এস্তাদিও মনুমেন্টাল যা কিনা শুধু আর্জেন্টিনা জাতীয় দল নয় বিখ্যাত রিভার প্লেট ক্লাবেরও হোম ভেন্যু- সেখানেই রেকর্ডের আলোয় আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠলেন লিওনেল মেসি। বুয়েন্স এইরেসের এই স্টেডিয়ামটি ৮৬ বছরের ইতিহাসে অনেক ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী, তবে এরমাঝে মেসির দশম আর্ন্তজাতিক হ্যাটট্রিক আলাদা হয়ে থাকবে। বলিভিয়ার বিপক্ষে হাফ ডজন গোলের জয়ের উৎসবে মধ্যমনি এলএমটেন, পেরুর রেফারি কেভিন পাওলো ওরতেগাকে যে ছ’বার গোলের বাঁশি বাজাতে হয়েছে- তারমধ্যে বিশ্বসেরা ফুটবলারের আছে তিনটি।
৩৩৪ দিন পর নিজ দেশের মানুষের সামনে ঘরের মাঠে খেলতে নামেন লিওনেল মেসি। আর সেখানেই পেলেন দারুণ এক হ্যাটট্রিক। যা ম্যাচ শেষে নিজেও স্মরণ করেছেন এলএমটেন, “এখানে ফিরে আসা, মানুষের ভালবাসা অনুভব করা দারুণ ব্যাপার। দর্শকরা যখন আমার নাম ধরে চিৎকার করে তখন আমি অন্যরকম এক বন্ধন অনুভব করি। ঠিক এজন্য আমি আর্জেন্টিনায় খেলতে ভালবাসি।“
এই তিন গোলের সৌজন্যে মেসি ইরানের স্ট্রাইকার আলী দাইয়ি থেকে (১০৮ গোল) আরও এগিয়ে গেলেন। আর্ন্তজাতিক ম্যাচে মেসির গোলসংখ্যা এখন ১১২, তিনি আছেন দ্বিতীয় স্থানে। ১৩৩ গোল নিয়ে এই তালিকার শীর্ষে পর্তুগালের ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো।
তবে আর্ন্তজাতিক গোলসংখ্যায় মেসি ২১ গোল পিছিয়ে থাকলেও হ্যাটট্রিক সংখ্যায় ভাগ বসিয়েছেন রোনালদোর রেকর্ডে। দু’জনেরই আর্ন্তজাতিক হ্যাটট্রিক সংখ্যা ১০টি। এই দু’জন ছাড়া আন্তর্জাতিক ফুটবলে আর ১০টি হ্যাটট্রিকের রেকর্ড আছে একজনের, তিনি ইংল্যান্ডের ফরোয়ার্ড ভিভিয়ান উডওয়ার্ড। ১১০ বছর আগে ইংল্যান্ডের হয়ে খেলা এই ভদ্রলোকের ১০ হ্যাটট্রিকের ৬টিই অপেশাদার দলের হয়ে, আর তাই তিনি মেসি-রোনালদোর সাথে তুল্য নন। আর্ন্তজাতিক ফুটবলে প্রথম ৯ হ্যাটট্রিক করা ফুটবলার ছিলেন সুইডেনের সভেন রাইডেল, ১৯৩২ সালে সেটি করেছিলেন তিনি। ৯টি আন্তর্জাতিক হ্যাটট্রিক আছে আরব আমিরাতের আলী আহমেদ মাবখুতেরও। ৮টি আছে- ইরানের আলী দাইয়ি, জার্মানির জার্ড মুলার ও ডেনমার্কের পল নিয়েলসনের। এই চারজনই আন্তর্জাতিক ফুটবলে আর নেই। আর তাই মেসি-রোনালদোর সামনে সুযোগ আছে নিজেদের ১০ হ্যাটট্রিকের রেকর্ড আরও সমৃদ্ধ করার।
No posts available.
১৮ অক্টোবর ২০২৫, ২:৪১ পিএম
১৮ অক্টোবর ২০২৫, ৯:১৪ এম
লা লিগার পরিকল্পনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে খেলোয়াড়েরা যখন মাঠে ১৫ সেকেন্ডের জন্য স্থির দাঁড়িয়ে রইলেন, তখন টিভির পর্দায় দেখা গেল আকাশ থেকে স্টেডিয়ামের দৃশ্য—খেলোয়াড়দের প্রতিবাদের দৃশ্যটি দেখানোই হলো না!
