আগের ওভারেই ফিরিয়েছেন শান মাসুদকে। তবে পাকিস্তানের বিপক্ষে চলমান এই সিরিজের বাস্তবতায় নাহিদ রানার মূল শিকার তো তখনই ক্রিজে। তিনি বাবর আজম। সময়ের সেরা এই ব্যাটারকে ঠিকই পরের ওভারেই ফেরালেন তরুণ এই পেসার। বয়স মাত্র ২১, টেস্ট ক্রিকেট সবেমাত্র হয়েছে শুরু। এমন একজন বোলারের জন্য সময়ের অন্যতম সেরা ব্যাটারকে এভাবে ‘প্রিয় শিকার’ বানিয়ে ফেলাটা অসাধারণ অর্জন বললেও তো কমই বলা হয়ে যায়।
ঘরোয়া ক্রিকেটে তেমন অভিজ্ঞতা নেই নাহিদের। যা টুকটাক খেলেছেন, সেখানেও খুব বলার মত কিছু নেই যে এখনই তাকে টেস্ট খেলিয়ে দেওয়া যায়। তবে বাংলাদেশের ক্রিকেটে যা বলতে গেলে বিরল, নাহিদের আছে সেই গতি। মোটামুটি ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশের একজন পেসারের জন্য ঘণ্টায় ১৪০ কি।মি গতিতে বোলিং করাটাই বিশাল ব্যাপার। আর সেখানে নাহিদ প্রায়ই কিছু স্পেলে বল করতে পারেন ১৪৫ কি,মি এর বেশি গতিতে।
আরও পড়ুন: ১০ উইকেটে রেকর্ড বইয়ে হাসান-নাহিদ-তাসকিনরা
আর এই গতির ঝড় তুলতে পারার দক্ষতার কারণেই খুব অল্প সময়েই বাংলাদেশের ক্রিকেট অঙ্গনে আলোচনার জন্ম দেন নাহিদ। তার এই গতির ওপর ভরসা রেখেই গত মার্চে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে টেস্ট ক্যাপও তুলে দেওয়া হয়। মাত্রই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখা একজন তরুণ পেসারের কাছ থেকে নিখুঁত লাইন-লেন্থ আশা করাটা একটু বেশিই হয়ে যায়। ফলে সেই সিরিজে উইকেট নিলেও নাহিদ কিছুটা খরুচেই ছিলেন।
তবে টেস্ট ক্রিকেটে একটা দলে এমন একজন বোলার সবসময়ই সম্পদ। কারণ, গতিই তাদের শক্তির জায়গা এবং সেট-আপ করে বোলিং করতে পারলে যেকোনো উইকেটেই গতিময় পেসাররা ব্যবধান গড়ে দিতে পারেন। ব্যাটিং সহায়ক উইকেতেও তারা কার্যকর হতে পারেন। তবে ক্ষেত্রবিশেষে বেশ খরুচেও হতে পারেন। রাওয়ালপিন্ডিতে প্রথম টেস্টেই দুই অভিজ্ঞতা হয়েছে নাহিদের।
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান দুই দলই রান পাহাড়ে চড়ে। মাত্র ১৯ ওভারে ১০৫ রান গুনেন নাহিদ, তবে নেন দলীয় সর্বোচ্চ ৩ উইকেটও। দ্বিতীয় ইনিংসে পঞ্চম দিনে পাকিস্তান মুখোমুখি হয় ব্যাটিং বিপর্যয়ের। তার মাঝেও বিপদের কারণ হয়ে উঠছিলেন বাবর, তবে ২২ রানে তাকে স্বপ্নের এক ডেলিভারিতে বোল্ড করে দেন নাহিদই। উদযাপনই বলে দিচ্ছিল, এই উইকেট তার কাছে খুব বিশেষ কিছুই।
চলমান দ্বিতীয় টেস্টে প্রথম ইনিংসে বাবরকে অবশ্য ফিরিয়ে দেন সাকিব। তবে বাংলাদেশকে বড় ব্রেকথ্রু দিয়ে নাহিদ শিকার করেন সিরিজে পাকিস্তানের সেরা ব্যাটার মোহাম্মদ রিজওয়ানকে। ১৫ ওভারে ১ উইকেট নেন ৫৮ রানের বিনিময়ে। এই ইনিংসে নামের পাশে একটি উইকেট থাকলেও টাইট বোলিংয়ে পাকিস্তান ব্যাটারদের ওপর ভীষণ চাপ তৈরি করেন নাহিদ, যার সুফল অন্যপ্রান্তে পান তার সতীর্থরা। টেস্টে ক্রিকেটে জুটি বেঁধে এভাবেই মেলে সাফল্য।
তবে চতুর্থ দিন সকালের সেশনে পাকিস্তানের দ্বিতীয় ইনিংসে সিরিজে নিজের সেরা স্পেলটা উপহার দিয়েছেন নাহিদ। ভালোভাবে সেট হয়ে যাওয়া শান মাসুদকে আউট করেন আগে। এরপরই পালা বাবরের। অফস্ট্যাম্পের বাইরের ডেলিভারিতে নাহিদের গতির কাছে পরাস্ত হয়ে ব্যাটে-বলে করতে ব্যর্থ হন এই ডানহাতি ব্যাটার, ফলাফল স্লিপে শাদমানের সহজ ক্যাচ। লাঞ্চ বিরতির আগে সৌদ শাকিলকেও ফেরান নাহিদ, আর পাকিস্তানকে ফেলেন প্রবল চাপে।
তবে এই সিরিজ নাহিদের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে এই কারণে যে, বাবরের মাপের একজন ব্যাটার সিরিজের শেষ পর্যায়ে এসে তার বিপক্ষে ব্যাট করতে ভীষণ অস্বস্তিতে ছিলেন। তরুণ উদীয়মান একজন পেসারকে এই অর্জন সামনের পথচলায় নিঃসন্দেহে বড় অনুপ্রেরণা জোগাবে।
২ দিন আগে
২ দিন আগে
৩ দিন আগে
৩ দিন আগে
৩ দিন আগে
৬ দিন আগে
৭ দিন আগে
৮ দিন আগে
৮ দিন আগে
২০ দিন আগে