৪ অক্টোবর ২০২৩, ৯:৫৮ এম
চ্যাম্পিয়নস লিগের রাত যেন ঘটন-অঘটনের পসরা সাজিয়ে বসেছিল। নেপলস আর ম্যানচেস্টার দেখেছে ৫
গোলের থ্রিলার। তাতে রিয়াল মাদ্রিদ ৩-২ এ
হারিয়েছে নাপোলিকে। ওল্ড ট্রাফোর্ডে ইউনাইটেডকে হারিয়ে রূপকথার গল্প সঙ্গী করেছে তুরস্কের গ্যালাতাসারেই। ফ্রান্সে আর্সেনালকে ২-১ এ
হারিয়ে দিয়েছে লঁস।
নেপলসের রিয়ালই রাজা
সিরি আ চ্যাম্পিয়নদের সঙ্গে রিয়াল মাদ্রিদের লড়াইটাই ছিল রাতের সবচেয়ে বড় ম্যাচ। নাপোলিও দেখিয়ে দিয়েছিল কেন তারা ভয়ঙ্কর। ১৯ তম মিনিটে ডিফেন্ডার লিও ওসিগার্ডের হেড খুঁজে নেয় রিয়াল মাদ্রিদের জাল। তবে তাদের সে সুখস্মৃতি বেশিক্ষন স্থায়ী হয়নি। বেলিংহাম দারুণভাবে বল জিতেছিলেন, তার বাড়ানো বল থেকে নাপোলির ডিফেন্ডারদের বোকা বানিয়ে লেফট উয়ং দিয়ে ডিবক্সে ঢুকে পড়েন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। চতুর ফিনিশিং-এ
করেন করেন গোল, সমতায় ফেরে রিয়ালও। ইনজুরি থেকে ফেরার পর দ্বিতীয় শুরুতেই গোলটা পেয়ে যান ব্রাজিলিয়ান।
আরও পড়ুন: চ্যাম্পিয়নস লিগে রাতে রিয়াল মাদ্রিদ-নাপোলি হাইভোল্টেজ ম্যাচ
প্রথমটা করিয়েছিলেন, পরেরটা বেলিংহাম করলেন একক দক্ষতায়। মাঝমাঠে কামাভিঙ্গার দেওয়া পাস থেকে শুরু। তারপর একে একে নাপোলির তিন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বক্সের ভেতর থেকে কোণাকুণি শটে বহুদিন মনে রাখার মতো এক গোল করেন ইংলিশম্যান। ডিয়েগো ম্যারাডোনার নামের স্টেডিয়ামে এর চেয়ে মানানসই গোল যেন আর হয় না!
দ্বিতীয়ার্ধে ফেরার লড়াইটা শুরু থেকেই চালিয়ে যাচ্ছিল নাপোলি। সফল হতে সময়ও লাগেনি। পেনাল্টি নিয়ে অবশ্য আক্ষেপ থাকতে পারে নাচোর। তবে ভিএআর চেকের পর রেফারি নিজেও পরে সাইড স্ক্রিনে দেখে নাচোকে হ্যান্ডবলেই দোষী সাব্যস্ত করেন। পেনাল্টি থেকে গোল করে নাপোলিকে আবার সমতায় ফেরান জিলেনস্কি।
ম্যাচটা ওখানেই শেষ হতে পারত। নাপোলিও চোখ রাঙাচ্ছিল। লুকা মদ্রিচ, হোসেলুদের নামিয়ে কার্লো আনচেলোত্তি চেয়েছিলেন লাগাম টানতে। লাগাম তো টেনেছেনই, উলটো ম্যাচটাই বের করে এনেছেন ফেদেরিকো ভালভার্দে। রিয়াল মিডফিল্ডারের বুলেট গতির শট ৭৮ মিনিটে জালে জড়ালেও নামটা অবশ্য তার হয়নি। গোলকিপার অ্যালেক্স মেরেটের নামের পাশে উঠেছে আত্মঘাতী গোল। তবে কৃতিত্বটা চাইতেই পারেন ভালভার্দে।
প্রথম ম্যাচে ইউনিয়ন বার্লিনের বিপক্ষে রিয়াল জিতেছিল শেষ মুহুর্তের গোলে। এবার জিতলো পেছন থেকে ফিরে। এই জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে “সি” গ্রুপের শীর্ষে অবস্থান করছে স্প্যানিশ জায়ান্টরা। ‘সি’ গ্রুগের অন্য ম্যাচে ইউনিয়ন বার্লিনকে ৩-২ গোলে হারিয়েছে ব্রাগা।
থিয়েটার অফ ড্রিমসে তার্কিশ ডিলাইট
