৩১ অক্টোবর ২০২৪, ৭:৩১ পিএম
গেল কয়েক দিন ধরেই আলোচনায় নাজমুল হাসান শান্তর অধিনায়কত্ব। আলোচনায় ছিল সাউথ আফ্রিকা সিরিজ শেষে শান্ত আর অধিনায়কত্ব করতে চান না। যদিও এই নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড কিংবা শান্ত কেউই মুখ খুলেননি। দ্বিতীয় টেস্ট শেষে শান্ত জানিয়েছেন বোর্ড থেকেই খুব শীঘ্রই এই নিয়ে আসবে সিদ্ধান্ত।
এ বছরের শুরুতে তিন ফরম্যাটে বাংলাদেশ দলের অধিনায়কত্ব দেওয়া হয়েছে শান্তকে। তার অধীনে পাকিস্তানকে হোয়াইট ওয়াশ করেছে বাংলাদেশ। তবে শেষ দুই সিরিজে সাউথ আফ্রিকা ও ভারতের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি টাইগাররা। শান্ত নিজেও নেই রানের মধ্যে। তাতেও পড়ছেন সমালোচনায়।
আরও পড়ুন
‘হঠাৎ করে স্টিভ ওয়াহ-ইমরান খান-ধোনি হওয়া যায় না’, অধিনায়ক শান্তকে নিয়ে বললেন ফাহিম |
![]() |
চটটগ্রাম টেস্ট শেষে সাংবাদ সম্মেলনে তাই ঘুরেফিরে এসেছে সেই প্রসঙ্গ। যার জবাবে শান্ত ছিলেন চুপ, “অধিনায়কত্বের ব্যাপারে সভাপতি কথা বলেছেন আপনাদের সঙ্গে। এ ব্যাপারে এখানে আমি আর কোনো মন্তব্য না করি। হয়তো ক্রিকেট বোর্ড থেকেই এই নিয়ে একটা কিছু জানতে পাবেন।”
বয়সভিত্তিক দল থেকেই অধিনায়কত্বের দায়িত্ব সামলে আসছেন শান্ত। কাজটা যে তিনি উপভোগ করেন সেটাও জানিয়েছেন বাঁহাতি এই ব্যাটার, “বয়সভিত্তিক থেকেই অনেক জায়গায় বলে আসছি, ক্যাপ্টেন্সি আমি সবসময় উপভোগ করি। গত কয়েকটা সিরিজও মাঠের ভেতরে আমি উপভোগ করেছি। এটা সবসময়ই আমার ভালো লাগার জায়গা।”
আরও পড়ুন
নাসুমকে লাঞ্ছিত করার বিষয়ে জানেন না শান্ত |
![]() |
গেল কিছু দিন থেকে দলের ব্যর্থতার সাথে তার ব্যাটেও রান নেই। অধিনায়কত্বের চাপে এমনটা হচ্ছে কিনা সে প্রশ্নও উঠেছে সংবাদ সম্মেলনে। তবে সেটা উড়িয়ে দিয়েছেন শান্ত, “আমার কাছে একবারও মনে হয়নি আমি ক্যাপ্টেন। ক্যাপ্টেন তাই সব আমাকে একা করতে হবে এমন মনে হয় না। বল দেখি ব্যাটিং করি, ব্যাটিং উপভোগ করি। ব্যাটিং করতে সবারই ভালো লাগে। চিন্তা থাকে একটাই কীভাবে বড় রান করতে পারব। এখন পর্যন্ত (চাপ) হয়নি আলহামদুলিল্লাহ।”
১৩ মে ২০২৫, ১০:৪৫ পিএম
১১ মে ২০২৫, ৭:৫৯ পিএম
আইপিএলের সাময়িক বিরতি ও পরিবর্তিত সূচির কারণে বিদেশী খেলোয়াড়দের সময় মত পাওয়া নিয়ে সব দলই আছে চ্যালেঞ্জিং সময়েরর মধ্যে। তবে কিছুটা নির্ভার থাকতে পারে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ। কারণ, আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল সামনে থাকলেও আইপিএলের বাকি অংশ খেলার জন্য সম্মতি দিয়েছেন দলটির দুই অজি তারকা প্যাট কামিন্স ও ট্রাভিস হেড, এমনটাই দাবি ইএসপিএনক্রিনইফোর।
