবার মিলফোর্ড এফসির বিপক্ষে ডারবানের ম্যাচ শুরু হওয়ার আগে ২২ বছর বয়সী জোন্ডিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে ততক্ষণে হয়ে গেছে বেশ দেরি। হাসপাতালে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
আর ম্যাচের বিরতির সময় জোন্ডির প্রয়াণের খবর আসার পর ডারবান ও মিলফোর্ড এফসির ম্যাচটি রেফারি পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন।
জোন্ডির মৃত্যুতে ডারবান ক্লাবের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে শোক প্রকাশ করা হয়েছে।
“গভীর দুঃখের সাথে আমরা নিশ্চিত করছি যে, ডারবান সিটি পরিবারের একজন প্রিয় সদস্য, সিনামান্ডলা জোন্ডি আর আমাদের মাঝে নেই।”
কঠিন সময়ে জোন্ডির পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে ডারবান।
“সিনামান্ডলা আমাদের কাছে একজন প্রতিভাবান ফুটবলারের চেয়েও বেশি কিছু ছিলেন। তিনি ছিলেন সবার প্রিয় সতীর্থ, একজন বন্ধু, একজন ভাই, একজন ছেলে। যারা তাকে চিনতেন, সবার কাছেই তিনি ছিলেন এক অনুপ্রেরণার নাম। তার পরিবার, বন্ধুবান্ধব, সতীর্থ, কোচ এবং এই মর্মান্তিক ঘটনায় শোকাহত সবার প্রতি আমাদের আন্তরিক সমবেদনা রইল।”
জোন্ডির পেশাদার ক্যারিয়ারের অভিষেক হয় ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে। তরুণ এই ডিফেন্ডার এই মৌসুমে তার ক্লাবের নিয়মিত খেলোয়াড় ছিলেন। তার দল এখন পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে আছে এবং দক্ষিণ আফ্রিকান ফুটবলের সবার ওপরের লিগে উন্নীত হওয়ার পথে রয়েছে। তবে সেই পথচলায় সঙ্গী হতে পারলেন না জোন্ডি।
গেল বছর গুরুতর অসুস্থ হয়ে একবার ভর্তি হতে হয়েছিল হাসপাতালে। মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়ার জন্য এবার অনির্দিষ্টকালের জন্য কোচিং ক্যারিয়ার থেকে বিরতি নিলেন ব্রাজিল জাতীয় দলের সাবেক কোচ তিতে।
ব্রাজিলের ২০১৯ কোপা আমেরিকা জয়ী দলের কোচের দায়িত্ব পালন করা তিতে গত আগস্টে হার্টের সমস্যার কারণে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। এর পরের মাসে তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয় ব্রাজিলিয়ান ক্লাব ফ্লেমেঙ্গো।
এরপর বেকারই ছিলেন ৬৩ বছর বয়সী এই কোচ। তবে আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন আবারও কোচিংয়ে ফেরার। সেই ধারায় সম্প্রতি গুঞ্জন ছিল আরেক ব্রাজিলিয়ান ক্লাব করিন্থিয়াসের দায়িত্ব নেওয়ার।
তবে মঙ্গলবার ছেলে ম্যাথিউস বাচির ইনস্টাগ্রামে প্রোফাইলের পোস্ট করা এক বিবৃতিতে তিনে জানান বিরতি নেওয়ার কথা।
“আমি বুঝতে পারছিলাম যে এমন একটা সময় আছে, যখন আপনাকে বুঝতে হবে যে একজন মানুষ হিসাবে আমি দুর্বল হয়ে যেতে পারি। আমি বিশ্বাস করি এটা স্বীকার করে নেওয়াটা আমাকে আরও শক্তিশালী করবে।”
খুব দ্রুতই কোচিংয়ে ফেরার কোনো তাড়া দেখছেন না তিতে।
“আমি যে কাজটা করি, সেটা নিয়ে আমি অনেক আবেগী এবং আমি কাজটা চালিয়ে যাব। তবে আমার পরিবারের সাথে কথা বলার পর আর আমার শরীরের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে আমার কাছে মনে হয়েছে, এখন সবচেয়ে ভালো কাজটি হল ক্যারিয়ার থেকে যতক্ষণ লাগে ততক্ষণ বিরতি নিয়ে নিজের দেখভাল করা।”
