বাংলাদেশ এইচপিকে ওপেনাররা এনে দিলেন দারুণ একটা শুরু। সেই ভিত কাজে লাগিয়ে অন্য ব্যাটারর দলকে এনে দিলেন লড়াকু স্কোর। বোলারাও প্রথম দশ ওভারে তাসনামিয়া টাইগার্সকে চাপেই রাখলেন। তবে জ্যাকব ডরানের বিস্ফোরক ফিফটিতে আসরের নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হলো এইচপিকে।
ডারউইনে টপ এন্ড সিরিজের সোমবারের ম্যাচে আগে ব্যাটিং করে এইচপি ৫ উইকেটে ১৬৬ রান। ৩ বল ও ৫ উইকেট হাতে রেখে সেই রান তাড়া করে তাসমানিয়া।
মেলবোর্ন রেনেগেটসের বিপক্ষে আগের ম্যাচেও এইচপি দল পাওয়ার প্লেতে আগ্রাসী ব্যাটিং করেছিল। তবে কয়েকটি কিছু উইকেটও হারাতে হয়েছিল। এই ম্যাচে অবশ্য তার পুনরাবৃত্তি হয়নি। দারুণ সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার জিশান আলম ও তানজিদ হাসান তামিম। দুজনের মধ্যে তুলনামূলক দ্রুত রান করেন তরুণ জিশান।
আরও পড়ুন: বিগ ব্যাশের দলকে হারিয়ে টুর্নামেন্টে বড় স্বপ্ন দেখছেন ইমন-রাকিবুল
শেষ পর্যন্ত তানজিদের রান-আউট হওয়ার মধ্য দিয়ে ইতি ঘটে এই জুটির। জাতীয় দলের ওপেনার চারটি চারে করেন ২৮ রান। বল অবশ্য খেলে ফেলেন ২৯টি। জুটিতে আসে ৭৩ রান। নবম ওভারের পরের বলে সাজঘরের পথ ধরেন জিশানও। এর আগে তার ব্যাট থেকে আসে ২৩ বলে ৩৮ রানের ইনিংস। ৩টি ছক্কার পাশাপাশি মারেন দুটি চার।
আফিফ হোসেন আউট হন ১০ রান করে। তবে আগের ম্যাচে ফিফটি করা পারভেজ হোসেন ইমন আরও একবার ব্যাট হাতে জ্বলে ওঠেন। ইনিংসের শেষ পর্যন্ত থেকে যান অপরাজিত। ২৯ বলে করেন ৩৯ রান। অন্য ব্যাটাররাও যথাসাধ্য অবদান রাখেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অধিনায়ক আকবর আলির ২০ রানের ক্যামিও। ২৫ রান দিয়ে দুই উইকেট শিকার করেন তাসনামিয়ার পেসার গ্যাবে বেল।
বল হাতে এইচপিকে দ্বিতীয় ওভারেই সাফল্য এনে দেন শেখ পারভেজ জীবন। বোল্ড করেন টিম ওয়ার্ডকে। ৮ ওভারের মধ্যে আরও দুটি উইকেট নিয়ে প্রতিপক্ষকে চাপে রাখেন বোলাররা। তাসমানিয়ার বোর্ড়ে রান তখন মাত্র ৫১।
তবে চতুর্থ উইকেটে চার্লি ওয়াকিমকে নিয়ে ৬৬ রানের জুটিতে জয়ের আশা ধরে রাখেন পাঁচে নামা ডরান। দ্রুত দুই উইকেট নিয়ে ম্যাচে ফেরার আশা জাগিয়েছিল এইচপি। তবে একপ্রান্ত আগলে রেখে তাসমানিয়াকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন ডরান৷
মাত্র ৩৭ বলে ৪টি চার ও তিন ছক্কায় খেলেন ৭১ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস। ২৫ রানে দুই উইকেট নিয়ে এইচপির সেরা বোলার স্পিনার রাকিবুল হাসান।
একটি করে উইকেট নেন জীবন, আবু হায়দার রনি ও মাহফুজুর রহমান রাব্বি।
৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৩৯ পিএম
৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৪৬ পিএম
বিপিএলের গত কয়েক রাউন্ড আগেও প্রশ্নটা জন্ম দিত বিস্ময়ের। সবার আগে প্লে-অফ নিশ্চিত করা রংপুর রাইডার্সের জন্য সেরা দুইয়ে থাকাটা ছিল ভীষণ সহজ সমীকরণের। তবে তাদের টানা চার হারের সুযোগ নিয়ে, আর নিজেরাও দুর্দান্ত খেলে এখন পয়েন্ট টেবিলে দ্বিতীয় স্থানে যাওয়ার স্বপ্ন আকছে চিটাগং কিংস। তারকা পেসার শরিফুল ইসলাম মনে করেন, ছন্দ ধরে রাখলেই এটা সম্ভব হবে।
টানা ৮ ম্যাচ জেতা রংপুর এরপর হেরে গেছে টানা চার ম্যাচ। তাতে ১২ ম্যাচে দলটির পয়েন্ট ১৬। এক ম্যাচ কম খেলা চিটাগংয়ের পয়েন্ট ১৪। ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে বড় জয় পেলে নেট রান রেটে রংপুরকে পেছনে ফেলতে পারবে দলটি। আর সেটা হলে মিলবে কোয়ালিফায়ারে টিকিট, যা সুযোগ করে দিবে ফাইনালে যাওয়ার জন্য একটি ম্যাচ বাড়তি খেলার।
সিলেট স্ট্রাইকার্সকে গুড়িয়ে দিয়ে সেই কাজটা এগিয়ে রাখার পর ম্যাচে ৪ উইকেট নেওয়া শরিফুল বললেন, তাদের চোখ এখন সেরা দুইয়েই। “দলে যেভাবে ভাবে, আমাদের সেই বিশ্বাসটা ছিল যে আমরা সেরা চারে থাকব। আলহামদুলিল্লাহ, আমরা সবাই ভালো খেলছি। একদিন হয়ত ব্যাটাররা, অন্যদিন আবার বোলাররা। তাই এটা দিক। তাই আমার কাছে মনে হয়, আমরা এভাবে খেলতে পারলে হয়ত দুই নম্বরে যেতে পারব।”
চিটাগংয়ের প্লে-অফে খেলা বা কোয়ালিফায়ারের আশা টিকিয়ে রাখায় শরিফুল রাখছেন ভালো অবদান। আসরে শুরুর দিকে ছন্দে না থাকলেও, শেষের দিকে এসে ক্রমেই জ্বলে উঠেছেন। সিলেটের বিপক্ষে সেরা সময়কে মনে করিয়ে চার উইকেট নিয়েছেন মাত্র ৫ রানে!
নির্লিপ্ত শরিফুল অবশ্য ব্যাপারটি দেখছেন স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হিসেবেই। “আমি সবসময় এটা চিন্তা করি যে, প্রতিটা মানুষের জীবনে ভালো ও খারাপ দিন আসবেই। আমি দুইটা সময়ই উপভোগ করতে চাই। হয়ত খারাপ সময় আসছে, হয়ত ভেঙে পড়লে আরও খারাপ হবে৷ আমি চেষ্টা করি যেটা আসবে, সেটাই মেনে নিতে।”
এক যুগ পর আবারও নেইমার ফিরছেন ব্রাজিলিয়ান লিগে। আল হিলাল শৈশবের ক্লাব সান্তোসের ফেরার আনুষ্ঠানিক ঘোষণাটাও কেবল বাকি। এই মৌসুমে কঠিন সময় পার করা সান্তোসের জন্য ব্রাজিল তারকাকে দলে পাওয়াটা স্বস্তিরও বটে। ঘরের ছেলের বাড়ি ফেরার মঞ্চে তারা রাখতে চায় না কোনো কমতি। এরই মধ্যে ব্রাজিলিয়ান গণমাধ্যমগুলো আভাস দিচ্ছে, নেইমারের ‘প্রেজেন্টেশন’ ঘিরে সান্তোস বড়সড় পরিকল্পনাই করছে।
টিএনটি স্পোর্টসের খবর অনুযায়ী, নেইমারকে বরণ করে নিতে হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পাকায়েম্বু স্টেডিয়াম থেকে হেলিকপ্টারে করে নেইমারকে নিয়ে আসা হবে সান্তোসের ঘরের মাঠ ভিলা বেলমেইরোতে। সেখানে আরও নানা ধরনের আয়োজন থাকবে বলেও জানাচ্ছে টিএনটি স্পোর্টস।