পাকিস্তানের সাথে সীমান্ত উত্তেজনার কারণে গত ৯ মে আইপিএল এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত করা হয়। ফলে অধিকাংশ বিদেশী ক্রিকেটাররাই আইপিএল নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে ভারত ছেড়ে নিজ নিজ দেশে ফিরে যান।
আরও পড়ুন
কোহলি : টেস্ট ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন! |
![]() |
ভারত ও পাকিস্তান যুদ্ধ বিরতি দেওয়ায় আগামী ১৭ মে থেকে আইপিএল পুনরায় শুরু হবে। ফলে সব দল নেমে পড়েছে দল গুছিয়ে নেওয়ার কাজে। তবে হায়দ্রাবাদের দুই ক্রিকেটার কামিন্স ও হেড ১১ জুন লর্ডসে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের দলে থাকায় তাদের খেলা নিয়ে ছিল শঙ্কা।
তাছাড়া হায়দ্রাবাদ এরই মধ্যে প্লে-অফের লড়াই থেকে ছিটকে যাওয়ায় তারা ফাইনালের প্রস্তুতি রেখে আইপিএলে ফিরবেন কিনা, সেটাও ছিল দেখার বিষয়। তবে ধারণা করা হচ্ছে, দুজনই ফ্র্যাঞ্চাইজিকে জানিয়েছেন যে, তারা বাকি অংশ খেলতে ভারতে ফিরে যাবেন। কামিন্সের ম্যানেজার নীল ম্যাক্সওয়েল মঙ্গলবার বলেছেন,
“ফ্র্যাঞ্চাইজির অধিনায়ক হিসেবে প্যাটের একটি দায়িত্ব আছে। সে ফিরে আসার কথা ভাবছে।”
২০২৪ সালে রানার্সআপ হওয়া হায়দ্রাবাদ এবার ১১ ম্যাচে মাত্র তিনটি জয় নিয়ে পয়েন্ট টেবিলে অষ্টম স্থানে রয়েছে। দলটির ম্যাচ বাকি আছে আর তিনটি, যা শেষ হবে আগামী ২৫ মে।
ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের জেরে মাঝে স্থগিত ছিল পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল)। বন্ধ হয়েছিল ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএলও)। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় আবারও মাঠে ফিরছে দুই দেশের দুই লিগ। আগে-পরে বন্ধ হলেও দুই লিগই পুনরায় শুরু হচ্ছে একই তারিখে।
সোমবার আইপিএল কর্তৃপক্ষ ১৭ মে থেকে বাকি অংশ শুরুর কথা জানিয়েছে। একদিন পর পিএসএল কর্তৃপক্ষও জানালো, চলতি মাসের ১৭ তারিখে শুরু হচ্ছে পিএসএলও।
পিসিবি প্রধান মহসিন নাকভি নিজের এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ফের খেলা শুরুর ঘোষণা দিয়েছেন। নতুন সূচি অনুযায়ী বাকি থাকা ৮ ম্যাচ মাঠে গড়াবে ১৭ মে থেকে আর ফাইনাল হবে ২৫ মে।
পিএসএল আবারও মাঠে গড়ালেও হারাতে পারে রেশ। এই দফায় বিদেশি ক্রিকেটারদের পাওয়া যাবে কি না তা নিয়ে রয়েছে শঙ্কা। বিদেশি ক্রিকেটারদের দুবাইয়ে সরিয়ে নেওয়ার পর অনেকেই নিজ নিজ দেশে ফিরে গেছেন। বাংলাদেশের দুই ক্রিকেটার নাহিদ রানা ও রিশাদ হোসেনও ফিরেছেন বাংলাদেশে।
পিএসএলের সূচি বদলানোতে বদল আসতে পারে বাংলাদেশ পাকিস্তান-সিরিজেও। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে সিরিজ শেষ করে ২১ মে পাকিস্তানে পৌঁছানোর কথা টাইগারদের। ২৫ মে থেকে শুরু পাঁচটি টি-টোয়েন্টি সিরিজ। যার মধ্যে প্রথম দুটি ফয়সালাবাদে এবং বাকি তিনটি লাহোরে।