২০২২ বিশ্বকাপ থেকে কোয়ার্টার ফাইনাল ব্রাজিলের বিদায়ের পর মেয়াদের আগেই চাকরি ছেড়ে দেন তিতে। কোচ হিসেবে তিনি এর আগে তিনি গ্রেমিও, আথলেতিকো মিনেইরো এবং পালমেইরাসের দায়িত্ব পালন করেছেন।
নিজের কোচিং ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বাজে মৌসুম পার করছেন, দলও আছে বাজে অবস্থায়। নিজেদের শেষ ম্যাচে জয়ের পর পেপ গার্দিওলা তাই আরও একবার বলেছেন, এটা তাদের জন্য ভুলে যাওয়ার মত এক মৌসুম যাচ্ছে। তবে এতে আপত্তি আছে রয় কিনের। সাবেক এই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ফুটবলার ও ফুটবল বিশেষজ্ঞ মনে করেন, দলের প্রতি কিছুটা কঠোর হয়ে গেছেন ম্যানচেস্টার সিটি কোচ।
গত বছরের শেষের দিক থেকেই পথ হারানো সিটি বেশ আগেই ছিটকে গেছে প্রিমিয়ার লিগের শিরোপার লড়াই থেকে, যা তারা জিতেছে টানা চারবার। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের বিদায় ঘটেছে আগে। দলটি এখন টিকে আছে কেবল এফএ কাপে। আর মূল লড়াই এখন লিগে সেরা চারে থেকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ খেলা নিশ্চিত করা, যা অনেকটা সুগম হয়েছে মঙ্গলবার অ্যাস্টন ভিলার বিপক্ষে ২-১ গোলে জয়ের মধ্য দিয়ে।
তবে ম্যাচের পর হতাশাই প্রকাশ পায় গার্দিওলার কণ্ঠে।
“এই মৌসুমটা অনেক খারাপ যাচ্ছে। আমরা এফএ কাপের ফাইনাল খেলি বা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে জায়গা করে নিতে পারি কিনা, তাতে কিছু যায় আসে না। বাস্তবতা হল প্রিমিয়ার লিগে আপনার অবস্থান কেমন, সেটা। লিগের ধারাবাহিকতাই বলে দেব সব। তবে এমন হয়, খারাপ সময় আসে।”
তবে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাবেক মিডফিল্ডার কিন স্কাই স্পোর্টসকে বলেছেন, গার্দিওলার মৌসুম নিয়ে বলা মন্তব্য বেশ নেতিবাচক ছিল।
“আমার কাছে মনে হয় তিনি সেখানে তার দলের ব্যাপারে বেশ কঠোর ছিলেন। আমি এখনও মনে করি তারা যদি এফএ কাপ জেতে আর চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলতে পারে, তাহলে সেটা খারাপ কিছু না। তবে এমনটা মনে হচ্ছে কারন গত কয়েক বছর ধরে তারা একটা আলাদা বেঞ্চমার্ক তৈরি করেছে।”
আগামী রোববার এফএ কাপ সেমিফাইনালে প্রিমিয়ার লিগের পয়েন্ট টেবিলে চারে থাকা থাকা নটিংহ্যাম ফরেস্টের সাথে খেলবে সিটি। আর শনিবার অন্য সেমিফাইনালে ক্রিস্টাল প্যালেসের প্রতিপক্ষ অ্যাস্টন ভিলা।
তবে মঙ্গলবার ইতিহাদ স্টেডিয়ামে প্রিমিয়ার লিগে সিটি ও ভিলার ম্যাচটিও বেশ জমে গিয়েছিল। প্রথমার্ধে বার্নার্ডো সিলভার গোলে সিটি এগিয়ে যাওয়ার পরই সমতা টানেন মার্কাস র্যাশফোর্ডে। ড্রয়ের দিকে এগিয়ে যাওয়ার ম্যাচের ইনজুরি টাইমে গার্দিওলার দলকে জয় এনে দেন ম্যাথুউস নুনেস। এই জয়ে ৬১ পয়েন্টে সিটি উঠে এসেছে তিন নম্বর স্থানে।
নানা কারণে এই মৌসুমে লা লিগার সাথে বাকযুদ্ধ চলছে রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনার। দুই দলই লিগ কতৃপক্ষকে দুষেছে বাজে সূচির জন্য। এর বাইরে রিয়াল আবার অভিযোগ দায়ের করেছে খোদ লা লিগার সভাপতি হাভিয়ের তেবাসের বিরুদ্ধে, যেখানে দোষী হলে চাকরিও চলে যেতে পারে তার। তবে অতীতের মতোই হুংকার দিয়েছেন তিনি। যথারীতি পাল্টা অভিযোগ চাপিয়েছেন দুই ক্লাবের বিপক্ষে।
