২২ বছর বয়স সবে। কৈশোর ছুটিতে পাঠিয়েছেন এইতো সেদিন। বগুড়ার তাওহীদ হৃদয় এখন বাংলাদেশের হৃদয়। একটু বাড়িয়ে বলা হলো কী? সম্ভবত না। বাংলাদেশ দলকে প্রতিনিধিত্ব করা মানে তো বাংলাদেশের হয়ে যাওয়াই। সেটাও আবার ওয়ানডে বিশ্বকাপে, ভারতে। ২২ বছরের হৃদয়ের কাঁধেও পড়ে গেছে বিশাল দায়িত্ব। তবে ইচ্ছেশক্তি দিয়েই হৃদয় জিততে চান সেই চাপ।
১৫ ওয়ানডে ইনিংস আর ছয় মাসের বাংলাদেশের জার্সির বয়স। দূর থেকে যখনই অনুশীলনে দেখা মেলে, কিট ব্যাগের বাংলাদেশের লোগোটাও যেনো নতুন, জানায় নতুনত্বের কথা। তবে হৃদয় অন্তত নতুন থেকে 'জুনিয়র' ট্যাগ নিয়ে পড়ে থাকতে চাইছেন কী?
১৫ ওয়ানডে ইনিংসে ৩৭.০০ গড় আর ৮৬.৩৩ স্ট্রাইক রেটে ৫১৮ রান বলে ভিন্ন কথা। ১৫ ইনিংসের পাঁচটায় আবার পেয়েছেন অর্ধশতক। সবে শুরু!
ভারতে দল দুটো প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছেন। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে শূন্য আর আফগানিস্তানের বিপক্ষে পাঁচ রানের ইনিংস। তবে দলের আস্থা ঠিকই আছে হৃদয়ে।
সাকিব আল হাসান, দলের ওয়ানডে অধিনায়ক। হৃদয় নিয়ে প্রশংসা করে যান। বগুড়ার হৃদয় নিয়ে প্রশংসার স্তুতি শোনা যায় প্রায়শই নানান বিদেশির মুখেও।
বিশ্বকাপ শুরুর আগেই হৃদয় টি স্পোর্টসকে জানিয়ে রেখেছিলেন নিজ লড়াইয়ের কথা, 'আসলে দেখুন, বিশ্বকাপ হোক বা যে ম্যাচই হোক আমি বড় চিন্তা করি না। আমি আসলে দিনের মধ্যে থাকতে পছন্দ করি, যেমন আজকের দিনটা। সামনে যে দিনগুলো আসবে ঐ দিনগুলো যে চ্যালেঞ্জ ডিমান্ড করবে সে অনুযায়ী চেষ্টা করব। ঐ দিনটা একেবারে ভালো করে কাজে লাগানোর।'
এমনকি সব দিন না পারলেও হৃদয় যেদিন শুরু পাবেন সে দিন যেনো তারই হয়, বলে রেখেছিলেন সেসব। এই ব্যাটার টি স্পোর্টসকে জানিয়েছিলেন, 'আন্তর্জাতিক ম্যাচে সব ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ। সবাই ফলাফল চায়, পারফর্ম করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমি মনে করি এখানে সব ম্যাচেই পারফর্ম করা অনেক চ্যালেঞ্জিং। সবাই চায় পারফর্ম করতে। আমি সব ম্যাচেই অবদান রাখতে চাই। কিন্তু সব ম্যাচ তো পারব না, আমি চাই যেদিন খেলব সেদিন আমি যেনো বড় রান করতে পারি।'
হৃদয়ের এ এক অন্যরকম শুরুও। বিশ্বকাপের শুরু। যুব বিশ্বকাপটা জিতেছেন, রাঙিয়েছেন। বড়দের বিশ্বকাপেও তেমন কিছু? রাঙাবেন? প্রচণ্ড ইচ্ছেশক্তিতে কিনা হয়। তাওহীদ হৃদয় বোধহয় তা জানেন।
৩ দিন আগে
৩ দিন আগে
৬ দিন আগে
১৬ দিন আগে
১৬ দিন আগে
১৬ দিন আগে
১৬ দিন আগে
১৬ দিন আগে
২১ দিন আগে
২২ দিন আগে
২৩ দিন আগে
২৭ দিন আগে
২৮ দিন আগে
২৯ দিন আগে
২৯ দিন আগে
১৭ জুন ২০২৫, ৭:৫২ পিএম