অবশ্য সিরিজটি মাঠে গড়ানো নিয়ে এখনো আছে ধোঁয়াশা। বিসিবি জানিয়েছে তারা এখনও এই সফর নিয়ে আলোচনা করছে পিসিবির সাথে।
“সবাই শুধু তোমার রেকর্ড আর মাইলফলকগুলো নিয়েই কথা বলবে - কিন্তু আমি মনে রাখব সেই অশ্রুগুলোর কথা, যা তুমি কখনও কাউকে দেখাওনি; আমি মনে রাখব সেই যুদ্ধগুলো, যা কেউ দেখেনি; আর তোমার সেই নিঃশর্ত ভালোবাসা, যা তুমি এই ফরম্যাটটাকে দিয়েছ। প্রতিটি টেস্ট সিরিজের পর তুমি ফিরে এসেছো আরও একটু বেশি জ্ঞানী হয়ে, একটু বেশি স্থির হয়ে। তোমার এই পুরো যাত্রাটা দেখা ছিল আমার জন্য অনন্য এক সৌভাগ্য। কোনো এক অজানা কারণে আমি সবসময় ভেবেছি তুমি সাদা পোশাকেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানাবে। কিন্তু সবসময়ের মত নিজের হৃদয়ের কথাই শুনেছো।”
- কথাগুলো বিরাট কোহলিকে নিয়ে বলেছেন তার সহধর্মিণী ও বলিউড অভিনেত্রী আনুশকা শর্মা। ক্রিকেটের প্রতি বিরাট কোহলির নিবেদন সবচেয়ে কাছ থেকে যিনি দেখেছেন, তার বলা কথাগুলোই বুঝিয়ে দেয় লাল বলের ক্রিকেটকে কীভাবে ধারণ করতেন ভারতীয় এই ব্যাটিং গ্রেট।
এই করতেন বলার কারণ, গত কয়েকদিনের গুঞ্জনকে সত্যি করে অনেকটা নীরবেই ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট দিয়ে টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়ে দিয়েছেন কোহলি। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষ থেকে নাকি জোর চেষ্টাই ছিল অত্যন্ত ইংল্যান্ড সফরে তাকে খেলানোর। মাস দুয়েক আগেও ব্যাপারটি নিয়ে যে আলোচনা হতে পারে, সেটাই তো ছিল বিস্ময়কর। কারণ, টেস্টকেই তো সবচেয়ে বেশি লালন করলেন। তবে আনুশকা শর্মা যেমনটা বলেছেন, মনের কথা শুনেছেন আধুনিক ক্রিকেটের অন্যতম সেরা এই ক্রিকেটার।
আরও পড়ুন
নাহিদ-তাসকিনদের নতুন বোলিং কোচ টেইট |
![]() |
ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসেও কোহলি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন বর্ণিল এক চরিত্র হিসেবে। শচীন টেন্ডুলকার ভারতের ক্রিকেট ‘ঈশ্বর’, যিনি ছিলেন ব্যক্তি হিসেবে ধীরস্থির, শান্ত আর নিখুঁত ব্যাটিংয়ের প্রদর্শনী। আর কোহলি তার ঠিক বিপরীত। তিনি বুনো চরিত্রের ভীষণ আগ্রাসী একজন ক্রিকেটার, যিনি ব্যাটসম্যানশিপের চূড়ান্ত স্তরে থাকার পাশাপাশি মাঠে প্রতিপক্ষকে একচুল ছাড় দিতে নারাজ। অধিনায়ক ও খেলোয়াড় হিসেবে ভারতকে তিনি দেখিয়েছেন কীভাবে প্রতিকূল পরিবেশে কীভাবে চোখে চোখ রেখে লড়াই করতে হয়। আর এই বিষয়গুলো অনেক সময়ই আড়াল হয়ে যায় হাজার হাজার রান বা সেঞ্চুরি, ডাবল সেঞ্চুরির স্তুতিগাথায়।
কোহলির অধিনায়কত্বে ভারত প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট সিরিজ জেতে ২০১৮-১৯ মৌসুমে। তার সময়েই ভারত একটা লম্বা সময় ধরে থাকে টেস্টের র্যাংকিংয়ে শীর্ষে।