গেল বছর চিলি মিডফিল্ডার আর্তুরো ভিদালকে তার শৈশবের ক্লাব কোলো-কোলো বরণ করে নিয়েছিল ভিন্ন রকমভাবে। যা বিশ্ব মিডিয়ার নজর কেড়েছিল। হেলিকপ্টরে করে মাঠে প্রবেশের পর ঘোড়ায় চড়ে রাজার বেশে পুরো মাঠ ঘুরে বেড়িয়েছিলেন ভিদাল।
নেইমারের ক্ষেত্রেও তেমন কিছু আয়োজনের কথা চিন্তা করছে সান্তোস। টিএনটি স্পোর্টস আরও জানিয়েছে, বিশ্বকে তাকা লাগিয়ে দেওয়ার কথা ভাবছে সান্তোস ক্লাব কতৃপক্ষ। সেই সাথে মিডিয়া কাভারেজেও কোনো কমতি না রাখার কথা চিন্তা করছে ক্লাবটির বোর্ড।
তবে ঠিক কবে নেইমারের প্রেজেন্টশনের আয়োজন হবে, তা এখনো জানা যায়নি। তবে রবিবার ভোরে সাও পাওলোর সাথে হতে যাওয়া ম্যাচের আগেই নেইমারকে সান্তোস বরণ করে নিতে পারে বলে গুঞ্জন শোনা ব্রাজিলিয়ান সংবাদমাধ্যম।
শৈশবের ক্লাবে নেইমার আপাতত ফিরেছেন ছয় মাসের চুক্তিতে। তবে দুই পাক্ষের সামনে সুযোগ আছে চুক্তির মেয়াদ আরও এক বছর বাড়িয়ে নেওয়ার।
টুর্নামেন্ট যে ফরম্যাট বা যে কন্ডিশনেই হোক, একটা দল যখন টানা ৮টা ম্যাচ জিতে যায়, তাদের আত্মবিশ্বাসের পারদ চলে যায় অনেক উঁচুতে। শক্তির জায়গাগুলো আড়াল করে দেয় ছোট ছোট ভুলও। টানা জয়ের ফলে খেলোয়াড়দের মাঝেও প্রতিটি ম্যাচে আরও ভালো করার শক্ত প্রচেষ্টা দেখা যায়। তবে সেই জয়ের ধারাটা কেটে গেলে ফিরে আসা যে কতোটা কঠিন, এবারের বিপিএল তাই যেন টের পাচ্ছে রংপুর রাইডার্স।
আসরের প্রথম দিকে সব দলেরই কম্বিনেশন মেলাতে কিছুটা হিমসিম খেতে হচ্ছিল। তবে বিপিএলের ঠিক আগ জিএসএল জিতে আসায় অনেকটাই গোছানো ছিল রংপুর দল। তাছাড়া চারজন বিদেশী খেলোয়াড় যারা খেলেছেন, তারাও মোটামুটি শুরুর দিক থেকেই একাদশে থাকেন।
ফলে ব্যাটে-বলে দারুণ পারফরম্যান্সের পাশাপাশি দলে খুব বেশি পরিবর্তন না আনায়, কঠিন সব চ্যালেঞ্জও পাড়ি দিয়ে ফেলে রংপুর। রংপুরের অদম্য যে টানা ৮ ম্যাচ জয়ের রেকর্ড, সেখানে দুটিই ছিল আসরের আরেক ফেভারিট ও তারকায় ঠাসা ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে। এর মধ্যে একটিতে শেষ ওভারে ২৬ রানের অবিশ্বাস্য সমীকরণও মিলিয়ে ফেলেন নুরুল হাসান সোহান।
সেই ম্যাচে রংপুর যেভাবে রান তাড়া করেছে, শেষের দিকে প্রায় অসম্ভব এক লক্ষ্যের পেছনে ছুটেছে - সেটা সম্ভব হয়েছে জয়ের তীব্র বাসনা থেকেই৷ সোহান সেদিন যে ছক্কাগুলো মেরেছেন, অন্য কোনো ম্যাচে সেটা হয়ত হয়ে যাবে ক্যাচ।
ভাগ্য সাহসীদের পক্ষে। টানা জয়ের মধ্যে থাকা রংপুরের সাথে এই সময়ে বারবার সেটাই হয়েছে। খুলনা টাইগার্সের সাথে একটি ম্যাচে সেভাবেই ধরা দেয় ৮ রানের জয়। তবে সেই সাথে যোগ হয়েছিল দলের সবার সম্মিলিত প্রয়াসও।