শুক্রবার রাতে এস্পানিওল ও রিয়াল ওভিয়েদোর ম্যাচে এমন ঘটনাই ঘটেছে। লা লিগার আয়োজিত এই ম্যাচে খেলোয়াড়েরা আগে থেকেই ঠিক করেছিলেন, খেলার শুরুতে ১৫ সেকেন্ড দাঁড়িয়ে থেকে নিজেদের অসন্তোষ জানাবেন। তাঁদের দাবি, বিদেশে ম্যাচ আয়োজনের পরিকল্পনা নিয়ে লা লিগা যেন স্বচ্ছতা দেখায় এবং খেলোয়াড় সংগঠন এএফই’র (এএফই) সঙ্গে আলোচনায় বসে।
খেলা শুরু হওয়ার পর রেফারির প্রথম বাঁশির সঙ্গে সঙ্গে যখন দুই দল স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে রইল, তখন সম্প্রচারকারী প্রতিষ্ঠান ডিএজেডএন ক্যামেরা ঘুরিয়ে নিল আকাশে। স্টেডিয়ামের বাইরের দৃশ্য দেখানো হলো ২১ সেকেন্ড ধরে। এরপরই আবার ফিরে এল মাঠের ছবিতে—তখন খেলা শুরু হয়ে গেছে।
এর আগে সপ্তাহের শুরুতেই লা লিগা নিশ্চিত করেছিল, ডিসেম্বরের শেষে ভিয়ারিয়াল–বার্সেলোনা ম্যাচ বিদেশে আয়োজন করা হবে। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে খেলোয়াড় ও তাঁদের সংগঠন এএফইয়ের সঙ্গে কোনো আলোচনা না করায় ক্ষোভে ফুঁসছে তাঁরা।
খেলোয়াড়দের অভিযোগ, বিষয়টা নিয়ে লা লিগার আচরণ ছিল গোপনীয় ও একপেশে। মঙ্গলবার লা লিগা, এএফই ও স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনের মধ্যে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু সময়সূচি নিয়ে জটিলতায় তা হয়নি। লা লিগা তিনটি বিকল্প তারিখ প্রস্তাব করলেও, এএফই সেটিকে সময়ক্ষেপণ বলেই মনে করেছে।
এমনকি প্রতিবাদের আগমুহূর্তে লা লিগার সভাপতি হাভিয়ের তেবাস ছয় পৃষ্ঠার একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন এএফইকে, যাতে পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। কিন্তু তাতেও মন গলেনি খেলোয়াড়দের। তাঁদের উদ্বেগ মূলত— কতটি ম্যাচ বিদেশে আয়োজন হবে, আর সেখান থেকে অর্জিত অর্থ কীভাবে বণ্টন হবে।
এস্পানিওলের ২–০ গোলের জয়ের পর অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার লিয়ান্দ্রো কাবরেরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন লা লিগার আচরণে। স্প্যানিশ দৈনিক দিয়ারিও এএসের সঙ্গে আলাপে তিনি বলেন,
‘আমরা আগেই ঠিক করে রেখেছিলাম যে প্রতিবাদ করব। কিন্তু পরে লা লিগা বলল, নাকি অন্য কারণে সেটা হবে না! গত সপ্তাহে বৈঠকের অনুরোধ করা হয়েছিল, তারা পারেনি। এখন এমন সময় ঠিক করেছে, যখন সাত–আটটি দল ইউরোপে খেলছে। এরপর আবার বলছে, আরও পরে দেখা করা যাক—তখন তো সব বিক্রি হয়ে গেছে, ফেরার উপায় নেই।’
কাবরেরা আরও বলেন,
‘যদি সবকিছু এত স্বচ্ছ হয়, তাহলে আলাপ করতে সমস্যা কোথায়? তারা বলে গত দশ বছরে খেলোয়াড়দের ১০০ মিলিয়ন ইউরো দিয়েছে, কিন্তু যাঁদের বেতন বেড়েছে, তাদের ক্ষেত্রেও কি একই নিয়ম? স্বচ্ছতা সবার জন্য সমান হওয়া উচিত।’
টিভি সম্প্রচারে প্রতিবাদ না দেখানো নিয়েও হতাশ কাবরেরা,