লাল বলের ক্রিকেটে কোহলির অবসরের ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় শচীন বলেছেন, ভারতীয় ক্রিকেটের পরের প্রজন্মকে এই ফরম্যাটের প্রতি আগ্রহী করে তোলায় তার উত্তরসূরি রেখেছেন বিশাল এক অবদান। খুব একটা ভুল বলেননি তিনি। তবে টেস্ট ক্রিকেটে যে নিবেদন, আগ্রাসন দেখাতেন কোহলি, তা পুরো বিশ্ব ক্রিকেটেই ছিল উপভোগ্য এক বিষয়।
আর সেই কাজটা করতে গিয়ে অধিনায়ক হিসেবে বড় একটা পরিবর্তন আনেন ভারতীয় ক্রিকেট সংস্কৃতিতে। ফিটনেস ও পেশাদারিত্বের ক্ষেত্রে একটা বিপ্লব এসেছে তার হাত ধরেই। কীভাবে টেস্টের প্রতিটি বলেই সমান একাগ্রতা নিয়ে লড়তে হয়, খাদের কিনারায় থেকেও আশার প্রদীপ জ্বালাতে হয়, সেটা সামনে থেকে দেখিয়েছেন ম্যাচের পর ম্যাচ ধরে।
সবসময়ই স্পিনে শক্তিশালী হওয়ায় ভারতের জন্য দেশের মাটিতে জেতাটা সহজ হলেও বিদেশের মাটিতে টেস্টে বড় সাফল্য পাওয়া ছিল ভীষণ অনিয়মিত ঘটনা। সেটা বুঝতে পেরে কোহলি সবার আগে জোর দেন গতিময়, আগ্রাসী পেসারদের দলে নেওয়ার। সেটার ফলও ভারত পায় হাতেনাতে। ‘সেনা’ দেশগুলোতে তার অধিনায়কত্বেই দলটি পায় নিজেদের ইতিহাসের সেরা সব সাফল্য। এই ফরম্যাটকে বিদায় জানানোর সময় কোহলি যখন দেখছেন দলে পেসারদের আধিপত্য এমনকি ঘরের মাটিতেও, তখন তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলতেই পারেন তিনি।
এক নজরে কোহলির টেস্ট ক্যারিয়ার :
• ১২৩টি টেস্ট
• ৯ হাজার ২৮৩ রান
• গড় : ৪৬.৮৫
• শতক : ৩০
• ডাবল সেঞ্চুরি : ৭ (ভারতীয়দের মধ্যে সর্বোচ্চ)
• ফিফটি ৩১
• সর্বোচ্চ : ২৫৪*
• অধিনায়ক হিসেবে ৬৮ ম্যাচে, ৪০টি জয় - ভারতের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
তবে টেস্টের কোহলিকে স্রেফ রান-সেঞ্চুরি দিয়ে মাপতে গেলে ভুলই করবেন আপনি। যে সময়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের জোয়ারে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে পাঁচদিনের ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ, সেই সময়েই কোহলি এই ফরম্যাটকে দিয়েছেন সর্বোচ্চ গুরুত্ব। ব্যাটিংয়ে প্রতিটি রানের জন্য তার লড়াই, ফিল্ডিংয়ে প্রতিটি বলেই আগ্রাসন দেখানো, উইকেট পতনে বুনো উল্লাসে মেতে ওঠা, এই জিনিসগুলোর কারণেই তিনি সবার চেয়ে আলাদা হয়ে থাকবেন। এভাবেই এই যুগে এসেও ভারতের তরুণ প্রজন্ম কোহলিকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়, হচ্ছে টেস্ট ক্রিকেট খেলার, রেকর্ড গড়ার, ইতিহাসের অংশ হওয়ার।
আরও পড়ুন
রোহিতের পর টেস্ট অবসরের পথে কোহলিও? |
![]() |
এই প্রসঙ্গে স্টিভেন স্মিথ একবার বলেছিলেন,
“সে শুধু একজন গ্রেট খেলোয়াড়ই নয়, একজন দুর্দান্ত প্রতিপক্ষও। খেলার মাঠে বিরাট শুধুমাত্র নিজের প্রাণশক্তিই নিয়ে আসে না, পুরো দলের মাঝেও সেটা ছড়িয়ে দেয়।”