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড আবার হেরেছে। হেরেছে এবার নাটক জমিয়ে। হেরেছে গ্যালাতাসারেইর কাছে। অথচ রাসমুস হয়লুনের জোড়া গোলে পিছিয়ে পড়া ম্যাচেও জয়ের পথে দেখছিল ইউনাইটেড। ডেনিশ স্ট্রাইকারের ইউনাইটেডের জার্সিতে প্রথম গোল পাওয়ার ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত হয়ে গেছে দুঃস্বপ্নের মতো।
৬৭ মিনিটে হয়লুনের দ্বিতীয় গোল ম্যাচের স্কোরলাইন বানিয়েছিল ২-১। সেখান থেকে ৩ মিনিট বাদে আবার সমতায় ফেরে গ্যালাতাসারেই। নাটক জমেছে আরও পরে গিয়ে। আন্দ্রে ওনানার ভুল মাশুল গুণতে গিয়ে কাসেমিরো বক্সের ভেতর ফাউল করে বসে দেখেন লাল কার্ড, উপহার দেন পেনাল্টি। সেখান থেকে পরে মাউরো ইকার্দি গোল করতে ব্যর্থ হলে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছিলেন ওনানা। কিন্তু ৩ মিনিট পর সোফিয়ান আমব্রাতের ভুল থেকে কুইক কাউন্টার অ্যাটাকে বল পেয়ে যান সেই ইকার্দি। ওই দফায় দারুণ এক চিপে ওনানাকে বোকা বানিয়ে গ্যালাতাসারেইকে পাইয়ে দেন স্মরণীয় এক জয়।
অবিশ্বাস্য কিছুর স্বপ্ন দেখছিল একই গ্রুপে থাকা কোপেনহেগেনও। ৫৬ মিনিটের লিড অবশ্য টেকেনি তাদেরও। জামাল মুসিয়ালা ও টেলের গোলে পরে পুরো পয়েন্ট নিয়েই মাঠ ছেরেছে বায়ার্ন। দুই ম্যাচ শেষে গ্রুপের তলায় ম্যান ইউনাইটেড, সবার ওপরে বায়ার্ন।
গ্রুপ ‘বি’-তে আর্সেনালের অবস্থাও প্রায় একইরকম। গ্যাব্রিয়েল জেসুসের গোলে লিড নিয়েছিল গানার্স, পরে থমাসন আর ওয়াহি গোলে লঁসের কাছে বড় ক্ষতির মুখোমুখি হতে হয়েছে মিকেল আর্তেতার দলের। ৬ বছর পর চ্যাম্পিয়নস লিগে ফিরে ৪-০ গোলের প্রথম ম্যাচের জয়টার স্মৃতি তাই আর্সেনালের ফিঁকে হয়ে গেছে লঁসের কাছে
গ্রুপ ‘ডি’ তে মহাগুরুত্বপূর্ণ জয় পেয়েছে গেলবারের রানার্স আপ ইন্তারম ইলান। বেনফিকার মাঠ থেকে তারা ফিরেছে ১-০ জয় নিয়ে। দ্বিতীয়ার্ধে একমাত্র গোলটি করেছেন মার্কাস থুরাম। রিয়াল সোসিয়েদাদের সমান চার পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের দুইয়ে আছে ইন্তার।
অন্যদের প্রশংসা তো আছেই, সম্প্রতি বার্সেলোনার সাথে ম্যাচের পর লামিন ইয়ামালের স্তুতি গেয়েছেন ইন্তার মিলান কোচ সিমোনে ইনিজাগিও। এতোটাই যে, তিনি এই তরুণ প্রতিভাকে তিনি তার দেখা ৫০ বছরের অন্যতম সেরা প্রতিভা বলে উল্লেখ করেন। আগে-পরে তার সাথে তুলনা এসেছে লিওনেল মেসির মত কিংবদন্তিরও। বার্সেলোনা কোচ হান্সি ফ্লিক অবশ্য মনে করেন, মেসি বা ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোদের মানে যেতে হলে উন্নতি অব্যাহত রাখতে হবে ইয়ামালকে।
বয়সটা মাত্র ১৭ হলেও ইয়ামালের খেলা দেখে সেটা একেবারেই বোঝার অবস্থা নেই। মাঠে যেভাবে দাপিয়ে বেড়ান, তারকা সব ডিফেন্ডারদের বোকা বানান, তাতে স্প্যানিশ উইঙ্গারকে মনে হয় ভীষণ অভিজ্ঞ এক ফুটবলার। ফলে ১৮-তে পা দেওয়ার আগে ক্লাব ও জাতীয় দলেরর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন তিনি। এমন ধ্রুপদী ফুটবল আর বার্সেলোনার একাডেমী থেকে উঠে আসায় তাতে প্রায়ই ইয়ামালের সাথে অনেকেই টেনে আনেন মেসির শুরুর দিনের তুলনা।
শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে ফ্লিক মনে করিয়ে দিতে চাইলেন, মেসি বা রোনালদোর কাতারে যাওয়ার এখনও অনেক পথ বাকি ইয়ামালের।
“আপনি যখন এই লেভেলে খেলবেন, তখন আপনাকে সেটা বারবার করে দেখাতে হয়। এটা স্রেফ এক ম্যাচের ব্যাপার নয়। সব খেলোয়াড়েরই উন্নতির সুযোগ থাকে, তার ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা একই। এটা কেবল প্রতিভার বিষয় না, যা তার আছে… এটা অনেক পরিশ্রমেরও ব্যাপার, কারণ আপনি মেসি, রোনালদো বা অতীতের গ্রেটদের মত হতে চাইবেন।”
মৌসুম জুড়ে দারুণ ফর্মে থাকা ইয়ামাল ইন্তারের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে ৩-৩ গোলে ড্রয়ের ম্যাচে একবার জালের দেখা পান। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ১৫ গোলের পাশাপাশি ২৪টি গোল করিয়েছেন সতীর্থদের দিয়ে।
ফ্লিক মনে করেন, উন্নতির ক্ষেত্রে সঠিক প্রক্রিয়াতেই আছেন ইয়ামাল।
“আমাদের সবাইকে স্থির থাকতে হবে। তাকে আমাদের দলে পেয়ে আমরা আসলেই খুশি। ১৭ বছর বয়সে সে যে পর্যায়ে খেলছে, সেটা অবিশ্বাস্য। তবে আমরা এটাও জানি, এই ধারা বজায় রাখতে, আরও বেশি উন্নতি করতে হলে তাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। আমি মনে করি সেও এটাই চায়।”
পুরো প্রক্রিয়াটা যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছিল, তাতে কার্লো আনচেলত্তির ব্রাজিল জাতীয় দলের কোচ হওয়াটা মনে হচ্ছিল কেবলই সময়ের ব্যাপার মাত্র। তবে রিয়াল মাদ্রিদের সাথে চুক্তি নিয়ে ঝামেলা হওয়ায় আটকে গেছে অভিজ্ঞ এই কোচের সেলেসাওদের দায়িত্ব নেওয়ার বিষয়টি। তবে এখনই হাল ছাড়ছে না ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশন (সিবিএফ)। আর তাই আনচেলত্তির জন্য আরও অপেক্ষা করতে চায় তারা।
বৃহস্পতিবার সূত্রের বরাত দিয়ে ইএসপিএন তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, লা লিগায় রিয়ালের মৌসুমের শেষে ভাগ্য নির্ধারিত না হওয়া পর্যন্ত আনচেলত্তির সাথে চুক্তির জন্য সময়সীমা বাড়িয়েছে সিবিএফ।
আরও পড়ুন
এল ক্লাসিকো মিসের আশঙ্কায় কুন্দে |
![]() |
সব প্রতিযোগিতা থেকে এরই মধ্যে ছিটকে যাওয়া রিয়াল লা লিগায় আছে পয়েন্ট টেবিলের দুইয়ে, তাদের চেয়ে বার্সেলোনার লিড চার পয়েন্টের। দলটির ম্যাচ বাকি আছে আর পাঁচটি, যার মধ্যে রয়েছে আগামী ১১মে-এর এল ক্লাসিকোও।
আর ব্রাজিলের পরবর্তী ম্যাচ আগামী জুনে, বিশ্বকাপ বাছাইয়। এর আগেই নতুন কোচ নিয়োগ দিয়ে সিবিএফ ২৬ মে-তে স্কোয়াড ঘোষণা করতে চায়।
আপাতত আনচেলত্তির সাথে আনুষ্ঠানিক আলোচনার আগে সিবিএফ এখন নজর দিচ্ছে ইতালিয়ান কোচের সাথে রিয়ালের চুক্তি বাতিলের, যা আছে ২০২৬ সাল পর্যন্ত। শর্ত অনুযায়ী তার আগে যদি স্প্যানিশ ক্লাবটি তাকে বরখাস্ত করে, তাহলে তিনি বোনাস পাবেন এক মৌসুমের।