এক যুগ আগে গল থেকে হাত ভর্তি অর্জন করেছে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে রেকর্ড ৬৩৮, মুশফিকুর রহিমের ডাবল, ৫ম উইকেট জুটিতে মুশফিক-আশরাফুলের ২৬৭, জয়ের সমান ড্র। ১২ বছর পর সেই গল টেস্টের সুখস্মৃতিই যেনো ফিরে পাচ্ছে বাংলাদেশ দল। প্রথম দিন শেষে স্কোর ৩ উইকেটে ২৯২। নাজমুল হোসেন শান্ত'র ১৩৬-এর পাশে মুশফিকুর রহিমের ১০৫, অবিচ্ছিন্ন তৃতীয় উইকেট জুটিতে তাদের সংগ্রহ ২৪৭ আরেকটি বড় স্কোরের স্বপ্ন দেখাচ্ছে। জোড়া সেঞ্চুরির দিনটিতে শান্ত পৌছে গেছেন টেস্টে দুই হাজারী ক্লাবে। শান্ত-মুশফিকের অবিচ্ছিন্ন জুটি দ্বিতীয় দিনে রেকর্ড পার্টনারশিপের আবহ দিচ্ছে। আর মাত্র ২০ রান যোগ করতে পারলেই চতুর্থ উইকেট জুটিতে বাংলাদেশের পার্টনারশিপের রেকর্ডটা দেখবে বিশ্ব।
ঐতিহ্যগতভাবে গল-এর উইকেটকে নিকট অতীতে যেভাবে দেখেছে বিশ্ব, তার ব্যতিক্রম দেখা যায়নি মঙ্গলবারও। শুরুতে কিছুক্ষণ উইকেটে পেসার আসিথা এবং অভিষিক্ত বাঁহাতি স্পিনার থারিন্দু আতঙ্ক ছড়ালেও দিনের শেষ দুটি সেশনে শ্রীলঙ্কার কোনো বোলারকে সমীহ করেননি শান্ত-মুশফিক। টেস্টে সেশন বাই সেশন খেলার পরিকল্পনায় এদিন বেশ সফল বাংলাদেশ। প্রথম সেশনে স্কোরশিটে ৯০ রান উঠতে ৩ উইকেট হারিয়েও হতোদ্যম হয়নি মিডল অর্ডাররা। পরের দুই সেশনে উইকেটহীন রান উঠেছে যথাক্রমে ৯২ ও ১১০।
নিজের ক্যারিয়ারের প্রথমই শুধু নয়, বাংলাদেশের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরিয়ানও মুশফিকুর। ২০১৩ সালে সেই ইতিহাসগড়া ডাবল সেঞ্চুরিটি পেয়েছেন তিনি গল-এ। সে কারণেই গল-এ যতোবার পা রেখেছেন, ততোবারই স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েছেন টেস্টে বাংলাদেশের একমাত্র ৬ হাজারী ক্লাবের এই সদস্য।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম দেখাতে নাজমুল হোসেন শান্ত পেয়েছেন সেঞ্চুরি। এবং জাত চেনানো ওই সেঞ্চুরিটি পেয়েছেন তিনি ৪ বছর আগে পাল্লেকেলেতে। ১৬৩ রানের সেই ইনিংস থেকে টনিক নিয়ে এবার গল টেস্টে নেমেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
দু'জনের ওই দুটি সুখস্মৃতি একসঙ্গে নতুন করে রোমন্থনের মঞ্চ এবার তৈরি করে দিয়েছে শ্রীলঙ্কার সুদৃশ্য টেস্ট ভেন্যু গল। ভারত মহাসাগরের দক্ষিণ কোল ঘেষেঁ দাঁড়িয়ে থাকা ভেন্যুতে মহাসাগরের গর্জনকে ছাপিয়ে গেছে এই দুই বাংলাদেশ ব্যাটারের ব্যাটের গর্জন।