বিপিএল ছেড়ে যাওয়ার আগে খেলা ম্যাচগুলোতে অ্যালেক্স হেলস নিশ্চিত করেন ভালো একটা শুরু। সাথে তিনে সাইফ হাসানও দারুণ ছন্দে থাকায় বুঝতে দেননি সৌম্য সরকারের অভাব। তবে ম্যাচের পর ম্যাচ ব্যাট ও বল হাতে দলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়ে পরিণত হন খুশদিল শাহ। চাপের মুখে দারুণ কিছু ইনিংস খেলার পাশাপাশি বল হাতে রাখেন সমান গুরুত্বপূর্ণ অবদান।
আরেক পাকিস্তান অলরাউন্ডার ইফতিখার আহমেদও যথাসাধ্য অবদান রাখেন মূলত ব্যাট হাতে। সাথে অফ স্পিনেও ভালোই সাপোর্ট দেন দলকে। সোহান উপহার দেন কয়েকটি ক্যামিও। বোলারদের মধ্যে ফর্মের শীর্ষে ছিলেন নাহিদ রানা। গতিময় এই পেসার রীতিমতো আগুন ঝড়াচ্ছিলেন বল হাতে।
পাকিস্তান পেসার আকিফ জাভেদ ও স্পিন অলরাউন্ডার মাহেদি হাসান নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করেন মুন্সিয়ানার সাথে। দলগত এই প্রয়াসই অন্যদের চেয়ে এগিয়ে রাখে রংপুরকে।
হেলস যাওয়ার পরও রংপুর জেতার মধ্যেই ছিল। তবে তার জায়গায় দলে আসা স্টিভেন টেলর ম্যাচের পর ম্যাচ পুরোপুরিভাবে ব্যর্থ হওয়ায় চাপ বাড়ে অন্যদের ওপর। সাইফও হারিয়ে ফেলেন ছন্দ। চোট কাটিয়ে নিজেকে ফিরে পেতে সময় লেগে যায় সৌম্যর।
অন্যদিকে নাহিদ, আকিফরাও ক্রমেই ফর্মের সাথে লড়াইয়ে অবতীর্ণ হন। স্পিনার রাকিবুল হাসান পারেননি আস্থার প্রতিদান দিতে। এসবের মাঝেই জাতীয় দলের ডাকে শেষ দুই ম্যাচের আগেই দল ছাড়তে হয় খুশদিলকে।
দুই বিভাগের এই ছন্দপতনের সময়ে সোহানও নিজেকে হারিয়ে খুঁজতে থাকেন। সব কিছুর সম্মেল্পনে দুর্বার রাজশাহীর কাছে টানা দুই ম্যাচ হেরে বসে রংপুর। একটি ছিল আবার ১১৯ রান তাড়া করে ২ রানের হার।
সেই রেশ কাটিয়ে ওঠার আগেই চিটাগং কিংস মাটিতে নামিয়ে আনে রংপুরকে। খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে তাই অনেকটাই মলিন দলটি বল হাতে এলোমেলো বোলিংয়ে হজম করে বসে ২২০ রান। এরপর বরণ করতে হয় ৪৬ রানের হার।
এর ফলে ১২ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে প্লে-অফ নিশ্চিত হলেও কোয়ালিফায়ার এখনও নিশ্চিত নয় রংপুরের। চিটাগং যদি নিজেদের শেষ ম্যাচে হারে, বা জিতলেও রংপুরের সমান পয়েন্ট নিয়েও পিছিয়ে থাকে নেট রান রেটে, তাহলেই কেবল শীর্ষ দুইয়ে থাকা হবে রংপুরের।
আপাতত রংপুরের তাই সেই ম্যাচের দিকে তাকিয়ে থাকা ছাড়া আর গতি নেই। আর সুযোগ নিজেদের ভুলত্রুটি নিয়ে কাজ করার। কোয়ালিফায়ার হোক বা এলিমিনেটর, শেষ চার ম্যাচ যেভাবে টানা হেরেছে দলটি, মনোবল একেবারেই চলে গেছে তলানিতে।