খেলোয়াড়দের পাশাপাশি দর্শকদের কাছেও কোহলি ছিলেন এমন একজন, যিনি টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি তৈরি করতে পেরেছিলেন অন্যরকম এক আবেদন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তেমনই একজন যেমনটা বলেছেন,
“আমরা শুধু তাকে খেলতেই দেখতাম না, আমরা তার করা প্রতিটি রান, প্রতিটি চিৎকার, শূন্যে মারা প্রতিটি ঘুষিকেও অনুভব করতাম। সে কেবল ক্রিকেট খেলতই না, সে এটিকে কেন্দ্র করেই চলত।”
একজন স্পোর্টসম্যানের জন্য এরচেয়ে বড় প্রাপ্তি আর কী হতে পারে! কোহলি সেটা করতে পেরেছেন, কারণ টেস্ট ক্রিকেটকে তিনি সত্যিকারের ভালোবাসাই দিয়ে গেছেন শেষ দিন পর্যন্ত। এই কারণেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নিজের বিদায়ী টেস্ট সিরিজে তিনি সংগ্রাম করে একটা সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন, ছন্দে না থেকেও ছিলেন সিরিজের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন। এতোটাই ছিল টেস্ট ক্রিকেটার কোহলির প্রভাব।
হার না মানা মানসিকতার কারণেই কোহলি ২০২০ সালের পর থেকে এই ফরম্যাটে সেরা ছন্দে না থেকেও লড়াই চালিয়ে যেতে পেরেছেন। আসলে ২০২০ থেকে ২০২৫ সালের সময়টা বাদ দিলে কোহলির টেস্ট গড়টা থাকতে পারত আরও ইর্ষনীয়। এই মাপের একজন ব্যাটার কেন আর কীভাবে এত লম্বা সময় অফ ফর্মে আটকে থাকলেন, সেটা বড় এক রহস্যই থেকে যাবে। তবে ওয়ানডে গ্রেট কোহলিকে এরপরও আপনাকের টেস্টের সেরাদের কাতারের বিবেচনা করতেই হবে।
সেটা কেন, তা নিয়ে চলতে পারে নানা তর্ক। তবে ২০১৪ সালে টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে নিজের প্রথম সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে চতুর্থ ইনিংস রান তাড়ায় যে ইনিংসটি খেলেছিলেন, সেটা ক্রিকেটের প্রিয় একজন ছাত্র সহজে ভুলতে পারবেন না। একটা হেরে যাওয়া ম্যাচে একটি সেঞ্চুরি কীভাবে দাগ কেটে যেতে পারে, সেটা অনুভব করতে হলে আপনাকে সেই ম্যাচটি দেখতে হবে বারবার।
প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরির পর ৩৬৪ রানের টার্গেটে নেমে ড্রয়ের আশা বাদ দিয়ে ব্যাট চালান জয়ের লক্ষ্যে, প্রেক্ষাপট বিবেচনায় যা ছিল অবিশ্বাস্য এক চেষ্টাই। এই দফায়ও সেঞ্চুরি করে ছুটছিলেন জয়ের লক্ষ্যেই। তবে নাথান লায়নের বলে ক্যাচ দিয়ে তার ফেরার পরই পথ হারিয়ে ভারত ম্যাচও হেরে যায়। আউট হওয়ার পর চোখেমুখে যে অবিশ্বাস আর হতাশা ছিল কোহলির, ঠিক সেই কারণেই তিনি টেস্ট গ্রেট হয়ে উঠেছেন। জয়ের জন্য শেষ বিন্দু নিংড়ে দেওয়া কোহলি তাই লাল বলের ক্রিকেটের একজন বড় বিজ্ঞাপন হয়েই প্রাণবন্ত থাকবেন ইতিহাসের পাতায়।