পাল্লেকেলেতে ৪ বছর আগে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অভিষেক ইনিংসে সেঞ্চুরির (১৩৬) পর ঝিমিয়ে পড়েছিলেন। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পরের ১০টি ইনিংস ছিল হতাশার। ২টি 'ডাক' সিঙ্গল ডিজিট ৬টিতে! এই প্রথম গল-এ নেমে পাল্লেকেলের উত্তাপ পেয়েছেন। থারিন্দু রত্নায়েককে পর পর দুই বলে ডাউন দ্য উইকেটে ছক্কা এবং কভার ড্রাইভে বাউন্ডারি শটে নিজের চাঙ্গাভাব করেছিলেন প্রকাশ শান্ত। প্রবথ জয়াসুরিয়াকে সুইপ শটে ফাইন লেগ দিয়ে ২ রান নিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ এবং শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি উদযাপন করেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। ২০২৩ সালে ২ টেস্টে ৩ সেঞ্চুরিতে নিজেকে অন্যভাবে চেনানো শান্ত'কে পরবর্তী সেঞ্চুরির জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে ১৯ মাস!
প্রিয় প্রতিপক্ষ পেলে হাতটা একটু বেশি নিশপিশ করে মুশফিকুর রহিমের। এই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ৫৩.৮৪ গড়ে ১৩৪৬ রান নিয়ে ব্যাট করতে নেমে তা আর একবার জানিয়ে দিয়েছেন মুশফিকুর রহিম।
৯৯ রানে এসে কিছুক্ষণ আটকে থাকার পর আড়মোড়া ভেঙ্গেছেন। পেসার আসিথা ফার্নান্ডোর করা বলে ইনসাইড এজ হয়েও ঝুঁকিপূর্ণ সিঙ্গল নিতে পেরেছেন নন স্ট্রাইক ব্যাটার শান্ত'র সিগন্যালে। ওই রানের সঙ্গে পূর্ণ হয়েছে তার টেস্টে দ্বাদশ এবং শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৪র্থ সেঞ্চুরি।
এক যুগ আগে মুশফিকুরের ডাবল সেঞ্চুরির ম্যাচে অভিষিক্ত এনামুল হক বিজয় অভিষেক ইনিংসে ফিরেছিলেন আনলাকি থারটিনে। থেমে থেমে এক যুগে মাত্র টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়েছেন এবার নিয়ে ৭টি। আগের ৬টিতে ছিল না ফিফটি, এবার তো আরও করুণ দশা। ৯টি ডট করেও পাননি আত্মবিশ্বাস। আসিথা ফার্নান্দোর অফ স্টাম্পের বাইরের বল খেলতে যেয়ে বিপদ ডেকে এনেছেন, স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন ০ রানে। আর এক ওপেনার সাদমান ইসলাম অনীকও করেছেন ভুল। বাঁ হাতি স্পিনার থারিন্দুকে অভিষেক উইকেট উপহার দিয়েছেন তিনি। লো বাউন্সি বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন তিনি ১৪ রানের মাথায়।
মুমিনুল এদিন স্ট্রাইক রেটে মনযোগ দিয়ে ব্যাট করেও ইনিংসটাকে বড় করতে পারেননি। থারিন্দুকে ব্যাকফুটে কাট করতে যেয়ে স্লিপে দিয়েছেন ক্যাচ (২৯)।
তারপরও প্রথম দিন থেকে উজ্জীবনী টনিক নিয়ে আর একটি ভাল দিন উপহার দিক ক্রিকেট দল, সে দিকেই তাকিয়ে এখন বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা।
প্রথম ঘণ্টায় যেভাবে সাজঘরে ফিরলেন তিন ব্যাটার, তাতে আশঙ্কা জাগল আরেকটি ব্যাটিং বিপর্যয়ের। তবে রান খরা কাটিয়ে প্রিয় ভেন্যুতে জ্বলে উঠলেন মুশফিকুর রহিম। অভিজ্ঞ এই ব্যাটারকে সঙ্গী করে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত গড়লেন মজবুত এক জুটি, যা সফরকারীদের চাপ কাটিয়ে ক্রমেই নিয়ে গেল শক্তিশালী অবস্থানে। দুজনই করলেন সেঞ্চুরি, আর বাংলাদেশকে এনে দিলেন বড় স্কোরের ভিত।