ইএসপিএন এই সপ্তাহের শুরুতে জানিয়েছিল, আনচেলত্তি ও রিয়াল সভাপতি ফ্লোরেন্টিনো পেরেজ চুক্তির এসব শর্ত নিয়ে খুব শীঘ্রই আলোচনা করার জন্য বসবেন।
আরও পড়ুন
নিষেধাজ্ঞা কাজে লাগিয়ে রুডিগারের অস্ত্রোপচার, শাস্তি এড়ালেন বেলিংহাম |
![]() |
চ্যাম্পিয়ন লিগ থেকে বিদায় ও কোপা দেল রের ফাইনালে হারের পর থেকেই বাতাসে ভাসছে গুঞ্জন, এই মৌসুমে শেষেই আনচেলত্তিকে বিদায় জানিয়ে দেবে রিয়াল। সেটা নিশ্চিত জেনেই সাম্প্রতিক সময়ে সিবিএফের সাথে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছিলেন সাবেক এসি মিলান কোচ।
খেলোয়াড়, কোচ থেকে শুরু করে সব একই, তবে প্রিমিয়ার লিগ আর ইউরোপা লিগের ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড যেন দুই মেরুর দুই ক্লাব। একটিতে টেনেটুনে টিকে থাকতে হচ্ছে লিগে, আর অন্যটিতে অদম্য গতিতে ছুটছে দলটি। ইউরোপার ফাইনালে এক পা রেখে কোচ রুবেন আমোরিমও বললেন, তিনিও বিষয়টি মেলাতে পারছেন না।
গত বৃহস্পতিবার রাতে আথলেতিক বিলবাওকে সেমির প্রথম লেগে ৩-০ গোলে হারিয়েছে ইউনাইটেড। এর মধ্য দিয়ে এই মৌসুমে একমাত্র ইংলিশ ক্লাব হিসেবে ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় অপরাজিত রইল আমোরিমের দল। সেই একই মৌসুমে আবার ইউনাইটেড পার করছে প্রিমিয়ার লিগে নিজেদের সবচেয়ে বাজে মৌসুম, এই কিছুদিন আগে নিশ্চিত হয়েছে রেলিগেশন এড়ানো।
আরও পড়ুন
রেকর্ডের ম্যাচে নতুন উচ্চতায় ‘অলরাউন্ডার’ মিরাজ |
![]() |
দুই প্রতিযোগিতায় পারফরম্যান্সের বৈপরিত্য নিয়ে ধোয়াশায় থাকার কথা ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে বললেন আমোরিম।
“আসলে এটা ব্যাখ্যা করা কঠিন। আমরা শেষ ম্যাচগুলোতে উন্নতি করেছি। আমি কেবল ফলাফলের দিকেই তাকাই না। এমন কিছু ম্যাচ ছিল যেখানে আমরা ভালো খেলেও হেরেছি, আবার কিছু ম্যাচে ভালো না খেলেও জিতেছি। কখনও কখনও আপনার কিছুটা ভাগ্যের সহায়তাও প্রয়োজন হয়। আমি জানি এটা বোঝানোটা কঠিন কাজ। তবে কখনও কখনও ব্যাপারগুলো এমনই হয়, এভাবেই দেখতে হয় এগুলো।”
সেমিফাইনালের প্রথম লেগে প্রিমিয়ার লিগের হতাশা কাটিয়ে এই মৌসুমে ইউনাইটেডের সামনে সুযোগ রয়েছে ইউরোপা লিগ জেতার। ৩-০ ব্যবধানে জেতায় ফাইনালে যেতে দ্বিতীয় লেগে দলটির কাজ সহজ হওয়ার কথা। কারণ, এখন পর্যন্ত ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় নকআউট পর্বে ১৩৩টি দল প্রতিপক্ষের মাঠে ৩ বা তার বেশি গোলে জেতার পর আর হারেনি।
এরপরও ওল্ড ট্রাফোর্ডে ফিরতি লেগে চ্যালেঞ্জ দেখছেন আমোরিম।
“আমি আসলেই করি আমাদের দ্বিতীয় লেগ নিয়েও চিন্তা করতে হবে। আর অন্য ম্যাচগুলোর চেয়ে এই ম্যাচে প্রথম ২০ মিনিটে আরও বেশি সাবধানী হতে হবে, কারণ ম্যাচটা আসলেই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হতে যাচ্ছে। বেশি কিছু ভাবার দরকার নেই, খেলোয়াড়দের প্রতি এটাই আমার বার্তা।”