আন্দ্রে অ্যাডামস যে বাংলাদেশ জাতীয় দলের পেস বোলিং কোচ হিসেবে আর বেশিদিন থাকছেন না, তা একরকম নিশ্চিতই ছিল। সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরের ঠিক আগে আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে বিদায় জানাল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক গতিময় পেসার শন টেইট।
সোমবার বিবৃতি দিয়ে বিসিবি জানিয়েছে, টেইটের সাথে জাতীয় দলের বোলিং কোচ হিসেবে ২০২৭ সালের নভেম্বর পর্যন্ত চুক্তি করেছেন তারা। ৪২ বছর বয়সী টেইট চলতি মাসেই দলের সাথে যুক্ত হবেন।
আরও পড়ুন
‘বাংলাদেশ দলের অধিনায়কত্ব করা কঠিন’, লিটনকে নিয়ে আশাবাদী সালাহউদ্দিন |
![]() |
চোটের কারণে ক্যারিয়ার খুব লম্বা না হওয়া টেইটের কোচিং ক্যারিয়ার এরই মধ্যে বেশ সমৃদ্ধ। অভিজ্ঞতা আছে পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ (টেস্ট দলে) এবং আফগানিস্তানের জাতীয় দলে বোলিং কোচ হিসেবে কাজ করার।
ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটেও টেইট বেশ চেনা ও ব্যস্ত এক নাম। গত বিপিএলে ছিলেন চিটাগাং কিংসের প্রধান কোচ, যেখানে শেষ পর্যন্ত দলটি হয় রানার্সআপ। এছাড়াও তিনি কোচিং করিয়েছেন বিগ ব্যাশ লিগ, পিএসএল, লঙ্কান প্রিমিয়ার লিগ (এলপিএল) এবং ইংলিশ কাউন্টি ক্রিকেটের দলেও।
তাসকিন-নাহিদ-হাসানদের কোচ হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় টেইট শুনিয়েছেন উজ্জ্বল আগামীর সম্ভাবনার কথা।
“বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাথে যুক্ত হওয়ার জন্য এটা দারুণ একটা সময়, যা একটা নতুন যুগের সূচনার মত। সাম্প্রতিক সময়ে বারবার এটা উচ্চারিত হচ্ছে যে আমাদের দলের তরুণ ফাস্ট বোলারদের দারুণ সম্ভাবনা রয়েছে - এটা সত্যিই ইতিবাচক দিক। তবে এটা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট, উন্নতি করতে চাওয়া একটা দল নয়। তাই সবাই এখানে প্রত্যাশা করে প্রতিভাবানরা যেন ফলাফলও এনে দেয়। আমারও মূল লক্ষ্য থাকবে এই প্রতিভাবান পেসারদের কাছ থেকে ভালো পারফরম্যান্স বের করে আনা এবং দলকে বেশি বেশি জয় এনে দেওয়া।”
বাংলাদেশের পেস বিপ্লবের এই সময়ে টেইট হতে পারেন সামনের দিকে দলকে এগিয়ে নেওয়ার একজন যোগ্য ব্যক্তি। নিজের সময়ে তিনি ছিলেন সময়ের অন্যতম গতিময় পেসারদের একজন। অস্ট্রেলিয়ার সোনালি যুগে অভিষেক হলেও চোট আর নানা কারণে খুব বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়নি তার। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে মোট ৫৯টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা টেইট ছিলেন অজিদের ২০০৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য।