সম্প্রতি রিয়াল মাদ্রিদ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল ফর স্পোর্ট (টিএডি)-তে একটি অভিযোগ দায়ের করে, যেখানে হাই কমিটির সাবেক প্রধান মিগুয়েল অ্যাঞ্জেল গ্যালান দাবি করেছেন, যদি তেবাসকে টিএডি দোষী সাব্যস্ত করে, তাহলে তাকে বরখাস্ত করার সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে লা লিগার একটি ইভেন্টে এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তেবাস বলেছনে, তিনি মোটেও উদ্বিগ্ন নন।
“না, আমি এটা নিয়ে চিন্তিত নই। আমার মনে হয় আমি শাস্তি পাব। আমি বরং টিএডি-তে আমার বিরুদ্ধে যেভাবে অভিযোগগুলো আনা হয়েছে, তা নিয়ে আমি আরও বেশি চিন্তিত। (রিয়ালের সাথে) মিটিংয়ে অপ্রয়োজনীয় অনেক কিছুই করা হয়েছে যা ঠিক ছিল না।”
তেবাসের বিরক্তি কেবল রিয়ালের দিকেই থেমে ছিল না অনুষ্ঠানে। সম্প্রতি বার্সেলোনার কোচ হান্সি ফ্লিক সরাসরি লা লিগাকে ঠাসা সূচির জন্য একহাত নেন। তার দাবি, অন্য লিগ ক্লাবগুলোর কথা চিন্তা করলেও ব্যতিক্রম লা লিগা এবং তারা যা যা করে তা ভিত্তিহীন।
ফ্লিককেও তাই ছাড় দেননি তির্যক মন্তব্যের জন্য পরিচিত তেবাস।
“আমরা ফ্লিককে মনে করিয়ে দিতে চাই যে তিনি খুবই বাজে আচরণ করেছেন। আমার প্রশ্ন, তারা কেন ইউয়েফার কাছে এসব বলে না? কেন সব দোষ লিগকেই দেওয়া হয়? তিনি কেন ইউয়েফার কাছে গিয়ে এসব বলতে পারেন না? কেন ইউয়েফাকে সব খেলা বুধবারেই রাখতে হয়? আমাদের লিগের ২০টি দল এবং দ্বিতীয় বিভাগের ২২টি ক্লাবকেও রক্ষা করতে হয়। সবার যাতে ভালো হয়, আমরা সেটাই করি।”
চোটের কারণে খেলতে পারেননি তারকা ফরোয়ার্ড রবার্ট লেভানদভস্কি। মায়োর্কার বিপক্ষে ম্যাচে কয়েকজনকে বিশ্রামও দিয়েছেন হান্সি ফ্লিক। সেই কারণেই কিনা, লা লিগার এই ম্যাচটিতে আক্রমণের ঢেউ তুলেও জালের দেখা পেতে গলগধর্ম অবস্থা হয়ে গিয়েছিল দলটির। শেষ পর্যন্ত ত্রাতা হয়েছেন দানি ওলমো, এনে দিয়েছেন জয়। আক্রমণে এমন মলিন পারফরম্যান্স স্বত্ত্বেও খুব একটা হতাশ নন বার্সেলোনা কোচ।
বিরতির পর ম্যাচের একমাত্র গোলটি করেন ওলমো, যা বার্সেলোনাকে দুইয়ে থাকা রিয়াল মাদ্রিদের চেয়ে সাত পয়েন্টে এগিয়ে দিয়েছে। যদিও কাজটা মোটেও সহজ ছিল না, কারণ এই একটা গোল পেতে মোট ৪০টি শট নিতে হয়েছে দলটির খেলোয়াড়দের। লা লিগায় এর আগে ২০১১ সালে রিয়াল জারাগোজার বিপক্ষেও রেকর্ড ৪০টি শট নিয়ে একটি গোলের দেখা পেয়েছিল বার্সেলোনা।
তবে ম্যাচের পর ফ্লিককে দেখা গেছে ইতিবাচক সুরেই। “সব মিলিয়ে ৪০টার মত শট ছিল, হয়ত সব লক্ষ্যে ছিল না। তবে ৪০টা শট তো ছিল। আমরা যেভাবে খেলেছি, সেটা আসলেই ভালো ছিল। আমরা অনেক সুযোগ তৈরি করেছি। অবশ্যই আমরা অনেক সুযোগ নষ্ট করেছি, তবে এত এত পরিবর্তনের পর একটা ক্লিন শিট ধরে রাখা, ১-০ গোলে জেতা… দল আজকে যেভাবে খেলেছে আমাকে এর প্রশংসা করতেই হবে।”
প্রথমার্ধে যেভাবে বার্সেলোনার একের পর এক আক্রমণ ব্যর্থ হচ্ছিল, তাতে শঙ্কা জাগছিল ড্রয়ের। প্রথম ৪৫ মিনিটেই দলটি গোলের জন্য নেয় ২৪টি শট। পোষ্টের নিচে দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন প্রতিপক্ষের গোলরক্ষক লিও রোমান, যিনি মোট ১২টি সেভ করেছেন।
এছাড়াও গোলপোস্টে বাধাপ্রাপ্ত হয় গাভির শট। তবে দ্বিতীয়ার্ধের ৪৬ সেকেন্ডের মাথায় দারুণ এক ফিনিশিংয়ে গোল করেন ওলমো। এই মৌসুমে বার্সেলোনার পঞ্চম খেলোয়াড় হিসেবে ১০ বা তার বেশি গোল করেছেন এই স্প্যানিশ উইঙ্গার।