ইন্তার মিলানের বিপক্ষে ম্যাচে বার্সেলোনার চিন্তার কারণ হয়েই মাঠ ছেড়েছিলেন৷ চোটটা শেষ পর্যন্ত গুরুতরই ছিল জুলস কুন্দের। ফর্মে থাকা এই ডিফেন্ডারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের ফিরতি লেগ মিস করাটা তাই নিশ্চিত বলেই খবর। কমপক্ষে দুই সপ্তাহ তাকে মাঠের বাইরে থাকতে হতে পারে, যা ছিটকে দিতে পারে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে ম্যাচেও।
গত বৃহস্পতিবার বার্সেলোনা নিশ্চিত করেছে যে, ইন্তারের সাথে ৩-৩ গোলে ড্র হওয়া ম্যাচে হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট পেয়েছেন কুন্দে। ক্লাবটি তার ফেরার সময় না জানালেও সুত্রের বরার দিয়ে ইএসপিএনের দাবি, আগামী সপ্তাহে দ্বিতীয় লেগ খেলা হবে না ফরাসি ফুটবলারের।
আরও পড়ুন
৬ গোলের মহারণে বার্সা-ইন্তার উপহার দিলো মৌসুম সেরা ম্যাচ |
![]() |
শুধু তাই নয়, সেখানে আরও বলা হয়েছে, ১১ ই মে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে লা লিগার এল ক্লাসিকোতেও কুন্দের খেলার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে।
সব ঠিক থাকলে মৌসুমে একেবারের শেষের দিকে ফিরবেন ২৬ বছর বয়সী কুন্দে। যেখানে তার নজর থাকবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালের দিকে, যা মাঠে গড়াবে ৩১ মে। ইন্তার বাধা টপকাতে পারলে শিরোপার লড়াইয়ে বার্সেলোনার প্রতিপক্ষ হবে পিএসসি বা আর্সেনাল।
কুন্দের এই চোটের পেছনে তার বিরতিহীন খেলার একটা বড় প্রভাব থাকতেও পারে। গত সপ্তাহে লা লিগায় মায়োর্কার সাথে ম্যাচের আগে বার্সেলোনার জার্সিতে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা ৮৬টি ম্যাচ খেলেন তিনি।
অ্যাবসুলেট সিনেমা….বার্সেলোনা ইন্তারের ম্যাচের পারফেক্ট হেডলাইন। যেন দম ফেলার নেই ফুসরত। যার শুরু প্রথম মিনিটে, চলেছে ৯০ মিনিট পর্যন্ত। নান্দনিক ফুটবল, ৬ গোলের মোহারণ, আর ১৭ বছর বয়সী এক তরুণের সব আলো কেড়ে নেওয়া। ক্লাসিক চ্যাম্পিয়নস লিগ নাইট যেমন হয় আর কী। যেই রাত ফুটবল সমর্থকদের মনে দাগ কেটে যাবে লম্বা সময়।
দিয়ারিও স্পোর্টসের ফ্রন্ট পেইজ বলছে, সব কিছুই সম্ভব ইয়ামালকে নিয়ে… নিজের শততম ম্যাচটাকে এতটাই রাঙিয়েছেন এই তরুণ। দারুণ একটা গোল, আর তার বা পায়ের জাদুতে ক্ষণে ক্ষণে সমর্থকদের ভাসিয়েছেন উচ্ছ্বাসে, আর নিয়েছেন ইন্তার ডিফেন্ডারদের কঠিন পরীক্ষা। এমনকি ইংল্যান্ডে বসা আর্লিং হলান্ডকে পর্যন্ত বাধ্য করেছেন তাকে নিয়ে পোস্ট দিতে।
এই ম্যাচে নায়ক আছে আরও একজন…ডেঞ্জেল ডামপ্রিস। দুই গোলের সঙ্গে, এক অ্যাসিস্ট সেই সাথে রক্ষণ সামলানোর ধকল তো ছিলই। এত সব তারকার ভিড়ে ডাচ ডিফেন্ডার নিজেকে চিনিয়েছেন নতুন করেই।