গল টেস্টের প্রথম দিন শেষে বাংলাদেশের ৯০ ওভারে ৩ উইকেটে ২৯২। ১৩৬ রানে অপরাজিত শান্ত, আর শেষ বেলায় তিন অঙ্কে পা রাখা মুশফিকুরের নামের পাশে রান ১০৫।
আরও পড়ুন
জয় দিয়েই নতুন চক্র শুরু করতে চান শান্ত |
![]() |
সাম্প্রতিক সময়ে টেস্টে বাংলাদেশের বড় চিন্তার জায়গা ওপেনিং পজিশন। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শেষ সিরিজে সেঞ্চুরি জুটি গড়া শাদমান ইসলাম ও এনামুল হক বিজয় পারেননি ফর্ম টেনে নিতে। ১০ বলে শূন্য রানে ফেরেন বিজয়। এরপর দ্রুতই শাদমান ইসলাম (১৪) ও মমিনুল হক (২৯) উভয়কেই শিকার বানান থারিন্দু রথনায়কে, বাংলাদেশের স্কোর দাঁড় করায় ৩ উইকেটে ৪৫।
শান্ত রানে থাকলেও লম্বা সময় ধরে ছন্দহীন মুশফিকুরের জন্য তাই চ্যালেঞ্জ ছিল শুরুর এই চাপ সামাল দেওয়ার। প্রথম দিনের উইকেটের মতোই ছিল ব্যাটারদের জন্য সহায়ক কন্ডিশন, স্পিন ধরছিল সীমিত পরিসরে। ফলে দেখেশুনে খেলে ধীরে ধীরে দলকে ভালো অবস্থানে নেওয়ার কাজটা করেন শান্ত ও মুশফিক।
উইকেটহীন দ্বিতীয় সেশনে হয়ে যায় জুটির শতক। প্রতিপক্ষকে সেভাবে সুযোগ না দিয়ে দুই ব্যাটার এগিয়ে যান সেঞ্চুরির দিকে। দিনের একদম শুরু থেকেই শান্ত ছিলেন বেশ সাবলীল। স্পিন সামলেছেন দারুণ সব সুইপ শটে। আগ্রাসী শটে পেসারদেরও সামলেছেন দক্ষতার সাথে।
অন্যদিকে ফর্মে ফেরার লড়াইয়ে থাকা মুশফিক বাউন্ডারির সিঙ্গেলসেই রান বের করেছেন বেশি। দুজনের মধ্যে প্রথমে শতক তুলে নেন শান্ত, যা টেস্টে তার ৬ষ্ঠ টেস্ট সেঞ্চুরি। আর ২০২৩ সালের নভেম্বরের পর প্রথম শতক।
আরও পড়ুন
জয় দিয়েই নতুন চক্র শুরু করতে চান শান্ত |
![]() |
নার্ভাস নাইন্টিজে বেশ কিছুটা সময় আটকে থাকা মুশফিকুর অধিনায়ককে অনুসরণ করে দিনের খেলা শেষের কিছু আগে সেঞ্চুরির দেখা পান। অভিজ্ঞ এই ব্যাটারের এটি টেস্টে ১২তম সেঞ্চুরি। তিনি ও শান্ত মিলে চতুর্থ উইকেটে অবিচ্ছিন্ন আছেন ২৪৭ রানের জুটিতে।
প্রথম টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চক্রে অবস্থান ছিল সবার নিচে, জয় ছিল মাত্র একটি। সেখান থেকে দ্বিতীয় চক্রে উন্নতি করে বাংলাদেশ জয় পায় চারটি। তবে সামগ্রিক পারফরম্যান্সের চিত্রটা খুব একটা পরিবর্তন হয়নি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নতুন চক্রের প্রথম সিরিজের আগে অবশ্য বেশ আত্মবিশ্বাসী সুর নাজমুল হোসেন শান্তর। বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেছেন, জয় দিয়ে সফর শুরু করাই তাদের মূল লক্ষ্য।
গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে পাকিস্তানে গিয়ে দলটির বিপক্ষে ২-০ তে টেস্ট সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ। তবে এরপর পরপর দুটি সিরিজে সব ম্যাচেই হেরে যায় ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গিয়ে ধরা দেয় একটি জয়। এরপর টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের বাইরে জিম্বাবুয়ের সাথে ঘরের মাটিতে দুই ম্যাচের সিরিজে ড্র করে বাংলাদেশ। ফলে সাম্প্রতিক ফর্ম শ্রীলঙ্কা সিরিজে খুব একটা আশা জাগানোর মত নয়।
ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে শান্ত অবশ্য যথারীতি থাকলেন ইতিবাচকই।
“এই সিরিজের শুরুটা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দিক থেকে এটা বড় সুযোগ। আমরা বাংলাদেশে ভালো অনুশীলন করেছি, প্রস্তুতিও ভালো ছিল। আশা করি, প্রতিযোগিতার শুরুটা আমরা ভালোভাবেই করতে পারব। অবশ্যই আমরা জিততে চাই। প্রতিপক্ষের সঙ্গে জেতাই মূল লক্ষ্য। এখন গুরুত্বপূর্ণ হলে আমরা কিভাবে মাঠের ক্রিকেটে আমাদের খেলাটা খেলব বা প্রয়োগ করব আমাদের পরিকল্পনাগুলো। কত ভালো ক্রিকেট খেলতে পারছি এটাই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যদি আমাদের কাজগুলো করতে পারি ঠিকঠাকভাবে তাহলে এখান থেকে ভালো ফলাফল নিয়ে যাওয়া সম্ভব।”
শান্ত আশার কথা শোনালেও জিম্বাবুয়ের সাথে চেনা কন্ডিশনে যেভাবে একটি টেস্টে হেরে গিয়েছিল বাংলাদেশ, তা ছিল বিস্ময়করই। কারণ, তাদের প্রতিপক্ষ দল টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপেই খেলছে না। সাথে দলগতভাবে পিছিয়ে থাকার বিষয় তো ছিলই। সেই দলের সাথে প্রায় পূর্ণশক্তির দল নিয়ে পরাজয় বড় এক ধাক্কাই ছিল শান্তদের জন্য। পরের ম্যাচ জিতে অবশ্য সিরিজ ড্র করে বাংলাদেশ।
হারের তেতো অভিজ্ঞতা ভুলে জিম্বাবুয়ে সিরিজ থেকে শান্তর কাছে ইতিবাচক প্রাপ্তি ওই ঘুরে দাঁড়ানো জয়ই।
“অতীতে আমরা জিম্বাবুয়ের সঙ্গে কি সিরিজ খেলেছি তা নিয়ে খুব বেশি আগানো ঠিক হবে না। যদি শেষ ম্যাচের কথা বলেন ভালো স্মৃতি। আগের ম্যাচটা আমরা হেরেছিলাম। পরের ম্যাচটা আমরা যেভাবে কাম ব্যাক করেছিল ঐটাই দলকে মোটিভেটেড করবে।”
এই সিরিজে শান্তর ব্যাটিং পজিশন নিয়ে এখনও রয়ে গেছে ধোঁয়াশা। স্কোয়াডে মাত্র দুজন স্পেশালিষ্ট ওপেনার থাকায় তার ওপেন করার রয়েছে জোর সম্ভাবনা। এই পজিশনে যদিও তার রেকর্ড খুব একটা ভালো নয়। বরং তিন বা চারেই দেখা পেয়েছেন সেরা সব সাফল্যের। তবে লিটন দাসের দলে ফেরার কারণে শান্তকে ওপেনিংয়ে যাওয়ার ভালো সম্ভাবনাই রয়েছে।
তবে ম্যাচের আগের দিন সেটা খোলাসা করতে চাননি বাংলাদেশ অধিনায়ক।
“আমার ব্যাটিং পজিশন কোথায় হবে, সেটা এখন বলা যাবে না, কারণ আমি চাই না প্রতিপক্ষ আগে থেকে কোনো ধারণা পেয়ে যাক। কাল আমরা কী কম্বিনেশন নিয়ে খেলতে নামব, সেটার ওপর নির্ভর করে একাদশ সাজানো হবে। এখনও মিরাজের হালকা ঘাম হচ্ছে, তবে ওর উন্নতি হচ্ছে। সব কিছু ওর ফিটনেসের উপর নির্ভর করছে। যদি সে খেলার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত থাকে, তাহলে আমরা আরও ভালো একটি কম্বিনেশন নামাতে পারব।”