তবে এর মাঝে আশার খবর হতে পারে প্লে-অফে তারকা বিদেশীদের যোগদানের সম্ভাবনা। যেখানে এসেছে অস্ট্রেলিয়ার টিম ডেভিড, ডেভিড ওয়ার্নার ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের সুনিল নারাইনের মত বড় নাম।
সিলেট স্ট্রাইকার্সের জন্য ম্যাচটা আগেই পরিণত হয়েছিল নিছক আনুষ্ঠানিকতায়। তবে চিটাগং কিংসের জন্য ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ এই লড়াইটি ছিল প্লে-অফের কোয়ালিয়ারের খেলার আশা টিকিয়ে রাখার। একপেশে ম্যাচে দুই ফিফটিতে বড় স্কোর দাঁড় করানোর পর বোলারদের উজ্জীবিত পারফরম্যান্সে দাপুটে এক জয় তুলে নিল চিটাগং কিংস।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ৪০তম ম্যাচে চিটাগং জিতেছে ৯৬ রানে। ৮ উইকেটে ১৯৬ করার পর সিলেটকে স্রেফ ১০০ রানেই গুটিয়ে দিয়েছে তারা।
এই ম্যাচের পর ১১ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের তৃতীয় স্থানে এখন চিটাগং। প্রথম দুই অবস্থান ফরচুন বরিশাল (১১ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট) ও রংপুর রাইডার্সের (১২ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট)।
পারভেজ হোসেন ইমনের পর গ্রাহাম ক্লার্কও দ্রুত ফিরলে শুরুতে কিছুটা চাপেই পড়ে যায় চিটাগং। তবে তৃতীয় উইকেটে খাওয়াজা নাফায় ও মোহাম্মদ মিঠুন মিলে গড়ে তোলেন প্রতিরোধ। ইতিবাচক ব্যাটিংয়ে ক্রমেই ম্যাচে প্রধান্য বিস্তার করেন দুজন। ফিফটি পেরিয়ে জুটি চলে যাচ্ছিল প্রায় শতকের দিকেই।
তবে শেষ পর্যন্ত তাদের পথচলা থামে ৯৪ রানের জুটিতে। স্রেফ ছক্কার পর পর ছক্কায় ইনিংস সাজানো নাফায় সিলেটের বোলারদের তার আগে উপহার দেন কঠিন সময়। ৫ ছক্কা ও ১ চারে তার ব্যাট থেকে আসে ৫২ রান।
ফিফটির পর এগোতে পারেননি মিঠুনও। তবে ৩৮ বলে করা তার ৫২ রানের ইনিংসটি বড় স্কোরে রাখে দারুণ অবদান। শেষের দিকে শামিম হোসেন কার্যকরী এক ৩৮ রানের ইনিংস খেললেও, চমক দেখান মূলত খালেদ আহমেদ। মাত্র ১৩ বলে ২৫ রানের ক্যামিও আসে তার ব্যাট থেকে।
আসর জুড়েই ব্যাটিং নিয়ে কঠিন সময় পার করা সিলেটের এদিনও বজায় থাকে একই চিত্র। তিন মূল ব্যাটার জাকির হাসান, রনি তালুকদার ও জাকের আলি অনিক তিনজনই শুরুটা পেলেও ব্যর্থ হন তা টেনে নিতে। শরিফুল ইসলামের অবিশ্বাস্য এক স্পেলের সামনে কেউই পারেননি ফাইট দিতে।
ফলে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে অনেক আগেই ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় সিলেট। ৩.২ ওভারে এক মেডেন সহ মাত্র ৫ রানে ৪ উইকেট নেন শরিফুল।