আরও পড়ুন
নিষেধাজ্ঞা কাজে লাগিয়ে রুডিগারের অস্ত্রোপচার, শাস্তি এড়ালেন বেলিংহাম |
![]() |
বল দখলের লড়াই, শট অন টার্গেট কিংবা পাস সব খানেই ইন্তার থেকে বেশ এগিয়ে ছিল বার্সা। বার্সার অল অ্যাটাকের জবাবে ইন্তারের অস্ত্র ছিল কাউন্টার অ্যাটাক। যেখানে দলটা ছিল বেশ সফল।
এদিন খেলার বয়স ৩০ সেকেন্ড না হতেই বার্সাকে চমকে দেয় ইন্তার। ডামপ্রিসের পাস থেকে দারুণ এক ব্যাকহিলে বল জালে জড়ান থুরাম। যা আবার চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালের ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুততম গোল, বার্সার বিপদ বাড়ে ২১ মিনিটে, এবার গোলের খাতায় নাম তোলেন ডামপ্রিস নিজেই। চোখ ধাঁধানো এক ওভারহেড কিকে স্তব্ধ করে দেন অলিম্পিক স্টেডিয়ামকে।
স্তব্ধ অলিম্পিক স্টিডিয়ামকে জাগিয়ে তুলতে ইয়ামাল সময় নিয়েছে মোটে তিন মিনিট। ২৪ মিনিটের মাথায় পাঁচ ইন্তার ডিফেন্ডারকে বোকা বানিয়ে বা পায়ের আড়াআড়ি এক শটে বল জড়ান জালে। বার্সেলোনা সমর্থকেরা এমন একটা গোল নিশ্চিতই বারেবারে খুঁজে ফিরে দেখবেন।
৩৮ মিনিটে বার্সাকে সমতায় ফেরায় ফেরান তোরেস। যার পেছনের কারিগর পেদ্রি ও রাফিনিয়া। স্প্যানিশ মিডফিল্ডারের মাপা ক্রস খুঁজে নেয় রাফিনিয়াকে, ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড হেডে সেটা বাডিয়ে দেন ফাঁকা জায়গায় দাঁড়ানো তোরসের দিকে। সহজ কাজটুকু করতে ভুল করেননি তোরস। তাতে ২-২ এর সমতায় থেকে বিরতিতে যায় দুই দল।
আরও পড়ুন
কোপা দেল রের ফাইনালে ‘অনিশ্চিত’ লেভানদভস্কি |
![]() |
বিরতি থেকে ফিরেও খেলা চলে একই তালে। ৬৪ মিনিটে আবারও সেই ডামপ্রিস হৃদয় ভাঙে বার্সার। কর্নার থেকে ভেসে আসা বল এবার হেডে জালে জড়ান ডাচ ডিফেন্ডার। তবে সেই লিড টেকে মোটে ১২০ সেকেন্ট। ইন্তারের সেট পিসের জবাব বার্সাও দিয়েছে সেট পিস থেকেই। কর্নার থেকে আসা বল ইয়ামাল ‘ডামি’ করে ছেড়ে দিলে ফাঁকায় পেয়ে যান রাফিনিয়া। ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড বুলেট গতির শটে বল পাঠান জালের দিকে। তবে নিজেকে কিছুটা হতভাগা ভাবতেই পারেন রাফিনিয়া। ইয়ান সোমারের পিঠে লেগে বল জালে প্রবেশ করায় গোলটা কাউন্ট হয়েছে আত্মঘাতী গোল হিসেবেl হিসেবে।
৭২ মিনিটে অবশ্য আরও একবার গোলের দেখা পায় ইন্তার। তবে মেখেতেরিয়ানের গোল কাটা পড়ে অফ সাইডে। শেষ দিকে ইয়ামালও দারুণ একটা গোল করেই ফেলছিলেন, তবে পোস্টের বাঁধায় তা শেষ হয়নি। তাতে ৩-৩ গোলের ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে দুই দল। আর অ্যাবসুলেট সিনেমার পরের পর্বের অ্যাকশন তোলা থাকে সান সিরোর জন্য।
২ দিন আগে
৪ দিন আগে
১২ দিন আগে
১২ দিন আগে
১২ দিন আগে
১৩ দিন আগে
১৩ দিন আগে
১৩ দিন আগে
১৫ দিন আগে
১৫ দিন আগে
২৫ দিন আগে
২৫ দিন আগে
২৬ দিন আগে
২৯ দিন আগে
৩০ দিন আগে