‘আমরা শুধু ১৫ সেকেন্ডের বিরতি চেয়েছিলাম—একটু দেখাতে চেয়েছিলাম যে আমরা একমত নই। কিন্তু তারা হয়তো ছাদের পাখি দেখিয়েছে। সত্যি বলতে, আমি বুঝি না কেন এটা দেখানো গেল না।’
লা লিগার এই আচরণে স্প্যানিশ ফুটবলে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। খেলোয়াড়েরা বলছেন, তাঁরা ম্যাচ বিদেশে আয়োজনের বিরোধী নন, কিন্তু চাইছেন ন্যায্যতা, স্বচ্ছতা আর সম্মান—যা শুক্রবার রাতে তাঁদের চোখে পড়েনি একটুও।
প্রিমিয়ার লিগে মৌসুমের বড় ম্যাচ সামনে। কাল অ্যানফিল্ডে রুবেন আমোরিমের ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের প্রতিপক্ষ লিভারপুল। এই ম্যাচেও রক্ষণ নিয়ে বড় দুশ্চিন্তায় কোচ আমোরিম।
আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডার লিসান্দ্রো মার্তিনেজ ফেব্রুয়ারি থেকে মাঠের বাইরে আছেন হাঁটুর (এ সি এল) ইনজুরিতে। সম্প্রতি তিনি দলীয় অনুশীলনে ফিরেছেন বটে, তবে এখনো ম্যাচ খেলার মতো প্রস্তুত নন। আমোরিম পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, অ্যানফিল্ডে লিসান্দ্রোকে পাওয়া যাচ্ছে না।
লিসান্দ্রোর ফেরার প্রসঙ্গে ইউনাইটেড কোচ বলেন, ‘লিসা এখনো পুরোপুরি প্রস্তুত নয়। সে ফিরছে, কিন্তু এখনো খেলার জন্য ফিট না।’ তবে কোচের কথায় ধারণা পাওয়া যায়, দ্রুতই মাঠে ফিরবেন এই ডিফেন্ডার।
মার্তিনেজের অনুপস্থিতি এই মৌসুমে ইউনাইটেডের রক্ষণভাগে বড় প্রভাব ফেলেছে। তাঁর উপস্থিতি ছাড়া দলটা রক্ষণে বেশ ভুগছে। কোচ আশা করছেন, মৌসুমের পরের দিকেই হয়তো দলে ফিরে আসবেন এই আর্জেন্টাইন।
শুধু মার্তিনেজ নন, ম্যান ইউনাইটেড পাচ্ছে না নুসাইর মাজরাউকেও। মরক্কোর এই ফুলব্যাক মৌসুমে এখন পর্যন্ত মাত্র তিন ম্যাচ খেলতে পেরেছেন, উরুর চোটে মাঠের বাইরে বেশ কিছুদিন। আমোরিম জানালেন, তাঁর ফেরার সময় নিয়েও নিশ্চিত কিছু বলা যাচ্ছে না। কোচ বলেন,
‘মাজরাউইয়ের ক্ষেত্রে এখনই সময় বলতে পারছি না। আমরা আশা করছি, শিগগিরই ও ফিরবে।’
চোটের ধাক্কায় ইউনাইটেডের রক্ষণভাগের বিকল্প কমে গেছে আরও। আর প্রতিপক্ষ যখন লিভারপুলের মতো দল, তখন বড় চিন্তার কারণই আমোরিমের জন্য।
তবে মাঝমাঠে খানিকটা স্বস্তির খবর আছে। অধিনায়ক ব্রুনো ফার্নান্দেজ বৃহস্পতিবার অনুশীলনে অংশ নেননি, কিন্তু সেটা বিশ্রামের জন্যই। আন্তর্জাতিক ম্যাচ শেষে ক্লান্ত থাকায় কোচ তাঁকে বাড়তি বিশ্রাম দিয়েছেন। আমোরিম নিশ্চিত করেছেন, লিভারপুলের বিপক্ষে মাঠে নামবেন ফার্নান্দেজ,
‘যারা আন্তর্জাতিক দায়িত্ব থেকে ফিরেছে, তাদের একটু সময় দিচ্ছি। তবে সবাই খেলতে প্রস্তুত।’
প্রিমিয়ার লিগে এখন পর্যন্ত সাত ম্যাচে তিন জয় নিয়ে টেবিলের ১০ নম্বরে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। গত ম্যাচে সান্ডারল্যান্ডকে ২–০ গোলে হারিয়ে কিছুটা আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছে তারা। তবে ধারাবাহিকতা এখনও অধরা।