শ্রীলঙ্কার মাটিতে শান্ত খেলেছিলেন তার ক্যারিয়ার সেরা ১৬৩ রানের ইনিংস। এবারও কি তেমন কিছু সম্ভব? বাঁহাতি এই ব্যাটার চোখ রাখছেন বড় স্কোরের দিকেই।
“আমার ভালো স্মৃতি আছে ক্যান্ডিতে। কিন্তু এখন আমি গলে খেলার সুযোগটা নিতে চাই। এটা আমার জন্য দারুণ সুযোগ। এখানে স্পিন বোলিংই বেশি চ্যালেঞ্জ আমাদের জন্য। আমরা যা শুনেছি বা দেখেছিলাম এখানে আসার আগে। কিন্তু গলে প্রথম দুই দিনে ব্যাটারদের রানটাই গুরুত্বপূর্ণ। আমি সেই দুই তিনদিনের দিকেই নজর রাখতে চাই। বড় রান করতে চাই। আমি আশা করি আমরা সেটা করতে পারব।”
ভারত মহাসাগরের দক্ষিণ উপকূল ঘেঁষে থাকা গল ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়াম নিজস্ব ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ। ষোড়শ শতাব্দীতে ডাচ কলোনী গড়ে উঠেছে এখানে, মহাসাগরের গর্জনের মধ্যেও এখনো পাঁচশ’ বছর আগের বাড়ি-ঘর, দূর্গ টিকে আছে। ২১ বছর আগে প্রলয়ঙ্কারী সুনামীর আঘাতে ভেসে যাওয়া জনপদ, ক্রিকেট স্টেডিয়াম আবারো মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। ২৭ বছর আগে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষিক্ত হওয়া এই ভেন্যুটি এখন টেস্টের হাফ সেঞ্চুরির সামনে দাঁড়িয়ে। আর মাত্র ২টি টেস্ট হলেই শ্রীলঙ্কার প্রথম ভেন্যু হিসেবে টেস্ট ম্যাচের হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করবে।
এই স্টেডিয়াম স্মরণীয় হয়ে আছে বিশ্বের সর্বকালের সেরা স্পিনার মুত্তিয়া মুরালিধরণের অসামান্য কৃতি-তে। এই ভেন্যুতে মাত্র ১৫ টেস্টে ১১১ উইকেট শিকারী সাবেক এই অফস্পিনারের আবেগঘন ফেয়ারওয়েলের স্মৃতি এখনো চোখের সামনে ভেসে ওঠে।
টেস্ট ইতিহাসে প্রথম এবং একমাত্র ৮০০ উইকেট ক্লাবের সদস্যপদটা পেয়েছেন তিনি এই ভেন্যুতেই। ভারত টেল এন্ড ব্যাটার প্রাজ্ঞন ওঝাকে দারুণ এক ছোবলে স্লিপে মাহেলা জয়বর্ধনের হাতে ক্যাচ দিতে বাধ্য করে পূর্ণ করেছেন ৮০০তম উইকেট।
১৫ বছর আগে সেই কৃতির স্বাক্ষর রাখা বলটি গল ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামের মিউজিয়ামে আছে সংরক্ষিত। এই স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার আর এক লিজেন্ডারি অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুউসের ফেয়ারওয়েল মঞ্চ তৈরি করে রেখেছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট। ৩৮ বছর পূর্ণ করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৭ বছর কাটিয়ে ফেয়ারওয়েলের সামনে দাঁড়িয়ে অলরাউন্ডার ম্যাথুউস।