নাঈম শেখের খুনে সেঞ্চুরিতে খুলনা টাইগার্স যখন দুইশ পার করা এক স্কোর পেল, তখনই নিশ্চিত ছিল রংপুর রাইডার্সের কঠিন চ্যালেঞ্জ। দুই বিদেশী নিয়ে দল সাজানোয় বড় দায়িত্ব ছিল স্থানীয় ক্রিকেটারদের ওপর। ওপেন করতে নামা সৌম্য সরকার একাই লড়ে গেলেন শেষ পর্যন্ত। তবে দলের টানা চতুর্থ হার এড়াতে সেটা যথেষ্ট হলো না।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ৩৯তম ম্যাচে ৪ উইকেটে ২২০ রানের বিশাল স্কোর পেয়েছিল খুলনা। ৯ উইকেটে ১৭৪ রান করতে সমর্থ হওয়া রংপুর হেরে গেছে ৪৬ রানে। আসরে এটি দলটির টানা চতুর্থ হার।
এই ম্যাচে রংপুর নামে একাদশে দুই পরিবর্তন নিয়ে। দুটিই ছিল ব্যাটিংয়ে। তাদেরই একজন ওপেনার তৌফিক খান শুরুটা করেন বেশ ভালোভাবেই। আবু হায়দার রনিকে প্রথম ওভারে থার্ড ম্যানের পর বাউন্ডারি মারেন লং অফ দিয়ে। তবে আক্রমণে এসেই তাকে বিদায় করেন দেন নাসুম আহমেদ।
সেই নাসুমের পরের ওভারেই জ্বলে ওঠেন সৌম্য। দ্বিতীয় বলে হাঁকান ডিপ মিড উইকেট দিয়ে চার। এরপর তিন বলের মধ্যে মারেন দুটি বিশাল ছক্কা। এর মাঝেই রান আউটে শেষ হয় সাইফ হাসানের পথচলা।
ক্রিজে গিয়েই দুটি চার মেরে ইতিবাচক ব্যাটিংয়ের আভাস মেলে ইফতিখার আহমেদের ব্যাটে। তবে আগের ম্যাচে ফিফটি করা এই ব্যাটারকে বেশিদূর আর যেতে দেননি এই ম্যাচ দিয়েই এই বিপিএলে প্রথমবার খেলা মুসফিক হাসান।
পাঁচে নামা মাহেদি হাসান সুযোগ কাজে লাগান দারুণভাবেই। আবু হায়দার রনিকে টানা দুই চারের পর মারেন একটি ছক্কাও। ১২তম ওভারে দলীয় শতক হয় রংপুরের। তবে এরপরই বাঁধে বিপত্তি। মোহাম্মদ নাওয়াজকে ইনসাইড-আউট খেলে মাহেদি চেষ্টা করেন উড়িয়ে মারার, ব্যাটে-বলে করতে পারেননি। ১৪ বলে তার আগে করেন ২৭।
এক বল বাদেই ফের উইকেটের দেখা পান নাওয়াজ। দ্বিতীয় বলেই সীমানা পার করতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরের পথ ধরতে হয় রংপুর অধিনায়ক সোহানকে।
তবে লড়াই চালিয়ে যান সৌম্য ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। দুজনে মিলে পরের কয়েকটি ওভারে হাঁকান কয়েকটি বড় শট, যা রংপুর শিবিরে জাগায় জয়ের আশা। আফিফ হোসেনের এক ওভারে আসে ১৬ রান। আবু হায়দারকে বাউন্ডারি মেরে ৩১ বলে পঞ্চাশে পা রাখেন সৌম্য।
তবে মুসফিকের এক ওভারেই বদলে যায় চিত্র। বড় শট মারতে গিয়ে বল আকাশে তুলে দেন সাইফউদ্দিন। পরের বলে তাকে অনুসরণ করেন আজিজুল হাকিম।
আবু হায়দারকে দুটি ছক্কা মেরে রাকিবুল হাসান কিছুটা আশার আলো দেখালেও হতাশার দিনে সেটাও আর কাজে দেয়নি রংপুরের। একাকি লড়াই করা সৌম্য শেষ পর্যন্ত আউট হন ৭৪ রানে। ৪৮ বলে ইনিংসটি সাজান ৬টি চার ও পাঁচ ছক্কায়। ২৪ রানে ৩ উইকেট নিয়ে খুলনার সেরা বোলার মুসফিক।
১৩ দিন আগে
১৮ দিন আগে
১৮ দিন আগে
২৩ দিন আগে
২৪ দিন আগে
২৪ দিন আগে