রবিবার আনফিল্ডে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী লিভারপুলের মুখোমুখি হবে ইউনাইটেড। তারপরই অপেক্ষা ব্রাইটন ম্যাচের। তত দিনে যদি মার্তিনেজ ও মাজরাউইয়ের ফিটনেস নিয়ে ভালো খবর আসে, সেটাই হবে কোচ আমোরিমের জন্য সবচেয়ে বড় জয়ের খবর। আপাতত তাঁর সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ—দুই প্রধান রক্ষণভাগের খেলোয়াড় ছাড়া আনফিল্ডে টিকে থাকা।
বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের জার্মান সেন্টারব্যাক নিকো শ্লটারবেককে দলে টানার দৌড়ে রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নেমেছিল লিভারপুল। তবে স্প্যানিশ ক্লাবটি এখন নাকি মেনে নিয়েছে, এই লড়াইয়ে জয়ী হতে যাচ্ছে লিভারপুলই। আগামী ৫ নভেম্বর অ্যানফিল্ডে চ্যাম্পিয়নস লিগের মাচে দেখা হচ্ছে এ দুই দলের। তবে মাঠে নমার আগেই যেন রেডদের কাছে একদফা হেরে গেল রিয়াল!
২৫ বছর বয়সী শ্লটারবেক সাম্প্রতিক মৌসুমগুলোয় বুন্দেসলিগার অন্যতম সেরা ডিফেন্ডার হিসেবে নিজের অবস্থান পোক্ত করেছেন। আগামী গ্রীষ্মের ট্রান্সফার উইন্ডোতে তাঁকে ঘিরে বড়সড় আগ্রহ দেখা যাবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে।
ইংলিশ দৈনিক মিররের প্রতিবেদ, রিয়াল মাদ্রিদ বুঝে গেছে শ্লটারবেককে আনার লড়াইয়ে তারা লিভারপুলের পেছনে পড়ে গেছে। বরং এখন মাদ্রিদ চেষ্টা করছে লিভারপুলের ফরাসি ডিফেন্ডার ইব্রাহিমা কোনাতের চুক্তির সুযোগ কাজে লাগিয়ে তাঁকে ভবিষ্যতে ফ্রি ট্রান্সফারে দলে নেওয়ার।
লিভারপুলের শ্লটারবেকের প্রতি আগ্রহ নতুন নয়। জার্মান সংবাদমাধ্যম বিল্ড জানিয়েছে, লিভারপুল এরই মধ্যে খেলোয়াড়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা করেছে। তাদের লক্ষ্য, জানুয়ারিতেই চুক্তি সম্পন্ন করা।
বর্তমানে লিভারপুলের ডিফেন্সে বেশ অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। দলের অভিজ্ঞ রক্ষক ভার্জিল ফন ডাইক এখন ৩৪ বছর বয়সী, কোনাতের চুক্তিও শেষের পথে, আর জো গোমেজ প্রায় ক্লাব ছাড়ার মুখে ছিলেন গ্রীষ্মকালীন ট্রান্সফার ডেডলাইনে। এর মধ্যে নতুন সাইনিং জিওভান্নি লিওনি চোটে পড়ে পুরো মৌসুমের বাইরে চলে গেছেন। ফলে জানুয়ারির আগে রক্ষণের বিকল্প কমে গেছে কোচ আর্নে স্লটের দলে।
এই পরিস্থিতিতে শ্লটারবেকের মতো তরুণ ও নির্ভরযোগ্য সেন্টারব্যাককে আনা লিভারপুলের জন্য দীর্ঘমেয়াদি সমাধান হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
শ্লটারবেকের সঙ্গে ডর্টমুন্ডের চুক্তি রয়েছে ২০২৭ পর্যন্ত। তবে ক্লাবটি তাঁর সঙ্গে নতুন করে ২০৩০ পর্যন্ত চুক্তি বাড়াতে চায়। এরই মধ্যে তাঁকে প্রায় ৮ মিলিয়ন ইউরো (প্রায় ৯.৩ মিলিয়ন ডলার) বেতন প্রস্তাব করা হয়েছে—যা তাঁর বর্তমান আয়ের প্রায় তিনগুণ। তবু ধারণা করা হচ্ছে, খেলোয়াড় নতুন করে চুক্তি বাড়াতে আগ্রহী নন।