ফরম্যাট যেটাই হোক, বাংলাদেশ জাতীয় দলের অধিনায়ক যেই হন, তাকে পড়তে হয় বাড়তি চাপের মুখে। দল সাফল্য পেলে খুব একটা প্রশংসা না পেলেও বাজে পারফরম্যান্স হলে সবচেয়ে বেশি সমালোচনায় বিদ্ধ হতে হয়। টি-টোয়েন্টির নতুন অধিনায়ক লিটন দাসের জন্যও অপেক্ষা করছে একই চ্যালেঞ্জ। জাতীয় দলের অধিনায়কত্ব করার কাজটা যে কঠিন, তা মানেন সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাহউদ্দিনও। তবে তিনি বিশ্বাস করেন, লিটনের মাঝে ভালো করার সব গুণাবলীই আছে।
অস্থায়ীভাবে অবশ্য আগেও সাদা বলের ক্রিকেটে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন লিটন। ভারতের সাথে ওয়ানডে সিরিজ জয়ের সাথে রয়েছে গত বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে ২০ ওভারের সিরিজ জয়। তবে এবার স্থায়ীভাবে এই ফরম্যাটের দায়িত্ব পেয়েছেন ২০২৬ বিশ্বকাপ পর্যন্ত। ফলে এখন থেকে দল একটু খারাপ করলে বাড়তি সমালোচনা শুনতে হতে পারে অভিজ্ঞ এই কিপার-ব্যাটারকে।
আরও পড়ুন
ক্লাবের বাজে পারফরম্যান্স, ক্ষুব্ধ ভক্তদের হামলা ট্রেনিং গ্রাউন্ডে |
![]() |
রোববার অনুশীলনের ফাঁকে এক সংবাদ সম্মেলনে সালাহউদ্দিন বলেছেন, লিটনের মাঝে নতুন ভূমিকায় ভালো করার সব সম্ভাবনাই দেখেন তিনি।
“লিটনকে আমরা একটু অনুভাবেই দেখি। সে কম কথা বলে, তাই সবাই ভিন্ন কিছু ভেবে নেয়। যারা কাছ থেকে দেখে, মিশে, তাদের সেই ধারণা থাকে না। “অধিনায়কের যেসব গুণ থাকা দরকার, দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে যা যা থাকা দরকার, টেকনিক্যাল দিক, এসব দিকদ দিয়ে সে খুব ভালো। সে চেষ্টা করছে দলটাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। অধিনায়কই এই দল চালাবে। আমরা যারা তার সাথে আছি, আমাদের তাকে সমর্থন আর স্বাধীনতা দিতে হবে। তাহলেই সে ভালো করবে।”
উপমহাদেশে ক্রিকেট নিয়ে মাতামাতি বেশি হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই অধিনায়ক পজিশনটা সবসময়ই থাকে চাপময়। তবে বাংলাদেশ দলের ক্ষেত্রে নানা দিক থেকে সেটা একটু ভিন্নই। দেশের ইতিহাসের সেরা অধিনায়কদেরও সমালোচনার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। পারফর্মিং অধিনায়ক না হলে তার জন্য আবহ হয়ে যায় কঠিন।
সালাহউদ্দদিন মনে করেন, দলের অধারাবাহিকতা অধিনায়ককে বাড়তি চাপের মুখে ঠেলে দেয়।
“আমরা দলগতভাবে পারফর্ম করতে পারি না। এটা অনেক বড় একটা ব্যাপার। আমাদের দলে যদি অনেক পারফর্মার থাকত, তাহলে কিন্তু অধিনায়কত্ব করাটা সহজ হয়ে যেত। সাথে এটাও মনে রাখতে হবে জাতি হিসেবে আমরা কিন্তু অনেক আবেগপ্রবণ। এটা ব্যক্তিগতভাবে মেনে নিতে অনেক কষ্ট হয় মাঝেমধ্যেই। তবে এই পরিণতবোধ চলে আসবে দ্রুতই। অধিনায়ক হিসেবে এই চাপটা নিতেই হবে। পারফরম্যান্স উন্নতির দিকে উঠলে তার জন্য সহজ হবে।”
১৩ দিন আগে
১৫ দিন আগে
২৪ দিন আগে
২৪ দিন আগে
২৪ দিন আগে
২৪ দিন আগে
২৪ দিন আগে
২৫ দিন আগে
২৬ দিন আগে
২৬ দিন আগে