এই গল-এ কৃতিমানদের সংক্ষিপ্ত তালিকায় আছেন বাংলাদেশের মুশফিকুর রহিমও। বাংলাদেশের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির রেকর্ডটা তার এই ভেন্যুতে, ২০১৩ সালে। ৪৩৭ মিনিট স্থায়ীত্ব পাওয়া মুশফিকুর রহিমের সেই ডাবল, ৫ম উইকেট জুটিতে মোহাম্মদ আশরাফুলকে নিয়ে ২৬৩ রানের পার্টনারশিপে কী অসাধ্যই না সাধন করে বাংলাদেশ।
শ্রীলঙ্কা ৫৭০/৪ ডি. এর জবাব দিতে এসে যেখানে বড় ধরণের শঙ্কার মুখে পড়ার কথা, সেখানে প্রথম ইনিংসে ৬৮ রানের লিড নিয়ে উল্টো স্বাগতিক শ্রীলঙ্কাকেই কী না চাপের মুখে ফেলে দিয়েছিল বাংলাদেশ।
এক যুগ আগে গল-এ বীরত্বগাঁথা ৬৩৮ স্কোরের কল্যানে জয়ের সমান ড্র’র সেই সুখ স্মৃতি নিয়ে মঙ্গলবার স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অবতীর্ন হবে নাজমুল হাসান শান্ত’র দল। এই টেস্ট দিয়ে চলমান চক্রে (২০২৫-২৭) আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের উদ্বোধন হচ্ছে। যে চক্রে বাংলাদেশের জন্য বরাদ্দ ১২টি টেস্ট। সর্বশেষ চক্রে ১২ টেস্টে ৪ জয়ে পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পেছনে ফেলে পয়েন্ট টেবিলে ৭ম হওয়ার রেকর্ড থেকে টনিক নিয়ে পারফরমেন্সের গ্রাফ উর্ধ্বমুখী করার প্রত্যয় শান্তদের।
গল-এ ফেয়ারওয়েল টেস্টে মুরালীধরনের ৮০০ টেস্ট উইকেটের কৃতিত্ব নিয়ে শ্রীলঙ্কার বিভিন্ন দৈনিকের প্রথম পৃষ্ঠার রিপোর্ট।
গল-এ হয়ে যাওয়া ৪৮ টি টেস্টের রেকর্ড কথা বলেছে ব্যাটারদের পক্ষে। এই ভেন্যুতে ১৫টি ৫০০ প্লাস স্কোর, যার মধ্যে ৬টি-তে ৬শ। ব্যাটিং বান্ধব গল-এ প্রথম ইনিংসে গড়ে ৩৭৩ রানও কম নয়। এমন এক ব্যাটিং বান্ধব মাঠে টেস্টে ২ হাজার রান পূর্ণ করেছেন ইতোমধ্যে ৩ শ্রীলঙ্কান। মাহেলা জয়বর্ধনে ২৩ টেস্টে ২ হাজাত ৩৮২, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুউস ৩৩ টেস্টে ২ হাজার ২০৬, দিমুখ করুণারত্নে ২৪ টেস্টে ২ হাজার ৪০ রান করে গল-এ হল অব ফেম-এ জায়গা করে নিয়েছেন। বাংলাদেশের বিপক্ষে ৮১ রান করতে পারলে চতুর্থ শ্রীলঙ্কান হিসেবে গল-এ ২ হাজারী ক্লাবের সদস্যপদ পাবেন দিনেশ চান্দিমাল।
গল-এ পেস বোলারদের নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছুই নেই। এই ভেন্যুতে অতীতে ছড়ি ঘুরিয়েছেন স্পিনাররা। এই ভেন্যুতে মুরালীধরন ১৫ টেস্টে পেয়েছেন ১১১ উইকেট, হেরাথ ১৯ টেস্টে ১০২ উইকেট। ভ্যাপসা গরমের পাশাপাশি বৃষ্টি আক্রান্ত করতে পারে এই টেস্টে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে তা।