ডর্টমুন্ডের ক্রীড়া পরিচালক লার্স রিকেন অবশ্য সতর্ক করেছেন, ক্লাবের ধৈর্যেরও সীমা আছে। তাঁর ভাষায়,
‘আমরা আমাদের সেরাটা দিচ্ছি, কিন্তু সবকিছুই একসময় সীমায় এসে ঠেকে।’
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে, এই তরুণ জার্মান ডিফেন্ডারকে আগামী মৌসুমে অ্যানফিল্ডে দেখা যেতে পারে। ইউরোপিয়ান সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রিয়াল মাদ্রিদ হার মানছে, লিভারপুলের ডিফেন্সে শুরু হয়েছে নতুন এক অধ্যায়ের প্রস্তুতি।
ফুটবলে সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক নতুন কিছু নয়। কিন্তু ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি বা ভিএআর চালু হওয়ার পর সেই বিতর্ক আরও বেড়েছে। প্রযুক্তি দিয়ে ন্যায্যতা আনার চেষ্টা হলেও অনেক সময় সেটাই ম্যাচের ছন্দ নষ্ট করছে। খেলোয়াড়দের গোল উদযাপন মাঝপথে থেমে যায়, দর্শকেরা বিভ্রান্ত, রেফারিরাও মানসিক চাপে থাকেন। এবার সেই সমস্যার সমাধানে নতুন এক উদ্যোগ নিচ্ছে ফিফা—মাঠে আসছে ‘পার্পল’ (বেগুনি) আর ‘ব্লু’ (নীল) কার্ড।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফিফা পরীক্ষামূলকভাবে চালাচ্ছে নতুন এই ব্যবস্থা, যার নাম ‘ফুটবল ভিডিও সাপোর্ট’ বা এফভিএস। এতে কোচদের হাতে দেওয়া হবে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার সুযোগ—একেবারে টেনিসের মতো করে। চিলিতে অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপ এবং আরও কয়েকটি ছোট টুর্নামেন্টে এই কার্ড ব্যবস্থার ট্রায়াল চলছে। ফিফার দাবি, এটি কম খরচে, স্থিতিশীল ও সহজ ব্যবহারের একটি বিকল্প, যা ভিএআর-সমর্থহীন লিগগুলোতে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।
ফিফার দাবি অনুযায়ী, এফভিএস কম খরচে এবং স্থিতিশীল একটি বিকল্প, যা এমন লিগগুলোতেও ব্যবহার করা যাবে যেখানে ভিএআর প্রযুক্তি চালানো ব্যয়বহুল। যেমন ইতালির সিরি সি বা স্পেনের প্রিমেরা ফেদেরাসিওন। আগস্ট থেকে এটি ব্রাজিল ও ইতালির নারী লিগেও পরীক্ষা চলছে, যদিও এখনো নিশ্চিতভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না।
এই ব্যবস্থায় ম্যাচের শুরুতেই প্রতিটি দলের কোচকে দেওয়া হবে দুটি কার্ড—একটি পার্পল, একটি ব্লু। কোচ ম্যাচে সর্বোচ্চ দুইবার সিদ্ধান্ত পর্যালোচনার অনুরোধ জানাতে পারবেন। অনুরোধের পর রেফারির সিদ্ধান্ত যদি বদলে যায়, তাহলে সেই কার্ড আবার ব্যবহার করা যাবে। কিন্তু যদি সিদ্ধান্ত অপরিবর্তিত থাকে, তাহলে কার্ডটি হারাতে হবে।
কার্ড ব্যবহারের পদ্ধতিটিও বেশ আলাদা। কোচকে আঙুল ঘুরিয়ে, অনেক বৃত্তের মতো ইশারা দিতে হবে—যা দেখে চতুর্থ রেফারি বুঝবেন তিনি ‘রিভিউ’ চাইছেন। এরপর কোচ তাঁর কার্ডটি হস্তান্তর করবেন, এবং ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই আনুষ্ঠানিক পর্যালোচনা শুরু হবে।
ভিএআর ব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রতা, ব্যয় এবং বিভ্রান্তি নিয়ে রেফারি ও খেলোয়াড়দের মধ্যে দীর্ঘদিনের অসন্তোষ আছে। প্রিমিয়ার লিগের সাবেক রেফারি গ্রাহাম স্কট সম্প্রতি বলেছেন, ভিএআরের অংশ হিসেবে কাজ করা পুরোপুরি আনন্দহীন,
‘মাঠের বাইরে থেকে আপনি কিছুই নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না, আর এখন শব্দ এতটাই বেড়ে গেছে যে সেটা প্রায় অসহনীয়। এটা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং একটা কাজ। এর ওপর যখন আপনি ভিএআর হিসেবে কাজ করেন, তখন এটা একদমই আনন্দদায়ক নয়।’
খেলোয়াড়দের কাছেও প্রযুক্তিটি জনপ্রিয় নয়। আনন্দঘন মুহূর্তগুলো অনেক সময় ভিএআরের কারণে হারিয়ে যায়। তাই ফিফা এখন এমন এক বিকল্প খুঁজছে, যা একদিকে প্রযুক্তিগত সহায়তা দেবে, আবার খেলার ছন্দও নষ্ট করবে না।
‘পার্পল’ আর ‘ব্লু’ কার্ড সেই ভারসাম্য আনতে পারবে কি না, সেটি এখন সময়ের অপেক্ষা। তবে সফল হলে এই ব্যবস্থা একদিন ভিএআরের বিকল্প হিসেবেই জায়গা করে নিতে পারে—আর ফুটবল ফিরতে পারে তার পুরোনো সহজ ছন্দে।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে সময়টা একদমই ভালো কাটছে না রুবেন আমোরিমের। মাঠে দলের বাজে পারফরম্যান্সে একের পর এক সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি। প্রিমিয়ার লিগের চলতি মৌসুমে ৭ ম্যাচের মধ্যে মাত্র তিনটিতে জিতেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। সম্প্রতি দ্য টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ক্লাবটির সহ-সত্ত্বাধিকারী স্যার জিম র্যাটক্লিফ বলেন, ‘ওল্ডট্র্যাফোর্ডে প্রভাব ফেলতে বছর তিনেক সময় লাগতে পারে আমোরিমের।’ সর্বশেষ কিছুদিনের হতাশাজনক ফলের পর তার এমন মন্তব্য কিছুটা স্বস্তির হতে পারে আমোরিমের জন্য।
আগামীকাল সন্ধ্যায় অ্যানফিল্ডে লিভারপুলের আতিথেয়তা নেবে ম্যান ইউনাইটেড। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে শততম ম্যাচের আগে রেড ডেভিলদের কোচ আমোরিম বলেন,
‘ফুটবলে ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছু বলা সত্যিই কঠিন। এখানে আগামীকাল কী হবে, কেউ জানে না। এটা শুনে ভালো লাগছে, কিন্তু তিনি (র্যাটক্লিফ) সবসময়ই আমাকে বলেন, কখনও ম্যাচের পর মেসেজও পাঠান। কিন্তু আপনি জানেন, আমিও জানি, আর জিমও জানেন- ফুটবল এমন নয়। আপনি ফুটবলে পরের দিনটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না।’
আমোরিমের অধীনে এখন পর্যন্ত ৩৪ লিগ ম্যাচে ম্যান ইউনাইটেড জিতেছে মাত্র ১০টি। রেড ডেভিলরা এখনও টানা দুটি লিগ ম্যাচ জিততে পারেনি। এই মৌসুমে একবারও নবম স্থানের ওপরে উঠতে পারেনি। ক্লাবের প্রধান নির্বাহী ওমর বেরাদা জানিয়েছেন, পর্তুগিজ ক্লাব স্পোর্টিং লিসবন থেকে আমোরিমকে নিয়ে আসার পর এখানে তিনি যতটা সময় নিচ্ছেন মানিয়ে নিতে সেটা হয়ত কেউ কল্পনা করেনি। তারপরও আমরা কোচের ওপর আস্থা রাখছি।’