২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৪৭ এম
আগের দিন শেষ বেলায় ঝলকটা দেখিয়ে রেখেছিলেন হাসান মাহমুদ। চতুর্থ দিন সেটার রেশ ধরে বারবার পাকিস্তানের ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াইয়ে বাঁধা হয়ে দাঁড়ালেন বাংলাদেশ পেসার। আরেক উদীয়মান পেসার নাহিদ রানা তুললেন গতির ঝড়। স্বাগতিকদের অল্প লিডে বেঁধে ফেলা বাংলাদেশের সামনে তৈরি হল জয়ের মঞ্চ। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে সেই সুরটা বেঁধে দিলেন জাকির হাসান। শেষ দিনে বাংলাদেশের জন্য একে দিয়েছে জয়ের সহজ সমীকরণ।
রাওয়ালপিন্ডিতে দুই ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের চতুর্থ দিন শেষে ১৮৫ রান তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশের স্কোর ৭ ওভারে বিনা উইকেটে ৪২। মাত্র ২৩ বলে ২১ রানে অপরাজিত আছেন জাকির। আর ৯ রান শাদমানের।
এর আগে দ্বিতীয় ইনিংসের পাকিস্তানকে মাত্র ১৭২ রানে গুটিয়ে দেয় বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে দলটি করেছিল ২৭৪, আর বাংলাদেশের স্কোর ছিল ২৬২।
আরও পড়ুন: ১০ উইকেটে রেকর্ড বইয়ে হাসান-নাহিদ-তাসকিনরা
বাংলাদেশের জন্য চতুর্থ দিনের প্রথম ঘণ্টা গুরুত্বপূর্ণ ছিল আগের দিন শেষ বেলার লাগাম ধরে রাখার জন্য। দ্রুত দুই উইকেট নিয়ে পাকিস্তানকে বেকায়দায় ফেলা হাসান ও অন্য বোলারদের ছন্দ ধরে রাখার ওপর তার ম্যাচের ভাগ্য অনেকটাই নির্ভর করছিল। আর সেই কারণেই শুরু থেকেই বাংলাদেশ পেসারদের দেখা যায় আগ্রাসী বোলিং করতে। রান হলেও উইকেট শিকার করাই ছিল মূল লক্ষ্য।
তাতে কিছু লুজ ডেলিভারি হয়, যেখান থেকে দিনের দ্বিতীয় ওভারে তাসকিনকে চার মারেন সাইম আইয়ুব। পরের ওভারে হাসানকে চার হাঁকান শান মাসুদও। তবে ওই ওভারে কয়েকবার অল্পের জন্য আউট হওয়া থেকে রক্ষা পান পাকিস্তান অধিনায়ক। দুইবার পরাস্ত করার পাশাপাশি একবার আউটসাইড-এজ হয়।
পরের দুই ওভারেই একটি করে চার আসে। এরপর মাঝে এক ওভার বিরতি দিয়ে হাসানকে দুটি বাউন্ডারি মেরে আগ্রাসনের আভাস দেন মাসুদ। দুই ব্যাটারের এই দ্রুত রান তোলার গতির ইতি টানেন তাসকিন। মিড-অফে নাজমুল হোসেন শান্তকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ওপেনার সাইম, ২০ রানে।
এরপরই শুরু নাহিদ-ঝড়। তরুণ এই পেসার দুর্দান্ত এক স্পেলে বাংলাদেশকে নিয়ে যান চালকের আসনে। অফস্ট্যাম্পের বাইরে পিচ করা ডেলিভারি ড্রাইভ করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় মাসুদের ৩৪ বলে ২৮ রানের প্রতিরোধ।
নিজের পরের ওভারে এসে পাকিস্তানকে আরও বড় ধাক্কাটা দেন সেই নাহিদই। তরুণ এই পেসারের গতিতে পরাস্ত হন বাবর আজম, ব্যাটের কানায় লেগে বল চলে যায় প্রথম স্লিপে। সিরিজের এই নিয়ে দ্বিতীয়বার এই তারকা ব্যাটারকে আউট করেছেন নাহিদ।
পরের বলেই ফেরাতে পারতেন রিজওয়ানকে, তবে এবার প্রথম স্লিপে থাকা শাদমান ইসলামের হাত গলে বল বেরিয়ে হয়ে যায় বাউন্ডারি। জীবন পেয়ে রিজওয়ান বোর্ডে জমা করেন মহাগুরুত্বপূর্ণ কিছু রান।
খানিক বাদে সৌদ শাকিলকে কট বিহাইন্ড করে পাকিস্তানের স্কোর ৬ উইকেটে ৮১ করে ফেলেন নাহিদ। প্রবল চাপে থাকা পাকিস্তানের লিড বাড়ানোর কাজটা এরপর নিজের কাঁধে নিয়ে নেন রিজওয়ান। চার-ছয়ে দ্রুত বাড়তে থাকে রানের চাকা।
আঘা সালমানের সাথে রিজওয়ানের ক্রমন জমে ওঠা জুটি বাংলাদেশের জন্য হয়ে দাঁড়াচ্ছিল বড় চিন্তার কারণ। শেষ পর্যন্ত ফিরতি স্পেলে এসে বাংলাদেশকে কাঙ্ক্ষিত উইকেটটা এনে দেন হাসান। বেশ বাইরের বল তাড়া করে কিপার লিটন দাসকে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় রিজওয়ানের ৪৩ রানের লড়াকু ইনিংস। পরের বলেই মোহাম্মদ আলিকেও সাজঘরে ফিরিয়ে পাকিস্তানকে ১৫০ রানের মধ্যেই বেঁধে ফেলার সম্ভাবনা তৈরি করেন হাসান।
অন্যপ্রান্তে দলীয় ১৪৫ রানে আবরার আহমেদকে শিকার ধরেন নাহিদ। তবে বাংলাদেশকে হতাশ করে স্বাগতিক শিবিরে আশার সঞ্চার করেন সালমান। পরের কয়েকটি ওভারে কয়েকটি চার-ছক্কা মেরে খেলেন দারুণ এক ক্যামিও ইনিংসের। হাসানের পঞ্চম শিকার হয়ে মীর হামজা যখন আউট হন, তখন সালমান অপরাজিত থেকে যান ৪৭ রানে। আর পাকিস্তান পায় একটা লড়াই করার মত লিড।
আরও পড়ুন: নাহিদ রানা, যার সামনে খাবি খেলেন বাবরও
দ্বিতীয় ইনিংসে ক্রমশ মেঘলা হয়ে যাওয়া আকাশের নিচে ব্যাটিং করাটা বাংলাদেশের জন্য কঠিন হবে বলেই ধারণা করা হচ্ছিল। তবে শুরু থেকেই আগ্রাসী মেজাজে ব্যাট চালিয়ে পাকিস্তান বোলারদের ঘাবড়ে দেন জাকির হাসান।
খুররাম শাহজাদকে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই মারেন ছক্কা। ইতিবাচক ঢঙে ব্যাটিং করা এই বাঁহাতি ব্যাটার কয়েক ওভার বাদে ফের খুররামকে ছক্কায় ওড়ান। অন্যপ্রান্তে শাদমান ধীরলয়ে ব্যাটিং করলেও জাকিকে ব্যাটে চড়ে বাড়তে থাকে বাংলাদেশের রান। দিনের খেলা আগেভাগে শেষ হওয়ার আগে আবরারের করা করা দিনের শেষ ওভারের শেষ বলেই বাউন্ডারি আসে তার ব্যাট থেকে।
দিনের একদম শেষ বেলায় ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশের ইনিংসের রানের খাতা খোলেন শাদমান, মির হামজাকে স্কয়ার লেগ দিয়ে মারেন বাউন্ডারি। এরপর দিনের শেষ বলে বাই থেকে আসে চার রান। নিরাপদেই সাজঘরে ফেরেন দুই ওপেনার শাদমান ও জাকির হাসান।
২ দিন আগে
২ দিন আগে
৩ দিন আগে
৩ দিন আগে
৩ দিন আগে
৬ দিন আগে
৭ দিন আগে
৮ দিন আগে
৮ দিন আগে
২০ দিন আগে