এসব দুশ্চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে স্মৃতিময় ভেন্যুতে ফর্মে ফেরার স্বপ্ন দেখছেন মুশফিকুর। গল-এ অনুশীলন করতে এসে দেখেছেন উইকেট। হাতের স্পর্শ দিয়ে বিশেষ কিছু অনুভবের চেষ্টা করেছেন। গত বছর বিসিবির সভাপতি হিসেবে ফারুক আহমেদের দায়িত্ব গ্রহনের অভিষেকে লাহোরে ১৯১ রানের ইনিংস উপহারে দিয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম অভিনন্দন। তবে টেস্টে প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে ম্যাচের সেঞ্চুরি পূর্ণ করার আগে নার্ভাস নাইনটিজ জুজু-তে ভুগছেন মুশফিকুর। লাহোর টেস্টে ম্যাচ উইনিং ১৯১’র পর ৭ টি টেস্টে তার রানের সমষ্টি মাত্র ১৯৮! সর্বশেষ ১৩ ইনিংসে তার গড় ১৫.২৩!
২০১৩ সালে গল-এ ৫ম উইকেট জুটিতে ২৬৩ রানের পথে আশরাফুল-মুশফিকুরের চওড়া হাসি।
টেস্ট ক্যারিয়ারে ২ দশক পূর্ণ করে বিগউলের সুর যখন শুনতে পাচ্ছেন, তখন টেস্টে বাংলাদেশের একমাত্র ৬ হাজার ক্লাবের সদস্য ৯৮তম টেস্টে স্ব মহিমায় উদগ্রীব হবেন, এটাই স্বাভাবিক। এক যুগ আগের সুখস্মৃতি থেকে টনিক নিয়ে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্রের শুরুটা হোক আশা জাগানিয়া, সে অপেক্ষায় এখন বাংলাদেশের সকল ক্রিকেটপ্রেমী।
জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট, বালক ও বালিকা (অনূর্ধ্ব -১৭) এর জাতীয় আসরের পর্দা উঠলো সোমবার (১৬ জুন)। মোহাম্মদপুর সরকারি শারীরিক শিক্ষা কলেজ মাঠে এই প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সম্মানিত সচিব মো: মাহবুব-উল-আলম। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো: ইকবাল হোসেন, ক্রীড়া পরিদপ্তরের পরিচালক মো: মোস্তফা জামান।
ক্রীড়া পরিদপ্তর, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশের ৮ টি বিভাগের প্রতিভাবান অনূর্ধ্ব-১৭ বালক ও বালিকাদের নিয়ে জাতীয় এই আসর শুরু হয়েছে। উদ্বোধনী ম্যাচে বালকদের বিভাগে বরিশাল বিভাগকে ১-০ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে খুলনা বিভাগ বালক দল। ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটে জয়সূচক গোলটি করেন খুলনা বিভাগের আল কাফি।
আরও পড়ুন
ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে বিপাকে ইন্তারের ইরানিয়ান ফরোয়ার্ড তারেমি |
![]() |
২০২৪ সালের জুন মাসে উপজেলার খেলা দিয়ে শুরু হয়েছিলো এই টুর্নামেন্ট। যেখানে অংশ নিয়েছিলো দেশের প্রায় ১,১০,২৬৪ জন খেলোয়াড়। এরপর প্রতিভাবান খেলোয়াড় নিয়ে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় শেষ হয়োছিলো এই বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে। টুর্নামেন্টের ফাইনাল জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৯ জুন।
জাতীয় এই আসর থেকে প্রতিভাবান ৪০ জন বালক ও ৪০ জন বালিকা বাছাই করা হবে। এই ফুটবলাররাই পরবর্তী সময় জায়গা করে নিবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে।